চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কেন এতটা বিক্ষুব্ধ হলো

শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। গত বৃহস্পতিবার রাতে।
ছবি: সংগৃহীত

‘জুজুর ভয়’—এই বাগধারাটি কে না শুনেছে। যার অর্থ হচ্ছে কল্পিত ভয়। মূলত জুজু হচ্ছে একটি কল্পিত প্রাণী। শিশুদের মনে ভয় সঞ্চার করতে এই কল্পিত প্রাণীর ভয় দেখানো হয়। ইংরেজিতেও এ ধরনের একটি শব্দবন্ধ আছে, বোগাস বু (bogus boo)। এটিও জুজুর মতো একটি কল্পিত প্রাণী। কোথাও পড়েছি, কোনো বিপজ্জনক জায়গায় যেতে মায়েদের নিষেধ না শুনলে শিশুসন্তানদের তখন এই বোগাস বু-এর ভয় দেখান ইংল্যান্ডের মায়েরা। আসলে সব দেশে সমাজে এ ধরনের একটি ব্যাপার থাকে।

শিশুদের না হয় ‘জুজুর ভয়’ দেখানো যায়, তরুণদের ক্ষেত্রে কি তা সম্ভব? বরং তরুণদের শিশু মনে করে এমন ভয় দেখানো নিশ্চয়ই হাস্যকরই ঠেকবে। এমন হাস্যকর কাণ্ডই ঘটিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তার আগে সর্বস্তরের পাঠকদের উদ্দেশ্যে বলে নিই, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ঘটে যাওয়া উত্তেজনাকর পরিস্থিতি।

বৃহস্পতিবার রাত নয়টার দিকে শাটল ট্রেনের ছাদে চড়ে যাওয়ার সময় হেলে পড়া একটি গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত ১৯ শিক্ষার্থী আহত হন। চলন্ত ট্রেনের ছাদ থেকে ছিটকে পড়েন তাঁরা। কারও মাথা, কারো মুখ থেঁতলে যায়। রক্তে গা ভেসে যাওয়া শিক্ষার্থীদের সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

আহত শিক্ষার্থীদের ১৬ জনকে ঘটনার পরপরই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। এঁদের মধ্যে তিনজন হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) আছেন। রক্তাক্ত শিক্ষার্থীদের বীভৎস ছবি দেখে এ খবর ছড়িয়ে পড়ে যে, একজন কি দুজন মারা গেছেন। তখন ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বাসভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন। অবশ্য উপাচার্য শিরীণ আখতার এ বাসভবনে থাকেন না।

হামলা থেকে রেহাই পায়নি শিক্ষক ক্লাব, পুলিশ বক্স, পরিবহন দপ্তরও। পরিবহন দপ্তরে গিয়ে অন্তত ২৪টি বাস, ১টি মোটরসাইকেল, ১৫টি প্রাইভেট কার ও মাইক্রোবাস ভাঙচুর করেন তাঁরা। এই ভাঙচুরের ছবি দেখলে বোঝা যায়, বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা কতটা সহিংস হয়ে উঠেছিল।

শাটল ট্রেনের ছাদ থেকে আহত শিক্ষার্থীদের ধরে নামাচ্ছেন অন্যরা

সংবাদমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের নানা উপগ্রুপের নেতা-কর্মীরা এ বিক্ষোভ ও ভাঙচুরে যুক্ত ছিলেন। তাঁদের কাউকে কাউকে নেতৃত্বের ভূমিকাতেও দেখা গেছে। তবে সেই বিক্ষোভের মধ্যে জামাত-শিবির ঢুকে গেছে বলে পরবর্তীতে এ বিক্ষোভকে ভিন্নদিকে নিয়ে যায় ছাত্রলীগের একটি পক্ষ। উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে চলা বিক্ষোভ যখন শিবিরবিরোধী বিক্ষোভে পরিণত হয়, সেখান থেকে স্বাভাবিকভাবেই সাধারণ শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে আসেন। ফলে রাতেই ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ পর্বের মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীদের এ বিক্ষোভের ইতি ঘটে।

এখন প্রশ্ন হলো, শিক্ষার্থীরা এভাবে বিক্ষুব্ধ হলো কেন? শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শাটল ট্রেনে ভয়াবহ সিট সংকট। ভেতরে গাদাগাদি করে বসে, দাঁড়িয়ে থেকেও কোনোভাবে জায়গা সংকুলান হয় না। বগি বাড়ানোর জন্য বারবার দাবি জানিয়েও কাজ হয়নি। বরং ডেমু ট্রেন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আরও আপত্তিকর ব্যাপার হচ্ছে, ট্রেনে মালবাহী বগিও যুক্ত করে দেওয়া হয়।

