প্রকৃতির এমন বিনাশ, কোন মহাবিপর্যয়ের মুখে পড়তে যাচ্ছি আমরা

দেশের বিশিষ্টজনদের সঙ্গে নিয়ে পরিবেশবাদীরা গাছ রক্ষার আন্দোলন করলেও তা গুরুত্বই দেয়নি সিটি করপোরেশান

একটা সময় জলবায়ু পরিবর্তন ও এর বিরূপ প্রভাবকে অনেক দূরের ইস্যু মনে করা হলেও, প্রকৃতি নিজেই আমাদের বুঝিয়ে দিতে শুরু করেছে, কালক্ষেপণের আর সুযোগ নেই। আমরা দেখতেই পাচ্ছি, প্রাকৃতিক মহাবিপর্যয়ের সম্মুখীন আজ পুরো বিশ্ব। প্রকৃতির রুদ্ররোষে বিশ্বের এক অংশে টানা বৃষ্টি, ভূমিধস, বন্যা, ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপ। একই সময়ে অন্য অংশে অনাবৃষ্টি, খরা, দাবানল, রেকর্ড গড়া গরমে অতিষ্ঠ মানব সম্প্রদায়সহ ধরিত্রীর বুকে বসবাস করা জীবজগৎ। জলবায়ুর এই জরুরি পরিস্থিতির মধ্যে আবার জেগে উঠছে একের পর এক আগ্নেয়গিরি।

মেক্সিকোর এলপোপো, ইন্দোনেশিয়ার আনাক্রাকাতাও, ফিলিপিনসের মায়ন অগ্ন্যুৎপাত ঘটাচ্ছে। ইউরোপের সর্ববৃহৎ সুপার ভলকানো হিসেবে পরিচিত ক্যাম্পি ফ্লেগেরিও জেগে উঠছে মর্মে আলামত দেখতে পাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। ইতালির নেপলস শহরের কাছে অবস্থিত ক্যাম্পি ফ্লেগেরিতে সর্বশেষ অগ্ন্যুৎপাত হয়েছিল পাঁচ শ বছর আগে। আবার হিমালয়ের হিমবাহ দ্রুত গলছে, ঝুঁকিতে রয়েছে ২০০ কোটি মানুষ। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে হিমালয়ের হিমবাহগুলো এখন ৬৫ শতাংশ বেশি দ্রুত গলছে। তুরস্ক-সিরিয়ার ভূমিকম্প ব্যাপক প্রাণহানিও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি এবং কানাডার দাবানল আমাদের আগামী দিনের আরও বড় বিপর্যয়ের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

কেবল প্রাকৃতিক বিপর্যয়ই নয়, নতুন ধরনের মহামারি-অতিমারিরও প্রাদুর্ভাব ঘটতে পারে। কোভিড-১৯ নামের ভাইরাস থেকে সৃষ্ট করোনা মহামারি সারা পৃথিবীকে যেভাবে ওলট-পালট করে দিয়ে গেছে, বিশ্ব অর্থনীতিতে ধ্বংসাত্মক প্রভাব ফেলেছে, যার ধকল টানতে হচ্ছে সবাইকে। কোভিডের ফলে অর্থনীতি, সমাজ ও মানুষের পারিবারিক জীবনে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে।

জাতিসংঘের মতে, গত ৭৫ বছরে বিশ্ব এ ধরনের পরিবর্তনের সম্মুখীন হয়নি। বিশ্বব্যাপী চলমান পরিবেশবিধ্বংসী কর্মকাণ্ডের ফলে প্রকৃতির রুদ্ররোষে করোনার মতো আমাদের ধারণার বাইরের সম্ভাব্য কোনো মহাদুর্যোগের মোকাবিলা করতে হতে পারে। সে জন্য আমাদের বাংলাদেশ কতটা প্রস্তুত?

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে পুরো বিশ্বের মধ্যে এমনিতেই বাংলাদেশ অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত দেশ এবং এই অনুমেয় কিংবা অননুমেয় দুর্যোগের ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যেও অন্যতম। গত বছরের প্রায় পুরোটা জুড়ে বাংলাদেশ একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগের কবলে পড়েছে।

