আমরা সবাই কি নির্বাচন-পরবর্তী ম্যাজিকের আশায় বসে থাকব

জাতীয় নির্বাচনের তফসিল যদিও এখনো ঘোষিত হয়নি, তবু আলোচনা রয়েছে, আগামী জানুয়ারিতে দেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। তবে নির্বাচনের চেয়েও যে বিষয় বেশি চাউর রয়েছে, তা হলো নির্বাচনের পর নাকি অনেক কিছু ভালো হবে আর অর্থনীতি ঠিক হয়ে যাবে।

পাঠকদের নিশ্চয়ই মনে আছে, গত বছরের শেষ প্রান্তিক থেকেই আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ অনেকের কাছেই শুনছিলাম, মার্চ নাগাদ, আর খুব দেরি হলে জুন নাগাদ সব ঠিক হয়ে যাবে। এখন আবার শুনছি, আগামী মার্চ, আবারও খুব দেরি হলে জুনের দিকে সব ঠিক হয়ে যাবে। আমাদের উন্নয়ন সহযোগীদের প্রায় সবাই যদিও বাংলাদেশের মধ্য ও দীর্ঘকালীন সম্ভাবনা নিয়ে এখনো অনেকটাই আশাবাদী, তবে আগামী তিন থেকে ছয় মাস তাঁরা অর্থনীতির জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিংই মনে করছেন। তার কারণ হিসেবে তাঁরা বাজার সুশাসন আর জবাবদিহির অভাবে উচ্চ মূল্যস্ফীতি, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি-ব্যর্থতায় বাজারে ডলার-সংকট, ব্যাংকিং খাতে ক্রমবর্ধমান মন্দ ঋণের পাহাড় আর স্বজনতোষণ পুঁজিবাদের দিকেই অঙ্গুলিনির্দেশ করেছেন।

পত্রিকা খুললেই সবাই জানছি, দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের অবস্থা ভালো নেই। ডলার-সংকটে আমদানি এখন নিয়ন্ত্রিত। রেমিট্যান্সের প্রবাহ ও রপ্তানি আয়ে ধীর গতি। খেলাপি ঋণের ভারে বিশৃঙ্খল আর্থিক খাত। পুঁজিবাজারেও চলছে মন্দাভাব। বিনিয়োগে স্থবিরতা। অন্যদিকে, দীর্ঘদিন ধরে চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি দেশের নির্দিষ্ট, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের জীবনযাপনকে ব্যয়বহুল করে তুলেছে। মূল্যস্ফীতির ক্রমবর্ধমান চাপে দিশেহারা সাধারণ মানুষ। ক্রমবর্ধমানভাবে এই চাপ অব্যাহত আছে। এতে সাধারণ মানুষ জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন।

খোদ পরিকল্পনামন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ নীতিপ্রণেতাদের অনেকেই স্বীকার করছেন, সব মিলিয়ে কঠিন সময় পার করছে দেশের অর্থনীতি। এমন প্রেক্ষাপটে বিশ্বব্যাংক জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরে (২০২৩-২৪) বাংলাদেশে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ দশমিক ৬ শতাংশ।

বিশ্লেষকেরাও প্রায় একমত, উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক বাণিজ্যের চাপ, আর্থিক খাতের ঝুঁকি, দুর্বল মুদ্রানীতি ও বিনিময় হার, খেলাপি ঋণ, সুদহারের সীমা, অত্যাবশ্যকীয় আমদানির ওপর শুল্ক আরোপ, দুর্বল রাজস্ব আদায় ব্যবস্থাপনার কারণে চ্যালেঞ্জের মুখে দেশের অর্থনীতি। তাই দেশের অর্থনীতির ধারা বজায় রাখতে আর্থিক খাতসহ বিভিন্ন খাতে সংস্কারের পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্বব্যাংকের স্থানীয় প্রধানসহ আইএমএফের পরিদর্শক দলও। তাদের সবাই প্রায় একমত, উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের অর্থনীতির অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ।

আরও পড়ুন

আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) স্টাফ মিশন বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়সহ সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক করেছে। বৈঠকে তারা বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, মূল্যস্ফীতি, ব্যাংকিং খাত ও রাজস্ব আয়—এ চার বিষয় উত্থাপন করেছে। বৈঠকে আইএমএফের প্রতিনিধিদল জানতে চায়, বিশ্বের অনেক দেশ মূল্যস্ফীতির মাত্রা কমিয়ে আনতে সক্ষম হলেও বাংলাদেশে কেন উচ্চ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না?

