দারিদ্র্য কমাতে কি নতুন কৌশল দরকার?


দারিদ্র্য নিয়ে কাজ করে তিন মহান বাঙালি নোবেল জয়ের অনন্য গৌরব অর্জন করেছেন। তথাপি নোবেল জয়ে দারিদ্র্য জয় হয়নি পুরোপুরি। দারিদ্র্যকে শুধুই জাদুঘরে আটকে রাখাও সম্ভব হয়নি। ড. অমর্ত্য সেন (১৯৯৮) পেয়েছেন দারিদ্র্য বিষয়ে তাত্ত্বিক জ্ঞান তৈরির জন্য। ড. মুহাম্মদ ইউনূস (২০০৬) পেয়েছেন দারিদ্র্য দূরীকরণে গরিবদের উপযোগী ব্যাংক তৈরির জন্য। আর ড. অভিজিৎ ব্যানার্জি (২০১৯) পেয়েছেন দারিদ্র্য দূরীকরণে পরীক্ষাগার পদ্ধতি প্রবর্তনের জন্য।

দারিদ্র্য বিমোচন স্বাধীনতা–উত্তর বাংলাদেশের বিগত ৪৯ বছরের অন্যতম বড় কার্যক্রম। বাংলাদেশের নিজস্ব কিছু দারিদ্র্য দূরীকরণের মডেল আছে, যা বিশ্বে প্রশংসা পেয়েছে এবং কোনো কোনোটি তৃতীয় বিশ্বের কিছু দেশে অনুকরণীয়ও। বাংলাদেশের সমুদয় দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচির মৌলিক ভিত্তি হচ্ছে ড. আখতার হামিদের কুমিল্লা মডেলের চার স্তর। দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি হিসেবে বাংলাদেশ বাস্তবায়ন করেছে শিক্ষা উপবৃত্তি, কাজের বিনিময়ে খাদ্য, বার্ধক্য ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, ভালনারেবল গ্রুপ ফিডিং (ভিজিএফ) কর্মসূচি, মাতৃত্বকালীন ভাতা, কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তা, মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা, বেদে ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে বিশেষ ভাতা শিক্ষা উপবৃত্তি ও প্রশিক্ষণ, ক্যানসার, কিডনি ও লিভার সিরোসিস রোগীদের সহায়তা, চা–শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়ন কর্মসূচি, জন্মনিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি কার্যক্রম।

কিন্তু গ্রামীণ কিংবা নগর দারিদ্র্য রোধে এই কার্যক্রমের সব কটির প্রভাব দৃশ্যমান নয়। ভাতাগুলোর পরিমাণ আর্থিক মূল্যে নিতান্তই সামান্য এবং প্রার্থী নির্বাচন প্রক্রিয়া মহাদুর্নীতিগ্রস্ত বলে সামাজিক সুরক্ষা খাতের বহু কর্মসূচি মিলেও দারিদ্র্য বিমোচনে টেকসই সাফল্য আনা যাচ্ছে না। সামাজিক সুরক্ষা ভাতার পরিমাণ একদিকে খুব কম, অন্যদিকে শিক্ষা উপবৃত্তি ছাড়া বাকিদের উৎপাদনের সম্পর্ক নেই। অলস বলে উৎপাদন ও পুনঃ আয়ের দিক থেকে নতুন আর্থিক লাইফ-সাইকেল তৈরিতে মাসিক ভাতার নিম্ন অঙ্ক দারিদ্র্য বিমোচন ও ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধিতে কাজে আসে না।

