শান্তি ও কল্যাণ আসুক সবার জীবনে

শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতটি মুসলমানদের কাছে লাইলাতুল বরাত। লাইলাতুল বরাতের অর্থ মুক্তির বা নিষ্কৃতির রজনী। এই রাতে আল্লাহ ধর্মপ্রাণ মুসলমানের সব পাপ ক্ষমা করে দেন। সারা জীবনের দোষ–ত্রুটি, পাপ ও অন্যায়ের জন্য ক্ষমা প্রার্থনার এই রাত নৈতিক চরিত্র গড়ে তুলতে উদ্বুদ্ধ করার রাতও। এ রাতেই আল্লাহ পরবর্তী বছরের জন্য মানবজাতির রিজিক ও ভাগ্য নির্ধারণ করেন। বছর ঘুরে আবার সমাগত এই পবিত্র রাত।
মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) এই রাতে নফল ইবাদতে নিমগ্ন থাকতে মুসলমানদের নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। এভাবেই মহান আল্লাহর ক্ষমা লাভ করা সম্ভব। মুসলমানদের জন্য এটি উৎসবের রাতও বটে, কারণ মহান আল্লাহ এই রাতে করুণার ভান্ডার খুলে দেন। সামর্থ্য অনুযায়ী ভালো খাবার তৈরি করা এবং প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন ও দরিদ্র ব্যক্তিদের মধ্যে তা বিতরণের মাধ্যমে এ উৎসব পালিত হয়ে থাকে। কিন্তু উৎসব লোক-দেখানো আনুষ্ঠানিকতায় পরিণত হলে এই পবিত্র রাতের মহিমা ক্ষুণ্ন হয়। এ রাতে গরিব-দুঃখীদের দান-খয়রাত করার মাধ্যমে তাদের প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়ানো উচিত৷
একসময় শবে বরাতের সন্ধ্যা ও রাতে পটকা ও আতশবাজি পোড়ানোর চল ছিল। এর ফলে এ রাতের পবিত্রতা ও ভাবগাম্ভীর্য ক্ষুণ্ন হয়, রাতব্যাপী ইবাদতে নিমগ্ন মানুষদের ইবাদতে ব্যাঘাত ঘটত, কখনো কখনো ঘটত দুর্ঘটনাও। এখন অবশ্য আতশবাজি কমেছে, কিন্তু পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। সবার সহযোগিতায় তা পুরোপুরি বন্ধ করা উচিত। পাড়া-মহল্লায় অভিভাবকেরা সতর্ক থাকলে শিশু-কিশোরদের এসব থেকে বিরত রাখা সম্ভব, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও ভূমিকা রাখতে পারে।
পবিত্র লাইলাতুল বরাতে নিজের জন্য প্রার্থনার পাশাপাশি দেশ ও বিশ্বমানবতার মঙ্গলের জন্যও সর্বশক্তিমানের দয়া কামনা করা হয়৷ শবে বরাতে আমরা একটি সুখী, সুন্দর, শান্তিময় পৃথিবীর জন্য প্রার্থনা করি। পবিত্র এই রাতের মহিমায় শান্তি ও কল্যাণ আসুক সবার জীবনে।