কুমিল্লার ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনুর ডিএনএ প্রতিবেদনে অপরাধে তিনজন জড়িত ছিলেন বলে িনশ্চিত করা হয়েছে। হত্যার আগে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে বলেও জানিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি। এতে ধারণা করা যায় যে ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত এবং অপরাধীরা তাঁদের প্রথম অপরাধ ঢাকতেই দ্বিতীয় অপরাধ সংঘটিত করেছেন।
তনুর মায়ের দাবি, সেনানিবাসের ভেতরে তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর দুজন সদস্য তাঁকে ডেকে নিয়ে যাওয়ার পর তনু ফিরে আসেননি বলেও তিনি অভিযোগ করেছেন। যাঁরা তনুকে ডেকে নিয়েছেন, তাঁদের নামও তিনি বলেছেন। ঘটনার তদন্তে মায়ের এই অভিযোগকে উপেক্ষা করার সুযোগ নেই।
গত ২০ মার্চ তনু খুন হওয়ার পর বিচারের দাবিতে সারা দেশে আন্দোলন গড়ে উঠলেও ময়নাতদন্ত নিয়ে শুরু থেকেই একধরনের লুকোচুরি খেলা চলছে। তনুর লাশ উদ্ধারের পর গত ৪ এপ্রিল যে প্রথম ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দেওয়া হয় তাতে তাঁর মাথার পেছনের জখমের কথা গোপন করা হয় এবং গলার নিচের আঁচড়কে পোকার কামড় বলে উল্লেখ করা হয়। সর্বশেষ ডিএনএ রিপোর্ট প্রমাণ করে যে সেই ময়নাতদন্তের রিপোর্টটি ছিল মনগড়া। আর প্রথম ময়নাতদন্ত নিয়ে বিতর্ক ওঠার পর পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত দ্বিতীয় দফা লাশের ময়নাতদন্ত করার নির্দেশ দিলেও এখন পর্যন্ত সেই প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা আদালতের নির্দেশকেও অমান্য করে চলেছেন।
একজন কলেজছাত্রী ও নাট্যকর্মী এভাবে ধর্ষণ ও খুনের শিকার হবেন, আর অপরাধীরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাবেন, সেটি কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না। অপরাধীকে দেখতে হবে অপরাধী হিসেবেই। তাঁর পেশা বা পদবি বিবেচ্য হতে পারে না। ব্যক্তির অপরাধের জন্য যেমন কোনো প্রতিষ্ঠান বা বাহিনী অভিযুক্ত হতে পারে না, তেমনি কোনো বাহিনীর সদস্য বলে কারও পার পাওয়ারও সুযোগ নেই।
অবিলম্বে তনুর দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন প্রকাশ করা হোক।