শাটল ট্রেন শিক্ষার্থীদের জন্য হলেও স্থানীয়রাও সেটিতে করে যাতায়াত করছেন। এ ছাড়া নিরাপত্তাহীনতার কারণে বখাটে যুবকদের দ্বারা কয়েকবার ছাত্রীদের যৌন হেনস্তা এমনকি ধর্ষণচেষ্টার ঘটনাও ঘটেছে। দিন-রাতে প্রচণ্ড গরমে ভেতরে টেকা যায় না। হাজার হাজার শিক্ষার্থীতে ঠাসা থাকে ট্রেন, অথচ বগিগুলোতে কোনো ফ্যান নেই। এমন পরিস্থিতিতে ছাদে উঠতে বাধ্য হন শিক্ষার্থীরা। আগে এক সময় সেটি দিনের বেলায় ঘটলেও, এখন সন্ধ্যা বা রাতের বেলায়ও ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের ছাদে উঠেন তাঁরা।

উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে ভাঙচুর চালায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার নামে ফেসবুকে সরব একটি গ্রুপে শরিফ উদ্দিন নামে এক শিক্ষার্থী একটি পোস্ট করেছেন। তিনি ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহসভাপতিও। তিনি ভাঙচুরের একাধিক ছবি ও ভিডিও দিয়ে লিখেছেন, ‘চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে ন্যক্কারজনক ঘটনার যারা জন্ম দিয়েছেন, তাঁরা কেউ সাধারণ শিক্ষার্থী হতে পারেন না। তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এটি আন্দোলনের কোনো ভাষা হতে পারে না। এটি পূর্ব পরিকল্পিত।’ সেই পোস্টে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের কিছু প্রতিক্রিয়া দেখা যাক।

প্রতিক্রিয়া-১: মনে হচ্ছে এটা (উপাচার্যের বাসভবন) কোনো সেভেন স্টার হোটেল! অথচ শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল...??? বৈষম্যেরও একটা সীমা থাকা উচিত।  

প্রতিক্রিয়া-২: নিন্দা জানাইতে আসছেন ভালো কথা, অধিকার আদায়ে সাহায্য করে তারপর নিন্দা করেন। আপনারা ছাত্রলীগের সবাইতো নেতা মানুষ বাইক ছাড়া আপনারা চলেন না, কিন্তু যে ছেলেটা অল্প টাকার টিউশন করে পেট চালায়, কিন্তু ক্যাম্পাস থেকে যাওয়ার জন্য ঠিকমতো একটা যাতায়াত ব্যবস্থা নাই, সে ফ্রাস্ট্রেটেড হতেই পারে। দীর্ঘদিন ঘরে ক্ষোভ চাপা থাকলে সেটা বীভৎসভাবেই প্রকাশ পায়!

প্রতিক্রিয়া-৩: কত কষ্ট করে পোলাপান যাওয়া আসা করে, একেই তো শাটলের শিডিউল কম, তার উপর ডেমুটাকে গায়েব করে দিয়েছে এই প্রশাসন। একটার পর একটা দুর্ঘটনা হচ্ছে তারপরও ওনারা ভাগ বাঁটোয়ারা নিয়ে ব্যস্ত। কোটি কোটি টাকা কই যায়। পোলাপান যে সব জ্বালায় দেয় নাই এটাই তো বেশি!

প্রতিক্রিয়া-৪: আপনি কোনো দিন শাটলে উঠেছিলেন? উঠে থাকলে অন্তত এ ধরনের কথা আপনার মুখে মানায় না...কখন এ রকম আন্দোলন হয়? যখন ছাত্রদের আলাপ আলোচনার মধ্য দিয়ে কোনো ন্যায্য দাবি আদায় হয় না..তখন এ রকম আন্দোলনের সূত্রপাত হয়..এটা ছাত্রদের বুকে দীর্ঘ দিনের পুষে রাখা অসন্তোষের নমুনা মাত্র...ভবিষ্যতে আরও হবে এটা তলব করে বলতে পারি...আগুন লাগায় দেয় নাই ভিসি অফিসে, এটা ভিসির কপাল!

একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যাতায়াতব্যবস্থা এমন কেন হবে? তরুণ প্রজন্মকে শারীরিকভাবে অসুস্থ, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ও চিন্তাগতভাবে বৈকল্য করে রাখতেই কি এমন ব্যবস্থা? শিক্ষকদের জন্য শীততাপ নিয়ন্ত্রিত বাস আর শিক্ষার্থীদের জন্য ‘ময়লার ভাগাড়ের’ মতো পরিবহন, এমন কেন হবে? একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতি এতটা অবহেলা কোনোভাবেই মানা যায় না। কোনো সভ্য দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তুলনা করলে লজ্জাই লাগে বলতে গেলে।

