মোটরসাইকেলের অতি ব্যবহার গণপরিবহনের ব্যর্থতার প্রমাণ নয় কি

মোটরসাইকেল আন্তজেলা যাত্রী পরিবহনের উপযোগী পরিবহন নয়। মহাসড়কও রাইড শেয়ারিং জন্য উপযোগী নয়। কিন্তু সেটি না করে উপায় কী?
ছবি: প্রথম আলো

যানজট মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে যাওয়ায় মানসম্পন্ন গণপরিবহনের অভাবে রাইড শেয়ারিং জনপ্রিয় হয়ে ওঠায় মোটরসাইকেলের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। মোটরসাইকেলের মাধ্যমে ব্যক্তিগত পরিবহনসহ মালামাল পরিবহনের চাহিদাও মেটে। রাইড শেয়ারিং থেকে কর্মহীন প্রবৃদ্ধির দেশে লাখো বেকার ছাত্র-যুবকের কিছু আয়ও আসে। রাজনৈতিক কর্মীদের চাঁদা তোলা, মহড়া দেওয়া ও মিছিলের কাজেও মোটরসাইকেলের ব্যবহার বাড়ছে। গত ঈদুল ফিতরে লাখ লাখ বাইকার মোটরসাইকেলেই গ্রামের বাড়িতে ফেরেন। ঝুঁকিপূর্ণ মোটরসাইকেল দূরপাল্লার যাত্রায় যাত্রীবাহী বাস ও ট্রেন, অর্থাৎ গণপরিবহনের ‘আকর্ষণীয়’ বিকল্প হয়ে ওঠল কেন? এ প্রশ্নের উত্তর গভীরে গিয়ে খুঁজতে হবে।

মোটরসাইকেল নাগরিকের তৈরি ‘ঝুকিপূর্ণ’ নতুন বিকল্প!

বাংলাদেশের সরকারি–বেসরকারি বাস রাজধানী কিংবা রাজধানীর বাইরে ভ্রমণের মান একেবারেই যাচ্ছেতাই এবং অনিরাপদ। বিগত এক দশকে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার সঙ্গে বাসের ভাড়া বৃদ্ধির সামাঞ্জস্য ছিল না বলে বাসের ভাড়া মানুষের সক্ষমতার চেয়ে বেমানান হারে বেড়েছে। উপরন্তু যানজটে নাকাল গণপরিবহনে বাসের ‘দীর্ঘ’ ভ্রমণ মধ্যবিত্তের আকর্ষণ ও প্রয়োজনীয়তা হারিয়েছে। নারী যাত্রীদের জন্য গণপরিবহন যেন নরকতুল্য, ফলে অনেকেই স্কুটিতে ঝুঁকছেন। অন্যদিকে ট্রেনের টিকিটের বহু কোটার পর সামান্য একটা অংশই শুধু অনলাইনে ছাড়া হয়। ঈদের সময় যেসব বিশেষ ট্রেন দেওয়া হয়, সেসবের টিকিট এখনো বিশ্রী রকমের ভিড়ে ঠেলাঠেলি করে সশরীর গিয়ে কিনতে হচ্ছে। বিগত ঈদে ট্রেনের টিকিট কিনতে ৩৪ ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে। এ ছাড়া বছরজুড়ে ট্রেনে নানা নিরাপত্তাহীনতা তো আছেই। একদিকে চুরি ও ছিনতাইয়ের ভয়, অন্যদিকে আছে পাথর ছোড়ার শঙ্কা, নেই মানসম্পন্ন শৌচাগারও।

