আমাদের কি সত্যিই উচ্চকক্ষ দরকার

সংসদীয় গণতন্ত্র সব দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠতা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এটা মেনে নিয়ে আমাদের এগোতে হবে। নতুবা প্রেসিডেনশিয়াল পদ্ধতি হলো বিকল্প। দুই কক্ষ করে কোনোভাবে স্বেচ্ছাচারী সরকার ঠেকানো যাবে না।

আমাদের দেশে অনেকবারই একনায়ক বা স্বেচ্ছাচারী সরকার এসেছে। প্রতিবারই তা হয়েছে দল বা নেতাদের স্বেচ্ছাচারিতায়; সিস্টেমের ঘাটতি বা উচ্চ কক্ষের অনুপস্থিতির জন্য নয়।

আমাদের দেশে সংসদীয় গণতন্ত্র কোনোভাবেই সফল হতে পারছে না। প্রতিবারই কোনো না কোনোভাবে নির্বাচন হয়। সংসদ গঠিত হয়; কিন্তু শৃঙ্খলা ও নিয়মতান্ত্রিকতা ফিরে আসছে না। নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্র বা স্বেচ্ছাচারী বৃত্তে সরকার অদলবদল হচ্ছিল। বর্তমান সরকার আসার পর এর কারণ ও তার নিরাময়ের পথ খোঁজা হচ্ছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কারণটা সম্ভবত খুঁজে পেয়েছে। আমরা যাদের কাছ থেকে সংসদীয় গণতন্ত্র শিখেছি, সেই ব্রিটিশদের দেশে ওয়েস্টমিনস্টার সিস্টেমে আছে দুটি কক্ষ। একটি উচ্চকক্ষ ও অপরটি নিম্নকক্ষ। উচ্চকক্ষ হলো হাউস অব লর্ডস এবং নিম্নকক্ষ হলো পার্লামেন্ট।

হয়তো এক কক্ষবিশিষ্ট সংসদ নিয়ে আমাদের ঘাটতি রয়েই গেছে। তাই সংস্কার কমিটি প্রস্তাব করেছে, এই ঘাটতিটা মিটিয়ে আমাদেরও দুই কক্ষ বিশিষ্ট সংসদ রাখতে হবে।

রাজনীতিবিদেরাও প্রস্তাবটা লুফে নিয়েছেন। সংসদের আরেকটা কক্ষ অর্থ নিজেদের জন্য আরও ১০০ জন বেশি সংসদ সদস্য। আবার এই ১০০ জন সেই হাউস অব লর্ডসের সদস্যদের মতো কুলীন। তাঁরা যে দল থেকেই উচ্চকক্ষে মনোনয়ন পেয়ে আসেন না কেন, ভোটে না গিয়েও তাদের নির্বাচন নিশ্চিত।

তারা যেহেতু ‘উচ্চ’, তাঁদের গাড়ি, বাড়ি ও মাসোহারাও নিশ্চয় হবে উঁচুদরের। সুতরাং কত বড় বড় ধনীরা চাঁদার বড় থলি নিয়ে এগিয়ে আসবেন কোনো একটা দলে ভিড়তে, সেটিই স্বাভাবিক।

যারা বড় দল, তাদের বড় ও মাঝারি নেতারা সম্ভবত নিম্নকক্ষেই নির্বাচন করে জয়ী হবেন এবং মন্ত্রী বা বিরোধী নেতা হবেন। ছোট দলগুলো ভরসা করবেন সাধারণ নির্বাচনে পরাজিত হলেও তাদের নেতারা যদি কোনোভাবে উচ্চকক্ষে যেতে পারেন!

ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায়, রাজনৈতিক দলগুলোর কেউ নিম্নকক্ষের আসন ভিত্তিতে কেউবা দলের ভোটের হারের (পিআর) ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ গঠন করতে চাচ্ছে। বিএনপি চাচ্ছে আসনভিত্তিক এবং ছোট দলগুলো চাচ্ছে ভোটের হারভিত্তিক। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনও দলের ভোটের ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ গঠন করার পক্ষে। এই নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডা চলছে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদিচ্ছা নিয়ে অবশ্যই কোনো প্রশ্ন নেই। তবে এ নিয়ে অনেকের দুশ্চিন্তা আছে—আমাদের দেশের বাস্তব পরিস্থিতি দুই কক্ষবিশিষ্ট সংসদ দেশের জন্য ও জনগণের জন্য নতুন বোঝা হয়ে দাঁড়াবে কিনা! উচ্চকক্ষ আমাদের সংসদীয় গণতন্ত্র চর্চায় সম্ভবত আরও ২০টা সমস্যা যোগ করবে।