বাংলাদেশে সফররত আইএমএফ মিশন গত ৩০ জুন পর্যন্ত নির্ধারিত ২৪ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ মজুত রাখার ব্যর্থতার কারণও জানতে চেয়েছিল।

আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় ধাপের অনুমোদন পেতে এটি একটি বাধ্যতামূলক শর্তও ছিল। পত্রিকান্তরে জানা গিয়েছে, জবাবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, প্রয়োজনীয় আমদানির পাশাপাশি বাধ্যবাধকতা মেনে ঋণের অর্থ পরিশোধ করায় রিজার্ভ কমেছে। তাই রিজার্ভ নিয়ে আইএমএফের শর্ত পূরণ এখন প্রায় অসম্ভব। জানতে পেরেছি, সদস্যদেশ তথা বাংলাদেশের মতো একটি সম্ভাবনাময় দেশকে বিপদে না ফেলতে আইএমএফ শেষমেশ রিজার্ভের শর্ত শিথিল করতেও রাজি হয়েছে।

আরও পড়ুন

সবাই জানি, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমছেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, রিজার্ভ এখন কমে হয়েছে ২ হাজার ৬৮৬ কোটি (২৬.৮৬ বিলিয়ন) ডলার। অবশ্য আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবপদ্ধতি বিপিএম ৬ অনুযায়ী, রিজার্ভ এই কিছুদিন আগে ছিল ২ হাজার ১০৫ কোটি (২১ বিলিয়ন) ডলার। এর বাইরেও আমরা জানি, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিট বা প্রকৃত রিজার্ভের আরেকটি হিসাব রয়েছে, যা শুধু আইএমএফকে দেওয়া হয়। প্রকাশ করা হয় না।

আমাদের মতো আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পৃক্তরা ছাড়াও বর্ষীয়ান অর্থনীতিবিদেরাও দেশের রিজার্ভ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ জানাচ্ছেন। তাঁদের মতে, দেশে যে পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা ঢুকছে এবং যা বেরিয়ে যাচ্ছে, তার প্রকৃত হিসাব মিলছে না। এখন যে রিজার্ভ আছে, তা বিপজ্জনক পর্যায়ে না গেলেও উদ্বেগজনক পর্যায়ে। প্রতি মাসে এক বিলিয়ন ডলার করে কমছে। এ অবস্থায় চললে একসময় ফুরিয়ে যাবে। তখন ডলারের দাম বাজারে ছেড়ে দিয়ে কিংবা অন্য কোনো উপায়ে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার কোনো উপায় থাকবে না।

আরও পড়ুন

বর্তমানে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। আইএমএফ ইতিমধ্যে বাংলাদেশের খেলাপি ঋণের উচ্চহার নিয়ে উদ্বেগও প্রকাশ করেছে। জুন শেষে ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণ রেকর্ড ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে, যা এই খাতের মোট ঋণের ১০.১১ শতাংশ। অথচ ২০০৯ সালে বর্তমানে ক্ষমতাশীল দলটি যখন সরকার গঠন করেছিল, তখন দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল মাত্র ২২ হাজার ৪৮১ কোটি টাকা। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অন্য হিসাবমতো ব্যাংকিং খাতে ডিস্ট্রেসড অ্যাসেট বা দুর্দশাগ্রস্ত সম্পদের পরিমাণ ৩ লাখ ৭৭ হাজার কোটি টাকা, অর্থাৎ মোট ঋণের প্রায় ২৫ শতাংশের ওপর।