আর ২০২৩-এ শীত শেষ যেতে না যেতেই গাঙ্গেয় এই ব-দ্বীপভূমিতে শুরু হয়ে যায় তাপপ্রবাহ। তা যেন প্রতিযোগিতায় নেমে নতুন নতুন রেকর্ড গড়েছে আমাদের জীবনযাত্রা অতিষ্ঠ করে দিয়ে। ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতের পরপরই। বিলম্বে হলেও বর্ষার আগমনে কালবৈশাখীর প্রকোপ কমে এসেছে, কিন্তু বজ্রপাতে নিরীহ মানুষের ক্রমবর্ধমান সংখ্যায় মৃত্যু মহা উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। গত বছর বজ্রপাতে মারা গেছেন ৩১৬ জন। মাস দুয়েক আগে একই দিনে বজ্রপাতে মারা গেছেন নয়জন মানুষ। আকস্মিক এসব অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে হতভাগ্য ওই সব মানুষের পরিবারগুলো।

প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান বনাম সিটি করপোরেশনের উন্নয়ন প্রকল্প

সম্প্রতি বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব মোকাবিলায় দেশের জনগণকে ‘যে যেখানে পারেন অন্তত তিনটি করে গাছ লাগান, না পারলে অন্তত একটি গাছ লাগান’ মর্মে আহ্বান জানিয়েছেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কার্যক্রম দেখে মনে হচ্ছে, এ আহ্বানকে তারা গুরুত্বই দিচ্ছে না।

নগর কর্তৃপক্ষের সৌন্দর্যবর্ধন কিংবা প্রসারিত উন্নয়নের নামে নির্বিচারে দক্ষিণের নগরপিতার কাছে ‘জঙ্গল’ হিসেবে চিহ্নিত হওয়া অক্সিজেন ও ছায়াদানকারী বড় গাছগুলো কেটে সেখানে ফুলের গাছ লাগিয়ে ‘বাতাস চলাচলের ব্যবস্থার’ বাস্তবায়নও করা হয়েছে।

দেশের বিশিষ্টজনদের সঙ্গে নিয়ে পরিবেশবাদীরা গাছ রক্ষার আন্দোলন করলেও তা গুরুত্বই দিলেন না নগরপিতা।

সারা দেশে বৃক্ষনিধনে জড়িত রাজনৈতিক আশীর্বাদপুষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না প্রায় কখনোই। সিলেট, চট্টগ্রামসহ দেশের পার্বত্য এলাকাগুলোতে নির্বিচারে পাহাড় টিলা কেটে নিচ্ছে রাজনৈতিক প্রভাবশালীরা।

নদীতীরবর্তী জেলাগুলোতে চলছে ‘বালুখেকো’ সেলিম চেয়ারম্যানের মতো ‘দস্যুদের’ অপতৎপরতা। পাশাপাশি নদী-খাল-জলাশয়/জলাধার দখল ভরাট পানির স্বাভাবিক প্রবাহে বাধা তৈরি করা হচ্ছে দেশের প্রায় সর্বত্র।

স্থানীয় প্রশাসন জেনে কিংবা সচেতনভাবে উদাসীন থেকে সময় পার করছে। কোনো ব্যবস্থা নিলেও তা কার্যকরী হচ্ছে না।

পরিবেশ মেলা, জাতীয় বৃক্ষরোপণ অভিযানের ফলে জনগণের মধ্যে সচেতনতা এবং বৃক্ষরোপণের আগ্রহ উদ্যোগ বাড়লেও অসাধুদের অপরিণামদর্শী কর্মকাণ্ডের ফলে যে পরিমাণে গাছপালা কাটা পড়ছে, বন উজাড় হচ্ছে, তা আর পূরণ হচ্ছে না।

রক্ষক যখন ভক্ষক, অপ্রতিরোধ্য প্রভাবশালী

‘বন খেকো’ ওসমান গনির নাম শুনেছি আমরা। সাবেক এই বন কর্মকর্তা তাঁর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও তথ্য গোপনের দায়ে কারাদণ্ড ভোগ করেছেন। দণ্ড ভোগের পাশাপাশি তাঁর সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত হয়েছে। তাঁর বাসায় বিছানার তোশক, বালিশ, চালের ড্রাম স্টোর রুমে রাখা ট্রাংক, স্টিলের আলমারির গোপন কুঠুরিতে কোটি টাকা ও বিপুল পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা এবং স্টোর রুমে স্তূপ করে রাখা খবরের কাগজের আড়ালে প্রচুর স্বর্ণালংকার পাওয়ার ঘটনা ২০০৭ সালে সারা দেশে আলোড়ন তুলেছিল।

