অস্ট্রেলিয়ার সাবমেরিন নিয়ে কেন এত হইচই

অস্ট্রেলিয়ার পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন তৈরি নিয়ে চুক্তির ঘটনা এখন আর গোপন কোনো খবর নয়। অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য—এ তিন দেশের প্রধানেরা সরাসরি ভার্চ্যুয়াল বৈঠকে এ চুক্তির কথা প্রকাশ করেছেন সম্প্রতি। আর এ চুক্তির আসল কারণ ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের আধিপত্য ঠেকানো—এটাও এখন পরিষ্কার। গোটা বিশ্বের মাত্র ছয়টি দেশের কাছে রয়েছে এ পারমাণবিক সাবমেরিন। অস্ট্রেলিয়া হতে যাচ্ছে সপ্তম দেশ। একটি প্রচলিত সাবমেরিন তৈরি করতেই খরচ হয় কোটি কোটি টাকা। আর পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন নির্মাণের ব্যয় আরও অনেক বেশি। সেই পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন কিনতে গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে চুক্তি করে অস্ট্রেলিয়া। এর জন্য কয়েক বছর আগে ফ্রান্সের সঙ্গে করা চার হাজার কোটি মার্কিন ডলারের একটি চুক্তি বাতিল করে অস্ট্রেলিয়া। এতে ক্ষুব্ধ হয় ফ্রান্স। এই চুক্তিকে বিশ্বাসভঙ্গের শামিল বলে আখ্যায়িত করে তারা। চুক্তির জের ধরে অস্ট্রেলিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে রাষ্ট্রদূতদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার মতো ঘটনাও ইতিমধ্যে ঘটে গেছে। প্যারিসের অভিযোগ, গোপনে ওয়াশিংটন ও লন্ডনের সঙ্গে চুক্তি করেছে ক্যানবেরা।

ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-ইভেস লে ড্রিয়ান এই চুক্তিকে বিশ্বাসঘাতকতা এবং পেছন থেকে ছুরিকাঘাত হিসেবে বর্ণনা করেন। চুক্তির মাধ্যমে দেশ দুটি ফ্রান্সের সঙ্গে বিশ্বাসভঙ্গ ও অপমানজনক আচরণ করেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এ ছাড়া, চীনও এই চুক্তির কড়া সমালোচনা করেছে। বলেছে, এই তিন দেশের জোট ‘অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন’ ও ‘ছোট মানসিকতার’। তবে এখন অনেকেরই প্রশ্ন, এত অর্থ ব্যয় করে অস্ট্রেলিয়া যদি সাবমেরিন বানাতে চায়, তাতে সমস্যাটা কোথায় এবং এটা নিয়ে এত হইচই–ই বা কেন...?

অস্ট্রেলিয়া একটি সমুদ্রবেষ্টিত দেশ। স্বভাবত নিজেদের প্রতিরক্ষার জন্য অন্য সমরাস্ত্র মতো সাবমেরিনও অতি গুরুত্বপূর্ণ তাদের কাছে। ফলে, সাবমেরিন নিয়ে ২০১৬ সালে ফ্রান্সের সঙ্গে একটি চুক্তি হয় অস্ট্রেলিয়ার। দেশটির তখনকার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল মহাসাড়ম্বরে এ চুক্তি সম্পাদন করেছিলেন। সেখানে ডিজেলচালিত ১২টি সাবমেরিন তৈরির জন্য প্রায় চার হাজার কোটি ডলারের চুক্তি হয়েছিল। ফ্রান্স পরবর্তীকালে প্রচলিত ডিজেলচালিত সাবমেরিন না বানিয়ে পারমাণবিক সাবমেরিন বানাতে বলেছিল, কিন্তু অস্ট্রেলিয়া রাজি হয়নি। ইস্যুটি ফ্রান্সের সঙ্গে ওই পর্যন্তই ছিল এত দিন। অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়ায় ২০২০ সালের শুরুতে করোনাভাইরাস। উৎকণ্ঠা-মহামারি-ট্রাম্প-চীন—সবকিছু মিলিয়ে দেশটি কী করবে বুঝে উঠতে পারছিল না। এর মধ্যে হঠাৎ একদিন অস্ট্রেলিয়া করোনাভাইরাসের উৎপত্তির স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানায় চীনকে। বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের ইঙ্গিতেই অস্ট্রেলিয়া ওই দাবি উত্থাপন করেছিল। আর এতে অস্ট্রেলিয়ার প্রতি চরম খেপে যায় চীন। চীনের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার একটি দারুণ বাণিজ্যিক-অর্থনৈতিক সম্পর্ক ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের উৎপত্তি কৃত্রিম এবং এর জন্য চীনকে দায়ী করা হচ্ছে—তদন্তের আহ্বানকে এভাবেই দেখেছিল চীন। ফলে, ক্ষুব্ধ হয়ে অস্ট্রেলিয়াকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের মাউথপিস’, ‘চীনের জুতায় লেগে থাকা চুইংগাম’সহ অনেক অসংলগ্ন মন্তব্য করে চীন। এখানেই না থেমে অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বড় ধরনের বাণিজ্যিক সম্পর্কগুলো একে একে বাতিলও করে চীন। রুদ্ধ করে পর্যটক–শিক্ষার্থীদের আসার পথ, হয়রানিও করে বিভিন্ন কূটনৈতিক ইস্যুতে। আবার বছরের একটি সময় বড়সড় সাইবার হামলা হয় অস্ট্রেলিয়ায়। সেটার জন্যও চীনের দিকেই আঙুল তোলে অস্ট্রেলিয়া।

