সরকারের ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ উদ্যোগের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে প্রযুক্তি খাতে অগ্রগতি ঘটেছে। এটি ডিজিটাল প্রযুক্তির অগ্রযাত্রা ত্বরান্বিত করছে। এরই ধারাবাহিকতায় দেশে ইন্টারনেট সংযোগ, ডিজিটাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস, ই-এডুকেশন, ই-কমার্সের ব্যাপক বিস্তার নতুন প্রজন্মের উদ্যোক্তা শ্রেণি সৃষ্টিতে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ এ খাতের অভাবনীয় উত্থানে মূল চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করেছে, যার একটা উল্লেখযোগ্য অংশ হলো ফাইবার অপটিক নেটওয়ার্ক ও ডিজিটাল প্রকল্পে বিনিয়োগ।
মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল প্লাটফর্ম ব্যবসা-বাণিজ্যকে নতুন রূপ দেওয়ার পাশাপাশি ই-মার্কেটপ্লেস ব্যবসার নতুন ক্ষেত্র তৈরি ও সফটওয়্যার পার্ক এবং ইনোভেশন হাবগুলো প্রযুক্তি বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছে। এই অর্জনগুলো প্রশংসনীয় হওয়া সত্ত্বেও একটি সত্যিকারের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে নতুন নতুন প্রযুক্তির উন্নয়ন ও উদ্ভাবনের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কেননা ডিজিটাল জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি প্রযুক্তিগত দক্ষতা গড়ে তুলতে এটি ভূমিকা রাখবে। ভয়েস প্রযুক্তিকে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে গ্রহণ করতে উদ্বুদ্ধ করে।
প্রযুক্তির সুদৃঢ় কাঠামো: এক নতুন দিগন্তের শুরু
ডিজিটাল প্রযুক্তিতে অর্জিত বাংলাদেশের সাফল্য নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। তবে প্রযুক্তি বিশ্বে ‘স্মার্ট’ জাতি হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার যাত্রা কেবল শুরু। কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছাতে আমাদের অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হবে। স্মার্ট প্রযুক্তিনির্ভর জাতি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে আমাদের এমন কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার সময় এসেছে, যা কেবল দূরদর্শী পরিকল্পনার মাধ্যমেই সম্ভব।
একটি ডিজিটালি সমন্বিত সমাজকে স্মার্ট সমাজে রূপ দিতে স্বাস্থ্যসেবা, পরিবহন, জ্বালানি ও প্রশাসন একটি বৃহত্তর পরিসরে অত্যাধুনিক প্রযুক্তির অন্তর্ভুক্তিমূলক ব্যবহার উৎসাহিত করা প্রয়োজন। এটি কেবল প্রযুক্তিকে প্রয়োজনমাফিক কাজে লাগানোই নয়, বরং এর মাধ্যমে কাঠামো, মতাদর্শ, দৃষ্টিভঙ্গি এবং সামগ্রিক প্রক্রিয়াগুলোর একটি আমূল রূপান্তরও। এই যাত্রাকে সাফল্যমণ্ডিত করতে চাই অবকাঠামোগত সক্ষমতা, খাতভিত্তিক সংহতি, গোপনীয়তা রক্ষা, উন্নয়ন ও গবেষণায় বিনিয়োগ, চলমান শিক্ষণের মাধ্যমে আরও সমৃদ্ধ হওয়ার মতো বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া। একটি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার স্বপ্ন মূলত দেশব্যাপী একটি নিরবচ্ছিন্ন ডিজিটাল সংযোগ স্থাপনের আকাঙ্ক্ষা থেকে প্রসূত, যা দেশের প্রতিটি প্রান্তে এর সুফল পৌঁছে দেবে। পারস্পরিক সহযোগিতার সংস্কৃতির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে বিরাজমান প্রতিবন্ধতকাগুলো দূর করা অনেকাংশেই সম্ভব। সামগ্রিক বিবেচনায় উদ্ভাবনের বিষয়টিকে কেন্দ্রীভূত রেখে ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ডিজিটাল উন্নয়ন ও গবেষণায় বিনিয়োগ, চলমান শিক্ষণের মাধ্যমে আরও সমৃদ্ধ হওয়ার মতো বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দেওয়া।
ডিজিটাল ভিত স্থাপনের পরবর্তী পর্যায়ে একটি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে প্রয়োজন বিভিন্ন খাতে বিরাজমান চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় একত্র হয়ে কাজ করা। একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে সবার আগে নিচের চ্যালেঞ্জগুলো শনাক্ত করা গেলেই প্রযুক্তিকে সবার কল্যাণে কাজে লাগানো সম্ভব।
দায় কি শুধু ফিচার ফোনের?
