পুতিন জেলেনস্কি বা বাইডেন, কেউ কি জিতবেন ইউক্রেন যুদ্ধে?

জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের প্রায় সবখানেই যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ হচ্ছে
ছবি :রয়টার্স

ইউক্রেনের অলভিয়া বন্দরে ভিড়ে থাকা বাংলাদেশের পণ্যবাহী জাহাজ ‘বাংলার সমৃদ্ধি’র প্রকৌশলী হাদিসুর রহমানের সঙ্গে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দূরতম সম্পর্ক ছিল না। কিন্তু সেই জাহাজেই ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হলো। ইউক্রেনে আটকা পড়ায় বাড়ির লোকজনের শঙ্কা ও উদ্বেগ ছিল তাঁকে নিয়ে। পরিবারের সঙ্গে কথা বলতে জাহাজের বাইরে এসেছিলেন তিনি। কথা বলতে বলতেই গোলার আঘাতে মারা যান। জাহাজটিতে আগুন ধরে গেলেও অন্য নাবিকেরা রক্ষা পান।

রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ এবং এটাকে কেন্দ্র করে রাশিয়া ও ন্যাটোর মধ্যে যে উত্তেজনা তাতে বিশ্বের বেশির ভাগ মানুষই এখন দুই শিবিরে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের স্ক্রিন এখন সয়লাব হয়ে যাচ্ছে যুদ্ধ, সংঘাতের নানা তথ্য এবং জয়-পরাজয়ের বিশ্লেষণে। প্রতিনিয়ত তথ্যের এ স্রোত আমাদের ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, আমরা পক্ষে-বিপক্ষে দাঁড়িয়ে যাচ্ছি। কিন্তু আমরা কি প্রশ্ন করতে পারছি, যুদ্ধ বাঁধানোটা কাদের জন্য প্রয়োজন? যুদ্ধে কি শেষ পর্যন্ত কেউ জেতে?

সামরিক শক্তিতে দুনিয়ার দ্বিতীয় রুশ বাহিনীর আগ্রাসনে ইউক্রেন এখন বাস্তবিকই দুনিয়ার নরকে পরিণত হয়েছে। যুদ্ধ সবে দ্বিতীয় সপ্তাহে গড়িয়েছে। বোমারু বিমান থেকে সামরিক স্থাপনার পাশাপাশি মানুষের ঘরবাড়ি, বিদ্যালয়সহ অন্যান্য স্থাপনায় চলছে বোমা হামলা। ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বিধ্বস্ত হচ্ছে বাড়িঘর-স্থাপনা। অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নিয়ন্ত্রণে নিতে গিয়ে সংঘাতেও জড়িয়েছে দুই পক্ষ। একের পর এক শহর চারদিক থেকে ঘিরে বিমান, যুদ্ধজাহাজ, ক্ষেপণাস্ত্র ও ট্যাঙ্কের সাহায্যে দখলে নেওয়া হচ্ছে। সামরিক ব্যক্তিদের সঙ্গে বেসামরিক মানুষেরাও হতাহত হচ্ছেন। সেই মিছিলে নারী ও শিশুরাও বাদ যাচ্ছেন না।

রাজধানী কিয়েভ অভিমুখে আধুনিক সমরাস্ত্র নিয়ে লাখ লাখ রুশ সেনা অগ্রসর হচ্ছে। খাদ্য, পানীয় ফুরিয়ে আসছে ইউক্রেনের শহরগুলোর। হাসপাতালগুলো ভরে উঠছে আহত ব্যক্তিদের আর্তনাদে। যুদ্ধের ভয়াবহতা থেকে বাঁচতে লাখ লাখ মানুষ ছুটছে পোল্যান্ড, রুমানিয়ার সীমান্তে। তবে সামর্থ্যবান পুরুষদের দেশ ছাড়তে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ইউক্রেন সরকার। নিজেদের স্বাভাবিক জীবনযাপন ছেড়ে মুহূর্তেই শরণার্থী হয়ে পড়ছে তারা। জাতিসংঘের তথ্যমতে, প্রায় ১০ লাখ ইউক্রেনবাসী আশপাশের দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে। যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে আর কিয়েভ যদি বড় প্রতিরোধযুদ্ধের মুখে পড়ে, তাহলে যে ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় আসন্ন তাতে এ সংখ্যা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, কেউ বলতে পারে না। সম্ভবত ইউরোপ স্মরণকালের সবচেয়ে বড় শরণার্থী সংকট মোকাবিলা করতে যাচ্ছে।

