পৃথক সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠা কেন গুরুত্বপূর্ণ

সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়ন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতের রাজনৈতিক প্রত্যয় আর শাসনতান্ত্রিক ম্যান্ডেট প্রতিপালনের জন্য সরকার বা নির্বাহী বিভাগের আওতা থেকে বের করে সুপ্রিম কোর্টের অধীনে একটি পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই। বর্তমান প্রধান বিচারপতির ঘোষিত রোডম্যাপ বা রূপরেখার প্রধান ধাপ ছিল সুপ্রিম কোর্টের অধীনে পৃথক সচিবালয় স্থাপন। পৃথক সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠা কেন গুরুত্বপূর্ণ, তা নিয়ে লিখেছেন মিল্লাত হোসেন

বিচার-কর্ম বিভাগের জন্য সুপ্রিম কোর্টের অধীনে একটি পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার দাবি নাগরিক সমাজ ও রাষ্ট্রের বিভিন্ন পর্যায় থেকে উঠেছে। এর আগে সাবেক প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেনের সময়ে এই সচিবালয় প্রতিষ্ঠার তোড়জোড় হয়ে এমনকি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করার পরও সরকারের অনীহায় তার বাস্তবায়ন ঘটানো না গেলেও সেই ভিত্তিপ্রস্তর আজও রয়ে গেছে। এরপর সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাও চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছিলেন।

পৃথক সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় প্রতিষ্ঠার ব্যাপারটি আদতে বিচার বিভাগের পৃথক্‌করণ ও স্বাধীনতারই একটি ধাপ। পৃথক্‌করণ ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করার বিষয়গুলো নিছক আলংকারিক বাগ্মিতা বা কথার কথা নয়, এগুলো এ ভূখণ্ডের ধারাবাহিক রাজনৈতিক অঙ্গীকার ও আমাদের সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার বিষয়। বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ তাঁর অভিভাষণে এ লক্ষ্যে এক রোডম্যাপও ঘোষণা করেছিলেন। এরই প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ, ২০২৫ জারি হয়েছে।

রাজনৈতিক অঙ্গীকার

১৯২১ সালে ব্রিটিশ শাসনামলে অবিভক্ত বাংলার আইনসভায় নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগের পৃথক্‌করণ–সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পাস হয়। ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের ২১ দফার ১৫ নম্বর দফা ছিল বিচার বিভাগের পৃথক্‌করণ। এই দফার বাস্তবায়নের লক্ষ্যে ১৯৫৭ সালে একটি আইনও পাস হয়, যদিও কেবল একটি গেজেট নোটিফিকেশনের অভাবে তা আর আলোর মুখ দেখেনি।

১৯৭০–এর যে নির্বাচনের ফলের ভিত্তিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতাসংগ্রাম চূড়ান্ত পরিণতি লাভ করে, তাতে বিজয়ী পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগের অন্যতম নির্বাচনী অঙ্গীকার ছিল শাসন বিভাগ থেকে বিচার বিভাগকে সম্পূর্ণভাবে পৃথক করা। ১৯৭২ সালের সংবিধানের অন্যতম ম্যান্ডেট ঘোষণা করা হয় বিচার বিভাগের পৃথক্‌করণকে। ১৯৯০–এর গণ–অভ্যুত্থানের পর তিন জোটের রূপরেখার ৩(খ) দফায় বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষ ও আইনের শাসন নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করা হয়।

সর্বশেষ ২০২৪–এর জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশে দেওয়া তাঁর প্রথম ভাষণেও বিচার বিভাগের সংস্কারকে সরকারের অন্যতম প্রতিশ্রুতি বলে অভিহিত করেছেন। ফলে বিচার বিভাগের পৃথক্‌করণকে আমাদের একটি শতাব্দীপ্রাচীন রাজনৈতিক অঙ্গীকার বলা যায়।

সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা

সংবিধানের ২২ অনুচ্ছেদে নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথক্‌করণকে রাষ্ট্রপরিচালনার অন্যতম মূলনীতি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এ ছাড়া সংবিধানের ৪র্থ তফসিলের অন্তর্গত ‘অন্তর্বর্তীকালীন ও সাময়িক বিধানাবলি’র দফা ৬(৬) অনুযায়ী অধস্তন আদালত–সম্পর্কিত সংবিধানের ষষ্ঠ ভাগের ২য় পরিচ্ছেদের অর্থাৎ বিচার-কর্ম বিভাগ ও স্বাধীনতা–সংক্রান্ত বিধানাবলি যথাশিগগির সম্ভব বাস্তবায়নের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ ছাড়া ১১৫, ১১৬ ও ১১৬ক অনুচ্ছেদগুলোতে এমন কিছু বিশেষ বিধান রয়েছে যেগুলোর বাস্তবায়নের সঙ্গে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

এমন নিরঙ্কুশ জন-অভিপ্রায় আর তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রণীত সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার সম্মিলিত প্রকাশ ঘটেছিল মাসদার হোসেন মামলার রায়ে। যার ফলে বিচার বিভাগের পৃথক্‌করণের প্রথম পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর। মামলার আদেশের ৭ম দফায় বিচার বিভাগের ওপর সুপ্রিম কোর্টের কার্যকর নিয়ন্ত্রণ ও প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করা ও ৮ম দফায় আইনসভা ও সরকারের প্রভাববলয় থেকে মুক্ত করে বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়ন, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিতের রাজনৈতিক প্রত্যয় আর শাসনতান্ত্রিক ম্যান্ডেট প্রতিপালনের জন্য সরকার বা নির্বাহী বিভাগের আওতা থেকে বের করে সুপ্রিম কোর্টের অধীনে একটি পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই। বর্তমান প্রধান বিচারপতির ঘোষিত রোডম্যাপ বা রূপরেখার প্রধান ধাপ ছিল সুপ্রিম কোর্টের অধীনে পৃথক সচিবালয় স্থাপন।

রাজনৈতিক অভিপ্রায় ও সাংবিধানিক প্রত্যাদেশ ছাড়াও সুপ্রিম কোর্টের অধীনে পৃথক সচিবালয় স্থাপনের আরও নানাবিধ বাস্তব কারণ আছে। সংবিধানের ১০৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অধস্তন সকল আদালত ও ট্রাইব্যুনালের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ-ক্ষমতা হাইকোর্ট বিভাগের ওপর ন্যস্ত।

এ ছাড়া ১১৫, ১১৬ ও ১১৬ক অনুচ্ছেদ মতে বিচারিক কর্মকর্তা ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটদের নিয়োগ, বদলিসহ সার্বিক নিয়ন্ত্রণ, শৃঙ্খলাবিধান ও বিচারকার্য পালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকার নিশ্চয়তার বিষয়গুলো রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রযুক্ত হবে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে। এসবের বাইরে, বিধিমালার আওতায় বিচার-কর্ম বিভাগ ও ম্যাজিস্ট্রেসির সহায়ক কর্মচারীদের আন্তজেলা বদলিরও নিয়ন্ত্রণ করে সুপ্রিম কোর্ট।

কিন্তু এত সব কর্মযজ্ঞ সম্পাদনের জন্য সুপ্রিম কোর্টের অধীনে কোনো উপযুক্ত সাংগঠনিক কাঠামো নেই। সংবিধানের উপর্যুক্ত ১০৯, ১১৬ ও ১১৬ক অনুচ্ছেদে বর্ণিত সাংবিধানিক দায়িত্বের পরিধিও ব্যাপক।

অন্যদিকে ২০০৭ সালে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসি পৃথক করার আগে বিচার-কর্ম বিভাগে জনবল ছিল ৪৫০ জনের মতো। বর্তমানে দেশে প্রায় ২৩০০ বিচারক এবং বিচারকের সংখ্যার কয়েক গুণ অধিকসংখ্যক আদালত আছে। বেশির ভাগ বিচারককে ২-৭টি অতিরিক্ত আদালতের বিচারকের দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। বর্তমানে জেলা ও দায়রা আদালত, মহানগর দায়রা আদালত, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও চিফ মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট আদালত মিলিয়ে কয়েক হাজার সহায়ক কর্মচারী নিয়োজিত আছেন। এই বিরাট কর্মযজ্ঞ সাধন-ক্ষমতার চর্চা কীভাবে হবে?