বিবর্তনশীল প্রযুক্তির দৃশ্যপটে বাংলাদেশে ফিচার ফোন ব্যবহারের প্রবণতা স্মার্ট বাংলাদেশ রূপান্তরে একটি সীমাবদ্ধতা ও বাস্তবতা। একটি অভাবনীয় ডিজিটাল অগ্রগতির যুগেও তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী ও সহজে ব্যবহারযোগ্য এ ফোনগুলো এক বৃহৎ জনগোষ্ঠীর প্রথম পছন্দের ডিভাইস। এহেন পরিস্থিতিতে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেকের হাতেই রয়েছে ফিচার ফোন।
এ বাস্তবতা সত্ত্বেও আমাদের মূল চ্যালেঞ্জ হচ্ছে অসম ডিজিটাল সাক্ষরতা জ্ঞান। ডিজিটাল প্রযুক্তির সুফল থেকে বঞ্চিত সমাজের বয়স্ক জনগোষ্ঠী মনে করে, স্মার্টফোন ব্যবহার করা জটিল ও ঝামেলাপূর্ণ। উদ্বেগের বিষয়, আমাদের মোট জনসংখ্যার এক–চতুর্থাংশের কম ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ। ফিচার ফোন ব্যবহারের এই আশঙ্কাজনক আসক্তি কাটিয়ে সৃষ্ট শূন্যতা পূরণ করতে চাই সঠিক নীতি ও কৌশল। ডিজিটাল সাক্ষরতা শুধু সংযোগ বা যোগাযোগ স্থাপনই নয়, প্রভাব সৃষ্টি করার মতো ডিজিটাল আধেয়, প্ল্যাটফর্ম নেভিগেশন, অর্থবহ ডিজিটাল এনগেজমেন্টের মতো বিষয়গুলোও এর আওতাভুক্ত। মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থা ডিজিটাল সাক্ষরতাকে প্রভাবিত করে। সমাজের অবহেলিত জনগোষ্ঠীকে সাধারণত এই সাক্ষরতা জ্ঞান থেকে বঞ্চিত।
এই বৈষম্যের সমতা আনতে আমাদের এমন এক উদ্ভাবনী কৌশল প্রবর্তন করতে হবে, যা স্মার্টফোন ও ফিচার ফোন ব্যবহারকারী উভয়ের জন্য সমান সুবিধা নিশ্চিত করবে। এটি ডিজিটাল বাংলাদেশ ভিশনের মুখ্য বিষয়। একটি সমন্বিত ডিজিটাল শিক্ষণ প্রক্রিয়া, প্রতিবন্ধকতা দূর ও চলমান শিক্ষার মধ্য দিয়ে একটি জ্ঞানভিত্তিক সংস্কৃতির বিকাশই হতে পারে অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল নবজাগরণের মূলমন্ত্র।
ডিজিটাল সাক্ষরতা অর্জনের সময়োচিত নিয়ামক
স্মার্ট রাষ্ট্রের রূপরেখা বাস্তবায়নের পথে ডিজিটাল রূপান্তরের বিষয়টিকে সর্বজনীন করার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় শিক্ষণের ঘাটতি রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে ভয়েস প্রযুক্তি এক পথপ্রদর্শকের ভূমিকা পালন করতে পারে। এটি ডিজিটাল সুবিধা ও বৃহত্তর পরিসরে জনমানুষের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে, নিবিড় শিক্ষণপ্রক্রিয়া ছাড়া প্রযুক্তির সঙ্গে সাধারণ মানুষের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করবে।
ভয়েস প্রযুক্তি স্পিচ রিকগনিশন ও সিনথেসিসের মিশেলে গড়া যুগান্তকারী এক প্রযুক্তি, যার ভিত্তি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ও ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং (এনএলপি)। আধুনিক বিশ্বে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার যেখানে উন্নয়নের মাত্রা নির্দেশ করে, ভয়েস প্রযুক্তি আমাদের জন্য পরিবর্তিত বিশ্বব্যবস্থায় অসীম সম্ভাবনা বয়ে আনতে পারে। এটি মনুষ্য-কম্পিউটার মিথস্ক্রিয়াকে আরও সাবলীল ও উপভোগ্য করে তোলে। ভয়েস প্রযুক্তি কোন ডিভাইসকে আমাদের কথোপকথন বুঝে প্রতিক্রিয়া জানানোর উপযোগী করে তুলে যোগাযোগ বৃদ্ধি সহজতর করার মাধ্যমে প্রযুক্তির অগ্রগতির সঙ্গে এগিয়ে যেতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
