একটি মহান জীবনের প্রতিকৃতি

বাঁ থেেক লেখক, ভাষাসৈনিক আবদুল মতিন ও ভাসানী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক চৌধুরী
বাঁ থেেক লেখক, ভাষাসৈনিক আবদুল মতিন ও ভাসানী ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক চৌধুরী

স্বপ্নদ্রষ্টা আবদুল মতিন আজ আর আমাদের মাঝে নেই। বেশ কিছুকাল তিনি অন্তিম রোগশয্যায় ছিলেন। যদিও পরিণত বয়সেই—পুরোপুরি সংগ্রামী ৮৮ বছর-অন্তে শ্রদ্ধায় ও ভালোবাসায় আপ্লুত হয়ে তিনি দেহত্যাগ করলেন, তবু জাতি শোকাহত। আমরা অতি মহান, অনেক বড়, অনুপ্রেরণার উৎস এমন এক ব্যক্তিকে হারালাম, যিনি আজীবন আমাদের স্বপ্নকে হাজারো প্রতিকূলতার মধ্যেও গভীর মমতায় ধরে রেখেছিলেন। চিরাচরিতভাবে তাঁকে আমি ‘ভাষাসৈনিক বা ভাষা-মতিন’ বলে অভিহিত করে জাতীয় জীবনে তাঁর ভূমিকাকে শুধু একটি ক্ষেত্রে সীমিত করতে চাইনি। তবে যাঁরা ভাষাসংগ্রামের ইতিহাসের আদ্যোপান্ত জানেন, তাঁরা বলবেন, ভাষাসংগ্রামের বলিষ্ঠ সূচনা এবং স্বল্প সময়ে তার ক্রমবর্ধমান অগ্রযাত্রা আবদুল মতিনের অবদান ব্যতিরেকে কতটুকু সম্ভব হতো, তা একটি বড় প্রশ্ন।
এ কথা সত্য এবং একটি বড় সত্য যে সবকিছু ছাড়িয়ে তিনি বঞ্চিত-নিপীড়িত মানুষ, বিশেষ করে নির্যাতিত কৃষকের অধিকার প্রতিষ্ঠার এবং তাঁদের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য আপসহীন চেষ্টা করে গেছেন, আজীবন। তিনি স্বপ্ন দেখেছেন একটি ভেদাভেদহীন ন্যায়ভিত্তিক সমাজের, যেখানে থাকবে সুশাসন, সুবচন ও স্বাধীনতা। কৈশোরে, যৌবনে কেউ কেউ এই স্বপ্ন দেখেন বটে, তবে জীবনের যাত্রাপথে বাস্তবতার নির্মম আঘাত তা বিচূর্ণ করে ফেলে। মৃত্যুঞ্জয়ী আবদুল মতিন ছিলেন তাঁর উজ্জ্বল অনুপ্রেরণাকারী ব্যতিক্রম। আমার চেনা-জানার জগতে এমন নির্মোহ, ত্যাগী, নীতিনিষ্ঠ, আদর্শবান, উদার-হৃদয় জনদরদি কাউকে দেখিনি বললেও অত্যুক্তি হবে না বলে মনে করি। সারা জীবন তিনি দিয়েই গেলেন, এমনকি মৃত্যুতেও স্বেচ্ছায় তাঁর মরদেহ প্রদত্ত হলো শিক্ষার্থী-চিকিৎসকদের গবেষণাকল্পে।
প্রায় ছয় দশকাধিককাল মতিন ভাইকে কখনো কাছ থেকে, কখনোবা দূর থেকে বিভিন্ন রূপে দেখার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। ১৯৫২–৫৩ সালে আমি ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদের নির্বাচিত জেনারেল সেক্রেটারি ছিলাম। ভাষাসংগ্রামের সেই উত্তাল দিনগুলোয় তিনিই ছিলেন নেতা। তাঁর কাছেই গিয়েছি নির্দেশ-উপদেশের জন্য। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলন ও সাংস্কৃতিক উন্মেষের পথিকৃৎ ছাত্র ইউনিয়নের ১৯৫২ সালে জন্মলগ্ন থেকেই আমি হই সক্রিয় কর্মী। ১৯৫৩ সালে মতিন ভাই ছাত্রলীগের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে গ্রহণ করেন ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতিত্ব। ১৯৫৩ সালে রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন-সংক্রান্ত কর্মকাণ্ড এবং কলেজ প্রাঙ্গণে শহীদ মিনার স্থাপনার জন্য অন্য তিন-চারজন ছাত্রনেতার সঙ্গে আমি কলেজ থেকে বহিষ্কৃত হই। এর প্রতিবাদে যে ফলপ্রসূ ছাত্র আন্দোলন শুরু হয়, তাতে ছিল মতিন ভাইয়ের অনুপ্রেরণা।
