শিশু-কিশোর–তরুণদের মধ্যে যৌনতাকেন্দ্রিক অপরাধ কেন বাড়ছে

দেশে অপরাধগুলোর মধ্যে যৌনতাকেন্দ্রিক অপরাধের সংখ্যা যেমন দিন দিন বাড়ছে, সেই অপরাধের সঙ্গে যুক্ত শিশু-কিশোর ও তরুণদের সংখ্যাও তেমন বাড়ছে। যৌনতাকেন্দ্রিক অপরাধ ও অপরাধীর বয়স উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিদিন খবরে যেসব অপরাধের কাহিনি উঠে আসছে, এর প্রায় প্রতিটির সঙ্গে কিশোর-কিশোরী, তারুণ্য, যৌনতা, পর্নোগ্রাফি, ইন্টারনেটভিত্তিক যৌনবিষয়ক অপরাধী গ্রুপ ও মাদক জড়িত।

সমাজের নানা স্তরে এই বয়সী ছেলেমেয়েদের একটা অংশ বিভিন্ন অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে যাচ্ছে। এ সবই ঘটছে কিশোর-কিশোরীদের অস্বাভাবিক যৌন আচরণ বা টিন অ্যাবনরমাল সেক্সুয়াল আচরণের কারণে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে মাদক, ইন্টারনেটের মাধ্যমে পর্নোগ্রাফির অবাধ বাজার।

অনেকের ধারণা, যৌনতা একটি পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তির বিষয়। কিন্তু বাস্তবতা ঠিক তেমনটা নয়। একটা সময় কিশোর-কিশোরীদের যৌবনের শুরু হতো গড়ে ১৬ বছর বয়সে। এখন সেটা নেমে এসেছে ১০ বছরে। এর মানে মানুষের যৌনচিন্তা ও শারীরিক প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে আগেভাগেই। যৌনক্রিয়ায় কোনটি স্বাভাবিক আর কোনটি অস্বাভাবিক—এই বোধ ঠিকমতো তৈরি হচ্ছে না কিশোর-কিশোরীর মধ্যে। কারণ, সুস্থ যৌনক্রিয়া কী, সেই শিক্ষা পাওয়ার আগেই পর্নোগ্রাফি ও বন্ধুবান্ধবের মাধ্যমে তারা পেয়ে যাচ্ছে বেপরোয়া ও অস্বাভাবিক যৌনক্রিয়ার শিক্ষা।

প্রাপ্তবয়স্কদের অনেকে হয়তো শুধু যৌন আনন্দের জন্য ইচ্ছা করে পর্নোগ্রাফি দেখেন, কিন্তু শিশু-কিশোরদের ক্ষেত্রে বিষয়টি ঠিক তেমন নয়। তারা মুঠোফোন, ল্যাপটপ, ট্যাব বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিকস ডিভাইস ঘাটতে গিয়ে বা অন্য কোনো কিছু যেমন কার্টুন, সিনেমা, গেম, অ্যানিমেশন ফিল্ম বা পড়াশোনা করার সময় তথ্য ও ছবি ঘাঁটতে গিয়ে হঠাৎ পর্নোগ্রাফি অ্যাপে ঢুকে পড়ে।

ছেলেমেয়েরা যখন বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছায়, তখন তাদের নিজের দেহ ও মন নিয়ে অনেক প্রশ্ন থাকে। আর সেই প্রশ্নের সঠিক জবাব না পেলে বিভ্রান্তিকর তথ্য থেকে নানা রকম ক্ষতি হতে পারে। একজন শিশু যখন বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছায়, তখন সেই শিশুর জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে বিশেষ মনোযোগ প্রয়োজন। পরিবার ও সমাজ বয়ঃসন্ধিকাল, এই বয়সের সমস্যা, সাবধানতা, বিপদ, যৌন জীবন ও প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে কোনো আলোচনাকে গ্রহণ করে না, বরং এ-বিষয়ক আলোচনাকে ঘরে-বাইরে, এলাকায়, স্কুলে ঠেকানোর চেষ্টা করে থাকে।

