রোহিঙ্গা সংকটের রাজনৈতিক সমাধান খুঁজুন

রোহিঙ্গা সমস্যার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার ধারাবাহিকভাবেই ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে
রোহিঙ্গা সমস্যার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার ধারাবাহিকভাবেই ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে

২৩ আগস্ট কফি আনান যখন মিয়ানমারের নেতা অং সান সু চির কাছে তাঁর চূড়ান্ত প্রতিবেদন পেশ করেন, তখন সম্ভবত তিনি ভাবতেও পারেননি যে তাঁর হুঁশিয়ারির মাত্র ৪৮ ঘণ্টারও কম সময়ের মধ্যে আশঙ্কাটি সত্যি হয়ে যাবে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যবিষয়ক পরামর্শক কমিশনের প্রধান কফি আনান লিখেছিলেন, ‘সরকার ও সমাজের সব অংশের সহায়তায় এবং সরকারের নেতৃত্বে যদি দ্রুত সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া না হয়, তাহলে আমরা সহিংসতা ও র‍্যাডিক্যালাইজেশনের আরেকটি চক্রের পুনরাবৃত্তির ঝুঁকির মুখে পড়ব।’ তিনি আরও হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, রাখাইন রাজ্য যে দারিদ্র্যের শিকার, এর ফলে তা আরও বাড়বে।

মিয়ানমারের সরকারি ভাষ্যে জানানো হয়েছে, ২৫ আগস্ট ভোরে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি নামের বিদ্রোহীরা একযোগে অন্তত ২৫টি নিরাপত্তাচৌকিতে হামলা চালিয়েছে। ওইসব হামলায় নিহত ব্যক্তির সংখ্যা শতাধিক বলে সরকারি ভাষ্যে জানানো হয়েছে। রোহিঙ্গা বিদ্রোহীদের তরফ থেকে কোনো ভাষ্য প্রচার করা হয়নি। সংবাদমাধ্যমের সেখানে প্রবেশাধিকার নেই এবং আন্তর্জাতিক ত্রাণকর্মীদেরও সরকারি ব্যবস্থাপনা ছাড়া সেখানে যাওয়ার সুযোগ নেই। সুতরাং, ঘটনার ভয়াবহতা এবং আসল চিত্র সম্পর্কে ধারণা পাওয়া কঠিন। মূলধারার সংবাদমাধ্যমে যেসব চিত্র তুলে ধরা হচ্ছে, তা মূলত সেখান থেকে প্রাণভয়ে পালিয়ে আসা আশ্রয়প্রার্থীদের মুখ থেকে শোনা বিবরণ। তবে বিকল্প মাধ্যম—সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে নৃশংসতার অনেক বীভৎস ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়ছে। ওইসব ছবিতে দেখা যাচ্ছে, নৃশংসতায় শুধু যে সে দেশের নিরাপত্তাবাহিনী জড়িত তা-ই নয়, বেসামরিক লোকজনও এতে সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছেন। তবে সমস্যা হচ্ছে, এগুলোর কোনোটিই স্বাধীনভাবে যাচাই করা নয়। ফলে কোন ছবি কবেকার এবং কোথায় তোলা, তা জানা অসম্ভব। গত বছরের অক্টোবরেও এ ধরনের নৃশংসতা ঘটেছিল। তখনকার ছবির সঙ্গে এখনকার ছবির মিল থাকা মোটেও অসম্ভব নয়। আবার নানা ধরনের ছবি জুড়ে দিয়ে বিভ্রান্ত করার আশঙ্কাও নাকচ করে দেওয়া যায় না। তবে সরকারি ভাষ্যে প্রাণহানির যে সংখ্যা দেওয়া হয়েছে এবং যে উচ্চহারে রোহিঙ্গারা ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে আসছেন, তাতে আশঙ্কা হয়—এবার নিরাপত্তা বাহিনীর নিষ্ঠুরতা আরও বেড়েছে।