এভাবে ট্রেন ও বাস ব্যবস্থাপনার হযবরল পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের গণপরিবহন একেবারেই অবেদনহীন হয়ে গেছে। বাংলাদেশের শহরে কিংবা শহরের বাইরে গণপরিবহনে কাঁধের ব্যাগে কোনো দামি ডিভাইস, ল্যাপটপ ব্যাগ, মূল্যবান মালামাল নিয়ে ওঠা যায় না। একদিকে চুরির ভয়, অন্যদিকে নষ্ট হওয়ার! নেই যাত্রীসেবা, নেই নিরাপত্তা, নেই সাশ্রয়ী যাতায়াতের নিশ্চয়তা। প্রশিক্ষণহীন চালক, ফিটনেসহীন গাড়ি, চরম ত্রুটিপূর্ণ রাস্তা—এই তিনে মিলে বাংলাদেশের সড়ক পরিবহন মৃত্যুর মিছিলকেই তরান্বিত করছে। ফলে মোটরসাইকেলই হয়েছে রাষ্ট্রহীন দেশে ব্যক্তি উদ্ভাবিত ‘ঝুকিপূর্ণ’ নতুন গণপরিবহন বিকল্প।

মোটরসাইকেলের সংখ্যার সঙ্গে বাড়ছে দুর্ঘটনাও

বিআরটিএ তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে মোটরসাইকেল নিবন্ধন ছিল ৪ লাখের কিছু বেশি, কোভিডের প্রভাবে ২০২০ সালে তা কমে ৩ লাখ ১১ হাজার ১৬টিতে দাঁড়ায়। ২০২১ সালে আবার তা বেড়ে হয় পৌনে চার লাখ। ২০২৭ সালের মধ্যে দেশে ১০ লাখ মোটরসাইকেল উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে উল্লেখ করে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি) গত বছর সিসিসীমা তুলে দেওয়ার সুপারিশ করেছে। স্থানীয় মোটরসাইকেল শিল্পের বিকাশে ইঞ্জিনক্ষমতার সীমা (১৬৫ সিসি) তুলে নিতে বলেছে বিটিটিসি। সংস্থাটির দাবি, ৩০০ বা ৫০০ সিসির মোটরসাইকেলে সর্বোচ্চ যে গতি তোলা সম্ভব, ১৬৫ সিসি মোটরসাইকেলেও একই গতি তোলা যায়।

কয়েক বছর ধরে দেশে মোটরসাইকেলের সংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে দুর্ঘটনাও বাড়ছে। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, দেশে ২০২১ সালে ২ হাজার ৭৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটে। এতে মারা যায় ২ হাজার ২১৪ জন, যা সড়ক দুর্ঘটনায় মোট মৃত্যুর ৩৫ শতাংশ। ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ৫০ শতাংশ এবং মৃত্যুর সংখ্যা ৫১ শতাংশ বেড়ে যায়। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ ঈদুল ফিতরের ছুটির আগে-পরের দুই সপ্তাহে দেশের সড়ক-মহাসড়কে দুর্ঘটনায় ৩২৩ জন নিহত হয়। নিহতের ৪৩ শতাংশই ছিল মোটরসাইকেলের চালক ও আরোহী, নিহত ব্যক্তিদের বড় অংশই ছিল কিশোর-তরুণ।

মাথাব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলার সমাধান

গত ২৭ এপ্রিল রাত ১২টা থেকে ৩০ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত ৭২ ঘণ্টায় ২১ হাজার ৩৬০টি মোটরসাইকেল বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু পারাপার হয়। ১৯৯৮ সালের জুনে সেতুটি চালু হওয়ার পর তিন দিনের হিসাবে এত বিপুলসংখ্যক মোটরসাইকেল এর আগে কখনো পারাপার হয়নি। স্বাভাবিক অবস্থায় প্রতিদিন এক থেকে দেড় হাজার মোটরসাইকেল বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়। অন্যদিকে ২৬ জুন চালুর পর পদ্মা সেতুতে এক দিনেই ৪৫ হাজারের মতো মোটরসাইকেল চলাচল করেছিল (অধিকাংশই সেতু দেখতে যাওয়া পর্যটক)। বিশৃঙ্খলা ও দুর্ঘটনায় দুজনের মৃত্যুর পর ২৭ জুন থেকে সেতু দিয়ে মোটরসাইকেল পারাপার বন্ধ করে দেওয়া হয়। ৩ জুলাই ২০২২ আন্তজেলা সড়কে মোটরসাইকেল বন্ধের দাবি করেছে বাস মালিক-শ্রমিক সংগঠন।

