মালদ্বীপে কি চীনের প্রভাব আরও বাড়বে

মালদ্বীপের সংসদ নির্বাচনে দেশটির প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জুর দল বড় ধরনের জয় পেয়েছে। নির্বাচনে এই জয়কে অনেকেই ‘চীনপন্থীদের’ জয় হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। নির্বাচনের এই ফল মালদ্বীপের রাজনীতি ও অর্থনীতিতে কোন ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে, তা নিয়ে আল–জাজিরা একটি বিশ্লেষণ প্রকাশ করেছে। লিখেছেন জাহিনা রশিদ

মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জু (সামনে ডানে) গত জানুয়ারিতে বেইজিং সফর করেন। সে সময় চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং (বাঁয়ে) তাঁকে ‘পুরোনো বন্ধু’ বলে অভিহিত করেনফাইল ছবি: এএফপি

মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মোহামেদ মুইজ্জুর দল গত রোববার অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করবে, তা–ও আবার ভূমিধস জয়—সেটা খুব কম মানুষই প্রত্যাশা করেছিলেন। এমনটা মনে করার কারণ হলো, অনেকেই ধরে নিয়েছিলেন, গত বছর রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে তাঁর বিজয় ছিল একটি ফ্লুক (আকস্মিকভাবে পাওয়া)।

ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে সুপ্রিম কোর্ট মালদ্বীপের একসময়ের প্রেসিডেন্ট ও বিরোধীদলীয় নেতা আবদুল্লা ইয়ামিনকে নির্বাচনে অংশ নেওয়া থেকে বিরত রেখেছিলেন। তখন একজন প্রক্সি প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রাজধানী মালের তৎকালীন মেয়র ৪৫ বছর বয়সী মুইজ্জু শেষ মুহূর্তে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে শামিল হয়েছিলেন। নির্বাচনী প্রচারণার ব্যানার ও পোস্টারে ইয়ামিনের মুখচ্ছবি বিশেষভাবে শোভা পেত এবং কারাবন্দী নেতার জন্য প্রচার সমাবেশগুলোর সামনে এবং মাঝখানে একটি চেয়ার ফাঁকা রাখা হতো। 

ভারত মহাসাগরের মাঝে পাঁচ লাখ মানুষের দেশ মালদ্বীপ। ইয়ামিনকে মুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে এই দ্বীপপুঞ্জের ভোটারদের আকৃষ্ট করেছিলেন মুইজ্জু। তিনি শেষ পর্যন্ত ইয়ামিনের ‘ইন্ডিয়া আউট’ প্রচারণা চালিয়ে গেছেন, যেটাকে তাঁরা মালদ্বীপে নয়াদিল্লির বহিরাগত প্রভাব বলে অভিহিত করেন। এই প্রচারণার মধ্যে ছিল দেশটিতে থাকা ভারতীয় সামরিক কর্মীদের বহিষ্কারের বিষয়টিও।

আরও পড়ুন

কিন্তু অক্টোবরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়লাভের পরপরই মুইজ্জু এবং গৃহবন্দী ইয়ামিনের মধ্যে মতভেদ দেখা দেয়। এটা নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুকে পিপলস ন্যাশনাল কংগ্রেস (পিএনসি) নামে একটি পৃথক দল গঠন করতে প্ররোচিত করে। তাদের এই বিভক্তি দেখে মনে হয়েছিল যেন মুইজ্জু রোববারের সংসদীয় নির্বাচনে যথেষ্ট সমর্থন পাওয়ার জন্য একটি কঠিন লড়াইয়ের মুখে পড়বেন; বিশেষ করে বিদায়ী সংসদ বা মজলিশে সংখ্যাগরিষ্ঠ দল বিরোধী মালদ্বীপ ডেমোক্রেটিক পার্টির (এমডিপি) তরফ থেকে।

■ নির্বাচনে এই জয় মুইজ্জুকে বিচার বিভাগের ওপর পুরোপুরি কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার ক্ষমতা দিয়েছে। 

■ মুইজ্জু অবকাঠামোগত উন্নয়নকে উৎসাহিত করার প্রতিশ্রুতি নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালান।

■ ভারতীয় সেনাসদস্যদের দেশে ফেরত পাঠাতে মুইজ্জুর প্রচেষ্টার কারণে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক এখন সর্বকালের সবচেয়ে নিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। 