প্রশ্ন হচ্ছে, হঠাৎ করে পরিস্থিতির এতটা অবনতি ঘটল কীভাবে এবং কেন? এর ফলে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের স্বীকৃতি এবং অধিকার প্রতিষ্ঠায় ন্যূনতম কোনো অগ্রগতি হবে এমন কোনো সম্ভাবনাই তো দেখা যায় না। আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) কথিত সশস্ত্র লড়াইয়ের লক্ষ্যও স্পষ্ট নয়। বিষয়টি এমন নয় যে রোহিঙ্গারা আরাকানে আলাদা স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চান। তাঁদের মধ্যে এ ধারণাটিই প্রধান যে মুসলমান হওয়ার কারণেই তাঁরা নিপীড়ন ও বঞ্চনার শিকার। এ ক্ষেত্রে উগ্রপন্থী ইসলামি গোষ্ঠীগুলোর প্রচারণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে কথিত বৈশ্বিক জিহাদে যুক্ত হওয়ার আকাঙ্ক্ষা তৈরি হওয়া এবং সেই লক্ষ্যে তাঁদের সংগঠিত হওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল। কফি আনান কমিশন সেই র‍্যাডিক্যালাইজেশনের কথাই বলেছে।

কিন্তু এর বিপরীত দিকটিও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। রোহিঙ্গাদের আরাকান ছেড়ে যেতে বাধ্য করার জন্য এ ধরনের সাঁড়াশি নিরাপত্তা অভিযান যে ভালোই কাজে লাগে, সে অভিজ্ঞতা মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর রয়েছে। যতবারই তারা অভিযান চালিয়েছে, ততবারই হাজার হাজার রোহিঙ্গা ঘরবাড়ি ছেড়ে সীমান্ত পাড়ি দিয়েছেন। আর একবার বাস্তুচ্যুত হলে তাঁদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি যে কূটনীতির ফাঁপরে পড়ে যাবে, সেটাও মিয়ানমার ভালোই জানে। সুতরাং, মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর প্রয়োজন ছিল শুধু অভিযান পরিচালনার অজুহাত। ২৫ আগস্ট সেই অজুহাতই তৈরি হয়ে গেল।

কফি আনানের এই হুঁশিয়ারিরও প্রায় দুই সপ্তাহ আগের কথা। মিয়ানমারের মানবাধিকার–বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত, ইয়াংঘি লির মাধ্যমে আমরা জানতে পারি যে ১০ আগস্ট রাখাইন রাজ্যের স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে নিরাপত্তা সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়ে মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় সরকার সেখানে আরও এক ব্যাটালিয়ন সৈন্য পাঠিয়েছে। ইয়াংঘি লি পরের দিন ১১ আগস্ট বিপদের আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন যেএই সেনা মোতায়েনের বিষয়টি গভীর উদ্বেগের। মিস লির বিবৃতিতে সব পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা বাহিনী যাতে সংযম প্রদর্শন করে এবং মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকে, তা নিশ্চিত করতে দেশটির সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। মিস লি বলেন, গত বছরের অক্টোবরে তিনজন সীমান্তরক্ষীর ওপর হামলা এবং পরে নভেম্বর মাসে সংঘটিত আরও সংঘর্ষের পটভূমিতে পরিচালিত নিরাপত্তা অভিযানের সময় মানবাধিকার লঙ্ঘনের গুরুতর অভিযোগগুলোর বিষয়টি আমাদের স্মরণ রয়েছে। ওই বিবৃতিতে রাখাইন রাজ্যের মংগদুর বিষয়ে মিয়ানমার সরকারের নিজস্ব তদন্ত কমিশন সম্প্রতি যে প্রতিবেদন দিয়েছে তার সারসংক্ষেপ উল্লেখ করে মিস লি বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের অনেক অভিযোগের এখনো তদন্ত চলছে এবং অনেকগুলোর আরও তদন্ত প্রয়োজন বলে জানানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, প্রেসিডেনশিয়াল কমিশন নির্যাতন, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণের অনেক অভিযোগই যে যাচাই করতে পারেনি, তা স্বীকার করে নিয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সেগুলো তদন্ত করার সুপারিশ করেছে। তিনি বলেন, কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব সবার নিরাপত্তা বিধান করা, কয়েকজনের নয়।