দুঃখজনক হচ্ছে, ছাত্রলীগের একাংশের মতো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও সেই বিক্ষোভের ভেতরে বিএনপি-জামায়াতের নামে জুজুর ভয় ঢুকিয়ে দিয়েছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর নূরুল আজিম সিকদার বলেছেন, শাটল ট্রেন দুর্ঘটনাকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভে জামায়াত শিবির ও বিএনপির প্ররোচনা ছিল। বিক্ষোভে তাদের ‘অ্যাজেন্ডা’ ঢুকে পড়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের পর গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দেড়টায় ক্যাম্পাসের জিরো পয়েন্ট এলাকা পরিদর্শনে এসে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। (প্রথম আলো অনলাইন, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩)।

পরিবহন দপ্তরে রাখা শিক্ষক বাসে চালানো হয় ভাঙচুর

শুক্রবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের ডাকা সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সামনে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে একটি গোষ্ঠী বিশ্ববিদ্যালয়কে অচল করতে এই নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঘটিয়েছে। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিরীণ আখতার অভিযোগ করেন, যেভাবে ধারালো অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে কয়েক শ ছেলেমেয়ে এ হামলা চালিয়েছে, তা কোনোভাবেই শিক্ষার্থীবান্ধব নয়। ছাত্ররা এ ধরনের কাজ করতে পারে তা তাঁর ধারণার বাইরে। তিনি আরও জানান, ভাঙচুরের ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা করা হয়েছে, যেখানে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও কয়েকটি মামলার প্রস্তুতি চলছে। যেখানে আছে হত্যাচেষ্টার মামলাও। তিনি বলেন, নিরাপত্তা প্রহরীকে হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে, বাসভবনে থাকলে সেটি তাঁকেও করতে পারত।

তার মানে, এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কিছু শিক্ষার্থীর ওপর চরমভাবে ভোগান্তি নেমে আসবে, মামলা-জেল-জুলুমের শিকারও হতে পারেন তাঁরা। শিক্ষাজীবন তো বিপর্যস্ত হবেই। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যদি সত্যিকার অর্থ শিক্ষার্থীবান্ধব হতো, তাঁদের দীর্ঘদিনের দাবির প্রতি আন্তরিক হতো, তাহলে কি এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটত? শিক্ষার্থীরাও কি বিক্ষুব্ধ হয়ে এই ভাঙচুর চালাতেন? তাঁদের বিরুদ্ধেও কি এতগুলো মামলা করতে হতো?

‘নাশকতার’ এসব অভিযোগে এই প্রশ্নও তৈরি হয়েছে, যেভাবে ক্যাম্পাসকে কর্তৃত্ববাদ ও ক্ষমতাচর্চার কেন্দ্র বানানো হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সরকারি ছাত্রসংগঠনের প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে, সেখানে বাইরের কোনো পক্ষ এসে এভাবে ভাঙচুর ও হামলা চালানো কতটা যুক্তিসঙ্গত। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে, ছাত্রলীগের এক উপগ্রুপের নেতা–কর্মীরা বরং এ হামলার জন্য আরেক উপগ্রুপের নেতা–কর্মীকে দোষারোপ করছেন। এখন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ হামলাকারী এসব ছাত্রলীগ–কর্মীকে ধরবে নাকি বিএনপি–জামায়েতের জুজুর ভয় দেখিয়ে যাবে?

ইতিহাসের দিকে তাকালে, দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আন্দোলনগুলো সাক্ষ্য দেয়, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, সরকারি প্রশাসন ও পুলিশের আচরণের বিরুদ্ধে এর চেয়েও সহিংস আচরণ করতে বাধ্য হয়েছে শিক্ষার্থীরা। সেসবের উদাহরণ দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের এ সহিংসতাকে ন্যায্যতা দেওয়া উচিত হবে না। এভাবে রাষ্ট্রীয় সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি কোনোভাবে মেনে নেওয়া যায় না।

কিন্তু অন্যায়, অবিচার, অবহেলার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যখন একবার ফুঁসে ওঠে তা কোনোভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না, সেই আগুন রাজনৈতিক ক্ষমতাকেও টলিয়ে দেয়। এটি নিশ্চয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তাদের জেনে না থাকার কথা না। অবশ্যই এমন অন্যায় কর্মকাণ্ড ও অপরাধের জন্য দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়াটাই স্বাভাবিক। অবশ্যই তদন্ত করে দেখতে হবে, এই ভাঙচুর–অগ্নিসংযোগে বহিরাগত বা অন্য কোনো পক্ষ ছিল কী না।

তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর খড়গহস্ত না হয়ে তাঁদের ন্যায্য দাবিগুলো মেনে নেওয়াটাই বরং যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের জন্য। তাদের বুঝতে হবে, জুজুর ভয় দেখিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বেশি দিন দমিয়ে রাখা যায় না।

  • রাফসান গালিব প্রথম আলোর সম্পাদকীয় সহকারী। ই–মেইল: [email protected]