শিক্ষায় দুর্বলতায় দৃষ্টি না দিয়ে সন্তুষ্টির ভাষ্য তৈরিতে উৎসাহ বেশি

ড. মনজুর আহমদ। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক, বাংলাদেশ ইসিডি (প্রারম্ভিক শিশুবিকাশ) নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান এবং গণসাক্ষরতা অভিযানের সহসভাপতি। নতুন বছর সামনে রেখে শিক্ষা খাতে নানা আশা-আকাঙ্ক্ষা, নতুন পাঠ্যক্রম চালু, শিক্ষা আইন ও শিক্ষাব্যবস্থার নানা দুর্বলতা এবং সেগুলো থেকে উত্তরণের উপায় নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন।

সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সোহরাব হাসান রাফসান গালিব

মনজুর আহমদ

প্রশ্ন :

আজ খ্রিষ্টীয় নতুন বছর শুরু হলো। সরকার এ বছর থেকেই স্কুল পর্যায়ে কয়েকটি শ্রেণিতে নতুন পাঠ্যক্রমও চালু করতে যাচ্ছে। এ পদক্ষেপ শিক্ষার উন্নয়নে কোনো ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন?

মনজুর আহমদ: বর্তমান সময়ে নতুন পাঠ্যক্রম চালুর ব্যাপারে অনেক শিক্ষাবিদের দ্বিধা ছিল দুটি কারণে। করোনা মহামারির আঘাতে শিক্ষা পর্যুদস্ত হয়েছে এবং শিক্ষার্থীদের যে ক্ষতি হয়েছে, তা কাটিয়েও ওঠা যায়নি। এখন শিক্ষার ক্ষতি ও শিক্ষার্থীর জ্ঞান ও দক্ষতার ঘাটতি পূরণে বিশেষ মনোযোগ দেওয়া দরকার। দ্বিতীয়ত, আমাদের শিক্ষার এক বড় দুর্বলতা, যে পাঠ্যক্রম চালু আছে, তা শ্রেণিকক্ষে সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হয় না। শিক্ষকের দক্ষতা ও তাঁদের কাজের পরিবেশও এ ক্ষেত্রে প্রধান বাধা। করোনার কারণে এ সংকট আরও প্রকট হয়েছে। নতুন পাঠ্যক্রম প্রবর্তনের চেয়ে এ ব্যাপারে এখন বিশেষ উদ্যোগ দরকার।

প্রশ্ন :

এর আগে আপনি স্কুলশিক্ষা সংস্কারের বিষয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছিলেন। নতুন বছরে কোনো আশা দেখছেন কি?

মনজুর আহমদ: নতুন বছরের জন্য আশাবাদী হতে চাই। কিন্তু সমস্যা চিহ্নিত করে তার সমাধানে যথেষ্ট উদ্যোগী না হলে আশাবাদী হওয়া যায় না। শিক্ষাব্যবস্থার গভীরতর দুর্বলতায় দৃষ্টি না দিয়ে সন্তুষ্টির ভাষ্য তৈরিতে বেশি উৎসাহ দেখা যায়।

প্রশ্ন :

আমাদের ছেলেমেয়েরা বাংলা ও ইংরেজি—দুটিতেই দুর্বল। দেখা যায়, ১০ বছর ভাষা শেখার পরও একজন শিক্ষার্থী শুদ্ধভাবে লিখতে পারে না। অথচ আমাদের শিক্ষার্থীরাই বিদেশে গিয়ে এক বছর বা অল্প কয়েক মাসে কোনো ভাষা শেখার পর সেই ভাষায় উচ্চশিক্ষা নিয়ে থাকে? কেন এই বিপরীতমুখী ফল?

মনজুর আহমদ: বাংলা ভাষার দক্ষতা হচ্ছে একটা ভিত্তিমূলক ‘শিখতে শেখার’ দক্ষতা। আর বর্তমান প্রযুক্তিতে বিশেষ করে ইংরেজিতে দক্ষতাও অপরিহার্য। কিন্তু ভাষাশিক্ষাকে মৌলিক দক্ষতা হিসেবে পাঠ্যক্রম ও শিক্ষণ–শিখনে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয় না। সামগ্রিকভাবে শিক্ষার ব্যবস্থাপনা ও শিক্ষণপ্রক্রিয়ার সমস্যা ভাষাশিক্ষায়ও দেখা যাচ্ছে। প্রসঙ্গত, প্রাথমিক শিক্ষায় প্রথম শ্রেণি থেকে ইংরেজি শেখানো চালু হয় সামরিক শাসক এরশাদের সময়। অধিকাংশ স্কুলে উপযুক্ত ইংরেজি শিক্ষক না থাকা সত্ত্বেও সেটি করা হয়। এখনো এ অবস্থা চলছে। ফলে শিক্ষার্থীদের সময়ের অপচয় হচ্ছে এবং তাদের বাংলা শেখাও ব্যাহত হচ্ছে। আমাদের শিক্ষার্থীরা বিদেশে গিয়ে কাজ চালানোর মতো বিদেশি ভাষা শেখে, বলা যায় ‘প্রাণের তাগিদে’ এবং বিদেশি ভাষার পরিবেশে। এ পরিস্থিতি আমাদের দেশে সব শিক্ষার্থীর ইংরেজি শেখার সঙ্গে তুলনীয় নয়।