আরও পড়ুন

প্রতিরোধযুদ্ধে রুশ বাহিনীর সেনারাও মারা যাচ্ছেন। ভ্লাদিমির পুতিন ও তাঁকে ঘিরে থাকা ক্রেমলিনের সহচরেরা ইউক্রেন আগ্রাসন যত সহজ ভেবেছিলেন, বাস্তব পরিস্থিতি তার থেকেও কঠিন হয়ে উঠেছে। ফলে সরাসরি যুদ্ধেও তাঁদের দিক থেকে হতাহতের সংখ্যাও কম নয়। এই সৈনিকেরা দেশটির সাধারণ নাগরিকের সন্তানই। যাঁদের সঙ্গে যুদ্ধের লাভ-ক্ষতির বিন্দুমাত্র যোগসূত্র নেই।

করোনা মহামারি আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে গেছে, খোলাবাজার অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় পণ্য ও মানুষের যে সচলতা, সেখানে কোনো কিছুই আর স্থানীয় বিষয় নয়। চীনের উহান শহরে প্রথম শনাক্ত হলেও তিন বছর ধরে এ মহামারি তাণ্ডব চালিয়েছে। এ মহামারির যে অভিঘাত, তাতে সবচেয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এশিয়া, আফ্রিকা কিংবা লাতিন আমেরিকার প্রান্তীয় অর্থনীতির দেশগুলো। চিকিৎসাব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় ও চিকিৎসা না পেয়ে এসব দেশের মানুষ অপেক্ষাকৃত বেশি মারা গেছে। লকডাউনের ফলে বৈশ্বিক বাজার ও পণ্য সরবরাহব্যবস্থার যে প্রথাগত শৃঙ্খল, সেটা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বিশ্বে নতুন করে অতিদরিদ্র হয়েছে ৫০ কোটি মানুষ। মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, জ্বালানি তেলসহ খাদ্যপণ্য ও ভোগ্যপণ্যের দামও অনেকটাই বেড়েছে। ফলে খাদ্য ও পুষ্টির ব্যবস্থা করতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে বিশ্বের কয়েক শ কোটি মানুষকে। এ পরিস্থিতিতে ইউক্রেনে রাশিয়া সামরিক আগ্রাসন শুরু করায় ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের যে নিষেধাজ্ঞাসহ অন্যান্য অভিঘাত, তাতে বিশ্ব অর্থনীতিতে আরেকটি বড় ধাক্কা যে লাগছে, সেটা বোঝার জন্য কাউকে বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন নেই।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন ক্ষমতায় আসার গত ছয় মাসে বিশ্ব বড় তিনটি ঘটনার মধ্য দিয়ে গেছে। প্রথমটি আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বাহিনীর পিছু হটা। দ্বিতীয়টা, তাইওয়ান ও দক্ষিণ চীন সাগরকে কেন্দ্র করে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও তার এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় মিত্রদের উত্তেজনা। তৃতীয়টা ইউক্রেন সংকট। রাশিয়া যে ফেব্রুয়ারি মাসেই ইউক্রেনে হামলা চালাতে যাচ্ছে, তা জানুয়ারি মাসেই জানতে পারে যুক্তরাষ্ট্র।

ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসন ঘিরে যুদ্ধ ফ্রন্ট শুধু পূর্ব ইউরোপের সীমান্তে স্থির নেই। রাশিয়ার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তাতে রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য-সম্পর্কিত যেকোনো দেশ ও প্রতিষ্ঠানই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বাংলাদেশেও পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ রাশিয়ার অর্থায়নে চলা প্রকল্পে বড় অচলাবস্থা তৈরি হলো। আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যেও তার প্রভাব পড়বে। ইউরোপে জ্বালানির প্রায় ৪০ শতাংশের জোগানদাতা এখন রাশিয়া। মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে গম ও কৃষিজাত পণ্যের বড় জোগানদাতা রাশিয়া ও ইউক্রেন। যুদ্ধ ও নিষেধাজ্ঞার ফলে মানুষের জীবনধারণের অত্যাবশ্যকীয় দুই উপাদান খাদ্য ও জ্বালানি ক্ষেত্রে বৈশ্বিক অস্থিরতা আরও বাড়বে।