সরকারের পাশাপাশি বাংলাদেশের রয়েছে নিজস্ব বেসরকারি মডেল। ব্র্যাকের সম্পদ হস্তান্তরকেন্দ্রিক আলট্রা পুওর গ্র্যাজুয়েশেন প্রোগ্রাম বিশ্বে প্রশংসিত। দারিদ্র্য নিরসনে কাজ করছে ব্যাপকসংখ্যক এনজিও। রয়েছে গ্রামীণ ব্যাংক, আশার মতো প্রতিষ্ঠান এবং ব্যাপক জনপ্রিয় মোবাইল ব্যাংকিং। আছে জাকাত ও দানভিত্তিক ক্ষুদ্র অর্থনীতি। সরকারি-বেসরকারি দারিদ্র্য বিমোচন বান্ধব আবাসিক কওমি শিক্ষার সামাজিক মডেল। আশির দশকের ওয়াশিংটন কনসেনসাস, নব্বই দশকের পোস্ট ওয়াশিংটন কনসেনসাস থেকে নতুন কোপেনহেগেন কনসেনসাস পর্যন্ত সবকিছুর পরও বাংলাদেশের শহুরে ও গ্রামীণ দারিদ্র্য ব্যবস্থাপনা ও অর্জনে সমস্যা দেখা যাচ্ছে।

দারিদ্র্য জয়ের চালচিত্র
২০০০ সালের পরের এক দশকে বছরে বাংলাদেশের প্রায় এক কোটি মানুষ নিজেদের হতদরিদ্র অবস্থা কাটানোর যুদ্ধে জয়ী হয়েছেন। এই সময়ে সরকারগুলো শিক্ষা উপবৃত্তি, মেয়েশিশুদের শিক্ষা, বয়সসীমা বৃদ্ধি, টিকাদান কর্মসূচি ও সাক্ষরতার উন্নয়নে ব্যয় করেছে। দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশ থেকে উধাও হয়েছে, মানুষ ক্ষুধা থেকে অনেকটা মুক্ত হয়েছেন। বোঝাই যাচ্ছে তিন প্রবাদপ্রতিম বাঙালি অর্থনীতিবিদসহ সব বিশেষজ্ঞ ও সরকারের মিলিত কৌশল আলোর পথ দেখিয়েছে। তারপরও দারিদ্র্য কিন্তু সমাজে থেকেই গেছে অতি উল্লেখযোগ্য হারে।

বিশ্ব খাদ্য সংস্থার (ডব্লিউএফপি) সহায়তায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ‘নগর আর্থসামাজিক অবস্থা জরিপ-২০১৯’-এর ফলাফলে নগর দারিদ্র্য ও নগরে ক্ষুধার হাহাকারের এক অভাবিত চিত্র উঠে এসেছে। দেশের মহানগরগুলোতে ৮ দশমিক ২২ শতাংশ পরিবারের কোনো না কোনো সদস্যকে খাবার না থাকায় ক্ষুধার্ত অবস্থাতেই রাত কাটাতে হয়েছে (করোনাকালের আগেই)। রাজধানী ঢাকায় ক্ষুধার্ত থেকে রাতজাগা মানুষের সংখ্যা গড়ে ৯ শতাংশের বেশি (৯.২৩ শতাংশ)। সাড়ে ১১ শতাংশ পরিবারে কোনো খাবারই ছিল না। প্রায় ৩ শতাংশ পরিবারের সদস্যদের দিন-রাতের কোনো সময়ই কোনো খাবার জোটেনি বলে জরিপে উঠে এসেছে। দেশের অন্য মহানগরগুলোর তুলনায় খাদ্যসংকটে ভুগতে থাকা পরিবারের সংখ্যা ঢাকা ও চট্টগ্রামে বেশি। মোটামুটি কিংবা তীব্র ক্ষুধার্ত মানুষ ৬ শতাংশের বেশি।

