বাংলাদেশ নিয়ে ভারত-মার্কিন স্নায়ুযুদ্ধ

কার্টুন: তুলি
কার্টুন: তুলি

যদি একদিন প্রমাণ মেলে যে আসন্ন নির্বাচনে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশবিষয়ক কথিত সম্ভাব্য অবস্থান দুই বড় দলের সমঝোতার পথে বাধা হয়েছিল, তবে তা জাতিগত গভীর অনুশোচনার কারণ হতে পারে।
দুই দলের দুটি অভিন্ন নির্বাচনী বৈশিষ্ট্য। এক. নির্বাচনী বছরে রক্তস্নান। গত চার নির্বাচনী বছরে গড়ে খুন ২৪৩। দুই. ভারত ও আমেরিকার করুণা ভিক্ষা করা। ২০০৬ সালে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে সংলাপে বসতে আব্দুল জলিল প্রস্তুত। ক্ষমতাসীন আবদুল মান্নান ভূঁইয়াকে ‘সার্বভৌমত্ব’ রোগে ধরল। দূতের বাসায় বৈঠক হলো না। ভারত এ থেকে তফাতে থাকে। তবে নির্বাচনে সহায়তার উড়ো খবর ভারতকে ঘিরেই ওড়ে।
২০০১ সালে নির্বাচন হলো। দুই বছর পর ভারতের এক বর্ষীয়ান সাংবাদিক ঢাকায় এলেন। এক শীর্ষ নেতার সঙ্গে একান্তে দেখা করলেন। ক্ষুব্ধ নেতা বললেন, বিএনপিকে এনেছেন, ঠেলা সামলান। তিনি দিল্লি ফিরলেন। ভারতীয় জ্যেষ্ঠ নেতার সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন। পরে ওই সাংবাদিক আবার ঢাকায় এলেন। তিনি তখন ওই ভারতীয় নেতার হিন্দি সংলাপ আরেক জ্যেষ্ঠ বাংলাদেশি সাংবাদিকের কাছে রসিয়ে বয়ান করলেন। বাংলাদেশ নেতার আক্ষেপ শুনে ওই ভারতীয় নেতা হতবাক।
লন্ডনের প্রভাবশালী দি ইকোনমিস্ট (৩০ জুলাই ২০১১) ২০০৮ সালের নির্বাচনে ‘ভারতীয় অর্থ ও পরামর্শে আওয়ামী লীগের বিজয়’ লাভের তথ্য দিল। বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনি বললেন, এটা অপপ্রচার। অকাট্য যুক্তি দিলেন, মানুষের ভোটেই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু দুই বড় দল আসলেই কেবল মানুষের ভরসা করে না। মানুষ এক-এগারোকে স্বাগত জানিয়েছিল। দুই দলের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ফলে এসেছিল এক-এগারো। অথচ বলা হচ্ছে, নাগরিক সমাজ কূটনীতিকদের ঘাড়ে চড়িয়ে সেটা এনেছে।
দুই নেত্রীর জন্য বিদেশিদের দ্বারা প্রভাবিত না হওয়া এখন একটা বড় চ্যালেঞ্জ। ঘটনা ঘটতে নয়, ঘটনা ঘটার পরে তাঁরা নিশ্চিতই ভূমিকা রাখতে পারেন।
টাইমস অব ইন্ডিয়ায় ইন্দ্রানী বাগচীর একটি প্রতিবেদনে বাংলাদেশের নির্বাচন নীতি প্রশ্নে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বিভক্তির খবরটি সামগ্রিকভাবে বিবেচনায় নিতে হবে। ইউএনবি ওই প্রতিবেদনটি টাইমস অব ইন্ডিয়ার বরাতে ওই দিনই ঢাকায় পরিবেশন করেছে। এরপর সুবীর ভৌমিকও মোটামুটি একই বার্তা পৌঁছে দেন। ইন্দ্রানী বাগচী টাইমস অব ইন্ডিয়ার কূটনৈতিক সম্পাদক। ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে তেলআবিবে এক সম্মেলনে তাঁকে ভারতের নয়া বিদেশনীতি সম্পর্কে বলতে শুনি (ইউটিউবে): ‘ভারত তার প্রথম ৫০ বছর জোটনিরপেক্ষ নীতি আঁকড়ে ছিল। এরপর তার নয়া বিদেশনীতির লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় স্বার্থ, যা একান্তই রাজনৈতিক বিষয়নির্ভর নয়। এটা অনেকটা জটিল।’ আমাদের কাছে হঠাৎ বাংলাদেশসংক্রান্ত নীতিনির্ধারণে দিল্লি ও ওয়াশিংটনের মতবিরোধ প্রকাশ্য হওয়ার বিষয়টি বেশ জটিল ঠেকছে।