প্রশ্ন হচ্ছে, ঠিক যে যে মৌলিক কারণে আন্তজেলা যাতায়াতে মোটরসাইকেল বিকল্প হিসেবে উঠে এসেছে, সেসব সমাধান করা হয়েছে কি? আন্তজেলা ও উপজেলা বাস রুট ঠিক না করে, জেলা–উপজেলায় বাস চলাচলের উপযোগী রাস্তা নির্মাণ ও মেরামত না করে, ট্রেন ভ্রমণ নিরাপদ না করে, ডিজিটাল সময়ে ট্রেনের টিকিট বিক্রি নিয়মতান্ত্রিক না করে শুধু মোটরসাইকেল নিষিদ্ধ করলে আমাদের গণপরিবহন সমস্যার সমধান হবে? বরং নাগরিক চাহিদার বিপরীতে অর্থ ও সময় অপচয়ের খরুচে সিদ্ধান্ত। মহাসড়কে কিংবা পদ্মা সেতুতে মোটরসাইকেল চলাচলের গতিবেগ ও নিরাপত্তাবৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণ না করে, সেতুতে গাড়ি পার্কিং নিষিদ্ধকরণ বাস্তবায়ন না করে মোটরসাইকেল নিষিদ্ধ করলেই দুর্ঘটনার সমাপ্তি হবে? মোটরসাইকেল যে নগরে ও নগরের বাইরের দূরপাল্লার যাত্রায় যাত্রীবাহী বাস ও ট্রেন, অর্থাৎ গণপরিবহনের ‘আকর্ষণীয়’ বিকল্প হয়ে ওঠল, তার সমাধান না করে একতরফা মোটরসাইকেল নিষিদ্ধ করা হচ্ছে মাথাব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলার সমাধানে হাঁটা।

ঝুঁকিপূর্ণ মোটরসাইকেলের গণপরিহবনের বিকল্প হওয়া ভয়ংকর। এর চেয়েও ভয়ংকর হলো সমস্যা চিহ্নিত না করে বরং সমস্যাকে কার্পেটের তলায় লুকানোর সরকারি ও রেগুলেটরি হীনমন্যতা। জ্ঞানহীনতা ও দায়বদ্ধতাহীনতার অবসান করে দেশব্যাপী আধুনিক সাশ্রয়ী ও নিয়মতান্ত্রিক গণপরিহন বিকাশের সমন্বিত মাস্টারপ্ল্যান ও তা বাস্তবায়নের রাজনৈতিক সততা দরকার। বিচ্ছিন্ন কোনো নিষেধাজ্ঞা কাজে আসবে না।

মোটরসাইকেলের বিকল্পগুলো কি ভালো

মূলত মোটরসাইকেল আন্তজেলা যাত্রী পরিবহনের উপযোগী পরিবহন নয়। মহাসড়কও রাইড শেয়ারিং জন্য উপযোগী নয়। কিন্তু সেটি না করে উপায় কী? আমরা দেখছি, ট্রেনের টিকিটের জন্য হাহাকার। ২০১১-১২ অর্থবছর থেকে বিগত ১০ বছরে সরকার রেল উন্নয়নে ৫২ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করলেও রেলের গতি বাড়েনি, গন্তব্যে পৌঁছার সময় বরং বেড়েছে। যাত্রী পরিবহন সেবা উন্নত হয়নি, রেল ভ্রমণ নিরাপদ হয়নি। এ সময়ে রেল ১৩ হাজার কোটি টাকা লোকসান করেছে। এদিকে যাত্রীবাহী বাসের দুই–তৃতীয়াংশই ফিটনেসবিহীন, এখানে হাত দেওয়া হচ্ছে না কাদের স্বার্থে? বেশি ব্যয়ে নির্মাণের পরও দেশের মহাসড়ক উঁচু-নিচু, খানাখন্দে ভরা, এখনো ধীরগতির লেন বাস্তবায়িত হচ্ছে না! নতুন সড়কেও রয়েছে ডজন ডজন কারিগরি ত্রুটি। এখনো ড্রাইভিং লাইসেন্স বরাদ্দ প্রক্রিয়াকেই ঠিক করা হচ্ছে না।