■ ‘অবশ্যই চীনের অনেক সুবিধা হবে, কিন্তু সেখানে কোনো সামরিক উপস্থিতি থাকলে আমি খুব অবাক হব।’

কিন্তু মুইজ্জুর পিএনসি গত সপ্তাহের ভোটে ভূমিধস জয় পেয়েছে। মুইজ্জুর দল ৬৬টি এবং তাদের মিত্ররা ১১টি আসন পেয়েছে। ৯৩ সদস্যের সংসদে ৭৫টি আসন পাওয়ায় তাঁরা খুব সহজেই সংবিধান সংশোধন করতে পারবে। অন্যদিকে এমডিপি পেয়েছে মাত্র ১২টি আসন। আর ইয়ামিনের দল একটি আসনেও জিততে পারেনি। 

মালেতে অবস্থিত মান্ধু কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক সংসদ সদস্য ইবরাহিম ইসমাইলের মতে, নির্বাচনের মাধ্যমে মুইজ্জু ‘নিরঙ্কুশ ক্ষমতা’ পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘এই পর্যায়ের সংখ্যাগরিষ্ঠতা কোনো ভালো ব্যাপার নয়। আপনি প্রেসিডেন্টের ক্ষমতার চেক অ্যান্ড ব্যালান্সের বিষয়টি প্রত্যাশা করতে পারেন না।’ 

প্রায় দুই দশক বহুদলীয় গণতন্ত্র চলমান থাকার পর মালদ্বীপের সংবিধান খসড়া করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা ইসমাইল তাঁর দেশে ‘স্বৈরশাসন’ ফিরে আসার আশঙ্কা করছেন। তিনি বলেন, পিএনসি আসলে যথার্থ কোনো রাজনৈতিক দল নয়। এটা তৃণমূল থেকে উঠে আসেনি। মুইজ্জুর ক্ষমতায় আসার সময়ে দলটি গঠিত হয়েছিল। তাঁকে জবাবদিহি করার মতো কোনো কাঠামো দলটিতে নেই। পিএনসির টিকিটে সংসদ সদস্য হওয়া প্রত্যেকেই মূলত প্রেসিডেন্টের দয়ায় নির্বাচিত হয়েছেন।

ইসমাইল আরও বলেন, ‘নির্বাচনে এই জয় মুইজ্জুকে বিচার বিভাগের ওপর পুরোপুরি কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার ক্ষমতা দিয়েছে। আদালতগুলোতে পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। খুব সম্ভবত সুপ্রিম কোর্টের পুরো বেঞ্চ বদলে ফেলা হবে। যদি বিচারপতিরা তাঁদের ক্ষমতা ধরে রাখতে চান, স্বৈরশাসনকে পথ করে দিতে তাঁদের হয়তো আপস করতে বাধ্য করা হবে।’ 

ইসমাইল আরও বলেন, দৃশ্যমানভাবে সরকার সংবিধান সংশোধন করতে পারে, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বিধিবিধানগুলো দুর্বল করতে পারে এবং নির্বাচিত কর্মকর্তাদের মেয়াদের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করতে পারে—এগুলোও সমানভাবে আশঙ্কাজনক। 

ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক: সর্বকালের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ

লক্ষণগুলো এরই মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণার সময় মুইজ্জু বিরোধীদের পেছনে না লাগার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও তাঁর সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রথম যে ব্যবস্থা নিয়েছিল তা হলো, সমালোচক সংবাদমাধ্যম ও বিদ্রূপাত্মক কিছু ওয়েবসাইটে প্রবেশাধিকার বন্ধ করে দেওয়া। যদিও জনরোষের পর সরকার পিছু হটে। 

ধাউরু সংবাদপত্রের সম্পাদক আহমেদ হিরিগা জহির বলেন, ‘আমি মালদ্বীপের গণতন্ত্রের জন্য গুরুতর চ্যালেঞ্জের পূর্বাভাস দিচ্ছি। স্বচ্ছতা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। মুইজ্জু সরকার প্রেসিডেন্ট ভবনের ব্যয়ের পাশাপাশি রাজনৈতিক নিয়োগের সংখ্যা প্রকাশ করতে ব্যর্থ হয়েছে।’ 