এরপর সেই স্টোর থেকে অনবরত ছবি, তথ্য, খেলা—এসব আসতে শুরু করে সেই শিশুর কাছে। একবার যদি শিশুরা এই নিষিদ্ধ জিনিস দেখতে শুরু করে, তখন সেটা তাদের নেশা হয়ে যেতেও সময় লাগে না। অর্থাৎ, তখন শিশু-কিশোরেরা বাবা-মা ও অভিভাবকদের চোখের আড়ালে এই চর্চা চালাতে থাকে। ইউনিসেফ বাংলাদেশের তৎকালীন আবাসিক প্রতিনিধি এডুয়ার্ড বেগবেদার নিরাপদ ইন্টারনেট দিবস ২০১৯ উপলক্ষে ইউনিসেফের প্রতিবেদন প্রকাশ করার সময় বলেছিলেন, ‘ইন্টারনেট এখন শিশুদের জন্য এক দয়ামায়াহীন জগতে পরিণত হয়েছে।’

স্কুল বা কলেজের সহপাঠীদের কাছ থেকেও তারা এসব লিংকের খবর পায় এবং নিজেরা সেই তথ্য আদান-প্রদান করে। এ ক্ষেত্রে ‘পিয়ার প্রেশার’ খুব বড় প্রভাব রাখে। পর্নোগ্রাফির জগৎটা অনেক বড়। এর ডালপালাও মাকড়সার জালের মতো চারদিকে বিস্তৃত। কাজেই এই মাকড়সার জালে কখন, কোনো শিশু, কীভাবে ধরা পড়বে, তা অভিভাবকদের জন্য বোঝা রীতিমতো চ্যালেঞ্জিং। প্রযুক্তি বিষয়ে জানেন এমন অভিভাবক ছাড়া, সাধারণ অভিভাবকদের পক্ষে বিষয়টি বোঝা খুব কঠিন। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য এই জগতের দুয়ার যতটা খোলা বা যতটা নাগালের মধ্যে, শিশুদের জন্য ঠিক ততটাই খোলা বা নাগালের মধ্যে।

শিশু ও কিশোর-কিশোরীরা যখন এসব পেজ দেখতে শুরু করে, তখন সেখানকার চরিত্রগুলোকেই আদর্শ মনে করে এবং নিজেদের তাদের সঙ্গে মেলানোর চেষ্টা করে। এভাবে তারা না জেনে, না বুঝে জড়িয়ে পড়ে ক্ষতিকর ও অস্বাভাবিক যৌন আচরণে। এ দেশের একটা বড়সংখ্যক অভিভাবক জানেন না যে অনলাইনে ঠিক কী ধরনের বিষয়বস্তু রয়েছে, এই জগতে কী ধরনের বিপদ ওত পেতে আছে।

ইন্টারনেট ব্যবহারে সন্তানের চেয়ে দক্ষতায় পিছিয়ে আছেন অভিভাবকেরা। সেই সুযোগে সন্তানেরা মা-বাবাকে নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করে। ৩১ শতাংশ শিশু অনলাইনে যৌনতাবিষয়ক বার্তা, ছবি, ভিডিও পেয়েছে, অথচ বাবা-মায়েরা এ বিষয়ে কিছু জানেন না। তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কে ছেলেমেয়েদের স্পষ্ট ধারণা, তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক বিস্তার ও পর্নোগ্রাফির সহজ প্রবেশগম্যতা এবং বয়ঃসন্ধিকালের স্বাভাবিক আগ্রহই শিশু-কিশোরদের এই পথে চালিত করছে।