প্রশ্ন :

২০১০ সালে প্রণীত শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের জন্য যে আইন দরকার, সেটি এখনো হলো না কেন? এর জন্য কাকে দায়ী করবেন?

মনজুর আহমদ: ২০১০ সালের শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়নি। সামগ্রিক শিক্ষা আইন সে জন্য সহায়ক হতে পারে। কিন্তু সে আইনে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো নিয়ে আসতে হবে—যেমন শিক্ষা অধিকারের পরিধি ও অধিকার পূরণের উপায়, বিকেন্দ্রায়িত ও জবাবদিহিমূলক শিক্ষাব্যবস্থা, মানসম্মত শিক্ষার জন্য পর্যাপ্ত অর্থায়নের ব্যবস্থা। শিক্ষা আইনের খসড়ায় এসব অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এসব ব্যাপারে লক্ষ্য ও কৌশল নির্ধারণ রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও সিদ্ধান্তের বিষয়। কিন্তু রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সিদ্ধান্তদাতারা এসব বিষয় এড়িয়ে যেতে চান এবং তাঁরা স্থিতাবস্থা বজায় রাখার জন্য আগ্রহী। শিক্ষানীতি বাস্তবায়নের দিকনির্দেশনার জন্য এক স্থায়ী বিধিবদ্ধ শিক্ষা কমিশন গঠনের সুপারিশ ছিল। কিন্তু সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীরা এ ব্যাপারে আগ্রহী হননি। ত্রুটিপূর্ণ আইন সহায়ক না হয়ে বরং শিক্ষার উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত করতে পারে।

প্রশ্ন :

একসময় আমরা সৃজনশীল প্রশ্নের ওপর জোর দিলাম। এখন আবার প্রায়োগিক শিক্ষার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষা নিয়ে এই পরীক্ষা-নিরীক্ষার শেষ কোথায়?

মনজুর আহমদ: শিক্ষার্থী মূল্যায়ন সংস্কারের সহজ পরিচিতির জন্য ‘সৃজনশীল প্রশ্ন’ কথাটি চালু হয়। আসলে শেখানো ও শেখা সৃজনশীল হতে হবে। সে জন্য যথেষ্ট প্রস্তুতি নেওয়া হয়নি। ‘প্রায়োগিক’ বা অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিক্ষণ, শিখন ও সৃজনশীলতা পরস্পরবিরোধী নয়; পরীক্ষা-নিরীক্ষারও প্রয়োজন আছে। কিন্তু তা বাস্তবসম্মত হতে হবে। এগুলো শিক্ষক ও বিদ্যালয়ের সাধ্য ও সক্ষমতার মধ্যে থাকতে হবে। কী করা হচ্ছে, তা স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করতে হবে অংশীজনদের জন্য, বিশেষত শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের জন্য।

প্রশ্ন :

প্রথম আলো: করোনার দুই বছরে আমাদের শিক্ষার্থীরা যে ক্ষতিগ্রস্ত হলো, তা পূরণের জন্য কার্যকর পদক্ষেপ কি নিয়েছে সরকার?

মনজুর আহমদ: এককথায় তা হয়নি। দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় পাবলিক পরীক্ষাগুলোর ব্যাপারে কিছু ছাড় দেওয়া হয়। দূরশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় সংযুক্ত রাখার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু স্কুল খুলে যাওয়ার পর আগের রুটিনে ফিরে যাওয়াই মুখ্য উদ্দেশ্য হয়ে যায়। পড়াশোনার ক্ষতি যাচাই করে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এ ব্যাপারে শিক্ষাবিদদের বিভিন্ন পরামর্শ বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে বলে মনে হয় না।

প্রশ্ন :

পাঠমুখী শিক্ষার বদলে পরীক্ষামুখী শিক্ষার যে রীতি চালু হয়েছিল, তা থেকে আমরা কবে বেরিয়ে আসতে পারব বা আদৌ পারব কি না?

