একাত্তরে গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এখনো কেন আসেনি

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণহত্যার মাত্রা যে কী ভয়াবহ ছিল, তা বিদেশি সাংবাদিক ও কূটনীতিকদের বয়ানেও জানা গেছে।
ছবি : সংগৃহীত

কয়েক দিন আগে লেখক-গবেষক আফসান চৌধুরীর একটি সাক্ষাৎকার ছাপা হয় প্রথম আলোয়। তাঁকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, একাত্তরে বাংলাদেশে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী যে গণহত্যা চালিয়েছিল, তা আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেল না কেন? তিনি বললেন, এখানে যে গণহত্যা হয়েছে, তা আমাদের প্রমাণ করতে হবে। কিন্তু সেটি কঠিন কিছু না। আমার মতে, গণহত্যার চেয়েও গণনির্যাতন প্রমাণ করাটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। নির্যাতন যখন গণহারে গোটা জনগোষ্ঠীর ওপর হয়, সেখানে হত্যাটা আর বড় থাকে না। আমি যখন ১৯৯৮ সালে শেরপুরের সোহাগপুর গণহত্যা নিয়ে কাজ করছিলাম; তখন অবাক হয়েছিলাম, এতদূর এল কী করে পাকিস্তানিরা। আমাদেরই তো যেতে প্রায় সারা দিন লেগে গেল। তো সেখানে যেটি হয়েছে, প্রতিটি ঘরের প্রত্যেক পুরুষকে হত্যা করা হয়েছে।

২০২১ সালে একই প্রশ্নের উত্তরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেছিলেন, ‘আমার মনে হয়, তিনটি কারণে এখনো আমরা এর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি লাভ করতে পারিনি। একটি দেশের গণহত্যাকে যে বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণার ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক মহলে নিয়ে যাওয়ার কথা, সেখানে ঘাটতি আছে। আমাদের এখানে বেশির ভাগ গবেষণা হয়েছে বাংলায়। গণহত্যা নিয়ে ইংরেজি ভাষায় গবেষণার সংখ্যা খুবই কম। এ ছাড়া আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের উদ্যোগেরও ঘাটতি আছে।

গণহত্যার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন লন্ডনের ডেইলি টেলিগ্রাফ–এর সাংবাদিক সাইমন ড্রিং। ২৫ মার্চ পাকিস্তান সেনাবাহিনী সব বিদেশি সাংবাদিককে হোটেল ইন্টরকন্টিনেন্টাল শেরাটন থেকে তুলে নিয়ে করাচিগামী বিমানে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু সাইমন ড্রিং ও অ্যাসোসিয়েট প্রেসের মাইকেল লরেন্ট পালিয়ে থেকে যান। এরপর ২৭ মার্চ দুই ঘণ্টার জন্য কারফিউ প্রত্যাহার করা হলে তাঁরা শহরে বেরিয়ে পড়েন। সাইমন ড্রিং পরে টেলিগ্রাফে লিখেছেন: ‘ট্যাংকস ক্রাশ রিভোল্ট ইন পাকিস্তান’। তাঁর এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পরই বহির্বিশ্ব পাকিস্তানিদের বর্বরতার খবর জেনে যায়।

একাত্তরে পাকিস্তানিদের গণহত্যা নিয়ে কাজ করছে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটিসহ আরও অনেক সংগঠন ও ব্যক্তি। বিদেশেও অনেকে পাকিস্তানিদের গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ের লক্ষ্যে কাজ করছেন। এমনকি পাকিস্তানেও কেউ কেউ এর পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন। বেশ কয়েক বছর আগে পাকিস্তানি সাংবাদিক হামিদ মির ঢাকায় এসে বলেছিলেন, একাত্তরের ঘটনার জন্য পাকিস্তানের ক্ষমা চাওয়া উচিত। তিনি এর পক্ষে জনপ্রতিনিধিদের স্বাক্ষরও সংগ্রহ করেছিলেন। একাত্তরেই পাকিস্তানিদের গণহত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন আরেক পাকিস্তানি লেখক আহমেদ সেলিম। পরে তিনি এ নিয়ে বইও লিখেছেন।

মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি লেখক-গবেষক মফিদুল হকের সঙ্গেও পাকিস্তানিদের গণহত্যার স্বীকৃতি নিয়ে কথা হয়। তিনি বললেন, মুক্তিযু্দ্ধ জাদুঘরের উদ্যোগে এ পর্যন্ত সাতটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন করা হয়েছে; যাতে বিশ্বের প্রায় সব অঞ্চলের লেখক-বুদ্ধিজীবী-ইতিহাসবিদেরা যোগ দিয়েছেন। এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর প্রতিবছর গণহত্যার ওপর গণবক্তৃতার আয়োজন করে থাকে। গত বছর বক্তৃতা দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের জেনোসাইড ওয়াচের প্রতিষ্ঠাতা সভাতি ড. গ্রেগরি এইচ স্ট্যানটোন; যার শিরোনাম ছিল ‘গণহত্যার অস্বীকৃতির পরিণতি’। মফিদুল হক জানান, পাকিস্তানিদের গণহত্যার বিষয়টি পুব-পশ্চিমের একাডেমিক ভুবনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। অনেক বেসরকারি সংস্থা এই গণহত্যার স্বীকৃতি দিয়েছে। যদিও ভারত ছাড়া অন্য কোনো দেশের আইনসভায় এ নিয়ে প্রস্তাব পাস হয়নি।

উল্লেখ্য, গত বছর ১৪ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নিম্ন পরিষদে রিপাবলিকান পার্টির স্টিভ শ্যাবট ও ডেমোক্রেটিক দলের রো খান্না ১৯৭১ সালে বাংলাদেশে চালানো পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণহত্যাকে স্বীকৃতি দেওয়ার দাবিতে একটি প্রস্তাব আনেন। স্টিভ শ্যাবট কংগ্রেসে বাংলাদেশ ককাসের ভাইস চেয়ার ও ফরেন রিলেশনস কমিটির এশিয়া ও প্যাসিফিক সাবকমিটির সদস্য।

পাকিস্তানিদের গণহত্যা সম্পর্কে মার্কিন কংগ্রেস উত্থাপিত প্রস্তাবের ভ্রান্তি হলো বাঙালি ও হিন্দুদের আলাদাভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
ছবি : সংগৃহীত

‘১৯৭১ বাংলাদেশ গণহত্যা স্বীকৃতি’ শীর্ষক প্রস্তাবে পাকিস্তানকে ঘটনা স্বীকার করে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়ার এবং অপরাধী যাঁরা এখনো জীবিত, তাঁদের আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানানো হয়েছে। প্রস্তাবে ১৯৭১ সালের মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বাঙালি ও হিন্দুদের ওপর নৃশংসতাকে ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। এই দুই আইনপ্রণেতা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে পাকিস্তানিদের ‘গণহত্যা’ ও ‘মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, মার্কিন কংগ্রেসে দেড় লাখ আর্মেনীয় গণহত্যার (১৯১৫) স্বীকৃতি পায় ২০১৯ সালের ২৯ অক্টোবর।

পাকিস্তানিদের গণহত্যা সম্পর্কে মার্কিন কংগ্রেস উত্থাপিত প্রস্তাবের ভ্রান্তি হলো বাঙালি ও হিন্দুদের আলাদাভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। হতে পারে বাংলাদেশের ইতিহাস সম্পর্কে তাঁদের খণ্ডিত ধারণার কারণে কিংবা এই প্রস্তাবের পক্ষে যাঁরা তদ্বির করেছেন, তাঁদের একদেশদর্শী দৃষ্টিভঙ্গির কারণে এভাবে বিষয়টি দেখা হয়েছে। একাত্তরে হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ বা খ্রিষ্টান বাঙালি মাত্রই পাকিস্তানিদের কাছে শত্রু ছিল। নতুন করে কোনো দেশের সংসদে এ ধরনের প্রস্তাব পাসের সম্ভাবনা ক্ষীণ। তবে যে কাজটি করা প্রয়োজন, একাত্তরে পাকিস্তানিরা যে বর্বরোচিত গণহত্যা চালিয়েছে, সেটি অ্যাকাডেমিক ভুবনে আরও বেশি প্রচার, আরও বেশি লেখালেখির মাধ্যমে হন্তারকদের চরিত্র উন্মোচন।