এটা ঠিক যে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক শেখ হাসিনার আমলে এমন এক চূড়া স্পর্শ করেছে, যা অটুট রাখতে দিল্লি একটা বিশেষ প্রবণতা দেখাতে পারে। এর ফলে তথাকথিত ‘সংবিধান অনুযায়ী’ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ কিংবা ভারত কে কাকে বেশি উৎসাহিত বা ভরসা করছে, সেটা অনুমাননির্ভর কিন্তু যথেষ্ট কৌতূহলোদ্দীপক বিষয়।
ঈদুল আজহার ছুটিতে ঢাকায় একজন সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত এক নৈশভোজে ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে গত সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ডোন্ট ডিস্টার্ব হাসিনার মতো একটা ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে। ওবামা তেমন আগ্রহ দেখাননি। ওবামা বলেছেন, বাংলাদেশ বিষয়ে তিনি এখন ওয়াকিবহাল নন। পরে একটি কূটনৈতিক সূত্র প্রথম আলোকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। সূত্রটি আরও বলেছে, ওই সময় ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা উপদেষ্টারাও বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলেছেন। এখন দিল্লির সংবাদপত্রে লেখালেখিতে এটা স্পষ্ট যে ভারত আগামী নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোটের প্রত্যাবর্তনকে তার জাতীয় নিরাপত্তার দৃষ্টিকোণ থেকে গভীর উদ্বেগজনক বিবেচনা করছে।
তাঁদের এই উদ্বেগ যুক্তিসংগত, কিন্তু তারা যদি সে কারণে শেখ হাসিনাকে ভুল সংকেত দেয় কিংবা শেখ হাসিনা ভুল সংকেত নিতে পারেন ভেবেও নিরুদ্বিগ্ন থাকেন, তাহলে তা যুক্তিসংগত নয়, এমনকি তা তার নিজের ও পরীক্ষিত মিত্রের জন্যও মারাত্মক।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর ওবামা-মনমোহন শীর্ষ বৈঠকের যৌথ ইশতেহার অনুযায়ী সফরটি ছিল বেশ সাফল্যজনক। ২০১৪ সালে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে (বঙ্গোপসাগরসহ) মার্কিন নেতৃত্বাধীন নৌ-মহড়ায় ভারতের অংশগ্রহণকে স্বাগত জানান ওবামা। আফগানিস্তানের ক্রান্তিকালে (২০১৫-২০২৪) তাঁরা একত্রেই থাকবেন বলে উল্লেখ আছে। অন্যদিকে ২০১৪ সালের পরে ন্যাটোর সেনারা কোথায় যাবে, সেটা এক জ্বলন্ত প্রশ্ন।
বাংলাদেশ সংকট প্রসঙ্গে গত ১ নভেম্বর ভারতের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার সন্দীপ চক্রবর্তী ঢাকেশ্বরী মন্দিরে ‘কোনো বিদেশি শক্তির কোনো দরকার নেই। বাইরের লোকের দরকার নেই’ মর্মে উল্লেখ করেন। কিন্তু তিনি এটাও জোর দিয়ে উল্লেখ করেন যে ‘বাংলাদেশ ‘জিও স্ট্র্যাটেজিক্যালি’ গুরুত্বপূর্ণ দেশ। দক্ষিণ এশিয়া নয়, এশিয়ার দৃষ্টিকোণ থেকেও।’ এই জিও-স্ট্র্যাটেজির দুই অবিসংবাদিত গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় তাদের নিজ নিজ জাতীয় স্বার্থে পরিচালিত হবে, সেটাই স্বাভাবিক।
আওয়ামী লীগের প্রতি ভারতের ঐতিহাসিক পক্ষপাত এবং বিএনপির প্রতিও তার ঐতিহাসিক সন্দেহ-সংশয় থাকাটাই স্বাভাবিক। সেনাছাউনিতে জন্মের মতো বিএনপির আরেকটি কলঙ্কতিলক হলো অন্ধ ভারতবিরোধিতা। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিএনপি এই পাকিস্তানি সামরিক জীবাণুর সংক্রমণ থেকে নিজেকে কিছুটা মুক্ত করেছে কি না, তা-ও দ্বিধাহীন নয়। অন্তত তা ততটা নিশ্চয় নয়, যা হয়তো এখন ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশনার ও মার্কিন রাষ্ট্রদূতের অবস্থানকে অভিন্ন বা কাছাকাছি এনে দিতে পারে। বিএনপি যে এ বিষয়ে একেবারে উদাসীন, তা-ও মনে হয় না। আবার তারা ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতা সম্পর্কে সম্যক ওয়াকিবহাল এবং সে মতে অব্যাহত ও সামঞ্জস্যপূর্ণ সংবেদনশীলতা দেখিয়ে চলতে সামর্থ্যবান, তা-ও প্রতীয়মান হয় না।
যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা এখন ‘সংবিধান অনুযায়ী’ কথাটায় জোর কম দিয়ে ‘সকল দলের অংশগ্রহণ’কে জোর দিচ্ছে। আর ভারত ‘সকল দলের’ কথাটায় জোর কম দিয়ে ‘সংবিধান অনুযায়ী’ কথাটায় বেশি জোর দিচ্ছে।
চীনকে বাগে রাখা এবং এশীয় ব্যাঘ্রের সম্ভাব্য উত্থান সামনে রেখে দিল্লি-ওয়াশিংটন সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনেক ঘনিষ্ঠ হয়েছে। ওবামা-মনমোহনের কথায়, ‘দুই দেশ এখন এতটাই ঘনিষ্ঠ, যা ৬৬ বছরে কেউ দেখেনি।’ আসলে অনেক কণ্টকিত বিষয় জিইয়ে রেখে দিল্লি-বেইজিংয়ের সঙ্গে, তেমনি বেইজিং-ওয়াশিংটনের সঙ্গে উষ্ণ কর্মসম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে।
তিস্তা চুক্তি আর সীমান্ত চুক্তির অনুসমর্থন এখন হবে না। আগামী ডিসেম্বরে রাজ্যসভায় বিলটি বড়জোর উত্থাপন করা হতে পারে। ভারতের সঙ্গে আর কবে কোন নদীর চুক্তি দেখব জানি না। তবে গত মে মাসে চীনা প্রধানমন্ত্রী লি কেকিয়াংয়ের দিল্লি সফরকালে ব্রহ্মপুত্রসহ অভিন্ন নদীর পানির ভাগাভাগি নিয়ে বিরাট অগ্রগতি ঘটেছে। হয়তো তারা চুক্তি করবে। আমরা তখনো চেয়ে চেয়ে দেখব। ব্রহ্মপুত্রের মূল স্রোতোধারার ওপরের তিনটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের বিষয়ে ভারতকে তথ্য সরবরাহে চীন একটি সমঝোতা স্মারকে সই করেছে। তা কার্যকরও হয়ে গেছে। আর আমরা টিপাইমুখের মতো অনেক কিছুতেই জলবৎতরলং তথ্য পাই না। বাংলাদেশের রাজনীতিতে চীনের সাম্প্রতিক প্রকাশ্য নয়া সক্রিয়তা দেখে অবাক হওয়ার কিছু নেই। আঞ্চলিক রাজনীতিতে এটা বাংলাদেশের গুরুত্ব বৃদ্ধির নির্দেশক।
সুবীর ভৌমিকের লেখায় এসেছে, মজীনার সঙ্গে কথা বলে ভারতীয় কূটনীতিকেরা তাঁকে ‘বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য’ ঠাহর করেছেন। ভারতেরও কোনো পত্রিকা সম্পাদকীয় লিখে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল করাকে স্বাগত জানায়নি। সমর্থন দেয়নি। এমন কোনো লেখালেখি আমি অন্তত পড়িনি। ঢাকায় তাদের মতের সঙ্গে আর কোনো দেশের কূটনীতিক আছেন কি না, তা অনুমান করতে পারি না। দীপু মনি সবশেষ কূটনীতিকদের ডাকলেন। সেখানে কেউ তাঁর কাছে কিছু জানতে চাননি। ২ নভেম্বর দি ইকোনমিস্ট একই সুরে বোল তুলেছে। তারা বলেছে, শেখ হাসিনা রাশিয়া, শ্রীলঙ্কা ও ভেনেজুয়েলার ‘সংখ্যাগরিষ্ঠ’ নেতাদের মতোই সংবিধান শুধরে নিজের শাসনকে পাকাপোক্ত করার পথে গেছেন। উভয় নেত্রীর তিক্ততায় চাবুকের কশাঘাত হানতে সাময়িকীটি ভোলেনি। দি ইকোনমিস্টও ‘বিএনপি স্থায়ী কমিটির মুখপাত্র’ হয়ে বলল: ‘জরিপ দেখাচ্ছে, বেগম খালেদা জিয়া জনসমর্থন পাচ্ছেন। অভাবনীয় হলো, তাঁর বর্তমান অবস্থানের (হাসিনাকে নির্বাচনকালীন সরকারপ্রধান না রাখতে) উচ্চ নৈতিক ভিত্তি রয়েছে।’