দেশের বৃহত্তর গণতান্ত্রিক ছাত্র আন্দোলনে এবং তারিক আলীর ভাষায়, পরোক্ষভাবে সারা উপমহাদেশে তরঙ্গ সৃষ্টি করেছিল, এমন একটি বিস্মৃতপ্রায় অথচ অতি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার কথা স্মরণ না করে পারছি না। ১৯৫৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর করাচিতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল ‘অল পাকিস্তান স্টুডেন্টস কনভেনশন’৷ সেই সম্মেলনে ছাত্র ইউনিয়নের পক্ষ থেকে সভাপতি আবদুল মতিন ও ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে সম্ভবত তখনকার সভাপতি (পরে অধ্যক্ষ) কামরুজ্জামান প্রতিনিধিত্ব করেন। ওই কনভেনশনে আবদুল মতিন পূর্ব পাকিস্তানের পক্ষে তিনটি প্রস্তাব তুলে ধরেন। প্রস্তাব তিনটি হলো, বাস্তবতার ভিত্তিতে পাকিস্তানের দুটি রাষ্ট্রভাষা স্বীকৃত হোক—একটি উর্দু, অন্যটি বাংলা। দ্বিতীয়ত, পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলে ভৌগোলিক এবং অন্যান্য কারণে স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠিত হোক এবং তৃতীয়ত, পাকিস্তানে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা চালু করার জন্য দেশব্যাপী ঐক্যবদ্ধ ছাত্র আন্দোলন গড়ে তোলা হোক, যার প্রথম লক্ষ্য হবে অগণতান্ত্রিক মুসলিম লীগ শাসনের পরিবর্তন।
চিরাচরিত নিয়মানুযায়ী পাঠ্যাভ্যাস করে পরীক্ষায় ভালো ফল না পেলেও মতিন ভাই ছিলেন সত্যিকার বিদ্যা-শিক্ষা ও জ্ঞান অর্জনে অতি উৎসাহী। প্রচুর বই তিনি চিরকাল পড়েছেন, দেশ-বিদেশের। ১৯৪৫ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএ পাস কোর্সে ভর্তি হন এবং ১৯৪৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের এমএ ক্লাসে ভর্তি হন। তিনি পাস কোর্সে তৃতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েও কী করে এমএতে ভর্তি হলেন, সে এক কাহিনি। মাত্র অতি অল্পসংখ্যক ক্ষেত্রেই বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির ব্যাপারে নিয়ম শিথিল করে থাকে। আমার জানামতে, ম্যাট্রিকুলেশন পাস না করেও প্রতিভাবান শিল্পী এস এম সুলতান কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্ট কলেজে অধ্যাপক শাহেদ সোহরাওয়ার্দীর প্রস্তাবে ভর্তির নিয়মাবলি শিথিল করে গৃহীত হয়েছিলেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রধান উর্দুভাষী অধ্যাপক মাহমুদ হোসেনের ব্যক্তিগত উৎসাহ ও পৃষ্ঠপোষকতায় নিয়ম শিথিল করেও আবদুল মতিনকে এমএ ক্লাসে ভর্তি করা হলো ১৯৪৮ সালে। অধ্যাপক মাহমুদ হাসানের অগাধ আস্থা ছিল আবদুল মতিনের জ্ঞানার্জনস্পৃহার ওপর। তিনি মতিন ভাইকে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা দিতেও উৎসাহিত করেছিলেন। তাঁর মেয়েকে নিচে উদ্ধৃত লেখা একটি ছোট্ট সাদামাটা ছড়াতেও প্রকাশ পায় বিদ্যার্জনে তাঁর উৎসাহ।