নতুন যুদ্ধফ্রন্ট এখন সাইবার স্পেস। ইউক্রেন আগ্রাসন ঘিরে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর ওকালতি করা পশ্চিমারা রাশিয়ার গণমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এর প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়াও ফেসবুক, টুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। বেশ কিছু বিদেশি গণমাধ্যমের সম্প্রচারও বন্ধ রাখা হয়েছে। গণমাধ্যম বন্ধ করে দেওয়ায় মিথ্যা, গুজব ও একতরফা প্রচারের ওপর জনগণকে নির্ভর করতে হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করে দেওয়ায় রাশিয়ার জনগণ যেমন ইউক্রেনে কী ঘটছে তা নিয়ে অন্ধকারে থাকবে, আবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা ব্যবসাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন ক্ষমতায় আসার গত ছয় মাসে বিশ্ব বড় তিনটি ঘটনার মধ্য দিয়ে গেছে। প্রথমটি আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন বাহিনীর পিছু হটা। দ্বিতীয়টা, তাইওয়ান ও দক্ষিণ চীন সাগরকে কেন্দ্র করে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ও তার এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় মিত্রদের উত্তেজনা। তৃতীয়টা ইউক্রেন সংকট। রাশিয়া যে ফেব্রুয়ারি মাসেই ইউক্রেনে হামলা চালাতে যাচ্ছে, তা জানুয়ারি মাসেই জানতে পারে যুক্তরাষ্ট্র।

যুদ্ধবিরোধীদের কেউ কেউ বাইডেনের প্রতিও প্ররোচণা না দেবার দাবি তুলেছেন
ছবি : রয়টার্স

রাশিয়া ইউক্রেন সীমান্তে কয়েক মাস ধরে সমর প্রস্তুতি নিয়েছে। সে সময়ে বাইডেনসহ পশ্চিমা নেতারা কথা ফুলঝুরি ছাড়া আর তেমন কিছুই করেনি। যুদ্ধ ঠেকানোর সম্ভাব্য কোনো রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক তৎপরতায় তাদের কাছ থেকে মেলেনি। জার্মানি, ফ্রান্সসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের মোড়ল দেশগুলো রাশিয়ার তেল ও গ্যাসের নির্ভরশীল হওয়ায় আগ্রাসনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত নিশ্চুপ থেকেছে। তবে গত কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দিয়েছে। রাশিয়ার অভিযোগ ইউক্রেনকে ন্যাটোর অস্ত্রগারে পরিণত করা হয়েছে। পুতিন ইউক্রেন আগ্রাসনের পেছনে যে যুক্তি দিয়েছেন, তার মূল দুটি যুক্তির মধ্যে একটা ইউক্রেনকে নিরস্ত্রীকরণ করা। দ্বিতীয়টা নব্য নাৎসিবাদী মতাদর্শ থেকে ইউক্রেনকে বাঁচানো।

রাশিয়ার আগ্রাসন শুরুর পর ন্যাটো এখন পর্যন্ত অস্ত্র ও গোলাবারুদ ও যুদ্ধ সরঞ্জামই ইউক্রেনে পাঠিয়ে যাচ্ছে। যে জার্মানি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর কোনো দেশে সামরিক সহায়তা দেয়নি, তারাও অস্ত্র পাঠাচ্ছে। ইউক্রেনে অস্ত্র পাঠানোর জন্য ‘আন্তর্জাতিক দাতা সমন্বয় কেন্দ্র’ নামে একটি উদ্যোগ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য। অন্যদিকে অস্ত্র কেনার জন্য ইউরোপিয়ান পিস ফ্যাসিলিটি তহবিল ব্যবহার করছে ইইউ। আবার একই সঙ্গে রাশিয়ার তেল ও গ্যাস নেওয়াও বন্ধ করেনি ইউরোপ। এখানে প্রশ্নটা তাই এসে যায়, ইউক্রেন যুদ্ধে ন্যাটোর পরোক্ষ অংশগ্রহণ কতটা নৈতিক অবস্থান থেকে আর কতটা স্বার্থগত? তাঁরা কি ইউক্রেনের ঘাড়ে বন্দুক রেখে রাশিয়াকে শায়েস্তা করার পথ বেছে নেয়নি?