আসন ভিত্তিতে করা হলে তা হবে অনেকটা নিম্নকক্ষে আরও ১০০ আসন যোগ করার মতো, বিনা প্রয়োজনে নিম্নকক্ষকে মিমিক বা অনুকরণ করে আরেকটা সংসদ বানানো।

ভোটভিত্তিক হলে উচ্চকক্ষে কিছু নতুনত্ব আসবে, ছোট রাজনৈতিক দলের কিছু নেতা বড় দলগুলোর ভিড়ে উচ্চকক্ষে কয়টা আসন পেতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ ধরুন, রাজনৈতিক দল ‘আমরা সবুজ’ সাধারণ নির্বাচনে সারা দেশে মোট দেওয়া ভোটের ৫ শতাংশ ভোট পেল; কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তাদের কোনো প্রার্থী নিম্নকক্ষ নির্বাচিত হতে পারেননি। ভোটভিত্তিক উচ্চকক্ষে তারা পাঁচটি আসন নিয়ে বসতে পারবেন, যদিও নিম্নকক্ষে তাঁদের কোনো সদস্য নেই।

এতে যে লাভটা হবে, তা হলো উচ্চকক্ষে কিছুটা বৈচিত্র্য আসবে, যে দলগুলোর নিম্নকক্ষে তেমন আসন নেই, তারা সরকারবিরোধী হলে উচ্চকক্ষে সরকারের বিরুদ্ধে কিছু কথা বলতে পারবেন; কিন্তু সত্যিকার ‘চেক অ্যান্ড ব্যালান্স’ যাকে বলে, পার্লামেন্টারি গণতন্ত্রে নিম্নকক্ষের বাইরে তা কখনো সম্ভব হবে না। তবে ভোটভিত্তিক উচ্চকক্ষ আমাদের ছোট দলগুলোকে অক্সিজেন জোগাবে এবং এদের লালন করবে; কিন্তু তাতে দেশের কী লাভ হবে?

বিশ্বের যেসব দেশে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ রয়েছে, যুক্তরাজ্য ছাড়া সব দেশেই বলা হয় উচ্চকক্ষ তাদের প্রদেশ বা রাজ্যগুলোকে প্রতিনিধিত্ব করে এবং নিম্নকক্ষ প্রতিনিধিত্ব করে জনগণকে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চকক্ষ সিনেটে ছোট-বড় প্রতি রাজ্য থেকে দুজন সদস্য নির্বাচিত করে। বিশ্বের যেসব পার্লামেন্টারি গণতন্ত্রের দেশে দুই কক্ষ আছে, উচ্চ কক্ষ তাদের প্রদেশ বা রাজ্যগুলোর ভোটে নির্বাচিত হয়।

যুক্তরাজ্যের হাউস অব লর্ডস কিছুটা আলাদা, সেটা এককালে ছিল রাজা বা রানির পরামর্শ পরিষদ, যেখানে থাকত বড় ধর্মযাজক ও সম্ভ্রান্ত লোকজন। এখন নামকরা লোকদের মনোনীত করে সদস্য করা হয়। বলা যায়, হাউস অব লর্ডস গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার চেয়েও বেশি লালন করছে ব্রিটিশ ঐতিহ্যকে। কানাডাও অনেকটা যুক্তরাজ্যের মতো-মনোনীত সিনেট।

অন্যান্য পার্লামেন্টারি গণতন্ত্রের দেশগুলো যেমন অস্ট্রেলিয়া, ভারত, মালয়েশিয়া তারা উচ্চকক্ষে নির্বাচন করে প্রদেশ বা রাজ্যভিত্তিতে। বলা হয়ে থাকে তাদের নিম্নকক্ষ জনগণকে প্রতিনিধিত্ব করে এবং তাদের উচ্চকক্ষ প্রতিনিধিত্ব করে রাজ্য বা প্রদেশগুলোকে।

আমাদের দেশে কোনো প্রদেশ বা রাজ্য নেই। যেভাবে সুপারিশ করা হয়েছে, আমাদের উচ্চকক্ষকে বলা যায় রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রতিনিধিত্ব করবে। ‘আমরা সবুজ’ দলের উচ্চকক্ষে যে পাঁচজন সদস্য আছেন তাঁদের বলা যাবে না যে তাঁরা ৫% জনগণের প্রতিনিধি। ওই ৫ শতাংশ জনগণকে নিম্নকক্ষের সদস্যরাই প্রতিনিধিত্ব করছে। এ পাঁচজন হবেন একান্তভাবে ‘আমরা সবুজ’ দলের প্রতিনিধি। সুতরাং মোটা দাগে বলা যায়, বর্তমান প্রস্তাবে আমাদের দেশে উচ্চকক্ষ গঠিত হবে ছোট রাজনৈতিক দলগুলোকে লালন করতে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদিচ্ছা নিয়ে অবশ্যই কোনো প্রশ্ন নেই। তবে এ নিয়ে অনেকের দুশ্চিন্তা আছে—আমাদের দেশের বাস্তব পরিস্থিতি দুটি সংসদ দেশের জন্য ও জনগণের জন্য নতুন বোঝা হয়ে দাঁড়াবে কিনা! উচ্চকক্ষ আমাদের সংসদীয় গণতন্ত্র চর্চায় সম্ভবত আরও ২০টা সমস্যা যোগ করবে।