সাধারণ নথিপত্রে চীনের ৫৯টি সক্রিয় এবং ১২টি পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন রয়েছে। আর বৃহৎ যুদ্ধজাহাজ রয়েছে ১২১টি, যা চীনকে বিশ্বের তৃতীয় সর্ববৃহৎ নৌশক্তিতে পরিণত করেছে। সে তুলনায় অস্ট্রেলিয়ার ডিজেলচালিত প্রচলিত কোলিন-ক্লাস মান্ধাতা আমলের সাবমেরিন আছে মাত্র ৬টি, যা ২০৩৬ সালে অকেজো হয়ে যাবে। আর দেশটির যুদ্ধজাহাজ আছে ৪৩টি। ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগর এবং এতদঞ্চলীয় বিভিন্ন দ্বীপের পাশে প্রায়ই চীনের নৌবাহিনী মহড়া দিয়ে থাকে, যা আসলে অস্ট্রেলিয়ার নাকের ডগার ওপরই চলে। কখনো চীন ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় অস্ট্রেলিয়ার জলসীমায় অনুপ্রবেশ করলেও দৃশ্যত কিছু করার থাকে না। কারণ, চীনকে নিজ সমুদ্র–অঞ্চলে অনুপ্রবেশে বাধা দেওয়ার সক্ষমতা অস্ট্রেলিয়ার নেই। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌথ মহড়ায় অংশগ্রহণ করে থাকে অস্ট্রেলিয়া। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বন্ধুত্বের কারণে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর কয়েকটির সঙ্গে সম্পর্কও বৈরী। কারণ, এশিয়া–প্যাসিফিক দেশ হওয়ার পরও অস্ট্রেলিয়ার ভালোবাসা বরাবরই বেশি বিমানপথে ২১ ঘণ্টা দূরের ওয়াশিংটন আর ২৩ ঘণ্টা দূরের লন্ডনের জন্য। যদিও ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তখন তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়াকে নিজেদের সুরক্ষা আরও বাড়াতে হবে। ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের পরপরই দেখা গেছে, সামরিক জোট কোয়াডে আরও সক্রিয় হয়ে ওঠে অস্ট্রেলিয়া। যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার একটি জোট এই কোয়াড। যদিও ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরে স্বাধীনতার জন্য তৈরি হয়েছিল জোটটি; তবে এখন কোয়াড হয়ে দাঁড়িয়েছে চীনবিরোধী একটি জোট।

দীর্ঘদিন ধরেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই দুই মোড়লের সম্পর্ক যমজ ভাইয়ের মতো। এবার এই সুযোগে সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি করছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নীতিনির্ধারক দেশ জার্মানি। আর এ কারণেই অস্ট্রেলিয়ার সাবমেরিন তৈরির বিষয়টি এমন ফুলেফেঁপে উঠেছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে।