বিশ্বজুড়ে জনস্বাস্থ্য বিষয়ে বয়ঃসন্ধিকালের কিশোর-কিশোরীদের যৌন জ্ঞান ও প্রজনন স্বাস্থ্যের ওপর গুরুত্ব দেওয়ার প্রসঙ্গটি গুরুত্ব পাচ্ছে। এ সময়টাতেই কিশোর-কিশোরীদের মনে রোমান্টিকতা ও যৌন আগ্রহ সৃষ্টি হয়। যেহেতু যৌন জীবন ও প্রজনন স্বাস্থ্য আমাদের সমাজে এখনো ট্যাবু, তাই কিশোর-কিশোরীরা যেকোনোভাবে ভুল তথ্য নিয়ে, ভুল পথে যেতে পারে। তাদের সঠিক পথে চালানোর জন্য শুধু নীতি পুলিশিং না করে, বয়ঃসন্ধিকালের প্রজনন স্বাস্থ্য ও যৌন স্বাস্থ্য নিয়ে সঠিক শিক্ষা দিতে হবে। স্কুলগুলো হতে পারে এই জ্ঞান দেওয়ার ক্ষেত্রে মূল স্থান। তাহলে সব ধরনের ছেলে-মেয়েদের কাছে যৌনতা বিষয়ে বিজ্ঞানভিত্তিক, বাস্তবসম্মত ও সমালোচনার ঊর্ধ্বে উঠে তথ্য পৌঁছানো সহজ হবে।

যদিও এখনো পরিবারে, সমাজে ও স্কুলপর্যায়ে প্রজনন স্বাস্থ্য ও যৌন শিক্ষা নিয়ে কথা হয় না, অথচ দেখা যাচ্ছে অপ্রাপ্ত বয়সেই অনিরাপদ যৌন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। আমরা এখনো মনে করছি, আমাদের সন্তানেরা যৌন সম্পর্কে জড়াচ্ছে না। কিন্তু সব ক্ষেত্রে তা কার্যকর হচ্ছে না। অধিকাংশ বাবা-মা ও অভিভাবক ধারণাই করতে পারেন না, তাদের স্কুল ও কলেজে পড়ুয়া সন্তানেরা পর্নোগ্রাফিতে কতটা আসক্ত এবং তারা কীভাবে এর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে?

চিকিৎসাবিজ্ঞানে একটি বিষয় আছে, যাকে বলে হাইপার সেক্সুয়ালিটি বা কম্পালসিভ সেক্সুয়াল ডিসঅর্ডার। এই সমস্যার লক্ষণ শিশুদের ১০ বছর বয়স থেকেই দেখা যেতে পারে। লক্ষণগুলো হচ্ছে—যৌন বিষয়ে অতিরিক্ত উৎসাহ এবং পরিণত বয়সের আগে থেকেই যৌন চাহিদা তৈরি হওয়া। তাদের প্রকৃত নির্দেশনা, শিক্ষা ও সহযোগিতা দেওয়া দরকার। সেই সহযোগিতা না দিয়ে বয়ঃসন্ধিকালের শিশুদের দায়ী করা মানে, একধরনের নির্বুদ্ধিতা।

কিশোর-কিশোরীদের অস্বাভাবিক যৌন আচরণ বা টিন অ্যাবনরমাল সেক্সুয়াল বিহেভিয়ার নিয়ে যাঁরা গবেষণা করেছেন, তাঁরা দেখেছেন বর্তমানের কিশোর-কিশোরীদের বিপজ্জনক ও ক্ষতিকর যৌন আচরণে যুক্ত হওয়ার হার বেড়ে গেছে। এগুলোর জন্য তারা বিপজ্জনক অনেক কিছুই করতে পারে। এ ক্ষেত্রে তারা কীভাবে বিষয়টিকে নিয়ন্ত্রণ করবে, সে বিষয়ে তাদের সঠিক প্রজনন ও যৌন শিক্ষা দিতে হবে।
ইউনিসেফ জানিয়েছে বাংলাদেশের শিশুরা অনলাইনে উৎপীড়ন হয়রানিসহ আরও নানা ধরনের বিপদের হুমকির মধ্যে আছে। বাংলাদেশে শিশু-কিশোর ও তরুণ-তরুণীদের মধ্যে পর্নোসাইটগুলোতে যাওয়ার পরিমাণ দিন দিন আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। কারণ, তারা বয়ঃসন্ধিকালের অনেক প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করে এর মাধ্যমে।