 এই প্রবীণ সাংবাদিক আরও বলেন, ‘তাঁর (মুইজ্জুর) মেয়াদের ছয় মাসে সরকার এবং সংবাদমাধ্যমের মধ্যে কার্যত কোনো সম্পর্ক তৈরি হয়নি। যদি এটি চলতে থাকে এবং যদি কোনো উল্লেখযোগ্য বিরোধিতা না থাকে, তবে এটি আমাদের গণতন্ত্রের জন্য কঠিন হবে।’ জহির এখনো মনে করেন, নির্বাচনী প্রচারণার সময় দেওয়া প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে ব্যর্থ হলে পরবর্তী নির্বাচনে মালদ্বীপের জনগণ মুইজ্জুর থেকে মুখ ঘুরিয়ে নিতে পারে।

আরও পড়ুন

পেশায় সিভিল ইঞ্জিনিয়ার প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু অবকাঠামোগত উন্নয়নকে উৎসাহিত করার প্রতিশ্রুতি নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছিলেন। তিনি বেশ কিছু দর্শনীয় মেগা প্রকল্পের কথা বলেছিলেন। এই মেগা প্রজেক্টগুলো তিনি শেষ করতে পারবেন কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়। 

পর্যটননির্ভর দ্বীপদেশটির ঋণ তার মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় ১১৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এর অর্ধেকের বেশি চীন ও ভারতের কাছ থেকে নেওয়া। এর পরিমাণ প্রায় ১.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। ফেব্রুয়ারিতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সতর্ক করে দিয়েছিল যে মালদ্বীপ উচ্চ ঋণসংকটের ঝুঁকিতে রয়েছে। সংস্থাটি স্বাস্থ্যসেবা এবং ভর্তুকি কর্মসূচির পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন উদ্যোগগুলোর সংস্কারসহ ‘জরুরি নীতি সমন্বয়’ করার আহ্বান জানিয়েছে। 

লন্ডনভিত্তিক আর্থিক পরামর্শ প্রদানকারী রেডের (আরইডিডি) সিনিয়র বিশ্লেষক মার্ক বোহলুন্ড বলেছেন, ‘পরিস্থিতিটি বেশ চ্যালেঞ্জিং। আমি মনে করি মালদ্বীপের কোনো না কোনো আকারে বাইরের সমর্থন প্রয়োজন হবে। সেটা ভারত, চীন বা মধ্যপ্রাচ্য—যেখান থেকেই হোক।’ কিন্তু এখন পর্যন্ত খুব কম সাহায্য আসছে। 

কোভিড-১৯ মহামারির সময়সহ প্রায়ই মালদ্বীপকে আর্থিকভাবে বড় ধরনের সহযোগিতা করেছে ভারত। কিন্তু ৭৫ জন ভারতীয় সামরিক কর্মীকে দেশে ফেরত পাঠাতে মুইজ্জুর চেষ্টার কারণে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক এখন সর্বকালের সবচেয়ে নিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। ভারতীয় সেনাদের শেষ ব্যাচটির আগামী ১০ মে মালদ্বীপ ত্যাগ করার কথা রয়েছে। 

সম্পর্কে ফাটল ধরার পর গত জানুয়ারিতে মালদ্বীপের উত্তরে অবস্থিত ভারতের লাক্ষা দ্বীপে পর্যটন বাড়ানোর জন্য একটি প্রচারণা শুরু করেছিল ভারত। তখন মুইজ্জুর তিনজন উপমন্ত্রী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্পর্কে অবমাননাকর মন্তব্য করলে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা আরও বেড়ে যায়।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই মালদ্বীপের পর্যটন বর্জনের আহ্বান জানায়। ভারত থেকে মালদ্বীপে আসা পর্যটকদের সংখ্যা গত বছর ছিল সর্বোচ্চ। এ বছর এটা অনেক কমে গেছে। 

মুইজ্জু জানুয়ারিতে বেইজিং সফর করলেও যেখানে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং তাঁকে ‘পুরোনো বন্ধু’ বলে অভিহিত করেন। কিন্তু তাতে স্পষ্ট হয়নি, চীন থেকে তিনি কোনো সাহায্যের প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন কি না। মালদ্বীপের সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, চীন মালদ্বীপকে অনুদান সহায়তা দিতে সম্মত হয়েছে, যদিও পরিমাণটি প্রকাশ করা হয়নি। এর মধ্যে বকেয়া ঋণ পরিশোধের বিষয়টি পুনর্গঠন করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