২০২২-২৩ অর্থবছরে ন্যূনতম ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩০ কোটি টাকা কর আদায়ে সরকারের ব্যর্থতার বিষয়েও জানতে চেয়েছে আইএমএফ। এটি দ্বিতীয় কিস্তির ঋণ অনুমোদনে ২০২৩ সালের প্রথমার্ধের জন্য নির্ধারিত ছয়টি শর্তের একটি। এনবিআরের সাময়িক হিসাবে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম দুই মাস জুলাই-আগস্টে ৪ হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি হয়েছে। জুলাই-আগস্টে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৪৬ হাজার ২৩৩ কোটি টাকা। এই সময়ে আদায়ের লক্ষ্য ছিল ৫০ হাজার ৩২১ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে এনবিআরের জন্য সব মিলিয়ে ৪ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার শুল্ক-কর আদায়ের লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।

আরও পড়ুন

ইতিমধ্যেই বলেছি, দেশে ডলারের তীব্র সংকট সৃষ্টি হয়েছে। লাগামহীনভাবে বাড়ছে বৈদেশিক এ মুদ্রার দাম। নানা পদক্ষেপ নিয়েও দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হচ্ছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে খোলাবাজারে ডলারের দাম গিয়ে ঠেকেছে ১২০ টাকায়। গত বৃহস্পতিবার কার্ব মার্কেট বা খোলাবাজারে নগদ ১ ডলার কিনতে গ্রাহকদের গুনতে হচ্ছে ১১৯ থেকে ১২০ টাকা, যেখানে তার আগের সপ্তাহে ১ ডলার সমান ছিল ১১৭ থেকে ১১৮ টাকা। যদিও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্ধারিত দাম অনুযায়ী খুচরা ডলারের দাম ১১৩ টাকার বেশি হওয়ার কথা নয়। মানি চেঞ্জার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিনিধিরা গণমাধ্যমকে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক মানি চেঞ্জারগুলোর ডলারের দাম বেঁধে দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে কেনার রেট ১১১ টাকা ৮০ পয়সা এবং বিক্রির রেট ১১৩ টাকা ৩০ পয়সা। তবে এ দামে কেউ ডলার পাচ্ছেন না।

কেন্দ্রীয় ব্যাংক ইতিমধ্যে বলেছে, সদ্য সমাপ্ত সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সে বড় ধরনের ধস নেমেছে। এ মাসে বৈধ পথে ও ব্যাংকের মাধ্যমে মাত্র ১৩৪ কোটি ডলারের সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। দেশের প্রবাসী আয়ের এ অঙ্ক গত ৪১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে কোভিডের কারণে হয়তো এর চেয়ে কম রেমিট্যান্স এসেছিল—১০৯ কোটি ডলার—যা বৈদেশিক মুদ্রা কমতে থাকা রিজার্ভের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করেছে।

অর্থনীতিবিদদের মতে, উচ্চ মূল্যস্ফীতি দীর্ঘায়িত হওয়ায় মানুষ নিজেদের অবস্থান থেকে নিজের মতো করে সমন্বয় করে চলার চেষ্টা করছেন। যাঁদের সুযোগ আছে, তারা অতিরিক্ত খরচ মেটাতে অতিরিক্ত কাজ করছেন। কিন্তু যাঁদের কাজ করার সুযোগ নেই, তারা খাদ্য ও অন্যান্য জিনিসের ব্যবহার কমিয়ে দিচ্ছেন। অর্থনৈতিক ও সামাজিক উভয় দিক থেকেই নির্দিষ্ট আয়ের মানুষগুলো চাপের মধ্যে আছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দুর্বল ভূমিকা, ত্রুটিপূর্ণ বাজার ব্যবস্থাপনা এবং বাজারে মূল্য কারসাজির প্রবণতা অর্থাৎ নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর তদারকিতে ব্যর্থতার কারণেই এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই জানেন, রপ্তানি ও রেমিট্যান্সের সর্বশেষ তথ্য খুবই উদ্বেগজনক। অথচ রপ্তানি ও রেমিট্যান্স অর্থনীতির দুটি প্রধান স্তম্ভ।

আগের মাসের চেয়ে সেপ্টেম্বরে রপ্তানি কম হয়েছে ৪৭ কোটি ডলার বা প্রায় ৫ হাজার ২০০ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বরে পণ্য রপ্তানি থেকে এসেছে ৪৩১ কোটি ডলার। আগস্টে এর পরিমাণ ছিল ৪৭৮ কোটি ডলার।