এই রকম অসংখ্য ‘ওসমান গনি’ এখনো আছেন স্বমহিমায় এবং ব্যাপক দাপটে। তাঁদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সংশ্লিষ্টতায় অসাধু ব্যক্তিরা বন ধ্বংস করে চলেছে। আর প্রভাবশালীরা নানা ছুতোয় রাস্তার ধারের সরকারি জমিতে লাগানো গাছপালা উজাড় করে চলেছে প্রবল পরাক্রমে। ঢাকার উত্তরের জেলা গাজীপুরের ভাওয়াল উদ্যানের শালবন গজারি বনের আয়তন সংকুচিত হচ্ছে বাধাহীনভাবে দখল ও শিল্পায়নের জোয়ারে। টাঙ্গাইলের মধুপুর বনও সংকুচিত হচ্ছে ক্রমে। গাছপালা কমছে চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম, সিলেট এলাকার বন এবং পাহাড়ে।

সেদিন পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপমন্ত্রী ক্ষোভের সঙ্গে বলেছেন, বৃক্ষ বাঁচিয়ে উন্নয়নের চিন্তা নেই এ দেশে। পৃথিবীর অনেকে দেশেই বৃক্ষকে বাঁচিয়ে উন্নয়নের কাজ করতে হয়, কিন্তু এ দেশে সেই চিন্তাধারা নেই, এখানে উন্নয়নকাজের জন্য কোনো না কোনোভাবে বৃক্ষনিধন হচ্ছে।

চলার পথে চোখে পড়ে নির্বিচার বৃক্ষনিধনের চিত্র

সমতলে কিংবা পাহাড়ে যেখানেই যান, নির্বিচার বৃক্ষনিধনের চিত্র দেখা যাবেই। কেটে নেওয়া গাছের ধড়হীন গুঁড়ি পড়ে আছে রাস্তার পাশে, পাহাড়ের কোলে। সমতল আর পাহাড়ের কথাই শুধু বলি কেন, এই ঢাকা শহরের বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় গেলেও দেখা যাবে পনেরো-কুড়ি বছরের গাছগুলো ‘খুবই যত্নের সঙ্গে’কেটে নিয়ে ফুটপাতের সমতলে গুঁড়িটা রেখে দেওয়া হয়েছে, যেন পথচারীদের ‘উষ্টা খেতে’ না হয়। কারা এসব গাছ কেটে নিচ্ছে, তা জানার কথা নগর কর্তৃপক্ষের।

এভাবে গাছ কাটতে কাটতে অনেক এলাকায় এখন ছায়াদানকারী গাছ কমে গেছে আশঙ্কাজনক হারে। ভবিষ্যতে এসব স্থানে গাছপালা আর দেখা না-ও যেতে পারে। ওদিকে আবার পয়োনিষ্কাশন ও ফুটপাতের উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের নামে গাছ কাটা হয়, কিন্তু এগুলোর স্থলে নতুন গাছ লাগানোর আর সুযোগ রাখা হয় না।

ভারত ভ্রমণের অভিজ্ঞতা

সম্প্রতি দার্জিলিং, সিকিম ও জলপাইগুড়ির বিশাল এলাকা ঘুরতে গিয়ে দেখা গেল ভিন্ন চিত্র। সুবিশাল বৃক্ষরাজি, ঘন অরণ্য, বৃক্ষরাজির সুশীতল ছায়া, কর্তৃপক্ষের সতর্ক পদক্ষেপ, শাস্তির বিধান, জনগণেরও আইনের প্রতিশ্রদ্ধা দেখানোর অনুশীলন। এমনকি দার্জিলিং এলাকার রাস্তার ধারে পাহাড়ের কোলে বিভিন্ন স্থানে সাইনবোর্ডে সতর্কবার্তা দেওয়া আছে, ওখানে কেউ মলমূত্র ত্যাগ করলে জরিমানা গুনতে হবে, গাছ কাটলে তো শাস্তিসহ আছে জরিমানা।

তুলনায় ঢাকা-কলকাতা

একসময়ের ভারতের রাজধানী পরবর্তী সময় পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী শহর কলকাতার বয়স ঢাকা চেয়েও অনেক বেশি। কিন্তু, কলকাতা ঠিকই সবুজময়। কয়েকবার কলকাতা ভ্রমণের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, প্রতিবারই যেন আগের চেয়ে বেশি সবুজ ও পরিচ্ছন্ন হয়ে উঠছে ‘সিটি অব জয়’। সন্দেহ নেই, এর পেছনে ওখানকার নগর কর্তৃপক্ষ যেমন আন্তরিক, তেমনি জনগণও সজাগ ও সচেতন। ওখানে কোনো গাছ কাটার আগে কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হয়, এ জন্য নির্ধারিত অঙ্কের ফি জমা তো দিতেই হয়, একই সঙ্গে এক বা একাধিক গাছ লাগানোরও লিখিত মুচলেকা দিতে হয়। আর আমাদের তিলোত্তমা মহানগরী ঢাকার বৃক্ষহীন, সবুজহীন রুক্ষ তপ্ত দালানময় কংক্রিটের জঞ্জাল হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে অসাধুদের পাশাপাশি নগর কর্তৃপক্ষেরও সম্পৃক্ততা দেখা যাচ্ছে।