অস্ট্রেলিয়া নিজেকে শক্তিশালী করে তুলতে বিভিন্ন কায়দা গ্রহণ করে। ফলে, অস্ট্রেলিয়াসহ কানাডা, নিউজিল্যান্ড, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র—ইংরেজি ভাষাভাষী এই পাঁচ দেশের গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগির সংস্থা ‘ফাইভ আইস’কে আরও সচল করার চেষ্টা করে। তবে কানাডা ও নিউজিল্যান্ডের ক্ষমতাসীন দল অস্ট্রেলিয়ার বর্তমান লিবারেল পার্টির মতো এত যুক্তরাষ্ট্রঘেঁষা নয়। অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও বহির্বিশ্বে খরচ কমানোর পক্ষে। ফলে, ট্রাম্পের পরিকল্পনা হলেও সামরিক খরচ কমাতে বাইডেনও তড়িঘড়ি করেছেন আফগানিস্থান থেকে মার্কিন সেনা সরিয়ে নিতে। ফলে, এখন যুক্তরাষ্ট্র যে এত দূর এসে অস্ট্রেলিয়ার জন্য খরচা করতে আগ্রহী হবে না, সেটাও মোটামুটি পরিষ্কার অস্ট্রেলিয়ার কাছে।

১৯৮৬ সালে অস্ট্রেলিয়াকে নিজস্ব সংবিধান প্রদানের মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের কলোনি থেকে বেরিয়ে আসে অস্ট্রেলিয়া। যদিও এখনো অস্ট্রেলিয়াকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অংশ ধরা করা হয়; বহু ইতিহাসজুড়েই ব্রিটিশ বুদ্ধি বিক্রি করে নিজেদের ওপরে তুলে রেখেছে। ইউরোপের আসল কর্তাব্যক্তি যে সেই ব্রিটিশই, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তবে ইউরোপের আরও শক্তিশালী কয়েকটি দেশের মধ্যে ফ্রান্স ও জার্মানি অন্যতম, যারা কিনা আবার ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান মোড়ল। তাদের সঙ্গে চুক্তি বাতিল অনেকটা দুঃসাহস। ফলে, ফ্রান্স খুবই ক্ষিপ্ত হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার এমন কাণ্ডকে ‘পেছন থেকে ছুরি মেরেছে’ বলে আখ্যায়িত করেছে ফ্রান্স। আর ফ্রান্সের সঙ্গে একমত গোটা ২৭ দেশের জোট ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ফ্রান্সও উপনিবেশ স্থাপনে বেশ কৌশলী একটি দেশ। তাদেরও উপনিবেশ আছে অস্ট্রেলিয়ার আশপাশের দ্বীপরাষ্ট্রে। অস্ট্রেলিয়ার এমন চুক্তি ভঙ্গের কারণে ফ্রান্সের যে শুধু অর্থনৈতিক ক্ষতি তা নয়, দেশ-বিদেশ-উপনিবেশে মর্যাদাহানিও একটি বিষয়। পরবর্তী সময়ে আরও কোনো দেশ হয়তো চট করেই চুক্তি বাতিলের মতো সাহস দেখাবে আগেপিছে না ভেবেই। ফ্রান্সের অতি চটার সেটাও একটি কারণ, বলছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। আবার ফ্রান্সের সঙ্গে পুরো ইউরোপীয় ইউনিয়নের চটে যাওয়ার কারণ হলো জার্মানি। দীর্ঘদিন ধরেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই দুই মোড়লের সম্পর্ক যমজ ভাইয়ের মতো। এবার এই সুযোগে সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি করছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নীতিনির্ধারক দেশ জার্মানি। আর এ কারণেই অস্ট্রেলিয়ার সাবমেরিন তৈরির বিষয়টি এমন ফুলেফেঁপে উঠেছে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। অস্ট্রেলিয়ার সাবমেরিন তৈরির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাজ্যকে সঙ্গে রাখারও প্রধান কারণ দল ভারী করা। এখন দল ভারী করতে কমিশন না অন্য কিছু, সেটা বুঝবে যুক্তরাষ্ট্র।