‘লেখাপড়া যেই জানে
সব লোকে তারে মানে।
কটু ভাষী নাহি হবে,
মিছা কথা নাহি কবে।’
অন্যায় বা অসদাচরণের ব্যাপারে তাঁর ছিল আশৈশব জিরো টলারেন্স। তিনি ছিলেন অস্থিমজ্জায়, অণু-পরমাণুতে অসাম্প্রদায়িক। কিন্তু কোথাও কোনো ব্যত্যয় ঘটলে তার প্রতিবাদ জানাতে তিনি দ্বিধা করতেন না। মুসলমান ছাত্রসংখ্যা প্রাক্-পাকিস্তানকালে ছিল অতি সীমিত। তিনি দার্জিলিংয়ে

যেসব স্কুলে পড়াশোনা করেছিলেন, সেই মহারানী গার্লস স্কুলে মাত্র একজন এবং দার্জিলিং হাইস্কুলে জনাচারেক মুসলমান ছাত্র পড়ত। একবার এক সহপাঠী তাঁকে তাঁর ধর্ম নিয়ে ‘মোসলেন্ডি’ বলে গালি দেয়। তিনি তো তা সহ্য করার লোক নন। তিনিও তাকে লাগান এক ঘুষি। ছাত্রটি শিক্ষিকা লিলিদির কাছে গিয়ে নালিশ করে। শিক্ষিকা জিজ্ঞেস করলে কিশোর মতিনের সুস্পষ্ট উত্তর, ‘হ্যাঁ, মেরেছি। ও আমাকে “মোসলেন্ডি” বলে গালি দিয়েছিল, তাই।’ এমন সাহসী অথচ সমুচিত প্রত্যুত্তরে শিক্ষয়িত্রী নিশ্চুপ।
একবার ‘আঞ্জুমান ইসলাম’ প্রতিশ্রুতিমান কৃতী এক মুসলিম ছাত্রকে পুরস্কার দেওয়ার জন্য একটি রুপার ঘড়ি পাঠাল। প্রধান শিক্ষক ধরণীধর শর্মা। এ উপহারটি আবদুল মতিনকেই দিলেন। এমনিতেই তিন-চারজন ছাত্র, তার ওপর রেজাল্ট কারও তেমন ভালো নয়। তিনি আবদুল মতিনকে ডেকে বললেন, ‘তোমার নিয়মানুবর্তিতার জন্য এই পুরস্কার। কখনো তুমি ক্লাসে লেট বা কামাই করোনি। পুরস্কারটি বাড়ি নিয়ে এসে কিশোর মতিন ভেবে দেখলেন, তা তো ঠিক নয়। পরদিনই তিনি প্রধান শিক্ষককে তা ফেরত দিয়ে বললেন, ‘স্যার, এ পুরস্কার আমি নিতে পারি না।’ আপনি ভালো করে চেক করে দেখুন। একদিন ভারী বৃষ্টির জন্য আমার স্কুলে পৌঁছাতে ‘লেট’ হয়েছিল। ওই তারিখে আমার উপস্থিতি চিহ্নতে লিখা আছে ‘এল’। প্রধান শিক্ষকের আশীর্বাদ ছিল, ‘মতিন, তুমি একদিন অনেক বড় হবে।’ ফলাফলের দিক থেকে কৃতী ছাত্র না হলেও তাঁর অধ্যয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ই ২০০৮ সালে ৪৪তম সমাবর্তন উপলক্ষে তাঁকে প্রদান করেছিল সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব ল’। সর্বোচ্চ ডক্টরেট ডিগ্রি। ব্যারিস্টার কামাল হোসেন বাংলাদেশের একজন অন্যতম মেধাবী যশস্বী ছাত্র। সেন্ট গ্রেগরি স্কুলে অধ্যয়নরত অবস্থায় ড. কামাল হোসেনেরও প্রাইভেট শিক্ষকতা তিনি কিছুদিন করেছেন।