আরও পড়ুন

বেশ কিছুদিন থেকেই দ্বিতীয় শীতল যুদ্ধের কথা বলে আসছিলেন পশ্চিমা মুখপাত্ররা। ইউক্রেন সংঘাতকে কেন্দ্র করে বাস্তবিক অর্থেই দ্বিতীয় শীতলযুদ্ধের পরিস্থিতি যেন তৈরি হয়েছে। এবং এ সংকট যাতে প্রলম্বিত হয়, সেই ব্যবস্থাই চলছে। যুদ্ধ প্রলম্বিত হলে শুধু ইউক্রেনে ধ্বংসযজ্ঞ ও মানবিক বিপর্যয় ভয়াবহ মাত্রায় পৌঁছাবে না, তাতে রাশিয়াকে ভুগতে হবে দীর্ঘ মেয়াদে। ভুগতে হবে ইউরোপকেও। অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে এশিয়া, আফ্রিকার দেশগুলোর দরিদ্র মানুষেরা। কিন্তু যুদ্ধের এই ডামাডোলে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান তো কেউ কেউ হবেই। অক্সফামের হিসাব বলছে, করোনা মহামারির দুই বছরে বিশ্বের প্রথম ১০ জন ধনী ব্যক্তির সম্পদ বেড়েছে দ্বিগুণ। ইউক্রেন যুদ্ধে কাদের সম্পদ বাড়বে সে তথ্যও আমরা নিশ্চয়ই জানতে পারব।

যুদ্ধ ও যুদ্ধ উন্মাদনা কোনো সমাধান নয়। রাশিয়ার বড় শহরগুলোতে তরুণেরা বড় বড় যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ করছেন। তাঁদের ওপর রাষ্ট্রীয় দমন ও নিপীড়ন চলছে। জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের প্রায় সবখানেই যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও চলছে যুদ্ধবিরোধী প্রচারণা। তবে এখনো যুদ্ধের জয়-পরাজয়ের দিকেই অধিকাংশ মানুষ বুঁদ হয়ে আছেন। কিন্তু রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক সমাধানের পথ বন্ধ করে দিয়ে বিশ্বনেতারা যে যুদ্ধ অনিবার্য করে তুলেছেন, সেই যুদ্ধের বিরুদ্ধেও মানুষকে সোচ্চার হতে হবে। কিছু অস্ত্র ব্যবসায়ী কিংবা পরাশক্তির দ্বন্দ্বের কাছে বিশ্বের ছয় শ কোটি মানুষের জীবন জিম্মি করার বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে। ইউক্রেন জিতবে, না রাশিয়া জিতবে, পুতিন জিতবেন নাকি জেলেনস্কি জিতবেন, নাকি বাইডেন জিতবেন—মানুষের কাছে এ প্রশ্ন অবান্তর হওয়া উচিত। যুদ্ধে যে প্রাণ হারাচ্ছে, তাদের জন্য আমাদের সমবেদনা জানাতেই হবে। আর ঘৃণা জানাতে হবে তাদেরকে, যারা বিকল্প কোনো রাস্তা না খুঁজেই যুদ্ধ ও ধ্বংসের পথ বেছে নিয়েছে। প্রশ্নটা হলো, যুদ্ধে কেউ কি জেতে? উত্তর হচ্ছে, প্রতিটি যুদ্ধে পরাজিত হয় মানুষ। হাদিসুর রহমানের মতো মানুষ, যুদ্ধের সঙ্গে যাঁদের দূরতম সম্পর্কও নেই, তাঁরাও বলি হন যুদ্ধের। মানুষকে তাই যুদ্ধবিরোধী হয়ে উঠতেই হবে।

মনোজ দে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক