ক্ষতিকর ঘনচিনি

প্রবাদ আছে, খলের ছলের অভাব হয় না। চিনি ভোজ্য কিন্তু ঘনচিনি নামে পরিচিত রাসায়নিক বস্তুটি মানুষের জন্য অভোজ্য। কিন্তু ভিন্ন নামে এর আমদানি ও বিপণন চলছে। রোজা শুরু হয়েছে। এ সময় চিনির ব্যবহার বেড়ে যাবে। রোজাদারদের খাদ্যে ভেজাল ও দূষণ ঠেকানো তাই জরুরি। ঘনচিনি প্রতিরোধ দিয়েই এটা শুরু হোক।
বাংলাদেশে ঘনচিনি আমদানি নিষিদ্ধ। সাধারণ ভোক্তারও এর প্রয়োজন নেই। তাহলেও অতি মুনাফার মোহে একশ্রেণির ব্যবসায়ী আইসক্রিম, কেক ইত্যাদি তৈরিতে এই চিনি ব্যবহার করেন বলে জানা গেছে। এক কেজি প্রাকৃতিক চিনিতে যত মিষ্টতা, ঘনচিনিতে তা মিলবে ৩০ থেকে ৫০ গুণ বেশি। অতি মুনাফাখোরদের কাছে এটাই এর আকর্ষণ। জনস্বাস্থ্যের বিবেচনায় সরকারকে এর বাজারজাতকরণ বন্ধ করতে হবে।
অন্য নামে ঘনচিনি আমদানি?চট্টগ্রাম বন্দর দিয়েই ঘনচিনি আমদানি করা হয়ে থাকে। ইতিমধ্যে চট্টগ্রাম বিনিয়োগ বোর্ডের চেয়ারম্যান চট্টগ্রামের কাস্টমস কমিশনারকে ঘনচিনির চালান আটকানোর অনুরোধ করেন। মুশকিল হলো, ঘনচিনি দেখতে সাইট্রিক অ্যাসিড ও সোডিয়াম সাইট্রেটের মতো। এ জন্যই এই দুই দ্রব্যের নামে ঘনচিনি আমদানি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, খাদ্যের সহজলভ্যতা বাড়লেও বিশুদ্ধ অথবা দেহের জন্য সহনীয় খাদ্যপণ্য ক্রমেই দুর্লভ হয়ে উঠছে। এর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ প্রভাব পড়ছে জনগণের স্বাস্থ্য নিরাপত্তার ওপর।
ঘনচিনি আলামত মাত্র। তেল থেকে মসলা, সবজি থেকে মাছ পর্যন্ত বিবিধ প্রকারের ভেজাল, দূষণ ও ক্ষতিকর খাদ্যপণ্যে বাজার সয়লাব। কিছুদিন আগে ভারতে ম্যাগি নুডলসে সিসা পাওয়ার অভিযোগ উঠলে কর্তৃপক্ষ পরীক্ষাপূর্বক পণ্যটি সে দেশে নিষিদ্ধ করে। বিএসটিআই, জনস্বাস্থ্য ও খাদ্যপণ্যের দেখভাল করার যারা দায়িেত্ব, তাদের আরও বেশি উদ্যোগী হওয়া জরুরি। খাদ্যবাজার এক সার্বক্ষণিক চলমান বিষয়, সে কারণে এ ব্যাপারে সতর্কতাও হতে হবে সর্বব্যাপী ও সার্বক্ষণিক। কেন এ রকম উদ্যোগ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা সারা বছর চলে না?