মুম্বাই হামলা ও ক্রমাগত বদলে যাওয়া ভারত

সপ্তাহ খানেক আগে কয়েক দিনের জন্য সস্ত্রীক মুম্বাই, পুরোনো নাম বোম্বে, গিয়েছিলাম বেড়াতে। মুম্বাই ভ্রমণের পেছনে আমার একটা কৌতূহল কাজ করছিল। আর তা হলো ১৯৯৩ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত মুম্বাই শহরে একাধিক সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে এবং এসব ঘটনায় শত শত নিরীহ নাগরিকের প্রাণহানি ঘটেছে। সর্বশেষ ভয়াবহ, অবিশ্বাস্য হামলা হয়েছিল ২০০৮ সালে। এই হামলা সম্বন্ধে প্রায় পাঠকই অবগত আছেন। এরপরও সংক্ষিপ্ত এই ভ্রমণের সময় আমার কৌতূহল ছিল কী কারণে ও কী উদ্দেশ্যে ২০০৮ সালের ২৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় প্রায় ১২টি ঐতিহাসিক স্থাপনায় একযোগে সন্ত্রাসী হামলা হয় তা অনুধাবনের চেষ্টা করা। ২৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় যে হামলা শুরু হয়, শেষ হয় ২৯ নভেম্বর। তার মানে, প্রায় চার দিন ধরে এ হামলা চলে। যেসব জায়গায় হামলাগুলো হয়েছে, তার সবই ঐতিহাসিক তো বটেই, মুম্বাই তথা ভারতের জাতীয় প্রতীকসম।

আমরা যে জায়গায় থেকে এই কয়েক দিন কাটিয়েছি, তা ছিল দক্ষিণ মুম্বাইয়ের কোলাবা বন্দর এলাকায় কোলাবা থানার অন্তর্গত স্থান। ২০০৮ সালে ১২ জায়গায় সন্ত্রাসী হামলার প্রতিটিই প্রায় সাত-আট কিলোমিটারের মধ্যে আরব সাগরের ব্যাক বে-সংলগ্ন। এই হামলার অন্যতম টার্গেট ছিল ভারতের সবচেয়ে দর্শনীয় ও বিলাসবহুল তাজমহল প্যালেস হোটেল। হোটেলটি ভারত তথা মুম্বাইয়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ও দর্শনীয় স্থান গেটওয়ে অব ইন্ডিয়া এবং সাগরসংলগ্ন। সামনে মুম্বাইয়ের বিখ্যাত ও দর্শনীয় মেরিন ড্রাইভের একাংশ। এখানে পুরো দিন ও সকালব্যাপী বিদেশি, দেশি পর্যটক ও শহরের মানুষের ভিড় থাকে। আবহাওয়ার কারণে এই সময়ে পর্যটকের সমাগম হয় বেশি। আমাকে স্থানীয় একজন জানিয়েছিলেন, সম্পূর্ণ মেরিন ড্রাইভের চওড়া ফুটপাত আর সাগরের ধারে প্রাচীরের সঙ্গে তৈরি বসার স্থানগুলোতে সন্ধ্যা সাতটার পর থেকে ভোর পর্যন্ত মানুষের সমাগম থাকে। আমাদের হোটেলটি ছিল সেই বিখ্যাত তাজমহল প্যালেসের দুই লেন পরে জনাকীর্ণ রাস্তার ধারের পুরোনো বাজারের মধ্যে ডিপ্লোম্যাট হোটেল, যার সরাসরি অপর পারে কোলাবা পুলিশ থানা। তাজমহল প্যালেস হোটেল ওই থানা থেকে আধা কিলোমিটার আর হামলার আরেক লক্ষ্যবস্তু লিওপোল্ড ক্যাফেটি থানার প্রধান ফটক থেকে ২০ মিটার রাস্তার অপর প্রান্তে।