বর্তমানে সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রিকে এই ত্রিবিধ দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করার অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে। প্রধান বিচারপতির দপ্তর, আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগ মিলিয়ে ২৫০০–এর অধিক কর্মকর্তা-কর্মচারীর সমন্বয়ে গঠিত এক সুবৃহৎ প্রশাসনিক কাঠামো হলো সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রি। এর প্রতিষ্ঠা হয় সংবিধানের ১০৭ ও ১১৩ অনুচ্ছেদের আওতায় প্রণীত বিভিন্ন রুলসের মাধ্যমে।

সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুসারে প্রতিষ্ঠার বছর ১৯৭২ সালে আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগ মিলিয়ে মোট বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ছিল ২৪,৬২৩ (৪০৫৬+২০,৫৬৭)। আর ২০২২ সালে তা বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৫,৩৬,৬০২টি (১৯,৯২৮+৫,১৬,৬৭৪)। মামলা ও বিচারকের সংখ্যার তুলনায় বর্তমান কলেবর প্রায় ২২ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।

আইনি কাঠামো তৈরি করা প্রয়োজন

রুলস অব বিজনেস অনুসারে বিচার-কর্ম বিভাগ সংক্রান্ত উপর্যুক্ত কাজগুলো প্রধানত সরকারের আইন ও বিচার মন্ত্রণালয় সম্পাদন করে থাকে। আর কিছু অংশ করে সুপ্রিম কোর্ট রেজিস্ট্রি, যা কেবল সুপ্রিম কোর্টের দাপ্তরিক কার্যাবলি সম্পাদনের জন্য প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। তাই অধস্তন আদালত সম্পর্কিত যাবতীয় কার্যাবলি সুচারুভাবে সম্পাদনের জন্যও একটি পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠা করা আবশ্যক। পৃথক সচিবালয় স্থাপনের বদলে বিচার-কর্ম বিভাগের নিয়ন্ত্রণ ও আর্থিক বিষয়গুলো সরকারের আইন মন্ত্রণালয়ের অধীন বা নিয়ন্ত্রণে থাকলে, বিচারকদের কর্মের স্বাধীনতার এই সাংবিধানিক নিশ্চয়তাও বাস্তবায়নযোগ্য নয়।

এ ক্ষেত্রে যে আইনি কাঠামো তৈরি করা প্রয়োজন হবে তাতে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে দ্বৈতশাসন (সুপ্রিম কোর্ট ও আইন মন্ত্রণালয়) প্রথা বিলুপ্ত করতে হবে। এই লক্ষ্যে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কার্যপরিধি বা এখতিয়ার নির্ধারণ–সংক্রান্ত রুলস অব বিজনেস, ১৯৯৬–এ এই সচিবালয় অন্তর্ভুক্ত করে তা সরকারের কোনো মন্ত্রণালয়ের অধীন রাখা যাবে না।

 ‘এলোকেশন অব বিজনেসে’ বিচার বিভাগের পৃথক্‌করণ ও স্বাধীনতা নিশ্চিত করা সংক্রান্ত বিষয়গুলো সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়ের ওপর অর্পণ করতে হবে। বিচার-কর্ম বিভাগ ও বিচার বিভাগীয় দায়িত্ব পালন করা ম্যাজিস্ট্রেটদের আর্থিক বিষয়াবলিকে সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৮৮(চ) অনুসারে ‘সংযুক্ত তহবিল’–এর ওপর দায়যুক্ত বলে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, যাতে বিচার বিভাগের আর্থিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করা যায়।