তবে বিশ্বব্যাংক এটাও বলেছে, গত দেড় দশকে দ্রুত দারিদ্র্য কমানোর প্রতিযোগিতায় শীর্ষ ১৫টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ নেই। এই ১৫টি দেশ যে গতিতে দারিদ্র্য কমিয়েছে, বাংলাদেশে কমেছে এর চেয়ে কম। দেড় দশকে সবচেয়ে বেশি, ৩ দশমিক ২ শতাংশ হারে দারিদ্র্য কমিয়েছে তানজানিয়া। কিন্তু বাংলাদেশ কমিয়েছে মাত্র ১ দশমিক ৪২ শতাংশ হারে। প্রশ্ন হচ্ছে, দারিদ্র্য জয়ের প্রমাণিত এবং প্রতিষ্ঠিত নিজস্ব মডেল থাকার পরও বাংলাদেশ দারিদ্র্যমুক্তির হারে অন্য দেশের চেয়ে পিছিয়ে কেন? এর সবচেয়ে বড় উত্তর শুধুই কি ‘দুর্নীতি’?

চক্রাকার দারিদ্র্য ও দারিদ্র্য ফাঁদ
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে গিয়ে বাংলাদেশে প্রতিবছর ১ কোটি ১৪ লাখের বেশি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে নেমে যাচ্ছে। পাশাপাশি আছে বহুবিধ মানবসৃষ্ট ও প্রাকৃতিক দারিদ্র্যফাঁদ। এমনকি বেসরকারি দারিদ্র্য বিমোচন ও ক্ষুদ্রঋণের মডেলেও আছে প্রতিষ্ঠিত দারিদ্র্যফাঁদ। ক্রমাগত কমেছে নিখরচ পুষ্টির প্রাকৃতিক উৎস, আর্থিক দুর্ঘটনা, সড়ক দুর্ঘটনা, মানহীন কাজের ঝুঁকি এবং বহুবিধ দূষণ ক্ষতি। সামাজিক সুরক্ষা এবং অপরাপর বাজেট বরাদ্দ কৌশলও মাথাপিছু দারিদ্র্য ও পশ্চাৎপদ জেলাভিত্তিক নয়। বাংলাদেশের রাজনৈতিক অর্থনীতি যে দারিদ্র্য বিমোচনের পুরস্কারপ্রাপ্ত মডেলের চেয়েও শক্তিশালী স্থানীয় নেতার প্রভাবেই আবর্তিত, তা জেলাভিত্তিক দারিদ্র্যের তথ্যে প্রতিফলিত।

২০২০-২১ বাজেটের মোট ৬ দশমিক ৮ শতাংশ ভর্তুকি ও প্রণোদনা। কিন্তু এই বৃহৎ প্রণোদনা প্যাকেজের অধিকাংশই ব্যয় হচ্ছে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও সেবা খাতের দুর্নীতি ও অপব্যবস্থাপনাজনিত লোকসান মোকাবিলায়। সামাজিক নিরাপত্তা ও কল্যাণে ব্যয়িত ৪ দশমিক ৭–এর সিংহভাগ ব্যয় হয় কর্মকর্তা–কর্মচারী বেতন-ভাতা-আবাসন-পরিবহন ইত্যাদি ভৌত খাতে। বাকি যে অংশ নাগরিকের হাতে যায়, তাতে দলীয়করণ ও উত্তোলন প্রক্রিয়ার দুর্নীতি জড়িত। কিছু বরাদ্দ মোবাইল ব্যাংকিং চ্যানেলে ডিজিটাল করা হলেও সেখানেও রয়েছে মহাদুর্নীতি। এমনকি কৃষি ভর্তুকির বরাদ্দ প্রক্রিয়ায়ও দুর্নীতি থাকায় সঠিক দামে সঠিক হাতে সঠিক সময়ে সার পৌঁছায় না কোনো সময়। ফলনের চাহিদাভিত্তিক উৎপাদন নিবন্ধন, শস্যবিমা ও উৎপাদন মূল্যের নিশ্চয়তা নেই।