গত বছর অক্টোবরে পাকিস্তানের সাবেক সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়া তাঁর বিদায়ী ভাষণে সেনাসদস্যদের উদ্দেশে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তাতে তিনি পাকিস্তানের রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপকে অসাংবিধানিক বলে উল্লেখ করেছেন। গত বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ অব্যাহত ছিল মন্তব্য করে এই সেনা কর্মকর্তা বলেন, সামরিক বাহিনী পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে রাজনীতি থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভবিষ্যতেও সেনাবাহিনী পাকিস্তানের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করবে না।

পাকিস্তানের অতীত রাজনীতি ও সেনাবাহিনীর ভূমিকা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সাবেক সেনাপ্রধান যে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বিষয়টি টেনে এনেছেন, তা আমাদের জন্য কৌতূহলের বিষয়। বাজওয়া বলেছেন, এমন একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চান, যা পাকিস্তানের মানুষ সাধারণত এড়িয়ে যান। আর তা হলো ১৯৭১ সালে সাবেক পূর্ব পাকিস্তানে (বাংলাদেশ) সেনাদের (পশ্চিম পাকিস্তানের) আত্মসমর্পণ। পূর্ব পাকিস্তান (বাংলাদেশ) হাতছাড়া হওয়া সামরিক নয়, ছিল রাজনৈতিক ব্যর্থতা। সাবেক সেনাপ্রধানের দাবি, ‘একাত্তরে বাংলাদেশে লড়াইরত পাকিস্তানি সেনার সংখ্যা ৯২ হাজার ছিল না, ছিল ৩৪ হাজার। বাকিরা ছিলেন সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের লোকজন। এই ৩৪ হাজার সেনা ভারতীয় সেনাবাহিনীর আড়াই লাখ সেনা ও মুক্তিবাহিনীর প্রশিক্ষিত দুই লাখ যোদ্ধার বিরুদ্ধে লড়েছিলেন। সব প্রতিকূলতা সত্ত্বেও তাঁরা (পাকিস্তানি সেনারা) সাহসের সঙ্গে যুদ্ধ করেছিলেন এবং নজিরবিহীন ত্যাগ স্বীকার করেছিলেন।’

পাকিস্তানি সেনারা সাহস ও ত্যাগ কোথায় দেখলেন? যুদ্ধে জয়পরাজয় আছে। যুদ্ধ করে কোনো সেনাপতি কিংবা কোনো বাহিনী পরাজিত হতেই পারে। ১৯৬৫ ও ১৯৪৮ সালেও পাকিস্তান ভারতের সঙ্গে যুদ্ধে হেরে গিয়েছিল। কিন্তু একাত্তরে পাকিস্তানি সেনা তো বাংলাদেশে যুদ্ধ করেনি। ৯ মাসজুড়ে তারা এখানে গণহত্যা চালিয়েছে। তাদের হাতে ৩০ লাখ মানুষ নিহত এবং ২ লাখের বেশি নারী লাঞ্ছিত হয়েছেন। পাকিস্তানি সেনারা গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়েছে; মানুষের সহায়সম্পদ ও অর্থ লুট করেছে। জেনারেল নিয়াজি নামের যে সেনা কর্মকর্তাকে পূর্বাঞ্চলে যুদ্ধের নেতৃত্ব দিতে পাঠানো হয়েছিল, তিনি বাঙালির চেহারা বদল করে দেওয়ার দম্ভ দেখিয়েছিলেন। আরেক সেনা কর্মকর্তা রাও ফরমান আলী বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের সবুজ জমি লাল করে দেওয়া হবে।’ পাকিস্তানি সেনারা ২৫ মার্চ রাতে ‘অপারেশন সার্চলাইট’ শুরুই করেছিল গণহত্যা দিয়ে। ডিসেম্বরে যখন দেখল পরাজয় অনিবার্য, তখন পাকিস্তানি সেনা ও তাদের এ–দেশীয় দোসররা বাড়ি বাড়ি গিয়ে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে।