পার্লামেন্টারি গণতন্ত্রে উচ্চ পরিষদ থাকে ক্ষমতাহীন। নিম্নকক্ষে যদি শক্তিশালী বিরোধী দল না থাকে, উচ্চকক্ষ কোনোভাবে সরকারকে কিছুতে বাধা দিতে পারবে না। আর একটা সাধারণ অঙ্কের ব্যাপার-যে সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য নিয়ে নির্বাচিত হয়েছে বা জোট করেছে, আনুপাতিক ভোটেও তাদের উচ্চকক্ষে বিপুলসংখ্যক সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকবে।

ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায়, রাজনৈতিক দলগুলোর কেউ নিম্নকক্ষের আসন ভিত্তিতে কেউবা দলের ভোটের হারের ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ গঠন করতে চাচ্ছে। বিএনপি চাচ্ছে আসনভিত্তিক এবং এনসিপিসহ অন্য দলগুলো চাচ্ছে ভোটের হারভিত্তিক। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনও চাচ্ছে দলের ভোটের ভিত্তিতে উচ্চকক্ষ গঠন করতে।

আসন ভিত্তিতে করা হলে তা হবে অনেকটা নিম্নকক্ষে আরও ১০০ আসন যোগ করার মতো বিনা প্রয়োজনে নিম্নকক্ষকে মিমিক বা অনুকরণ করে আরেকটা সংসদ বানানো।

ভোটভিত্তিক হলে উচ্চকক্ষে কিছু নতুনত্ব আসবে, ছোট রাজনৈতিক দলের কিছু নেতা বড় দলগুলোর ভিড়ে আসন পেতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, ‘আমরা সবুজ’ দল সাধারণ নির্বাচনে সারা দেশে মোট ভোটের ৫ শতাংশ ভোট পেল; কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তাদের কোনো প্রার্থী নিম্নকক্ষ নির্বাচিত হতে পারেননি। ভোটভিত্তিক উচ্চকক্ষে তারা পাঁচটি আসন নিয়ে বসতে পারবেন, যদিও নিম্নকক্ষে তাদের কোনো সদস্য নেই।

এতে যে লাভটা হবে তা হলো উচ্চ কক্ষে কিছুটা বৈচিত্র্য আসবে, যে দলগুলোর নিম্নকক্ষে তেমন আসন নেই, তারা সরকারবিরোধী হলে উচ্চকক্ষে সরকারের বিরুদ্ধে কিছু কথা বলতে পারবেন; কিন্তু সত্যিকার ‘চেক অ্যান্ড ব্যালান্স’ যাকে বলে, পার্লামেন্টারি গণতন্ত্রে নিম্নকক্ষের বাইরে কখনো সম্ভব হবে না। তবে ভোটভিত্তিক উচ্চকক্ষ দেশের ছোট দলগুলোকে অক্সিজেন জোগাবে এবং তাদের লালন করবে।

যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চকক্ষ সিনেট, নিম্নকক্ষ থেকেও শক্তিশালী এবং তারা প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত। ভারতের উচ্চকক্ষ এককালে ছিল রাজ্যগুলোর রাজ্যহারা সাবেক নবাব ও রাজাদের জন্য সান্ত্বনামূলক পুরস্কার। পরবর্তীকালে বিভিন্ন দলকে ভারতীয় সিনেমা স্টার ও নামজাদা লোকদের সদস্য করে রাজ্যসভায় আনতে দেখা গেছে।

রেখা, অমিতাভ বচ্চন, ধর্মেন্দ্র, শত্রুঘ্ন সিনহা— এ ধরনের সিনেমা ব্যক্তিত্ব এবং সত্যজিৎ রায়, লতা মঙ্গেশকর, শচীন টেন্ডুলকারের মতো অনেক নামজাদা ব্যক্তিত্ব রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন। ভারতে রাজ্যগুলোর বিধান সভার ভোটে রাজ্যসভার সদস্যরা নির্বাচিত হন। তাঁরা যেহেতু রাজ্যকে প্রতিনিধিত্ব করেন, তাই উচ্চকক্ষের নামও ‘রাজ্যসভা’।

আমি আগেই বলেছি, দুই কক্ষের সংসদ আমাদের সমস্যা আরও বাড়াবে। কিছু কিছু সম্ভাব্য সমস্যা নিয়ে আমরা কথা বলতে পারি।

