এইডা নাকি এমপির বাড়ি!

শুরু করি একটা মজার অভিজ্ঞতা দিয়ে। ঘরের কাজে সাহায্যের জন্য একজন গৃহকর্মী খুঁজছি শুনে আমার এক পরিচিতা পাঠাল এক মেয়েকে। পাঠানোর আগে আমার বিষয়ে তাকে কী বলেছে ঠিক জানি না, তবে সে আসার ব্যাপারে এতই উৎসাহী যে আমার পরিচিতাকে জানিয়েছিল, বিনা বেতনে হলেও সে আমার বাসায় কাজ করতে চায়। আমি শুনে একটু অবাক হলেও বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে ভাবিনি। এমনকি আসার আগে ফোনে যখন আমার ঠিকানা বোঝাচ্ছিলাম, তখনো তার উচ্ছ্বাস আর উৎসাহ দেখে রীতিমতো ভড়কে যাচ্ছিলাম আমি।

মেয়েটি এল, বাড়ি ঘুরে দেখল। লক্ষ্য করলাম তার চেহারার পরিবর্তন। যে উচ্ছ্বাস তার কণ্ঠে আমি আগে দেখেছি, তা গায়েব। আসার দুই ঘণ্টার মধ্যে জানাল, চাকরি করবে না সে, তার ভালো লাগছে না। কাজ শুরু হওয়ার আগেই কী ভালো লাগল না, আমি জানি না। পরে আমার রান্নার মেয়েটি জানাল, নতুন আসা মেয়েটি নাকি তাকে বলেছে, ‘এইডা নাকি এমপির বাড়ি! আমগো বাড়ির চেয়ারম্যানের ঘরও তো এর থিকা অনেক সুন্দর। অনেক দামি দামি জিনিস আছে।’

ঘটনাটি হাসাহাসির মধ্য দিয়েই শেষ হতে পারত, কিন্তু আমার মনে হলো বিষয়টি ঠিক এত সরল নয়। মেয়েটি কী আশা করেছিল, অনুমান করতে পারি। কিন্তু আশাটি কোন পর্যায়ে গেলে বিনা বেতনে চাকরি করতে চায় আর মোহভঙ্গ কতটা হলে দুই ঘণ্টার মধ্যে তার এত আরাধ্য বাড়ি ছাড়ার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়, সেটা ভাবলে ভয়ই পেতে হয়। সম্ভবত, তার সুদূরতম কল্পনাতেও আমার এলিফ্যান্ট রোডের ভাঙাচোরা ফ্ল্যাট বাড়িটি ছিল না। মোহভঙ্গ হয়েছে সন্দেহ নেই, কিন্তু সে সম্ভবত আমার এমপিশিপ নিয়েই সন্দেহ করে গেছে। এর ঠিক উল্টো ঘটনা ঘটেছে যখন আমি আমার সাংসদ সহকর্মীর ল্যান্ড ক্রুজার ভি-৮-এ লিফট নিয়েছি। মানুষের চোখে বিস্ময়ের সঙ্গে সমীহও কম ছিল না। এই সমীহ স্রেফ দামি একটি গাড়ির প্রতি, আর কিছু না।

সমাজে গত কয়েক বছরে মানুষের মূল্য নির্ণায়ক হয়ে দাঁড়িয়েছে একমাত্র টাকা এবং স্রেফ টাকা। সেই টাকা কোথা থেকে, কী উপায়ে, কোন পথে এল, তাতে কিছু যায়-আসে না। এমনকি টাকাওয়ালা লোকের সান্নিধ্য পাওয়ার লোভ এমনই যে, মানুষ বিনা বেতনেও কাজ করতে রাজি। শেখ সাদির পোশাককে খাওয়ানোর গল্পের মতো। কিন্তু তারপরও বলব, কয়েক বছর আগেও মানুষের কিছু বাছবিচার ছিল। সমাজে যারা দুর্নীতি করে টাকা বানাতো, তাদের মানুষ চিনত, ভিন্ন চোখে তাকাত। নিজের সন্তানকে শাসন করত, বারণ করত সেই বাড়ির ছেলের সঙ্গে মিশতে। ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ মানুষটি নিজেও জানত সমাজে তার গ্রহণযোগ্যতা কোন পর্যায়ে। আর তাই সে সমাজে চলত মাথা নিচু করেই।

