গুলিবিদ্ধ আওয়ামী লীগ নেতা

টাকাপয়সার ভাগ-বাঁটোয়ারা যেখানে আছে তা ময়লার, মাদকের বা চাঁদার টাকা যা-ই হোক না কেন, তা নিয়ে দ্বন্দ্ব-সংঘাত এমনকি গোলাগুলি করতেও ক্ষমতাসীন দলের লোকজনের দ্বিধা আছে বলে মনে হয় না। যেভাবেই হোক, টাকা কামানোর লোভ তাঁদের এতটাই পেয়ে বসেছে যে তাঁরা এখন নিজ দলের নেতা–কর্মীদের ওপর চড়াও হচ্ছে। মঙ্গলবার রাতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয়ের সামনে আওয়ামী লীগ নেতার গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনা এর একটি উদাহরণ মাত্র।
গুলিবিদ্ধ শফিকুল ইসলাম স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এ ঘটনার জন্য তিনি যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন, তিনি একই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর আবদুল বাসিত। শফিকুলের অভিযোগ, পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের বক্তব্যে এটা পরিষ্কার যে মাদক ব্যবসা, জুয়া, চাঁদাবাজি ও সেখানকার ময়লার টাকার ভাগাভাগি—এসবই দ্বন্দ্বের কারণ।
একটি স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনারের কার্যালয়, যেখান থেকে স্থানীয় জনগণের সেবা পাওয়ার কথা, সেটিকে ঘিরে অপরাধী চক্রের সক্রিয়তা কিংবা গোলাগুলির ঘটনা স্থানীয় জনপ্রতিনিধির সংজ্ঞাই পাল্টে দিয়েছে। প্রথম আলোর প্রতিবেদন বলছে, স্থানীয় লোকেরা অভিযোগ করেছেন, মানিকনগর, মুগদা ও সবুজবাগের বাসিন্দাদের বাড়ি করতে ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের লোকজনকে চাঁদা দিতে হয়।
এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। তবে কাদের আসামি করা হয়েছে, তা পুলিশ বলছে না ‘তদন্তের স্বার্থে’। আমরা আশা করব, এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত ও ধরার ক্ষেত্রে পুলিশ অন্য কোনো ‘স্বার্থ’ বিবেচনায় নেবে না। একই সঙ্গে তারা এলাকায় মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণে এগিয়ে আসবে। অন্যদিকে সরকারি দল আওয়ামী লীগকেও দলের নেতাদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অপকর্মে যাঁরা লিপ্ত আছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে বলে আশা করি। দুর্জন থাকার চেয়ে না থাকা ভালো।