অন্যদিকে বাংলাদেশের বাজেটে সর্বজনীন পেনশনের ধারণা এখনো আসেনি, পেনশন শুধু সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কভার করে। বাজেটে বেকার ভাতা অনুপস্থিত। সর্বজনীন চিকিৎসাবিমা ও ভাতা নিয়ে সরকারের বাস্তব পরিকল্পনা নেই। সব মিলে বহু মৌলিক সেবা অনুপস্থিত। এটা দারিদ্র্যফাঁদ ও চক্রাকার দারিদ্র্য তৈরি করছে নিয়মিত। সঙ্গে আছে পরিবেশদূষণ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলবায়ুজনিত দারিদ্র্য, দুর্ঘটনাজনিত দারিদ্র্য, স্বাস্থ্যব্যয়জনিত দারিদ্র্য। অর্থাৎ যে হারে মানুষ দারিদ্র্যসীমার ওপরে উঠছে, তার খুব কাছাকাছি বা বেশি হারে লোকে নতুন দারিদ্র্যের মুখোমুখি হচ্ছে।

নতুন চ্যালেঞ্জ করোনা মহামারির উল্টোরথ
কভিড-১৯–এর আগে বাংলাদেশের দারিদ্র্য হার ছিল ২০ দশমিক ৫ শতাংশ, যার মধ্যে অতিদারিদ্র্য হার ১০ দশমিক ৫ শতাংশ। অর্থাৎ দেশের প্রায় ৩ কোটি ৩৪ লাখ মানুষ দারিদ্র্যসীমায় ছিলেন। ২০১৯ সালের জুন মাস শেষে অতি গরিব বা হতদরিদ্র ব্যক্তির সংখ্যা ১ কোটি ৬০ লাখের কিছুটা বেশি। কিন্তু করোনার পরে পরিস্থিতি পাল্টে গেছে।
করোনার হাত ধরে নতুন দারিদ্র্যের ভয়ংকর ছোবল আঘাত করেছে বাংলাদেশকে! প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ৪২ জনই গরিব বলে জরিপে উঠে এসেছে! করোনাভাইরাস মহামারির ধাক্কায় দারিদ্র্যের হার ২০১৮ সালের তুলনায় দ্বিগুণ হয়েছে, আর চরম দারিদ্র্যের হার বেড়েছে প্রায় তিন গুণ!

নিজস্ব অর্থায়নে চালিত সানেম জরিপে দেখা যাচ্ছে, করোনার প্রভাবে দেশে সার্বিক দারিদ্র্যের হার (আপার পোভার্টি রেট) বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪২ শতাংশ। বিবিএসের খানা জরিপ অনুসারে, ২০১৬ সালে দেশের গ্রামাঞ্চলের সার্বিক দারিদ্র্য ছিল ২৬ দশমিক ৪ শতাংশ, ২০১৮ সালের জিইডি-সানেম জরিপ অনুসারে যা ছিল ২৪ দশমিক ৫ শতাংশ। কিন্তু করোনার প্রভাবে ২০২০ সালে এই হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৫ দশমিক ৩ শতাংশ। শহরাঞ্চলে সার্বিক দারিদ্র্যের হার ২০১৬ সালে ছিল ১৮ দশমিক ৯ শতাংশ, ২০১৮ সালে ছিল ১৬ দশমিক ৩ শতাংশ আর করোনার সময়ে ২০২০ সালে তা দাঁড়িয়েছে ৩৫ দশমিক ৪ শতাংশ।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা সংস্থা ‘বিআইডিএস ক্রিটিক্যাল কনভারসেশন-২০২০: ইন দ্য শ্যাডো অব কভিড-কোপিং, অ্যাডজাস্টমেন্টস অ্যান্ড রেসপনসেস’ নামক ডিজিটাল সেমিনারে উপস্থাপিত গবেষণামতে, করোনাভাইরাস কোভিড-১৯-এর প্রভাবে দেশে ১ কোটি ৬৪ লাখ মানুষ নতুন করে দারিদ্র্যের কাতারে যুক্ত হয়েছে। শহরের শ্রমিকের আয় কমেছে ৮০ শতাংশ এবং গ্রামীণ শ্রমিকের আয় কমেছে ১০ শতাংশ। বছর শেষে অর্থনীতির লকডাউন খুলতে থাকলে এর শতকরা ৫০ ভাগ দারিদ্র্য থেকে উত্তরণ করলেও বাকি ৫০ শতাংশ স্থায়ীভাবে দারিদ্র্যরেখার নিচেই থেকে যাবেন।