মতিন ভাইয়ের জীবন ছিল সত্যিকারের সর্বত্যাগী সংগ্রামী জীবন। ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ কৃষক সমিতি, কমিউনিস্ট পার্টি, গণ-আন্দোলন—সবকিছুতেই তিনি জড়িয়ে ছিলেন। কিন্তু কোথাও থেকে কোনো প্রতিদান তিনি চাননি এবং পেলেও কোনো রকমের সহায়তা, বদান্যতা বা অনুগ্রহ তিনি কখনো কোনো অবস্থায় গ্রহণ করেননি। ইচ্ছা করলে তিনি অনেক কিছু হতে পারতেন; মন্ত্রিত্ব তো ছিল তাঁর কাছে অতি অনায়াসলব্ধ একটি প্রাপ্তি। যা তিনি নিয়েছেন, তা শুধু তাঁর অবদানের স্বীকৃতি। যেমন একুশে পদক ২০০১, জাতীয় জাদুঘর সম্মাননা ২০০২, নিউইয়র্কে প্রবাসী বাঙালি সংবর্ধনা ২০০০, মানবাধিকারবিষয়ক মাপসাস শান্তি পদক ২০১০, ভাসানী স্মৃতি পুরস্কার ২০১০, ঢাকার ৪০০ বছর উদ্যাপন উপলক্ষে ঢাকার রত্ন সম্মাননা ২০১০ ইত্যাদি।
সরকারি কাজে নিয়োজিত থাকলেও আমি তাঁর সঙ্গে জেলের ভেতরে (পাকিস্তানকালে) ও বাইরে যোগাযোগ রেখেছি। আমার জীবনের প্রথম পোস্টিংই ছিল সিরাজগঞ্জের মহকুমা (বর্তমানে জেলা) প্রশাসক পদে। সে সময় তিনি জেলে ছিলেন। তখন তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলাম। ১৯৬৮-৭০ সালে যশোর-খুলনার জেলা প্রশাসক ও পরে সচিব থাকাকালীন তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ ছিল। কিন্তু কোনো সময়ই কোনো ব্যাপারে কোনো সহায়তা করতে পারিনি। তিনি যা কথা বলতেন, সবই কৃষক-শ্রমিকের স্বার্থে। পাকিস্তান আমলে তাঁকে স্কলারশিপ দিয়ে সরকারি আনুকূল্যে ইংল্যান্ডে পাঠানোরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। সেই প্রস্তাব তিনি প্রত্যাখ্যান করেন।
১৯৬৬ সালে ৪০ বছর বয়সে তিনি বিয়ে করেন পাবনারই মেয়ে গুলবদননেসা মনিকাকে। মনিকা ভাবি যে শুধু তাঁর অর্ধাঙ্গিনী ছিলেন তা নয়, তিনি ছিলেন সত্যিকার অর্থে তাঁর জীবনসঙ্গিনী, সহযোদ্ধা কমরেড। দুজনে একসঙ্গে রাজনীতি করেছেন—একই মতাদর্শের অনুসারী হয়ে। তিনি জেলে গেলেও একাই মনিকা ভাবি তাঁদের দুই মেয়ে মাতিয়া বানু শুকু, মালিহা শুভনসহ সংসারকে সামলিয়েছেন। স্কুল ও এনজিওতে চাকরি করেছেন। আন্ডারগ্রাউন্ডেও গিয়েছেন। এককথায় গুলবদননেসা মনিকা ছিলেন তাঁর সার্থক জীবনের যোগ্য ভাগীদার। দায়িত্ববোধে অনড়, আদর্শের প্রতি অবিচল। সত্যি বলতে কি, তাঁরা দুজন সারা জীবন কষ্টই সয়ে গেছেন, তবে তা অনায়াসে এবং নীতি-আদর্শের জন্য। মতিন ভাই পাঁচবার গ্রেপ্তার হয়ে জেলে যান, তবে দুর্ভাগ্যবশত তাঁর দীর্ঘতম কারাবাস ছিল স্বাধীন বাংলাদেশেই—১৯৭২ থেকে ১৯৭৭ সাল। একনাগাড়ে পাঁচ বছর। নিয়তির কী পরিহাস! এই স্বাধীন বাংলাদেশের সংগ্রামের সূচনা হয়েছিল আবদুল মতিনেরই নেতৃত্বাধীন রাষ্ট্রভাষা বাংলার আন্দোলন থেকে।
সংগ্রামী আবদুল মতিন আজ নেই, কিন্তু তাঁর আদর্শ তো থেকে যাচ্ছে। শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাবনত অনেক মানুষের ভিড়ে মনে হয়েছে, তিনি বাস্তবিকই মৃত্যুঞ্জয়ী। গণমানুষকে নিঃস্বার্থভাবে ভালোবেসে তাঁর মঙ্গলের জন্য জীবন-প্রাণ নিবেদন করার আদর্শের তো কখনো বিনাশ নেই। সুন্দর, সুষম, সুশাসন ও সমানাধিকারের সেই কাম্য সমাজের স্বপ্ন বাস্তবায়নের নিরন্তর প্রচেষ্টাই তো আমাদের বাঁচিয়ে রাখবে। এগিয়ে নিয়ে যাবে।
ইনাম আহমদ চৌধুরী: সাবেক সচিব ও উপদেষ্টা, বিএনপির চেয়ারপারসন।