ফ্রান্সের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার সাবমেরিন চুক্তির প্রায় দ্বিগুণ দামে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের সঙ্গে সাবমেরিন নির্মাণের চুক্তি করছে অস্ট্রেলিয়া। এ দ্বিগুণ অর্থ ব্যয়ের পেছনেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করাই মূল উদ্দেশ্য। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র যে সাবমেরিন বানিয়ে দেবে, এর মূল যন্ত্রাংশের অনেকটাই জোগান দেবে জোমন্ট নামের ফ্রান্সভিত্তিক প্রতিষ্ঠানই। আর দুই দেশের মধ্যে চুক্তি করে মাঝখান থেকে বাণিজ্য করা যুক্তরাষ্ট্রের নতুন কাজ নয়। আর সে জন্যই সাবমেরিন প্রকল্পের নাম করে এইউকেইউএস নামের নতুন একটি ত্রিদেশীয় নিরাপত্তা চুক্তি করা হয়েছে অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে। এ তিন দেশের চুক্তির আওতায় থাকবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, কোয়ান্টাম টেকনোলজি ও সাইবারের মতো বিষয়গুলো। দেশ তিনটি এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের ক্রমবর্ধমান ক্ষমতা ও সামরিক উপস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। এর কারণে এই জোটকেও চীনবিরোধী জোট বলে ধরা হচ্ছে। এ জন্য চীনও খেপেছে। তিন দেশের জোট গঠনের নিন্দা জানিয়ে বেইজিং বলেছে, এটা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন হুমকি। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বলেন, তিন দেশের চুক্তি আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং অস্ত্র প্রতিযোগিতাকে তীব্র করবে। চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের সম্পাদকীয়গুলোয় এ চুক্তির নিন্দা করা হয়। গ্লোবাল টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়, অস্ট্রেলিয়া এখন নিজেকে চীনের প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করিয়েছে।

কিন্তু এ সবকিছুতে মূলত অস্ট্রেলিয়ার কী হলো, এ নিয়ে উদ্বিগ্ন অস্ট্রেলিয়ার অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অঙ্গন। সাম্প্রতিক সময়ে এ ইস্যুতে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী পল কেটিং সিডনি মর্নিং হেরাল্ডে লিখেছেন বড় এক নিবন্ধ। তাঁর লেখার সারমর্মে বোঝা যায়, তিনি বলতে চেয়েছেন, আগে বর্তমান সরকারি দলের প্রধান জন হাওয়ার্ড, তাঁর আগে রবার্ট ম্যানজিইস ভিয়েতনামের যুদ্ধ এবং নানান সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের লেজুড়বৃত্তি করেছেন। ধরে নেওয়া যাক, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকদের নিরাপত্তার উদ্দেশ্যেই সাবমেরিন কেনাকে প্রয়োজনীয় মনে করছেন। কিন্তু এত অর্থ ব্যয় করে যুদ্ধের সরঞ্জাম কেনা হচ্ছে ঠিকই, তবে সত্যিকার অর্থে এর কোনো দরকার নেই। কেননা, যুক্তরাষ্ট্র যেমন ক্ষিপ্রভাবে হঠাৎ আক্রমণ করে, যুদ্ধ লাগিয়ে দেয়, চীনের তেমন কোনো উদ্দেশ্য নেই। উল্টো, একটা আপত্কালীন সময়ে তদন্তের আহ্বান করাসহ বিভিন্ন বিষয়েই চীনকে ক্ষিপ্ত করে তোলা হয়েছে। পরবর্তীকালে সাবমেরিন ইস্যু নিয়ে চীনের কাছ থেকে বাণিজ্যিক বিপদ তো আছেই, সঙ্গে সামরিক বিপদও ডেকে আনছে কি না অস্ট্রেলিয়া, তিনি সে প্রশ্ন রেখেছেন।

সাবমেরিন ইস্যুতে অস্ট্রেলিয়ার ভেতরে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ বলছেন, অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী একটি দেশের উচিত, তার প্রতিরক্ষাও থাকবে শক্তিশালী। কেউ বলছেন, যুদ্ধংদেহী মনোভাবে ক্ষতি ছাড়া লাভ নেই। তারপরও বিভিন্ন আলোচনায় সার্বিক যে আবহ, তাতে মনে হয় পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন নির্মাণ সফল হোক—এটাই চান অস্ট্রেলিয়ানরা। আর অস্ট্রেলিয়ার সামরিক ইতিহাস বিশ্লেষণ করলেও দেখা যায়, দেশটি এ সাবমেরিন নির্মাণ করবেই।

কাউসার খান অভিবাসন আইনজীবী ও সাংবাদিক
[email protected]