ছোট রাজনৈতিক দলগুলোতে নির্বাচনের পরপরই মনোনয়ন নিয়ে কোন্দল হবে। ধরুন ‘আমরা সবুজের’ উচ্চকক্ষে পাঁচটা আসনের জন্য ১০ জন আকাঙ্ক্ষিত। যে পাঁচজন মনোনয়ন পাননি, তারা দল ভাঙবেন, দাবি করবেন তারাই আসল ‘আমরা সবুজ’ ইত্যাদি। পরে দেখা যাবে, যে ছোট দলগুলোকে লালন করতে উচ্চকক্ষ গঠন করা হলো, তা তাদের পতনের কারণ হয়ে যাবে।

একটা উগ্র রাজনীতির ধারক বা দেশের স্বাধীনতাবিরোধী দল, দেশব্যাপী স্বল্প ভোটের সমর্থন কাজে লাগিয়ে উচ্চকক্ষে আসন পেতে পারে এবং সেখান থেকে তাদের প্রচারণার সুযোগ পাবে।

অপ্রতিদ্বন্দ্বীমূলক আসনেও ভোট গ্রহণে ও গণনায় গন্ডগোল বাড়বে। যেসব আসনে ‘আমরা সবুজের’ নির্বাচিত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই, তারা সেখানেও হাঙ্গামা করে ভোট বাড়াতে চেষ্টা করতে পারে।

বড় দলগুলোর নেতারা নিম্নকক্ষে নির্বাচিত হয়ে আসবেন; সুতরাং দল উচ্চকক্ষের আসনগুলো চাঁদার বিনিময়ে বিক্রি করে দিতে পারে।

এমনিতে দেশের প্রতিটা অঞ্চলে সংসদ সদস্য, আঞ্চলিক নেতা ও বিভিন্ন প্রতিনিধির কোন্দলে পরিবেশ দূষিত হয়ে থাকে। তার সঙ্গে যোগ দেবেন উচ্চকক্ষের নতুন ‘লর্ড’।

আমাদের ছোট্ট দেশ। যত বেশি প্রতিনিধি থাকবে, রাজনীতি তত বেশি মাথাভারী হবে। সিঙ্গাপুর ছোট্ট দেশ, তাদের একটা কক্ষ। শ্রীলঙ্কার নয়টা প্রদেশ, তবুও তারা এক কক্ষেই সন্তুষ্ট।

আমাদের প্রয়োজন আমাদের এক কক্ষের সংসদকে কার্যকর করে তুলতে, যাতে করে সংসদে বিরোধী দল আরও কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে। কিছু কিছু সুপারিশ যেমন প্রধানমন্ত্রীর দুই মেয়াদ এবং বিলে ক্রস ভোটিং ভালো কাজ দেবে। নিরপেক্ষ সরকারের অধীন নির্বাচন-প্রধানমন্ত্রী ও তার দলের নির্বাচনে হস্তক্ষেপ থেকে দেশকে রক্ষা করবে।

সংসদকে কার্যকর করতে আরও অনেক বিষয় আছে যেমন বিরোধী দলে থেকে মন্ত্রিত্ব করা যাবে না, নির্বাচিত হয়ে সংসদ বয়কট করলে পদত্যাগ করতে হবে—এই ধরনের অনেক কমনসেন্স সংস্কার আমাদের প্রয়োজন।

সংসদীয় গণতন্ত্র সব দেশে সংখ্যা সংখ্যাগরিষ্ঠতা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। এটা মেনে নিয়ে আমাদের এগোতে হবে, নতুবা প্রেসিডেনশিয়াল পদ্ধতি হলো বিকল্প। দুই কক্ষ করে কোনোভাবে স্বেচ্ছাচারী সরকার ঠেকানো যাবে না। আমাদের দেশে অনেকবারই একনায়ক বা স্বেচ্ছাচারী সরকার এসেছে এবং প্রতিবারই তা হয়েছে দল বা নেতাদের স্বেচ্ছাচারিতায়-সিস্টেমের ঘাটতি বা উচ্চকক্ষের অনুপস্থিতির জন্য নয়।

এসব বিবেচনা করলে মনে হবে, দেশে উচ্চকক্ষ রাখা হবে একটা অহেতুক অলংকার। এদিকে উচ্চকক্ষের গঠনপ্রক্রিয়া নিয়ে দ্বন্দ্ব জুলাই সনদের অগ্রগতিতে একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংসদ এককক্ষীয় রেখে, উচ্চকক্ষের প্রস্তাব সম্পূর্ণ বাদ দিলে, আশা করা যায় জুলাই সনদের অঙ্গীকার চূড়ান্ত করা ত্বরান্বিত হবে।

  • সালেহ উদ্দিন আহমদ শিক্ষক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক

ই-মেইল: [email protected]

*মতামত লেখকের নিজস্ব