জলবায়ু দারিদ্র্যের অভিঘাত

জলবায়ু পরিবর্তন–সম্পর্কিত আন্তসরকারি প্যানেল (আইপিসিসি) পঞ্চম মূল্যায়নে (এআর ৫,২০১৪) প্রাক্কলন করে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাবে ফসলের স্বল্প উৎপাদনশীল পরিস্থিতিতে ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ দারিদ্র্য হার নিট ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে। অর্থাৎ বছরে আনুমানিক ১ শতাংশ করে দারিদ্র্য বাড়বে। এই সংখ্যা বছরে গড়ে সোয়া আট লাখের বেশি।

মধ্য আয়ের দেশে উত্তরণ ও দারিদ্র্যরেখা
বিশ্বব্যাংকের সংজ্ঞা অনুসারে মধ্য আয়ের দেশ হিসেবে বাংলাদেশের দারিদ্র্যরেখার একটা উত্তরণ অবশ্যম্ভাবী। অর্থাৎ দারিদ্র্য পরিমাপের সংজ্ঞায় বর্তমানের ১.৯৯ ডলারের দৈনিক আয় পদ্ধতি বাতিল হবে এবং তা ৩.২০ ডলারের নতুন রেখা দিয়ে প্রতিস্থাপিত হবে। ফলে মোট দারিদ্র্যের ভিত্তি সংখ্যায় ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। বিশ্বব্যাংকের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, পিপিপি-২০১১ দারিদ্র্যরেখা ১.৯ ডলার থেকে পিপিপি-২০১১ দারিদ্র্যরেখা ৩.২–এ উত্তরণ ঘটলে তা মোট জনসংখ্যার আনুমানিক ১ শতাংশ অন্তর্ভুক্ত করে। এতে অন্তত ১৬ লাখ ৪৬ হাজার মানুষ দারিদ্র্যের নতুন সংজ্ঞায় পড়ে যাবে।

স্বাস্থ্যগত দারিদ্র্য এবং চক্রাকার দারিদ্র্যের সংখ্যা, জন্মহারের দিক থেকে দরিদ্র জনসংখ্যা বাড়ার স্বাভাবিক অংশ বাদ দিয়েই মোট দারিদ্র্য জনসংখ্যার প্রায় ২৬ দশমিক ৬৩ শতাংশে দাঁড়ায়, মোট ৪ কোটি ৩৮ লাখ। শুধু কোভিড-১৯ এবং মধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হওয়ার যুগপৎ প্রভাবে দারিদ্র্য হার ৫.৮৩ শতাংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
প্রশ্ন হচ্ছে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট হিসেবে দারিদ্র্যকে ২০৩০ সালের মধ্যে অর্থাৎ এক দশকের মধ্যে ২৬ দশমিক ৬৩ শতাংশ থেকে শূন্যে (যদিও সংজ্ঞানুসারে ৩ শতাংশ) নামিয়ে আনার মতো প্রস্তুতি ও সক্ষমতা আদৌ বাংলাদেশের আছে কি? পুরোনো পরিকল্পনায় বর্ধিত দারিদ্র্যের নতুন সংখ্যাকে এত ব্যাপক হারে কমিয়ে আনা যাবে কি? এই ব্যাপক বর্ধিত দারিদ্র্যকে অ্যাড্রেস করতে দুর্নীতি অপব্যবস্থা অবসানের পাশাপাশি নতুন দারিদ্র্য বিমোচন কৌশল ও তার বাস্তবায়ন পরিকল্পনা দরকার নয় কি?

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব টেকসই উন্নয়নবিষয়ক লেখক। গ্রন্থকার-চতুর্থ শিল্পবিপ্লব ও বাংলাদেশ। [email protected]