আরও পড়ুন

বাংলাদেশের মানুষ অনেক আগে থেকেই পাকিস্তানিদের গণহত্যার স্বীকৃতি দাবি করে এসেছে। ২০১৩ সাল থেকে ২৫ মার্চ ‘গণহত্যা দিবস’ হিসেবে পালিত হচ্ছে। ২০১৭ সালে জাতীয় সংসদে প্রস্তাব পাস হয়েছে। অন্যদিকে পাকিস্তানের একাধিক রাজনীতিক ও সেনা কর্মকর্তা একাত্তরের ঘটনা ভুলে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু একটি জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে তাঁরা যে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন, তা ভুলে যাওয়া যায় না। একাত্তরে বাংলাদেশে সংঘটিত অপরাধের জন্য পাকিস্তানকে ক্ষমা চাইতেই হবে।

আসলে একাত্তরে বাংলাদেশে সেনা অভিযান ও গণহত্যার জন্য পাকিস্তানি রাজনৈতিক ও সেনা নেতৃত্ব উভয়ই দায়ী। ইয়াহিয়া খান ২৫ মার্চ বাঙালিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। তিনি সামরিক ব্যক্তি। কিন্তু সেই অভিযানের পেছনে যে জুলফিকার আলী ভুট্টোর প্ররোচনা ছিল, সে কথা অস্বীকার করা যাবে না। পাকিস্তানের সেনা কর্মকর্তারা একাত্তরে বাংলাদেশে বিপর্যয়ের জন্য ভুট্টো অর্থাৎ রাজনৈতিক নেতৃত্বকে দায়ী করেছেন। আবার ভুট্টো সেনা কর্মকর্তাদের ওপর দোষ চাপাতে হামুদুর রহমান কমিশন গঠন করেছিলেন। পাকিস্তানিদের গণহত্যার কিছু প্রমাণ কিছু খ্যাতনামা গণমাধ্যমে সেই সময়ই তুলে ধরেছে। অপারেশন সার্চলাইটের নির্দেশ দিয়ে ইয়াহিয়া খান ঢাকা ত্যাগ করেন। আর পরদিন ভুট্টো করাচি ফিরে বলেছিলেন, ‘থ্যাঙ্ক গড, পাকিস্তান রক্ষা পেয়েছে।’

আরও পড়ুন

পাকিস্তান সেনাবাহিনীর গণহত্যার মাত্রা যে কী ভয়াবহ ছিল, তা বিদেশি সাংবাদিক ও কূটনীতিকদের বয়ানেও জানা গেছে। আর্চার কে ব্লাড তখন ঢাকায় মার্কিন কনসাল জেনারেল। তিনি ২৮ মার্চ পররাষ্ট্র দপ্তরে পাঠানো বার্তায় লিখেছেন, পাকিস্তানি বাহিনী একটি ভূখণ্ডকে যে বিভীষিকাময় ও সন্ত্রস্ত জনপদে পরিণত করেছে, তার প্রত্যক্ষদর্শী আমরা। সেনাবাহিনীর আক্রমণের মুখে অসংখ্য মানুষ গ্রামে চলে যেতে বাধ্য হচ্ছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর এই অভিযানকে তিনি অভিহিত করেছিলেন ‘বাছাই করা গণহত্যা’ বলে।

গণহত্যার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন লন্ডনের ডেইলি টেলিগ্রাফ–এর সাংবাদিক সাইমন ড্রিং। ২৫ মার্চ পাকিস্তান সেনাবাহিনী সব বিদেশি সাংবাদিককে হোটেল ইন্টরকন্টিনেন্টাল শেরাটন থেকে তুলে নিয়ে করাচিগামী বিমানে পাঠিয়ে দেয়। কিন্তু সাইমন ড্রিং ও অ্যাসোসিয়েট প্রেসের মাইকেল লরেন্ট পালিয়ে থেকে যান। এরপর ২৭ মার্চ দুই ঘণ্টার জন্য কারফিউ প্রত্যাহার করা হলে তাঁরা শহরে বেরিয়ে পড়েন। সাইমন ড্রিং পরে টেলিগ্রাফে লিখেছেন: ‘ট্যাংকস ক্রাশ রিভোল্ট ইন পাকিস্তান’।
তাঁর এই প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পরই বহির্বিশ্ব পাকিস্তানিদের বর্বরতার খবর জেনে যায়।

কিন্তু এত কিছুর পর স্বাধীনতার ৫২ বছরেও  পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আমরা আদায় করতে পারিনি।

  • সোহরাব হাসান প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক ও কবি
    [email protected]