ভারতীয় নীতিনির্ধারকেরা বাংলাদেশের বাস্তবতা বুঝেও না বোঝার ভান করছেন, নাকি কল্পলোকে বিচরণ করছেন, সেটা এক প্রশ্ন। ২ নভেম্বর একজন ওয়াকিবহাল ভারতীয় সাংবাদিকের সঙ্গে টেলিফোনে দিল্লিতে কথা হয়। তাঁকে বলি, তর্কের খাতিরে ধরে নিই, ভারতের উদ্বেগ সঠিক। তাহলে তার প্রতিকার কী? ভারত ‘সংবিধান অনুযায়ী’ নির্বাচন করতে চাইলে তার আনন্দ বা সন্তুষ্টি টেকসই হবে কি না। ওই সাংবাদিক আমাকে এর একটি ঝরঝরে ব্যাখ্যা দিলেন। বললেন, ‘সংবিধান তো নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই যথাযথভাবে সংশোধন করেছেন। তাহলে এখন সে অনুযায়ী নির্বাচন হতে দিলে তা গণতান্ত্রিক হবে না কেন? আর সেই নির্বাচনেও যদি বিএনপি আসে, তাহলে ভারত তাকেই মেনে নেবে। কিন্তু বিএনপির প্রতি তার আপত্তি থাকবেই।’
আমি তাঁকে বললাম না যে বাকশাল এর চেয়েও নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় পাস হয়েছিল। বিরোধী কণ্ঠ পঁচাত্তরের মতোই ২০১১ সালে ‘সংখ্যাগরিষ্ঠতা’ দিয়ে স্তব্ধ করা হয়েছে। ভারতীয় নীতিনির্ধারকেরা বিশেষভাবে স্মরণ রাখবেন, বেয়াড়া রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করতে ইন্দিরা গান্ধী ভারতের ‘সংবিধান অনুযায়ী’ জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন। এই ভারত সেদিন সম্ভবত বাকশালকেও একই যুক্তিতে বাহবা দিয়ে থাকবে। রাজনৈতিক মৃত্যুর নয়, দৈহিক মৃত্যুর বিষয়ে তারা মুজিবকে সতর্ক করেছিল। চতুর্থ ও ১৫তম সংশোধনী পাসের ঘরানায় আমি
কোনো তফাত দেখি না। পঁচাত্তরের জানুয়ারি-মার্চের সেই চরম সময়েও ভারতীয় কূটনীতিকেরা মার্কিনদের সঙ্গে সেনাবাহিনীতে অসন্তোষসহ মুজিব সরকারের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য অভ্যুত্থান নিয়ে মতবিনিময় করেছিল। সাউথ ব্লকে ১৫ আগস্টেও তাদের ক্যু নিয়ে আলোচনারত দেখা গেছে।
ভারতের দাওয়াতে ড্যান মজীনা দিল্লি গেছেন, নাকি মজীনাই নিজের গরজে বাংলাদেশ নিয়ে কথা বলতে দিল্লি যান। এখন এ নিয়ে দুই পক্ষ দুই রকম বলছে। তবে প্রথম আলো ও ইন্দ্রানী বাগচীর লেখায় নির্দিষ্টভাবে তথ্য আসে যে মজীনা ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। অথচ গত ৩১ অক্টোবর ভারতীয় মুখপাত্র প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ‘ওই রাষ্ট্রদূত সাউথ ব্লকের মধ্যম পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন।’
ওই মুখপাত্র প্রসঙ্গ ঢাকতে চান। তিনি তাঁর অস্বস্তি চাপা দিতে পারেননি। কারণ, তিনি বলেন, ‘ভারতে কোনো একটি দেশের রাষ্ট্রদূত সফরে এলে সে বিষয়ে কিছু বলা আমাদের দায়িত্ব নয়। এটা এমন কিছু নয়, যা অস্বাভাবিক।’ তারপর মুখপাত্রটি ভারতীয় মর্যাদা সচেতনতা প্রকাশ করে বলেন, ভারতে আসা বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে তার নিয়মিত আলাপ-আলোচনা হয়ে থাকে। মুখপাত্রটি এরপর ঝুঁটিওয়ালা মোরগ বনে যান। বলেন, ‘এর কারণ, ওই সব দেশের অনেক দেশ ভারতকে দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষস্থানীয় খেলোয়াড় হিসেবে দেখে থাকে এবং তারা আমাদের মনোভাব সম্পর্কে নিশ্চিত হতে চায়।’ সুতরাং আমরা দেখি, এক খেলোয়াড়ের বাড়িতে আরেক খেলোয়াড় গেছেন।
আগামীকাল দ্বিতীয় কিস্তি
মিজানুর রহমান খান: সাংবাদিক।
[email protected]