বিদেশি মুদ্রার অন্যতম একটি উৎস বিদেশি উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ বা এফডিআই। গত জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত তিন মাসে এফডিআই কমেছে ২৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ। মোট ৬২ কোটি ৬৪ লাখ ডলারের এফডিআই এসেছে এ সময়ে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এফডিআইয়ের সার্বিক পরিস্থিতির সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

দীর্ঘদিন ধরে চলমান মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতাও কমেছে। এ কারণে তাঁরা ব্যয় কমাতে বাধ্য হচ্ছেন, এমনকি দৈনন্দিন বাজারের জন্য নির্ধারিত বাজেট কমিয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, অনেকেই তাঁদের দীর্ঘদিনের সঞ্চয় ভাঙাতে বাধ্য হয়েছেন।

আরও পড়ুন

অর্থনীতিবিদদের মতে, উচ্চ মূল্যস্ফীতি দীর্ঘায়িত হওয়ায় মানুষ নিজেদের অবস্থান থেকে নিজের মতো করে সমন্বয় করে চলার চেষ্টা করছেন। যাঁদের সুযোগ আছে, তারা অতিরিক্ত খরচ মেটাতে অতিরিক্ত কাজ করছেন। কিন্তু যাঁদের কাজ করার সুযোগ নেই, তারা খাদ্য ও অন্যান্য জিনিসের ব্যবহার কমিয়ে দিচ্ছেন। অর্থনৈতিক ও সামাজিক উভয় দিক থেকেই নির্দিষ্ট আয়ের মানুষগুলো চাপের মধ্যে আছে।

পত্রিকান্তরে জানা গিয়েছে, সরকারের কর্তাব্যক্তিরা খোদ স্বীকার করেছেন, সিন্ডিকেট করে কোল্ড স্টোরেজগুলো কীভাবে সাধারণ মানুষের টাকা শুষে নিচ্ছে। সরকার অসহায়, তারা কিছুই করতে পারছে না। বেশি চাপ দিলে এই সিন্ডিকেট বাজার থেকে পণ্য তুলে নিয়ে যায়। এ কারণে সরকারকে বিব্রতকর অবস্থায়ও পড়তে হচ্ছে।

কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) মতে, নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা খুব কষ্টে আছেন। আয়-ব্যয়ের হিসাব মেলাতে পারছেন না তাঁরা। সরকার বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে বেঁধে রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলতি বছরের বাজেট ঘোষণা করলেও তা বাস্তবায়ন করা যায়নি। তবে গত আগস্টে খাদ্য মূল্যস্ফীতি উঠেছে ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশে, যা ১১ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

দেশের সভরেন ক্রেডিট রেটিং বা সার্বভৌম ঋণমান কমে যাওয়ায় ভালো কোম্পানির পক্ষেও আন্তর্জাতিক বাজার থেকে বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ নেওয়া যাচ্ছে না। সুদের হার, এমনকি এলসি বা ঋণপত্র কনফার্মেশনের খরচও অনেক বেড়ে গিয়েছে। উন্নয়ন-প্রভাবক মূলধনী যন্ত্রপাতি আর শিল্পের কাঁচামাল আমদানিও সংকটে পড়ছে।

আসন্ন নির্বাচনকে অংশগ্রহণমূলক না করতে পারলে কিংবা রাজনৈতিক সংস্কৃতি সহনশীল না হলে আমাদের রপ্তানি পণ্যের বৃহৎ বাজারগুলোয় সমস্যার কথাও উচ্চকিতভাবে আলোচিত হচ্ছে। এমন অবস্থায় যেনতেনভাবে একটি নির্বাচন করে বা নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতার আশঙ্কা নিয়ে অর্থনীতির দৈন্যদশা যে কাটবে না, সে ব্যাপারে সম্ভবত অনেকেই একমত।

তাই সঠিক অংশীজনদের নিয়ে অনেকটা কোমর বেঁধে এখনই নেমে পড়তে হবে। তা না হলে যে যা-ই বলুক না কেন, জনগণের ভোগান্তি অনেক দীর্ঘস্থায়ী হবে।

  • মামুন রশীদ অর্থনীতি বিশ্লেষক