বিচার না হলে পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা

রানা ভবন ট্র্যাজেডি জাতির সংবেদনে প্রবলভাবে নাড়া দিয়েছিল, প্রবল প্রতিক্রিয়া হয়েছিল আন্তর্জাতিক মহলেও। কিন্তু তিন বছর পর আমরা দেখতে পাচ্ছি, এত বিপুলসংখ্যক মানুষের হতাহত হওয়ার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচারকাজ শুরুই হয়নি। হতাহত ব্যক্তিদের পরিবারগুলো অর্থসহায়তা পেয়েছে বটে, কিন্তু ক্ষতিপূরণের বিষয়টি এক বছর ধরে আদালতে আটকে আছে। সে সময় আদালত স্বতঃপ্রণোদিতভাবে দেওয়া এক রুলের শুনানির একপর্যায়ে মন্তব্য করেছিলেন, রানা প্লাজা ধসের ঘটনা কোনো দুর্ঘটনা নয়, ওটা একটা অপরাধ। দুঃখজনক হলো, ক্ষতিপূরণের মামলার শুনানি হচ্ছে না।

‘শ্রমিকদের পরিকল্পিতভাবে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে’—এই অভিযোগে রানা প্লাজার মালিক ও বেশ কয়েকজন সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দায়ের করা একটি মামলার বিচারকাজও শুরু হয়নি। ইমারতবিধি না মেনে রানা প্লাজা নির্মাণ করা হয়েছে—এই অভিযোগে দায়ের করা অন্য মামলাটিরও অবস্থা একই। ভুক্তভোগী পক্ষ দরিদ্র ও দুর্বল, আসামিপক্ষ ধনী ও প্রভাবশালী—এ কারণেই কি ন্যায়বিচার মিলবে না?

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির পর দেশি-বিদেশি চাপের মুখে শিল্পকারখানায় কাজের পরিবেশ উন্নত ও নিরাপদ করা, শ্রমিকদের অধিকার, শিল্পমালিকদের জবাবদিহি ইত্যাদি ক্ষেত্রে সরকারসহ বিভিন্ন পক্ষ ১০২টি উদ্যোগ নিয়েছিল, যার ৭৭ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে এখনো অনেক কাজ বাকি আছে।

সবকিছুর আগে প্রয়োজন মামলাগুলোর নিষ্পত্তি ও দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত করা; নইলে এমন বিরাট মাত্রার ট্র্যাজেডির পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা থেকেই যাবে। অনেক কালক্ষেপণ হয়েছে, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার সব বাধা অবিলম্বে সরানো হোক।