মনজুর আহমদ: আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের প্রধানত পরীক্ষার্থী বানিয়ে ফেলা হয় বলে যে অভিযোগ করা হয়, তাতে যথেষ্ট যৌক্তিকতা আছে। করোনাজনিত দীর্ঘ সময় স্কুল বন্ধ থাকার পর পরীক্ষাগুলো আবার চালুর ব্যবস্থা করাকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। শিক্ষার্থী মূল্যায়নের উদ্দেশ্য, ধরন ও প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন প্রয়োজন। প্রস্তাবিত নতুন শিক্ষাক্রমে এ বিষয়ে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সব পরিবর্তনের প্রস্তাব এ মুহূর্তে বাস্তবসম্মত কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন আছে। কিন্তু বড় প্রশ্ন, এ জন্য শিক্ষকের প্রস্তুতি ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে কি না তা নিয়ে। তা ছাড়া শিক্ষার্থী মূল্যায়নের সংস্কারের সঙ্গে পাঠদানের প্রক্রিয়ায় আনুষঙ্গিক পরিবর্তন আনতে হবে।

প্রশ্ন :

এর আগে এক সাক্ষাৎকারে আপনি বলেছিলেন, শিক্ষায় অদক্ষতার মহামারি চলছে। সে অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার কোনো চেষ্টা আছে কি?

মনজুর আহমদ: আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার এক অবাঞ্ছিত বৈশিষ্ট্য—সব স্তরেই সংখ্যাগত প্রসারে গুরুত্ব ও মান রক্ষায় অবহেলা। উচ্চশিক্ষারও প্রসার দরকার এবং প্রতিটি জেলায় বিশ্ববিদ্যালয়তুল্য উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হতে পারে। কিন্তু এসব প্রতিষ্ঠানে গ্রহণযোগ্য মান রক্ষা না করলে উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়ে যায়। নিম্নতম গ্রহণযোগ্য মান নির্ধারণ করে তা প্রয়োগের নিশ্চয়তা ছাড়া কোনো স্তরেই নতুন প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি করা উচিত নয়। রাজনৈতিক অপরিণামদর্শিতা ও জনতোষণমূলক রাজনীতি এ জন্য অনেকাংশে দায়ী। অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি ও জবাবদিহির অভাব এখানে ইন্ধন জোগাচ্ছে।

প্রশ্ন :

পিইসি ও জেএসসি পরীক্ষা ২০২২ সালে না নেওয়া হলেও এ পরীক্ষাগুলো পুরোপুরি বাদ দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে শিক্ষাবিদদের পরামর্শও সরকার শুনছে না। প্রতিকার কী?

মনজুর আহমদ: স্কুলশিক্ষায় সমাপনী এ পরীক্ষাগুলো করোনার কারণে স্থগিত ছিল। কিন্তু এ ব্যাপারে সরকারি অবস্থান স্পষ্ট করা হয়নি। ইতিমধ্যে প্রাথমিক স্তরে বৃত্তির জন্য পরীক্ষা নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এ সিদ্ধান্তহীনতা বা দ্বিধা শিক্ষার সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ার দুর্বলতার লক্ষণ বলা যায়।

প্রশ্ন :

সরকারের শিক্ষা কার্যক্রমে দেখে মনে হয়, তারা জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় করতে যতটা আগ্রহী, প্রাথমিক বা মাধ্যমিক শিক্ষার ভিত তৈরিতে ততটা আগ্রহী নয়। এর পেছনে কি কোনো রাজনৈতিক কারণ আছে বলে মনে করেন?

মনজুর আহমদ: সরকারি সেবা ও উন্নয়নকাজে অদক্ষতা ও দুর্নীতি সর্বত্র বিরাজমান। প্রথম আলোর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিক্ষায় অনেক বড় প্রকল্প শুরু হয়েছে, কিন্তু শেষ হয়নি। এগুলোর ব্যয় বাড়তে থাকে, কিন্তু ফলাফল দেখা যায় না। এসব সমস্যার ব্যাপকতা ও গভীরতা স্বীকার না করলে এগুলোর সমাধান সম্ভব নয়। সেই স্বীকৃতি ও ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা যথেষ্ট দেখা যাচ্ছে না। অন্যায় করে ধরা না পড়া ও পার পেয়ে পাওয়াই যেন প্রচলন হয়ে গেছে।

প্রশ্ন :

সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশের পর এখন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কথা বলছে। কিন্তু সেই স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার উপযোগী শিক্ষাব্যবস্থা কি আমরা তৈরি করতে পেরেছি? যদি না পেরে থাকি, কী করণীয়?