এখন তস্করের অর্থনৈতিকব্যবস্থা (ক্লিপ্টোক্র্যাসি) কায়েম হয়েছে। যে যত বড় চোর, তার মাথা তত উঁচু। হাজার কোটি টাকার ছড়াছড়ি চারপাশে এতটাই যে সমাজে এখন মূলত দুটি শ্রেণি রাজত্ব করছে—বিত্তের দিক থেকে উচ্চ এবং নিম্ন, কিন্তু সংস্কৃতি আর মূল্যবোধের দিক থেকে যাদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। সংস্কৃতিমান মধ্যবিত্ত এখন বিলুপ্ত প্রজাতি।

এখন তস্করের অর্থনৈতিকব্যবস্থা (ক্লিপ্টোক্র্যাসি) কায়েম হয়েছে। যে যত বড় চোর, তার মাথা তত উঁচু। হাজার কোটি টাকার ছড়াছড়ি চারপাশে এতটাই যে সমাজে এখন মূলত দুটি শ্রেণি রাজত্ব করছে—বিত্তের দিক থেকে উচ্চ এবং নিম্ন, কিন্তু সংস্কৃতি আর মূল্যবোধের দিক থেকে যাদের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। সংস্কৃতিমান মধ্যবিত্ত এখন বিলুপ্ত প্রজাতি। যেহেতু বিনা পুঁজিতে টাকা বানানোর সবচেয়ে সহজ ব্যবসা এখন রাজনীতি, আর এতে যুক্ত হতে ‘অযোগ্যতা’ ছাড়া তেমন কোনো যোগ্যতার প্রয়োজন হয় না, তাই সমাজে ‘দুই টাকায় বিক্রি’ না হওয়া বেশির ভাগ মানুষ এই ব্যবসায় নেমে পড়েছে। আর তারাই উচ্চবিত্ত শ্রেণির প্রতিনিধি। এখন ব্যবসায়ী মানেই রাজনীতিবিদ আর রাজনীতিবিদ মানেই ব্যবসায়ী।

করোনার আগে হওয়া তথাকথিত শুদ্ধি অভিযান আমাদের চিনিয়েছে সম্রাট, জি কে শামীম, এনু-রুপন, সেলিমসহ বেশ কিছু চরিত্রকে। এরা প্রত্যেকে ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গসংগঠনের তৃতীয় বা চতুর্থ শ্রেণির কর্মী। এই শ্রেণির লোকের ঘরে যদি হাজার কোটি টাকার কাগজ থাকে, তাহলে মেয়েটি যে বলেছিল, তার এলাকার চেয়ারম্যানের ঘরেও আমার বাড়ির চেয়ে দামি জিনিস আছে, তা কি খুব ভুল ছিল? এই নামগুলো কেবল এক-একজন ব্যক্তি নন, তাঁরা এক একটি গোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব করেন। নাম এসেছে কয়েকজনের, কিন্তু সংখ্যা মোটেই কয়েকজনে সীমাবদ্ধ নেই।

গণতন্ত্র, আইনের শাসন, বাক্‌স্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ইত্যাদি সূচকে আমাদের অবস্থান যতই তলানিতে পড়ে থাকুক না কেন, বিত্তশালী বানানোর সূচকে আমরা পেছনে ফেলেছি সবাইকে। ওয়েলথ এক্স-এর প্রতিবেদন বলছে, অতি ধনী বৃদ্ধির হারে বাংলাদেশ প্রথম আর ধনী বৃদ্ধির হারে তৃতীয়। এই অতি ধনী কারা? যাদের সম্পদের পরিমাণ ২৫০ কোটি টাকার বেশি। আর ধনী হচ্ছে তারাই, যাদের সম্পদের পরিমাণ ৮ কোটি থেকে ২৫০ কোটি টাকার মধ্যে। বিষয়টি একবার ভাবুন তো। যে দেশে করোনার পর অর্ধেক জনগোষ্ঠী দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যায় সেই দেশই ধনী, অতি ধনী বৃদ্ধির হারে সবাইকে পেছনে ফেলে চ্যাম্পিয়ন। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি নিয়ে সরকারের গর্বের শেষ নেই। পরিকল্পনামন্ত্রী তো বলেই ফেললেন, আমরা নাকি নিজের অজান্তেই বড়লোক হয়ে যাচ্ছি। মজা তো মন্দ নয়! ২৫০ কোটি টাকার সম্পদের মালিকের সঙ্গে যখন রিকশাচালক, ভ্যানচালক, সবজি বিক্রেতা, দিনমজুর, গৃহকর্মীর আয় যুক্ত হয়, তখন তো সবাই কোটিপতি এবং অবশ্যই নিজের অজান্তেই।

চলছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি যেহেতু অংশ নিচ্ছে না, তাই মার্কায় হওয়া এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ। ‘আমরা আমরাই তো’ ধরনের নির্বাচনে মনোনয়ন নিয়ে এমনই মারামারি যে দলের সাধারণ সম্পাদক পর্যন্ত খাবি খেতে খেতে চোখে শর্ষে ফুল দেখছেন। ভিন্ন মত দমনের সবচেয়ে শক্তিশালী হাতিয়ার ‘রাজাকার’এখন ব্যবহৃত হচ্ছে নিজ দলের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর বিরুদ্ধেই। ক্ষমতাসীন দলের হালুয়া-রুটির বাঁটোয়ারায় নিজের হিস্যা নিশ্চিত করতে অকল্পনীয় অঙ্কের টাকা দিয়ে মনোনয়ন কিনছেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা। টাকা, পেশিশক্তি ইত্যাদি ব্যবহার করে মনোনয়ন বাগানোর পর শুরু হয় প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আর সাধারণ ভোটারদের ভয় দেখানোর পালা। পিটিয়ে পিটিয়ে ভোট আদায়, এলাকা ছাড়ার হুমকি, নৌকার ভোট ওপেনে হওয়া, একে-৪৭ ব্যবহার করার হুমকি থেকে শুরু করে কবরে জায়গা না দেওয়া পর্যন্ত সবকিছুই এর অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ নৌকায় ভোট না দিলে ইহকাল, পরকাল দুটোই শেষ।

এখন আবার শুরু হয়েছে ‘বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতা’র নতুন ট্রেন্ড। উপজেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে শরীয়তপুর সদরের স্থানীয় সাংসদের দাবি ছিল, ‘নির্বাচন হবে না, সবাই সিলেকটেড হবেন’। তাই সেই মনোনীত হওয়া নিশ্চিত করতে রিটার্নিং কর্মকর্তা প্রার্থীর সই জালিয়াতি করে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করতেও দ্বিধা করেননি। ঘটনা কেবল হুমকি–ধমকি আর কোটি টাকা লেনদেনে সীমাবদ্ধ থাকলে ছিল একরকম। কিন্তু ওই যে বললাম, জিততে মরিয়া। এই জেতার খেলায় ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগের নিজ দলের মধ্যে প্রাণ গেছে ৫০ জনের কাছাকাছি মানুষের, আহত ব্যক্তির সংখ্যা কয়েক শ। প্রশ্ন হলো, নির্বাচনে তো হারজিত থাকবেই। স্থানীয় সরকারের সর্বনিম্ন স্তরের এই নির্বাচনে জিততে তবে এত মরিয়া দশা কেন? কেন কোটি টাকার লেনদেন? শুধু স্থানীয় সরকারের মনোনয়ন নিশ্চিতের জন্য এসব হচ্ছে, সেটা নয়। ক্ষমতাসীন দলের কোনো একটি কমিটির পদে যাওয়ার জন্য ভয়ংকর মরিয়া দলের লোকজন। একটি পদ পাওয়ার জন্য বিশাল অঙ্কের টাকার লেনদেন হয়, দ্বন্দ্ব-সংঘাতে হতাহতের সংবাদও নিয়মিতভাবে পাই। সম্প্রতি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘাতে আহত ছাত্রের ‘হাড় নেই, চাপ দেবেন না’ ঘটনার মতো অসংখ্য ঘটনার সাক্ষী আমরা গত কয়েক বছরে। আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় থাকার ১৩ বছরে নিজেদের মধ্যে মারামারিতে নিহতই হয়েছে ছাত্রলীগের অন্তত ১০০ জন।

রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে যখন এমন পরিস্থিতি থাকে দীর্ঘকাল, তখন সেটা ছড়িয়ে পড়তে বাধ্য সমাজের প্রতিটি স্তরে। পড়ছেও সেটা। যেহেতু টাকার উৎস নিয়ে কারও কোনো মাথাব্যথা নেই, তাই যার ক্ষমতায় যতটা কুলায়, সে লুট করে ততটা। কেউ হাজার কোটি, কেউ শতকোটি, কেউ কোটি; আর যার ক্ষমতা ৫০ টাকা লুটের, সে করে সেটাই। সমাজের সব স্তরে অন্যায়, লোভ আর লুটের যে কদর্য রূপ আমরা এখন দেখি, তার একটি ছোট্ট সাম্প্রতিক নজির হতে পারে বগুড়ার শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজের ঘটনা।