এ দুই জায়গা ছাড়াও ২০০৮-এর সন্ত্রাসী আক্রমণের লক্ষ্যবস্তুগুলো ছিল ভারতের অন্যতম দর্শনীয় রেলওয়ে স্টেশন পূর্বতন ভিক্টোরিয়া, বর্তমানে ছত্রপতি শিবাজি টার্মিনাল, তাজ হোটেল থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে সমুদ্রের পারে নািরমান পয়েন্ট, ওেবরয় ট্রাইডেন্ট হোটেল, তারই কাছাকাছি নািরমান হাউস (জায়গাটি মুম্বাইয়ের ইহুদি জনগোষ্ঠীর কেন্দ্র ওই চত্বরটিতে ছিল এক ইহুদি পরিবার, যারা সিনাগ্যগ ও কেন্দ্রটি দেখাশোনা করত), কাছেই কামা হাসপাতাল, মেট্রো সিনেমা ও সেন্ট জোভিয়ার কলেজ। মোটামুটি সব জায়গাই, শুধু ওেবরয় হোটেল ছাড়া, ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষে ও বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকের স্থাপনা এবং এর মধ্যে ছয়টি স্থাপনা ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’।

>বর্তমানে ভারতের কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে দুর্বল অবস্থানে রয়েছে ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলো। বিজেপির দৃষ্টি এখন বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও আসামে। এ তিনটি রাজ্যে হিন্দুত্বের প্রভাব পড়লে তা ভারতের অন্যতম প্রতিবেশী বাংলাদেশের ওপরও প্রভাব ফেলবে

এসব স্থানের কয়েকটি দেখে আমি কল্পনাই করতে পারছিলাম না যে কীভাবে সন্ধ্যার সময় এমন একটি ভয়াবহ সন্ত্রাসী ঘটনা ভারতের অর্থনৈতিক রাজধানীতে ঘটতে পারল। যতবার তাজমহল প্যালেস হোটেলের সামনে দাঁড়িয়েছি, ততবারই আমার ভাবতে অবাক হতে হয়েছে যে কীভাবে ১০ থেকে ১২ জন সন্ত্রাসী সম্পূর্ণভাবে অস্ত্রায়িত, গ্রেনেড, বিস্ফোরক ও স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হোটেলে প্রবেশ করে প্রায় চার দিন একধরনের যুদ্ধ চালিয়ে জিম্মি করে রেখেছিল। সবচেয়ে অবাক হতে হয়েছে যখন লিওপোল্ড ক্যাফেতে সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে ১১ জনকে হত্যা করতে পারল। আমি ওই ক্যাফেতে খেতে গিয়ে বুলেটের দাগগুলো দেখেছি। ক্যাফেটি প্রতিষ্ঠিত হয় ১৮৭১ সালে। এখানে পর্যটক ও মধ্যবিত্তদের সমাগম হয় বেশি, তবে বেশির ভাগই পার্সি সম্প্রদায়ের মানুষ।
এই হামলা চালিয়েছিল লস্কর-ই-তাইয়েবা নামক পাকিস্তানের কাশ্মীর অঞ্চলের স্থিত সন্ত্রাসীগোষ্ঠী। গণমাধ্যম ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, এই ১০-১২ জন যখন রাবারের স্পিডবোটে মুম্বাইয়ের তীরবর্তী এলাকায় প্রবেশ করে, তখন স্থানীয় জেলেরা তাদের জিজ্ঞাসা করলে তারা বকাঝকা করেছিল। সে খবর মুম্বাই পুলিশকে জানালেও তারা কোনো ধরনের সতর্কতা অবলম্বন তো করেইনি বরং বিষয়টিকে হালকাভাবে নিয়েছিল। ওই তাজমহল প্যালেস হোটেলে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যবিষয়ক কমিটির একটি সদস্য দল অবস্থান করছিল। তবে কেউ হতাহত হননি। কারণ, অনেকেই হোটেলে ছিলেন না আবার অনেকেই বিভিন্ন তলায় বিভিন্ন জায়গায় আত্মগোপন করে ছিলেন।