চীনের জন্য সুবিধাজনক পরিস্থিতি

মধ্যপ্রাচ্যের অংশীদারদের কাছ থেকে মুইজ্জু সামান্য সাহায্য পেয়েছেন। নভেম্বরে দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই তাঁর সৌদি আরব সফরের কথা ছিল। কিন্তু কোনো ব্যাখ্যা ছাড়া হঠাৎ করেই সেই সফর বাতিল করা হয়। এরপর তিনি তুরস্ক এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত সফর করেছিলেন। তবে দেশ দুটি থেকে আর্থিক সহায়তার কোনো প্রকাশ্য প্রস্তাব দেওয়া হয়নি। 

এখন পর্যন্ত চীনকেও ‘অনিচ্ছুক’ মনে হয়েছে। মুইজ্জু জানুয়ারিতে বেইজিং সফর করলেও যেখানে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং তাঁকে ‘পুরোনো বন্ধু’ বলে অভিহিত করেন। কিন্তু তাতে স্পষ্ট হয়নি, চীন থেকে তিনি কোনো সাহায্যের প্রতিশ্রুতি পেয়েছেন কি না।

মালদ্বীপের সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, চীন মালদ্বীপকে অনুদান সহায়তা দিতে সম্মত হয়েছে, যদিও পরিমাণটি প্রকাশ করা হয়নি। এর মধ্যে বকেয়া ঋণ পরিশোধের বিষয়টি পুনর্গঠন করা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

রেডের (আরইডিডি) মতে, শুধু চীনা ঋণের পুনর্গঠনই মালদ্বীপের জন্য বর্ধিত বহিরাগত ঋণের দুর্দশা এড়াতে যথেষ্ট হবে না। কারণ, দেশটির ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের একটি ইসলামিক বন্ড রয়েছে, যেটি ২০২৬ সালে পরিশোধ করতে হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন সাবেক জ্যেষ্ঠ সরকারি কর্মকর্তা আল–জাজিরাকে বলেন, মুইজ্জুর ভূমিধস জয়ের কারণে চীন এখন ঋণের ব্যাপারে আরও ‘সহনশীল’ হতে পারে। তিনি বলেন,‘চীনের অনেক সুবিধা রয়েছে। চীন সম্ভবত এর বিনিময়ে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করতে চাইবে। এর মাধ্যমে মালদ্বীপের পূর্ব-পশ্চিম বাণিজ্য রুটগুলোতে চীন প্রবেশাধিকার পেতে পারে।

এই প্রবেশাধিকার নিয়ে ভারতীয় এবং পশ্চিমা কূটনীতিকেরা আগেই উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা বলেছেন, এই প্রবেশাধিকারের জন্য ভারত মহাসাগরে চীনের অবস্থান ও প্রভাব বাড়াবে।

চীনের মাধ্যমে মালদ্বীপের আর্থিক দুর্দশার উপশম হলেও তারা সেখানে চীনের সামরিক উপস্থিতির অনুমতি দেবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল সিকিউরিটি কলেজের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ডেভিড ব্রুস্টার।

তিনি বলেন, ‘অবশ্যই চীনের অনেক সুবিধা হবে, কিন্তু সেখানে কোনো সামরিক উপস্থিতি থাকলে আমি খুব অবাক হব। কারণ, ভারত এবং অন্যান্য দেশের সঙ্গে মালদ্বীপের সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে এর পরিণতি অনেক গুরুতর হবে। ভারতের কাছে এখনো মালদ্বীপেরও বড় ঋণ রয়েছে।’

বেইজিং মালদ্বীপকে কতটা সাহায্য করতে পারবে, তা নিয়ে ব্রুস্টারের সংশয় রয়েছে। এ ক্ষেত্রে তিনি শ্রীলঙ্কার উদাহরণ টানেন। চীনের কাছে ঋণ নেওয়ার পরও দেশটি ২০২২ সালে আর্থিক সংকটের সম্মুখীন হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রে চীন ঋণ পুনর্বিবেচনা এবং তাদের ঋণ কমানোর ক্ষেত্রে বিশেষভাবে সহায়ক ছিল না। তাই আমরা জানি না বেইজিং মালদ্বীপে কী করবে।’ 

মালদ্বীপের ক্ষেত্রে চীন একটি গঠনমূলক ভূমিকা পালন করতে আগ্রহী হবে, নাকি সেটা দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে। 

জাহিনা রশিদ আল–জাজিরার সাংবাদিক

আল–জাজিরা থেকে নেওয়া। অনুবাদ: মনজুরুল ইসলাম