খুবই ভয়াবহ তথ্য হচ্ছে, শিশুদের দিয়ে যৌনদৃশ্যে অভিনয় করানো, তাদের যৌন নিপীড়নের ছবি ও ভিডিও ধারণ এবং এসব আদান-প্রদানের দিক থেকে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান পঞ্চম। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল সেন্টার ফর মিসিং অ্যান্ড এমপ্লয়টেড চিলড্রেন (এনসিএমইসি) এ তথ্য জানিয়েছে। এনসিএমইসির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

এমজেএফ ও ডিনেটের একটি গবেষণা বলছে, বাংলাদেশেও কিছু পর্নোগ্রাফি নির্মাণ করা হচ্ছে, যার মান আন্তর্জাতিক পর্নোগ্রাফির মানের চেয়ে আরও নিম্ন ও কুরুচিপূর্ণ। এগুলোও ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ছে চারদিকে। যেখানে মেয়েদের দেখানো হচ্ছে মন্দ, অবমাননাকর, অশ্লীল, প্রতিশোধমূলক ও বিদ্বেষমূলকভাবে এবং ভার্চ্যুয়াল যৌনতার উপাদান হিসেবে ও যৌনব্যবসা প্রচারের উদ্দেশ্য। দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হলো, এসব কনটেন্টের দর্শক হিসেবে শিশু, কিশোর-তরুণদের একটা বড় অংশ রয়েছে।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন (সিক্যাফ) ‘বাংলাদেশ সাইবার অপরাধপ্রবণতা-২০২৩’ বিষয়ক প্রতিবেদন প্রকাশ করে বলেছে, সাইবার অপরাধের ধরনে বদল দেখা দিয়েছে এবং বেশি ঝুঁকিতে আছেন নারী ও শিশুরা। সাইবার জগতে শিশু ভুক্তভোগীদের হার ক্রমেই বাড়ছে।

সারা দেশে ইন্টারনেটভিত্তিক বিভিন্ন গ্রুপ সক্রিয় হয়ে উঠছে, যারা ফাঁদে ফেলে শিশু ও নারীদের নিয়ে ব্যবসা করছে। সিআইডি ২০২৩-এর মে মাসে টেলিগ্রাম গ্রুপের সদস্যদের কাছে এসব ভিডিও বিক্রির অভিযোগে এই নয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে। ইন্টারনেটভিত্তিক যোগাযোগমাধ্যম টেলিগ্রামে ‘পমপম’ নামের একটি গ্রুপ খুলে সদস্যরা নানাভাবে কিশোরী ও তরুণীদের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি করে। এরপর কৌশলে তাঁদের ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও সংগ্রহ করে, তা বিদেশে বিক্রি করে।

সিআইডি জানিয়েছে ভুক্তভোগী কিশোরী তরুণীরা প্রতারকদের কোনো প্রস্তাবে সাড়া না দিলে তাদের নাম-পরিচয় ও আর ব্যক্তিগত তথ্য লাখ লাখ গ্রাহকের টেলিগ্রাম গ্রুপগুলোতে ভাইরাল করে দেওয়া হচ্ছিল। এই গ্রুপের সদস্যরা অল্পবয়সী মেয়েদের আপত্তিকর ছবি ভিডিও কিনে সংরক্ষণ করে। এই অপরাধী চক্রের টেলিগ্রাম গ্রুপ ও চ্যানেলগুলোয় গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় সোয়া চার লাখ।