ভাষা ও শিক্ষাগত সীমাবদ্ধতার ঊর্ধ্বে উঠে প্রযুক্তি, টেক্সট-বেইজ্ড ইন্টারফেস ব্যবহারে অক্ষম মানুষদের ক্ষমতায়নে ভূমিকা রাখে। স্বল্প শিক্ষা, ভৌগোলিক অবস্থান বা শারীরিক প্রতিবন্ধকতার শিকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য ভয়েস প্রযুক্তি নতুন সম্ভাবনা নিয়ে আসছে। সবার জন্য ডিজিটাল সেবার সুবিধা উন্মুক্ত করার মধ্য দিয়ে এটি অন্তর্ভুক্তি ত্বরান্বিত করে। কোনো ডিজিটাল শিক্ষণ ছাড়াই কৃষক, উদ্যোক্তা, শিল্পী সবার জন্য ভয়েস প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও সেবায় অ্যাকসেস নিশ্চিত করে। শহুরে এলাকার বাইরে বসবাসরত ফিচার ফোন ব্যবহারকারী অধিকাংশ মানুষের হ্যান্ডসেটে ভয়েস ইন্টারঅ্যাকশনের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ বিদ্যমান। এর ফলে স্মার্টফোনের পেছনে বাড়তি টাকা খরচ না করেই তাঁরা ভয়েস প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারবেন।
নেতৃত্ব অর্জনে আমরা তৈরি তো?
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো ভয়েস প্রযুক্তির বিকাশকে ত্বরান্বিত করেছে। শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের দৌড়ে নেতৃত্ব অর্জনে সবাই উঠেপড়ে লেগেছে।
ইন্ডিয়া ভয়েসভিত্তিক অফলাইন ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থা চালুর পথে রয়েছে, যার উদ্দেশ্য হলো শহর ও গ্রামের মধ্যে বিরাজমান ডিজিটাল সেবার বৈষম্য কমিয়ে আনা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ডিজিটাল অবকাঠামোর ভিত্তি ‘ইউনিভার্সাল পেমেন্ট ইন্টারফেস’ ২০২৩–এর জুলাইয়ে ৩৫ কোটি গ্রাহক ও হাজার কোটি লেনদেনের মাইলফলক স্পর্শ করেছে। তবে সুবিধাবঞ্চিত গ্রামে অপর্যাপ্ত ইন্টারনেট সুবিধা ও কম সাক্ষরতার হারের কারণে এর ব্যবহার এখনো সীমিত। এর সংকট সমাধানে রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া কথোপকথনমূলক পেমেন্ট ব্যবস্থা চালূ করতে যাচ্ছে, যার মাধ্যমে গ্রাহকেরা মৌখিক নির্দেশনার মাধ্যমে লেনদেন করতে পারবেন, যার মূলে রয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত গ্রাহক পরিষেবা।
প্রাথমিকভাবে এই সেবা হিন্দি ও ইংরেজি ভাষায় পাওয়া যাবে। এতে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, মাদ্রাজ উদ্ভাবিত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহৃত হবে ও পর্যায়ক্রমে অন্যান্য প্রদেশের ভাষায়ও এই সেবা পাওয়া যাবে। এ ছাড়াও গ্রাহকেরা ইন্টারনেট ছাড়া ‘নিয়ার ফিল্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি’ ব্যবহার করেও লেনদেন করতে পারবে। এত সব ইতিবাচক দিক সত্ত্বেও, সীমাবদ্ধতা থেকেই যায়। ভারতের অনেক গ্রাম্য এলাকায় ইন্টারনেটের ব্যবহার এখনো সীমিত। তা ছাড়া সার্ভিসটি ব্যবহারকারীর তথ্য সংরক্ষণের নিরাপত্তা ও ভাষাগত ব্যবহার নতুন উদ্বেগের জন্ম দিতে পারে।
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়, ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি, ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, বার্কলের মতো মার্কিন গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং ও ভয়েস প্রযুক্তির উন্নয়নে যুগান্তকারী গবেষণা চালিয়েছে। গবেষণা, উন্নয়ন ও বাজার সম্প্রসারণে বিশাল বিনিয়োগের কারণে আমাজনের ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট এলেক্সাকে বিশ্বে ভয়েস প্রযুক্তির সমার্থক হিসেবেই ধরা হয়। গুগলের শক্তিশালী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা পরিচালিত ‘গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট’ ভয়েস প্রযুক্তির অন্যতম দৃষ্টান্ত, যার মধ্য দিয়ে ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ, ডিভাইস ও সেবার মধ্যে সমন্বয় সাধনে গুগলের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন ঘটেছে।