বিআরটিএর গাড়ি ফিটনেস যাচাই মান খুবই নিম্ন পর্যায়ের। মানহীন ফিটনেস পরীক্ষার ফলাফল রাস্তার দুর্ঘটনা। এত নিম্নমানের ফিটনেস ব্যবস্থা যে টায়ার গ্রিপের পুরুত্বটাও মাপার ব্যবস্থা নেই। অর্থাৎ লাইসেন্স প্রদানে এক মাফিয়া চক্রকে উপড়ে ফেলে একটি সুন্দর স্বচ্ছ ও আধুনিক ব্যবস্থাপনা কাঠামো তৈরিতে সরকারের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।

ব্যাপক চাঁদাবাজি ও যানজটের কারণে কম ট্রিপে বেশি মাল ও যাত্রী পরিবহনের ঝোঁক প্রাধান্য পায়। উন্নয়ন প্রকল্পে ভয়াবহ অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে যানবাহনের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রশস্ত লেন, কারিগরি হিসাবমতো সহনীয় বাঁক, খানাখন্দহীন সমতল পিঠ নির্মাণ করা হয় না। সড়কে ঢোকা ও বের হওয়ার জন্য আলাদা লেন নেই। নেই নিম্নগতির বাহনের জন্য আলাদা রাস্তা। এ সমস্যা হচ্ছে অদূরদর্শী অবকাঠামো, বাস্তবায়নকারীদের চুরি, ব্যক্তির ব্যবসায়িক লাভের চাহিদাসহ বহুমাত্রিকহীনতার প্রেক্ষাপটে গড়ে ওঠা অর্থনৈতিক আচরণ ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তপনার মিশ্রণ। ফলে অতি নিম্নমানের রাস্তায় অপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে শিক্ষা নেওয়া চালক নিজেও বড্ড নিরাপত্তা ঝুঁকিতে গাড়ি চালান। ফলে যাত্রিবাহী বাস মানেই সম্ভাব্য মৃত্যুর সঙ্গে পথচলা।

লাইসেন্স বরাদ্দ প্রক্রিয়া হীনমন্য, হাস্যকর ও দুর্নীতিগ্রস্ত বলে মূলত আমাদের মোটরসাইকেল চালকেরা স্বশিক্ষিত। তাঁদের রোড সেইফটি ও মোটর সেইফটির ধারণা নেই। সরকার স্পোর্টস বাইক ও রাইড শেয়ারিং বাইকের সংজ্ঞা নির্ধারণ করেনি। প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতার সঙ্গে লাইসেন্সিং সীমাগুলো নির্ধারণ করেনি, যেখানে নগর পারাপারে ব্যবহার হওয়ার কথা স্কুটি, সেখানে হচ্ছে পাওয়ার বাইক। মাত্র পাঁচ কিলো/ঘণ্টার গড় গতির রাজধানীতে উচ্চ সক্ষমতার বাইক চলে, এসবে গতি উঠাতে গেলেই ঘটে মর্মন্তুদ দুর্ঘটনা। চালকেরা হেলমেট, হাতে–পায়ের নিরাপত্তা পোশাক পরেন না, নেই স্বয়ংক্রিয় জরিমানাপদ্ধতির বাস্তবায়ন। চালকেরা রাস্তার মানের সঙ্গে গতিসীমার সম্পর্ক না বুঝেই অতি গতিতে চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটান। রাস্তায় যেমন সঠিক গতিনির্দেশনা নেই, তেমনি রোড ও মোটর সেইফটির সুস্পষ্ট আইন ও রেগুলেশনও নেই। ফলে চালকদের একতরফা দোষ দেওয়াও যায় না। এই এক নিয়মহীন নৈরাজ্যের বিধিবদ্ধ আয়োজন! বরং মোটরসাইকেল ও মোটরগাড়িতে মামলা–বিষয়ক হয়রানি ও ঘুষ পুলিশ প্রশাসনের চাঁদাবাজির বড় উৎস।