টিকটক আর লাইকির বিষয় সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই তেমন কোন ধারণা ছিল না এবং এখনো নেই। ভারতের বেঙ্গালুরুতে বাংলাদেশি এক তরুণীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ভিডিও প্রকাশিত হওয়ার পর জানা গেল টিকটক ব্যবহার করে প্রায় ৫০০ মেয়েকে পাচার করা হয়েছে।

অল্পবয়সী ছেলেমেয়েদের কাছে এই অ্যাপ খুবই জনপ্রিয়। টিকটক ও লাইকির এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে কম বয়সী মেয়েদের বলা হয় তাদের টিকটক ‘স্টার’ বানিয়ে দেওয়া হবে, ফলোয়ার বাড়বে, টাকা আয় করা যাবে। পরে তাদের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে নেওয়া, পাচার করে দেওয়া, ধর্ষণ, ব্ল্যাকমেল করা হয়। ২০১৯ সালের শুরু থেকেই ডাউনলোড চার্টের শীর্ষের কাছাকাছি অবস্থান করছে টিকটক। বেশির ভাগ টিকটকার কম বয়সী। টিকটকের রিপোর্টিং সিস্টেমে অশ্লীল বিষয় বা আধেয়কে আলাদা করে দেখানো হয় না বলে যে যা খুশি আপলোড করতে পারে।

কেউ কেউ এসব অ্যাপ বন্ধ করে দেওয়া পক্ষে মত দেন। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, টিকটক, লাইকি বন্ধ করে দিলেই কি সমস্যার সমাধান হবে? বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র, একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন ‘টিকটক, ফেসবুক, লাইকি এগুলো বিটিআরসি চাইলেই বন্ধ করতে পারে না। কারণ, যে-কেউ এসব প্ল্যাটফর্মে ভার্চ্যুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক (ভিপিএন) দিয়ে প্রবেশ করতে পারে। তবে আমরা মনে করি, এ ব্যাপারে সমাজের সবার সচেতনতা বাড়াতে হবে। এ জন্য ইন্টারনেট সংযোগ নেওয়ার সময় প্যারেন্টাল গাইডটি অভিভাবকদের পড়া উচিত।’

ছেলেমেয়েরা যখন বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছায়, তখন তাদের নিজের দেহ ও মন নিয়ে অনেক প্রশ্ন থাকে। আর সেই প্রশ্নের সঠিক জবাব না পেলে বিভ্রান্তিকর তথ্য থেকে নানা রকম ক্ষতি হতে পারে। একজন শিশু যখন বয়ঃসন্ধিকালে পৌঁছায়, তখন সেই শিশুর জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে বিশেষ মনোযোগ প্রয়োজন। পরিবার ও সমাজ বয়ঃসন্ধিকাল, এই বয়সের সমস্যা, সাবধানতা, বিপদ, যৌন জীবন ও প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে কোনো আলোচনাকে গ্রহণ করে না, বরং এ-বিষয়ক আলোচনাকে ঘরে-বাইরে, এলাকায়, স্কুলে ঠেকানোর চেষ্টা করে থাকে।

আমাদের সমাজে বয়ঃসন্ধিকালের শিশু-কিশোরদের সঙ্গে এসব নিয়ে কথা বলাটা এখনো স্টিগমার মধ্যে রয়ে গেছে। ফলে যা জানা তাদের জন্য জরুরি, তারা তা জানতে পারছে না পরিবার ও সমাজ থেকে, কিন্তু তারা জানতে চায়। এসব তথ্য জানার জন্য ইন্টারনেট ও পর্নোগ্রাফির দরজা তাদের জন্য খোলাই রয়েছে। সামাজিক ট্যাবু না ভাঙতে পারলে, পরিবার সচেতন না হলে, সন্তানদের অনেকে সহজেই এ পথে পা বাড়াবে।

  • শাহানা হুদা যোগাযোগকর্মী