বাংলাদেশের বর্তমান বনাঞ্চলের আয়তন

পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ভূখণ্ডের মোট আয়তনের ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকা অপরিহার্য বলে মনে করেন পরিবেশবাদীরা। বিভিন্ন সংগঠনের দাবি, দেশে বর্তমানে বনভূমির পরিমাণ সাত থেকে আট শতাংশ।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) ‘দ্য স্টেট অব ওয়ার্ল্ড ফরেস্ট-২০২২’ শীর্ষক প্রতিবেদনের তথ্যমতে, বাংলাদেশে এখন বনভূমির পরিমাণ মোট ভূমির ১৪ দশমিক ১ শতাংশ।

যদিও জাতীয় সংসদে এক প্রশ্নোত্তর পর্বে পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রী শাহাবউদ্দিন জানিয়েছেন, দেশের মোট বনভূমির আয়তন ১৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ। তিনি আরও বলেছেন, কিছু কিছু এলাকায় বনভূমিতে জবরদখল রয়েছে, আবার কিছু এলাকায় বনভূমি অবক্ষয়িত হয়েছে।

পত্রিকায় প্রকাশিত খবর, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা ও এর ফল

সম্প্রতি রাজশাহীর বাগমারায় কীটনাশক দিয়ে রাস্তার পাশের তালগাছ মেরে ফেলায় এক রাজনীতিককে চার লাখ টাকা জরিমানা এবং তাঁকে চাকরিচ্যুতির নির্দেশ দিয়েছেন মহামান্য হাইকোর্ট। পটুয়াখালীর কলাপাড়ার এক ইউপি চেয়ারম্যান এবং ওয়ার্ড মেম্বারকে সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার অন্যতম উপকরণ গাছপালা রক্ষার জন্য মহামান্য হাইকোর্টের কঠোর অবস্থানের ফল খানিকটা ফলতে শুরু করেছে। এটা অবশ্য বেশ আশার কথা।

বাংলাদেশেও দাবানলের আশঙ্কা

জলবায়ু সংকটের কারণে সারা বিশ্বে ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার ফলে দাবানলের ঘটনা ক্রমেই বাড়ছে। বাংলাদেশও এই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। আমরা নিশ্চয়ই ভুলে যাইনি যে কয়েক বছর আগে সুন্দরবনের গহিন এলাকায় অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। এখানে ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার ফলে ভবিষ্যতে আবার, এমনকি বারবার দাবানল দেখা দিতে পারে। প্রকৃতির রুদ্ররোষে অনেক কিছুই আমরা দেখছি নতুন করে।

নির্বিচার গাছকাটার ফলাফল শুধু পরিবেশবাদীরাই ভোগ করবেন না, ভুগতে হবে সবাইকে। উন্নয়ন হোক, হোক তা গাছ বাঁচিয়েই। উন্নয়ন ও গাছ দুটোই আমাদের দরকার। উন্নয়ন থেকে যাবে হয়তো তা ভোগ করার কেউ না-ও থাকতে পারে। এর পরিণাম কতটা ভয়াবহ, তা এখনো আমরা হয়তো ঠিকমতো অনুমানও করতে পারছি না।

তুরস্ক ও কানাডায় যথাক্রমে ভূমিকম্প ও দাবানলের ভয়াবহতা সামলাতে অন্য দেশের সাহায্য দরকার হয়েছিল দেশ দুটির। ভবিষ্যতে যদি নতুন রকমের কোনো দুর্যোগের সম্মুখীন হতে হয়, বিশ্বকে তখন কে কাকে সাহায্য করবে? অন্যের সাহায্য চাওয়ার মতো অসহায় অবস্থায় পড়ার আগেই সতর্কতা ও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। তাই এখন বাংলাদেশের দরকার টেকসই উন্নয়ন মডেলের পাশাপাশি টেকসই টিকে থাকার মডেল পরিকল্পনা প্রণয়ন, যাতে প্রকৃতির নতুন নতুন বিরূপ আচরণ ও রুদ্ররোষ মোকাবিলা করা যায়। এই বিষয়ে এক্ষুনি জোর তৎপরতা নেওয়া না হলে দেশ ও জনগণকে এর জন্য আগামী দিনগুলোতে চরম মূল্য দিতে হবে।

  • মুহাম্মদ লুৎফুল হায়দার ব্যাংকার।