মেট্রোরেল এলে মোটরসাইকেলের প্রয়োজন ফুরাবে?

কথা ছিল জনঘনত্ব অনুসারে ট্র্যাফিক পয়েন্ট নির্ধারিত হবে নির্দিষ্ট দূরত্বে, সেই অনুসারে নগরে গণপরিবহন হিসেবে ট্রাম, ট্রাম বাস ও মেট্রোরেলের রুট তৈরি হবে। উল্টো আমরা দেখেছি, স্বাভাবিকভাবে গড়ে ওঠা নগরীর নির্দিষ্ট কিছু ট্র্যাফিক হাবকে (বিশেষভাবে উত্তরা থেকে মতিঝিল, মিরপুর থেকে বিমানবন্দর) কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে নগর পরিবহন রুট পরিকল্পনা। অনগ্রসর এলাকাগুলোর আধুনিক গণপরিবহন নকশা তৈরির কোনো উদ্যোগ নেই। ড্যাপের আবাসিক, বাণিজ্যিক ও শিল্পের মিশ্র মডেলের নগরায়ণের গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যা অপরিকল্পিতভাবে এমনিতেই গড়ে উঠেছে! মেট্রোরেল আসার পরও একই রুটে মোটরসাইকেল কমবে কি না, যা চারটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে। এক. সহনীয় ভাড়া। দুই. স্বল্প ও মাঝারি পরিসরে পণ্য পরিবহনবান্ধব হবে কি না, সেটা। তিন. যাত্রী ও পণ্য নিরাপত্তা। চার. মেট্রোরেলের ব্যাপক সংযোগ বা কানেক্টিভিটি। যেহেতু মেট্রোরেলের সব কটি রুট একসঙ্গে আসছে না, তাই রাজধানীতে নিকট ভবিষ্যতে মোটরসাইকেল কমার সম্ভাবনা কম।

ঝুঁকিপূর্ণ মোটরসাইকেলের গণপরিহবনের বিকল্প হওয়া ভয়ংকর। এর চেয়েও ভয়ংকর হলো সমস্যা চিহ্নিত না করে বরং সমস্যাকে কার্পেটের তলায় লুকানোর সরকারি ও রেগুলেটরি হীনমন্যতা। জ্ঞানহীনতা ও দায়বদ্ধতাহীনতার অবসান করে দেশব্যাপী আধুনিক সাশ্রয়ী ও নিয়মতান্ত্রিক গণপরিহন বিকাশের সমন্বিত মাস্টারপ্ল্যান ও তা বাস্তবায়নের রাজনৈতিক সততা দরকার। বিচ্ছিন্ন কোনো নিষেধাজ্ঞা কাজে আসবে না।

  • ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব টেকসই উন্নয়নবিষয়ক লেখক। গ্রন্থকার: চতুর্থ শিল্পবিপ্লব ও বাংলাদেশ, বাংলাদেশ: অর্থনীতির ৫০ বছর, অপ্রতিরোধ্য উন্নয়নের অভাবিত কথামালা, উন্নয়ন প্রশ্নে বাংলাদেশের কিছু সংকট ও সম্ভাবনা। [email protected]