অ্যাপলে ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট সেরিতে অ্যাপলের সক্ষমতা বাড়াতে প্রতিনিয়ত বিনিয়োগ করে যাচ্ছে। মাইক্রোসফটের কর্টানা ও আইবিএমের ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্ট ওয়াটসন উন্নততর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যবহার করে গ্রাহকদের জন্য ভয়েস সক্রিয় অ্যাসিস্ট্যান্টের সেবা দিয়ে থাকে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় সেরা হিসেবে পরিচিত ‘ওপেন এআই’ ভয়েস প্রযুক্তির ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজকে বোধগম্য করায় এবং এর সক্ষমতা সৃষ্টিতে বিশেষ অবদান রেখেছে।
চীনে বাইডু ভয়েস প্রযুক্তি ও ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং খাতে বিশাল বিনিয়োগ করেছে। বাইডুর ভয়েস অ্যাসিস্ট্যান্টের ভূমিকায় আছে অপারেটিং সিস্টেম ডুয়ারওএস। ভয়েস প্রম্পটে গাড়ি চালানো, ব্যবসা-বাণিজ্যসহ আরও অনেক ক্ষেত্রে বাইডুর সার্চ ইঞ্জিনে কথোপকথননির্ভর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রবর্তনের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।
আমরাও সমানতালে এগিয়ে চলেছি। ভয়েস প্রযুক্তিতে বিশেষায়িত বাংলাদেশি টেক-বিস্ময় ‘হিসাব’ প্রযুক্তি বিশ্বে নিজের অবস্থান মজবুত করে চলেছে। হিসাব, ভয়েস টেকনোলজি ও কনভারসেশনাল এআই প্রযুক্তিতে বিশেষায়িত একটি দেশীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান। হিসাবের প্রযুক্তি বাংলাভিত্তিক লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল দ্বারা পরিচালিত, যা হিসাবকে বাংলায় পরিচালিত দেশের প্রথম ইঞ্জিনের স্বীকৃতি এনে দিয়েছে। বিশ্বের ২৭টি রাষ্ট্রে হিসাবের পেটেন্ট ৫৪টি, যা হিসাবকে বিশ্বব্যাপী ভয়েস প্রযুক্তিতে নেতৃত্বদানকারী অন্যতম শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান রূপে গড়ে তুলেছে।
পৃথিবীর অন্যান্য দেশ যখন ভয়েস প্রযুক্তিতে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে ব্যস্ত, বাংলাদেশ সেখানে নেতৃত্বের আসনে আবির্ভূত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। ফিচার ফোনের বিস্তৃত অ্যাকসেস, বাংলা ভাষা উপযোগী প্রযুক্তি ও একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল অ্যাকসেসের মতো জাতীয় লক্ষ্য-সাফল্য পাওয়ার মতো সব বিষয়ই আমাদের নাগালের মধ্যে।
প্রযুক্তি ও মানবতার যোগসূত্র ভয়েস প্রযুক্তি, যা আমাদের এক নতুন যুগে ধাবিত করছে। যুগান্তকারী এই প্রযুক্তিতে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন বাংলাদেশকে অসীম সম্ভাবনার ডিজিটাল যুগে নেতৃত্ব এনে দেবে। এর মধ্য দিয়ে প্রতিবন্ধকতা দূর হয়ে সূচিত হবে অপ্রতিরোধ্য যোগাযোগ, সমৃদ্ধি ও উদ্ভাবনী জ্ঞানের এক নতুন অধ্যায়। দৃষ্টি এখন এই প্রযুক্তিতে শুধু এগিয়ে থাকাই নয়, নেতৃত্ব দেওয়ার।
এ জেড এম সাঈফ প্রযুক্তি ও সমসাময়িক বৈশ্বিক ঘটনাপ্রবাহের বিশ্লেষক। বিজ্ঞাপনী সংস্থা পেপার রাইম-এর সিইও।