এই সমস্ত একান্তই পদ্ধতিগত ও কারিগরি বিষয়–আশয়ের বাস্তবায়নের জন্য জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন, পে কমিশন, জুডিশিয়াল সার্ভিস গঠন ও নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত ২০০৭ সালের ৪টি বিধি; ২০১৭ সালের শৃঙ্খলা বিধি এবং সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯–এ প্রয়োজনীয় সংশোধন বা নতুনভাবে প্রণয়ন করে এমন ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ ও চাকরি–সংক্রান্ত বিষয়াদি আইন মন্ত্রণালয় তথা সরকারের সিদ্ধান্তের জন্য পাঠানোর কোনো ব্যবস্থা বহাল না থাকে।

মাসদার হোসেন মামলার রায়ের ১২ নম্বর নির্দেশনা অনুসারে বিচার বিভাগের বার্ষিক বাজেট প্রণয়নের ওপর নির্বাহী বিভাগের কোনো রকম কর্তৃত্ব থাকতে পারবে না। তাতে মান্যতা দিয়ে বিচার বিভাগের বাজেটের প্রাক্কলন বিচার বিভাগ নিজেই প্রস্তুত করার, প্রাক্কলন অনুসারে সরকার বিচার বিভাগের জন্য তহবিল বরাদ্দ দেওয়া এবং তা ব্যয়ে সরকারের খবরদারি বন্ধ করার সুযোগ বন্ধ করার বন্দোবস্ত করতে হবে।

১৯৭২ সালে সংবিধানে বিচার বিভাগের পৃথক্‌করণ ও স্বাধীনতা বিধানের যেটুকু সুযোগ তৈরি করা হয়েছিল, সেটুকুও আবার বাতিল হয়ে যায় ১৯৭৫ সালে। চতুর্থ সংশোধনীর মাধ্যমে বিচারকদের নিয়ন্ত্রণ ও শৃঙ্খলাবিধানের ক্ষমতা সুপ্রিম কোর্টের কাছ থেকে রাষ্ট্রপতির বকলমে প্রধানমন্ত্রীর হাতে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। এর মাধ্যমে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কফিনে ঠোকা হয়ে যায় শেষ পেরেকটি।

শেখ মুজিব সরকারের এই রাষ্ট্রকাঠামো বদলের সুবিধা পরবর্তী সব সরকারই নিতে ভুল করেনি। সামান্য এধার-ওধার করে প্রকারান্তরে বিচার বিভাগকে কুক্ষিগত রাখার ব্যবস্থাটিই চলে আসছে আজ অবধি। এর আশু সুরাহা দরকার। মাসদার হোসেন মামলার ১১ নম্বর নির্দেশনাতেও বিচার বিভাগের স্বতন্ত্রকরণ পূর্ণাঙ্গ করতে আইনসভা বা জাতীয় সংসদের ভূমিকা রাখার আবশ্যকতা স্বীকার করা হয়েছে।

শেষ কথা

বিচার বিভাগের পৃথক্‌করণ এই ভূখণ্ডের মানুষের শত বছরের আকাঙ্ক্ষা এবং সাংবিধানিকতার ইতিহাসের ‘যৌথ ইশতেহার’। জনগণের দাবি ও জনস্বার্থের সঙ্গে কোনো আপস চলে না। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পর এসে কোনো পেশাজীবী গোষ্ঠী, কায়েমি বা কোটারি স্বার্থ, এমনকি খোদ বিচারকেরা চাইলেও নির্বাহী বিভাগ থেকে বিচার বিভাগ পৃথক্‌করণ ও স্বাধীনতা নিশ্চিত না করা বা তা মুলতবি রাখার সুযোগ নেই। যদি এমনটা করা হয়, তবে তা হবে জনগণকে উপেক্ষা করার নামান্তর। শুধু বিচার বিভাগের খাতিরে নয় নিজেদের অস্তিত্ব, মর্যাদা সমুন্নত রাখার গরজে হলেও আমাদের নির্বাহী ও আইন বিভাগ জনবান্ধব হয়ে উঠবে—এটাই প্রত্যাশিত।

  • মিল্লাত হোসেন আইন–আদালত–সংবিধানবিষয়ক লেখক ও গবেষক