মনজুর আহমদ: ডিজিটাল বাংলাদেশের আওতায় মুঠোফোন, ইন্টারনেট ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের যে বিস্তার ঘটেছে, তার যথেষ্ট প্রভাব শিক্ষাক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে না। অধিকাংশ স্কুল ও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ, যন্ত্রপাতি, এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ ও বাংলা ভাষায় যথেষ্ট বিষয়বস্তুর (কনটেন্ট) অভাব বিদ্যমান। মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ তৈরির জন্য বিপুল ব্যয় এসব কারণে কাজে লাগছে না। মিশ্র পদ্ধতি বা ব্লেন্ডেড অ্যাপ্রোচ শেখানোর জন্য শিক্ষক ও বিদ্যালয়ের যথেষ্ট সক্ষমতা নেই। এসব দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারলেই ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে রূপান্তরের ফল শিক্ষাব্যবস্থায় দেখা যাবে।

প্রশ্ন :

শিক্ষার নীতিনির্ধারকেরা মাঝেমধ্যে শিক্ষাবিদদের সঙ্গে বসেন। কিন্তু শিক্ষাবিদদের পরামর্শ কতটা নেন?

মনজুর আহমদ: শিক্ষাসংক্রান্ত কর্মকর্তা ব্যতিরেকে শিক্ষাবিষয়ক সংগঠন ও গবেষণাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষাবিদদের সঙ্গে বিভিন্ন নীতি ও কৌশলগত বিষয়ে নিয়মিত আলোচনা হয়, তা বলা যায় না। পূর্বতন শিক্ষামন্ত্রীর সময় এ ধরনের সংলাপ অনেকটা নিয়মিতভাবে হতো। নিরাপদ ও স্থিতাবস্থায় থাকার প্রবণতার কারণে এসব সংলাপ সরকারি সিদ্ধান্তে যথেষ্ট প্রভাব ফেলে, তা বলা যায় না।

প্রশ্ন :

আমাদের শিক্ষা দেশের চাহিদা মেটাতে পারছে না। একদিকে লাখ লাখ উচ্চশিক্ষিত তরুণ বেকার, অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে বহু দক্ষ কর্মী আনতে হচ্ছে। এই বিপরীত ধারার অবসান কীভাবে হতে পারে?

মনজুর আহমদ: শ্রমবাজারে দক্ষতার চাহিদা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে দক্ষ কর্মী সরবরাহে বিস্তর ফারাক আছে বলা হয়। এ ক্ষেত্রে চাহিদা ও সরবরাহের গাণিতিক সাযুজ্য আশা করা যায় না। শিক্ষার বিষয়নির্বিশেষে শিক্ষার মান, অর্থাৎ প্রতিষ্ঠান থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের দক্ষতার মান নিয়োগদাতাদের চাহিদা মেটানোয় বেশি প্রয়োজনীয়। নিয়োগদাতাদেরও এ ব্যাপারে দায় আছে। পরিবর্তনশীল চাহিদা মেটানোর জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একত্রে কাজ করার জন্য তাদেরও এগিয়ে আসতে হবে। আর আমরা বিদেশে দক্ষ-অদক্ষ কর্মী পাঠাতে চাই, কিন্তু বিদেশ থেকে বাজারের দাবি মেটানোর জন্য কোনো কর্মী আমরা নেব না, তা যুক্তিসংগত নয়। তবে দেশের চাহিদা দেশের শিক্ষা-প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা থেকে সরবরাহের জন্য সক্ষমতা তৈরি করতে হবে। এ জন্য নিয়োগদাতা খাত ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা প্রয়োজন।

প্রশ্ন :

নতুন বছরের জন্য শিক্ষার ক্ষেত্রে আপনার প্রত্যাশা কী?

মনজুর আহমদ: আমার প্রধান প্রত্যাশা হচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেসব বড় স্বপ্ন দেখেন, সেগুলো পূরণে শিক্ষা কর্তৃপক্ষ ও কর্মকর্তারা প্রয়োজনীয় নিষ্ঠা ও উদ্যম দেখাবেন। এখন সময় এসেছে পুরো শিক্ষাব্যবস্থার সমন্বিত রূপান্তরের উদ্দেশ্যে বর্তমান দুই মন্ত্রণালয়ের একক নেতৃত্বের অধীন নিয়ে আসা এবং সামগ্রিক দিকনির্দেশনার জন্য যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে একটি স্থায়ী শিক্ষা কমিশন গঠন।

প্রশ্ন :

আপনাকে ধন্যবাদ।

মনজুর আহমদ: আপনাদেরও ধন্যবাদ।