২৮ আগস্ট আরাকান স্যালভেশন আর্মির নেতৃস্থানীয় একজন প্রতিনিধি, যিনি নিজেকে শুধু আবদুল্লাহ নামে পরিচয় দিয়েছেন, তিনি এশিয়া টাইমসকে দেওয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তাঁরা যে হামলা চালিয়েছেন, তা ছিল প্রতিরোধমূলক। তিনি দাবি করেন, আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ নেওয়া ছাড়া তাঁদের কোনো বিকল্প ছিল না। তিনি বলেন, মংগদু ও রাথেডংয়ে সেনা অভিযানে কিশোরসহ ২৫ জনকে ধরে নিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে। এরপর রাথেডংয়ে যায় দি পিয়িন গ্রামটি নিরাপত্তা বাহিনী এবং বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকজন অবরুদ্ধ করে ফেলায় আরসা কমান্ডাররা পাল্টা আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি আরও দাবি করেছেন যে রোহিঙ্গা গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান সম্প্রসারণ এবং যায় দি পিয়িন গ্রামটিতে অবরোধ আরোপের জন্য সেনাবাহিনী ইচ্ছাকৃতভাবে এই সময় বেছে নিয়েছে। কফি আনান কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদনের কারণে বিশ্ব সম্প্রদায়ের আলোচনায় রোহিঙ্গা ইস্যুটির গুরুত্ব পাওয়াকে নস্যাৎ করতেই এ সময়ে এই অভিযান বলে তিনি দাবি করেন। এশিয়া টাইমস জানাচ্ছে, মিয়ানমার সরকার ২৭ আগস্ট আরসাকে নিষিদ্ধ সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করেছে।

মিয়ানমারে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর নিরাপত্তা বাহিনীর বাড়াবাড়ি রকমের শক্তিপ্রয়োগ ও নিষ্ঠুরতার অভিযোগ নতুন নয়। গত বছরের অক্টোবরে পরিচালিত অভিযানটি সাম্প্রতিক কালে বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সমালোচিত। একটি হামলায় তিনজন নিরাপত্তারক্ষীর প্রাণহানির জবাবে সে সময়ে দেশটির সেনাবাহিনী যে অভিযান চালায়, তার পরিণতিতে দেশান্তরি হয়ে শুধু বাংলাদেশেই তখন পালিয়ে এসেছেন ৮৭ হাজার রোহিঙ্গা। এই পরিসংখ্যান আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম-এর। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে সে সময় যে ধরনের হত্যা, লুণ্ঠন ও নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছে, তাকে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে অভিহিত করেছে। অভিযোগগুলো তদন্তের জন্য আন্তর্জাতিক তদন্তের প্রস্তাবে মিয়ানমার এখনো সম্মত হয়নি। ফলে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ার পটভূমিতেই কফি আনান কমিশন তার প্রতিবেদন পেশ করেছে। এ ক্ষেত্রে কফি আনান কমিশনের সুপারিশগুলো বাস্তবায়নে মিয়ানমারের ওপর চাপ বাড়বে, সেটাই স্বাভাবিক। প্রতিবেদনটি প্রকাশের পরপরই জাতিসংঘ বলেছে, রিপোর্টটির সুপারিশসমূহ বাস্তবায়নে সহায়তা দিতে তারা প্রস্তুত রয়েছে। মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিচ বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যের বিষয়ে পরামর্শক কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশকে আমরা স্বাগত জানাই। এতে নাগরিকত্ব এবং পরিচয়ের বিষয়ে যে জোর দেওয়া হয়েছে, বিশেষ করে সব মানুষের চলাচলের স্বাধীনতা ও সহিংসতার মূল কারণ দূর করা এবং আন্তসম্প্রদায় সহিংসতা হ্রাসের লক্ষ্যে যেসব সুপারিশ করা হয়েছে, আমরা তা বিবেচনায় নিচ্ছি।’

কফি আনান কমিশন মূলত মিয়ানমার সরকারেরই প্রতিষ্ঠিত একটি কমিশন। কফি আনান ফাউন্ডেশন এবং মিয়ানমার সরকারের যৌথ উদ্যোগে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই কমিশনে বিদেশি সদস্য কফি আনানসহ মাত্র তিনজন। বাকি ছয়জনই মিয়ানমারের নাগরিক এবং মানবাধিকার কমিশনসহ কয়েকটি নাগরিক গোষ্ঠীর প্রতিনিধি। কমিশনের সুপারিশমালা নিয়ে কূটনৈতিক মহল যথেষ্ট উৎসাহী। তবে কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদন পড়ে খুব বেশি আশাবাদী হওয়া যায় না। কফি আনান তাঁর প্রতিবেদনের শুরুতেই ব্যাখ্যা দিয়েছেন যে বিশেষ স্পর্শকাতরতার কারণে তিনি বিপন্ন এই জনগোষ্ঠীকে রোহিঙ্গা বা বাঙালি কোনো অভিধাতেই অভিহিত করেননি। তাঁদের বলা হয়েছে মুসলিম। এটি এই কমিশনের সবচেয়ে বড় দুর্বলতা। মিয়ানমারের চাপের কারণে রোহিঙ্গাদের পরিচয়ই তিনি বদলে ফেলেছেন। আবার রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে মুসলিম হিসেবে চিহ্নিত করে তিনি ইসলামপন্থী জিহাদিদের ‘মুসলিম নিপীড়নের’ বয়ানকে অনেকটাই যৌক্তিকতা দিলেন। তাঁর সুপারিশমালাতেও রয়েছে দুর্বলতা। তিনি অস্থায়ী পরিচয়পত্র দেওয়ার প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার কথা বলেছেন। কিন্তু অস্থায়ী পরিচয়পত্র যাচাইয়ের সময় জাতিগত পরিচয় বাঙালি লিখতে বাধ্য করার অভিযোগ নিরসনের কোনো পথ দেখাননি। জাতীয়তা নির্ধারণে ১৯৮২ সালের আইন সংস্কারের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার না দিয়ে এটিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে পেছনে।

বাংলাদেশের সরকার কফি আনান কমিশনের প্রতিবেদনের বিষয়ে কোনো মতামত প্রকাশ করেছে বলে আমরা জানি না। অথচ এটিকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে বিচার-বিশ্লেষণের প্রয়োজন ছিল। রোহিঙ্গা সমস্যার বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার ধারাবাহিকভাবেই ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। আওয়ামী লীগের আগে বিএনপি এবং সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নীতিতেও কোনো হেরফের ছিল না। একদিকে আমরা লক্ষাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থীকে কয়েক যুগ ধরে আশ্রয় দিয়ে চলেছি, অন্যদিকে মানবিক-সংকটের সময় বিশ্বের কাছে আমরা চিত্রিত হচ্ছে হৃদয়হীন হিসেবে। সীমান্তে নারী-শিশুদের আবারও গোলাগুলির মধ্যে ফিরিয়ে দেওয়ার ছবিটাই সংবাদমাধ্যমে বড় করে ছাপা হচ্ছে। জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার কাছ থেকে সীমান্ত খুলে দেওয়ার অনুরোধ-উপরোধ শুনতে হচ্ছে।

মিয়ানমার সরকারের প্রতি আন্তর্জাতিক চাপ যতটা বাড়ানো প্রয়োজন ছিল, ততটা হয়নি। সেটা না হওয়ার পেছনে আমাদের দায়ও কম নয়। তথাকথিত এনগেজমেন্টের নীতিতে লাভ হচ্ছে না জেনেও আমরা বছরের পর বছর সেই পথে হেঁটেছি। এখন আরও এক ধাপ এগিয়ে রোহিঙ্গা উগ্রপন্থীদের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযানের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বাস্তবতা হচ্ছে, বিশ্বে রোহিঙ্গাদের পক্ষে দাঁড়ানোর কেউ নেই। প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশের সেই ভূমিকাটি নেওয়ার একটা নৈতিক দায়িত্ব ছিল। কিন্তু আমরা সেই কথা জোরের সঙ্গে বলতে পারছি না। তাঁদের নাগরিকত্বের স্বীকৃতির বিষয়টি একটি রাজনৈতিক প্রশ্ন। কফি আনান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে তাঁর ভাষায় আরাকান সংকটের সমাধান খুঁজেছেন। আমাদের উচিত হবে আরাকান সমস্যাটির রোহিঙ্গা প্রশ্নে জোর দেওয়া। আর রাজনৈতিক সমাধানের চেষ্টা ছাড়া এই সংকটের সামরিক সমাধানের চিন্তা মোটেও বাস্তবসম্মত নয়।

কামাল আহমেদ: সাংবাদিক।