এ ঘটনার মাত্র দুই বছর আগে বাবরি মসজিদ ভাঙার ১৪ বছর পূর্তির দিনে ২০০৬ সালে লস্কর-ই-তাইয়েবা শহরের এ প্রান্তে ব্যাপক বোমা হামলা চালায়, যাতে প্রায় ৭০০ লোকের মৃত্যু হয়। তারপরও মুম্বাই পুলিশ সন্দেহজনক খবর পেয়ে কোনো সুরক্ষার ব্যবস্থা নেয়নি কেন, তা প্রায় সাত বছর পর ঘটনাস্থল দেখে এখনো আমার বোধগম্য হচ্ছে না। ওই হোটেল থেকে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরে সমুদ্রের কয়েকটি ছোট ছোট দ্বীপে নৌবাহিনীর উপস্থিতি এখনো চোখে পড়ার মতো। মুম্বাইয়ে এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলা ছিল অত্যন্ত সুপ্রশিক্ষিত কমান্ডো হামলা। এদের ট্রেনিং ও সহযোগিতা করেছিল পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা, তেমনটাই প্রমাণিত। আর এর প্রধান হোতা জাকিউর রহমান লাকভিকে পাকিস্তানের আদালত জামিনে মুক্ত করেছেন, সেটাও এক বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাকিস্তান-ভারতের মধ্যে এ বিষয় নিয়েও উত্তেজনা বিদ্যমান।
ওই হামলায় শুধু পাকিস্তানই নয়, বাংলাদেশের নামও জড়ানো হয়েছিল। প্রাথমিক তথ্যে বলা হয়েছিল যে যোগাযোগের জন্য মোবাইল ফোনের যে সিম কার্ড ব্যবহার করা হয়েছিল, তা বাংলাদেশি কোনো গোষ্ঠীর মাধ্যমে সীমান্ত থেকে ক্রয় করা হয়েছিল। এমনকি প্রাথমিকভাবে পাকিস্তানিরা বাংলাদেশকে জড়াতে চেয়েছিল এই বলে যে এসব সন্ত্রাসী বাংলাদেশ থেকে এসেছিল। তবে কাসাবের আদালতে স্বীকারোক্তির পর পাকিস্তান তাদের সামরিক গোপন সংস্থার সম্পৃক্ততার কথা প্রকাশ্য স্বীকার না করলেও সন্ত্রাসীরা যে পাকিস্তানি নাগরিক, তা আর অস্বীকার করতে পারেনি। আহত অবস্থায় ধৃত একমাত্র সন্ত্রাসী সদস্য আজমল কাসাব যদিও বাংলাদেশের নাম নেয়নি, তথাপি মুম্বাইয়ে বাংলাদেশিদের ভ্রমণ তেমন সহজতর নয়। বৈধ ভিসা থাকা সত্ত্বেও বহু ক্ষেত্রে পুলিশের ছাড়পত্রের প্রয়োজন হয়। তেমনটাই আমাকে হোটেলের এক কর্মচারী জানানোর চেষ্টা করছিল।
এ হামলায় লস্কর-ই-তাইয়েবা সমগ্র মহারাষ্ট্রের তথা ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাব্যবস্থারও মূল ভিতে নাড়া দিয়েছিল। তাজমহল প্যালেস হোটেল পুনর্দখল করতে দিল্লি থেকে ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ডকে (এনএসজি) তলব করতে হয়েছে। মহারাষ্ট্র সরকার একধরনের অসহায়ত্বের মধ্যে পড়েছিল। সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর সম্পূর্ণভাবে পাকিস্তানি গোয়েন্দাদের তত্ত্বাবধানে এ কর্ম সম্পাদন করলেও প্রশ্ন থাকে ভারতের শক্তিশালী গোয়েন্দা সংগঠন ‘র’-এর কার্যকারিতার ওপর। মারাঠা জেলেরা পুলিশকে খবর দিলেও মুম্বাই পুলিশ এ তথ্যের ওপর কোনো গুরুত্বই দেয়নি; যে কারণে লস্কর তাদের মিশন সম্পন্ন করতে পেরেছিল। এটি ছিল সম্পূর্ণ ‘আত্মঘাতী’ সন্ত্রাসী হামলা।

২.
এই হামলার পর থেকে বদলাতে থাকে মুম্বাই শহরের ও ভারতের রাজনীতি। ক্রমেই বালঠাকরে ও তাঁর পরিচালিত শিবসেনা মহারাষ্ট্র, বিশেষ করে মুম্বাইয়ের রাজনীতিতে দারুণ শক্তিশালী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। হিন্দুত্বের হাত শক্ত হয়। মাত্র সপ্তাহ খানেক আগে পাকিস্তানের খুরশিদ মোহাম্মদ কাসুরির একটি বইয়ের প্রকাশনা উৎসবে বিজেপির সমর্থক সুধেন্দ্র কুলকার্নির মুখে ও শরীরে কালি মেখে দিয়েছিল, যা ভারতের লেখকদের দারুণভাবে মর্মাহত করেছে। এর আগে উপমহাদেশের প্রখ্যাত গজল গায়ক গোলাম আলীর মুম্বাই সফর বানচাল করেছে। ‘শিবসেনা’র এসব বিষয় অনেক দূর গড়িয়েছে। যদিও মহারাষ্ট্রে বিজেপি সরকার রয়েছে, তথাপি মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফাদনাভিস ‘শিবসেনা’দের এহেন কার্যকলাপকে ভারতের অসাম্প্রদায়িক চরিত্রের ওপর আঘাত হিসেবে বর্ণনা করে কুলকার্নির পক্ষ নিয়েছেন। তথাপি ‘শিবসেনা’র বিরুদ্ধে কোনো ধরনের আইনি ব্যবস্থা নিতে পারেননি। অপর দিকে কিছুদিন চুপ থাকার পর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মুখ খুললেও শিবসেনা তাঁকে মনে করিয়ে দেয় যে ভারতব্যাপী তাঁর উত্থানের পেছনে গুজরাটের গোদরা ও দাঙ্গার সম্পর্ক রয়েছে। শিবসেনার মতে, এ দুই কারণ না হলে আজ নরেন্দ্র মোদি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন না (টাইমস অব ইন্ডিয়া)। মোদিকে এ মন্তব্য হজম করতে হয়েছে।
ভারতে এখন ক্রমেই হিন্দুবাদীদের উত্থান হচ্ছে। গরুর মাংস খাওয়া নিয়ে এবং গরুকে কেন্দ্র করে এ উত্থান লক্ষণীয়। দাদরার ঘটনার পর হিমাচল প্রদেশে গরু পাচারকারী অভিযোগে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত পুলিশ তেমন কোনো ব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানা যায়নি। ইতিমধ্যে হরিয়ানা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন যে ভারতে থাকতে হলে মুসলমানদের গোমাংস খাওয়া বন্ধ করতে হবে। তাঁর এ বক্তব্য ভারতের কংগ্রেস পার্টিসহ সেক্যুলারপন্থীদের মধ্যে সমালোচনার ঝড় তুলেছে। এখানে উল্লেখ্য যে গোমাংস ভারতে শুধু মুসলিম সম্প্রদায়ই নয়, খ্রিষ্টান, উপজাতীয় এবং বহু ভারতীয়র সস্তা প্রোটিন ও ফাইবার জোগান দেওয়ার খাদ্য।
যা-ই হোক, ভারতে ক্রমেই হিন্দুত্ববাদীদের উত্থান হচ্ছে, বাড়ছে অসহিষ্ণুতা। ক্রমেই হারাচ্ছে ধর্মনিরপেক্ষতার আবরণ। যদিও বিজেপি থেকে থেকে নিজেদের কট্টরপন্থী হিন্দুবাদীদের থেকে দূরে থাকার বার্তা দেয়, তথাপি শিবসেনা, বজরং দল এবং আরএসএসের মতো হিন্দুত্ববাদী ধর্মভিত্তিক শক্তিশালী সংগঠনগুলোর সংস্রব কাটাতে পারছে না। বর্তমানে ভারতের কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে দুর্বল অবস্থানে রয়েছে ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলো। বিজেপির দৃষ্টি এখন বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও আসামে। এ তিনটি রাজ্যে হিন্দুত্বের প্রভাব পড়লে তা ভারতের অন্যতম প্রতিবেশী বাংলাদেশের ওপরও প্রভাব ফেলবে। অতীতেও হিন্দুত্বের উত্থানের কারণে ভারতের দুই প্রতিবেশী দেশ পাকিস্তানে দারুণ প্রভাব এবং বাংলাদেশে সামান্য হলেও প্রভাব পড়েছিল। মুম্বাইসহ ভারতের অন্যান্য স্থানে বিদেশি জঙ্গি হামলার পেছনে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনাটি কাজ করেছে বলে বিশ্বাস করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। কাজেই পুনরায় হিন্দুত্বের এই উত্থান ঠেকাতে না পারলে ভারতের চরিত্রে যেমন আমূল পরিবর্তন আসবে, তেমনি উপমহাদেশে জঙ্গিবাদ দারুণভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে—এমন তথ্যও রয়েছে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার হাতে।
এম সাখাওয়াত হোসেন: অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল, সাবেক নির্বাচন কমিশনার ও কলাম লেখক৷
[email protected]