যে কারণে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভয়ংকর হানাহানি-খুনোখুনি হচ্ছে, ঠিক একই কারণে হানাহানি-খুনোখুনি হচ্ছে ক্ষমতাসীন দলের কোনো কমিটিতে একটি পদ পেতে। ক্ষমতাসীন দলের কিংবা স্থানীয় সরকারের কোনো একটি পদে থাকা বর্তমান বাংলাদেশে একজন মানুষের হাতে আক্ষরিক অর্থেই ‘আলাদিনের চেরাগ’ তুলে দেয়। অপরিসীম ক্ষমতা-প্রতিপত্তি অর্জন আর বেশুমার টাকা উপার্জনের পথে আর কোনো বাধা থাকে না তাদের। আগে যেমন বলেছিলাম, এসব যায় এমন সব মানুষের হাতে, প্রায় সব ক্ষেত্রে এই বাজারে যারা দুই টাকায়ও ‘বিক্রি’ হওয়ার যোগ্য নন। যেহেতু টাকাই এবং একমাত্র টাকাই এই সমাজে ভোগ তো বটেই, মান-সম্মানেরও একমাত্র নির্ণায়ক, তাই এসব মানুষ এখন সমাজে চলে দৌর্দণ্ড প্রতাপে, মাথা উঁচু করে।

রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায়ে যখন এমন পরিস্থিতি থাকে দীর্ঘকাল, তখন সেটা ছড়িয়ে পড়তে বাধ্য সমাজের প্রতিটি স্তরে। পড়ছেও সেটা। যেহেতু টাকার উৎস নিয়ে কারও কোনো মাথাব্যথা নেই, তাই যার ক্ষমতায় যতটা কুলায়, সে লুট করে ততটা। কেউ হাজার কোটি, কেউ শতকোটি, কেউ কোটি; আর যার ক্ষমতা ৫০ টাকা লুটের, সে করে সেটাই। সমাজের সব স্তরে অন্যায়, লোভ আর লুটের যে কদর্য রূপ আমরা এখন দেখি, তার একটি ছোট্ট সাম্প্রতিক নজির হতে পারে বগুড়ার শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজের ঘটনা। মাত্র ৫০ টাকার জন্য মুমূর্ষু রোগীর মুখ থেকে অক্সিজেন মাস্ক খুলে নিলে দুই মিনিটের মধ্যেই রোগী মারা যায়। জরুরি বিভাগ থেকে ওয়ার্ডে ট্রলি টেনে নেওয়ার জন্য হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় দাবি করে ২০০ টাকা, রোগীর পরিবারের হাতে যথেষ্ট টাকা না থাকায় তাকে ১৫০ টাকা দিলে ঘটে এই বিপত্তি।

ঘটনাটি মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে পড়ে। নেটিজেনরা তীব্র ক্ষোভ-উষ্মা-ঘৃণা উগরে দিতে থাকেন সে লোকটির প্রতি। কিন্তু আমাদের সমাজে এমন মানুষ এবং মানসিকতা কেন তৈরি হয়, তার মূল কারণটি কি, তা কি একবারও ভেবেছি আমরা? পুঁজিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থায় ভোগ কোনো নতুন বিষয় নয়। কিন্তু উন্নত পুঁজিবাদী রাষ্ট্রগুলোতে টাকা সম্মান, শ্রদ্ধা, প্রতিপত্তির একমাত্র নির্ণায়ক হয়ে ওঠেনি, যেমনটি আমাদের এখানে হয়েছে। সেখানে টাকা কোন পথে এল, তার স্বচ্ছ জবাব থাকতে হয়। অন্যদিকে টাকাই দেবতা, টাকাই চূড়ান্ত এখানে, বাকি সব মিথ্যা। সে টাকা ব্যাংক লুট, ঘুষ, মানুষ খুন, চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, চোরাচালান, মানব পাচার, ইয়াবা ব্যবসা যে পথেই আসুক না কেন। এখানে টাকা না থাকাটা ভীষণ লজ্জার, টাকা আসার অবৈধ পথটা একদম লজ্জার না।

রুমিন ফারহানা বিএনপিদলীয় সাংসদ ও হুইপ এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী