'বস্তি' উচ্ছেদ করবে ডাকসু ও রাকসু নির্বাচন!

ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন কোন প্রেক্ষাপটে আমরা দাবি করেছিলাম, চুয়ান্ন সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনকালে সমাজে কী ধরনের মূল্যবোধ ছিল, কোন প্রেক্ষাপটে এবং কোন লক্ষ্য অর্জনে ১৯৫৪ সালের ঐতিহাসিক ২১ দফায় নির্দিষ্টভাবে ঢাকা ও রাজশাহী বিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসন দাবি করা হয়েছিল, আর এখন ৬৩ বছর পর তা আমাদের কী সুফল দিচ্ছে, কোথাও তার কোনো পরিবর্তন বা সংস্কার আনা যায় কি না, তা একটি নির্মোহ মূল্যায়নের দাবি রাখে।

ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে ইদানীং অঘটনের মাত্রা এত বেশি বেড়ে গেছে যে মনে হচ্ছে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়া হলে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভবিষ্যতে নানামুখী সমস্যার জন্ম দিতে পারে। ১৯১৭ সালে ভারত সরকার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যা বুঝতে লিডস বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এমইস্যাডলারের নেতৃত্বে একটি কমিশন করেছিল। সেই স্যাডলার সাহেব অক্টোবর বিপ্লবের বছরটিতেই ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করেছিলেন। স্যাডলারের নিয়োগ সম্পর্কে তৎকালীন ভারতবিষয়ক সেক্রেটারি অব স্টেট চেম্বারলিন লিখেছিলেন, ‘ভাইসরয় লর্ড চেমসফোর্ড আমাকে জানিয়েছেন শিক্ষা সমস্যার সমাধানের মধ্য দিয়ে তঁারা বৃহত্তর রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের আশা করছেন।’

অক্টোবর বিপ্লবের শততম বার্ষিকী যখন দেশে নানা অনুষ্ঠানে উদ্‌যাপিত হচ্ছে তখন গতকাল রোববারবরেণ্য শিক্ষাবিদ অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর সঙ্গে কথা বলি। তিনি বললেন, স্যাডলার সাহেব যে সময়টাতে ওই সুপারিশ করেছিলেন, তখন বিশ্বযুদ্ধের সংকট ও অক্টোবর বিপ্লবের দামামা—দুটোরই প্রভাব সর্বত্র পরিব্যাপ্ত। ওই সময় ঔপনিবেশিক শাসনের জায়গা থেকে তঁারা ভেবেছিলেন, মধ্যবিত্তকে যদি শিক্ষা দেওয়া যায়, তাহলে তারা উদারনৈতিকতা, পেশা ও স্বাচ্ছন্দ্যপূর্ণ জীবনের দিকে ঝুঁকবে। আর সেটা তাদের শাসকশ্রেণির কাছাকাছি এনে দেবে। রাজনৈতিক ক্ষত নিরাময়ে কাজে দেবে।

আমি তখন তঁাকে বর্তমান বাংলাদেশে, বিশেষ করে ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান গভীর সংকটের দিকে নজর দিতে বলি। আর তখন তিনি ইঙ্গিত দেন যে শিক্ষকদের মারামারি, যৌন হয়রানি ও মাদক সেবনে জড়ানোর মতো ধাবমান উপদ্রব আসলে পুঁজিবাদেরই সংকট। তঁার কথায়, ‘এই সংকট ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে বলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও শিক্ষিত লোকদের বস্তিতে পরিণত হয়েছে।’

শিক্ষিত লোকদের বস্তি কথাটির প্রয়োগ সমস্যার ব্যাপকতা সহজে অনুধাবনে বেশ কাজ দেবে বলেই মনে হয়। একজন বিদগ্ধ পাঠক টেলিফোনে আমাকে ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যা ঘটছে, বিশেষ করে কিছু শিক্ষক যা করছেন, তা নিয়ে লিখতে বলেন। কিন্তু শিক্ষকদের নিয়ে লেখা সহজ নয়। কারণ, বিশ্বের সব সমাজেই শিক্ষকেরা অতীব শ্রদ্ধার পাত্র। আমরাও বিশ্বাস করি যে সংখ্যাগরিষ্ঠ শিক্ষক কতিপয় দলান্ধ শিক্ষকের হীন স্বার্থপরতা ও লোভী কর্মকাণ্ডে একধরনের পীড়ন অনুভব করে চলেছেন।

সম্প্রতি প্রায় কাছাকাছি সময়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটি নজিরবিহীন ঘটনা ঘটেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকেরা নিজেরা মারামারি করেছেন এবং সেই উপদলীয় কোন্দলের ঘটনায় তঁারা অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন করেছেন। এতে অপরাজেয় বাংলার পবিত্রতা বেড়েছে বলে মনে হয় না। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের দৃশ্যত অবিচলিত উপাচার্য দাবি করেছেন যে ওই মারামারি অভ্যন্তরীণ বিষয়, তাই তিনি তদন্ত করবেন না। অবাক হই, যা নিয়ে প্রকাশ্যে পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন হতে পারে, তা কী করে অভ্যন্তরীণ থাকে! এ ঘটনায় যাঁরা দোষী তাঁরা কেন অসদাচরণের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হবেন না? এমনকি তদন্তের প্রয়োজন আছে বলেও কেন মনে করা হবে না? এর পরিণাম ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ হতে পারে। এই সহিংসতা শুধু নীল বা সাদায়, অর্থাৎ গোষ্ঠীগত বলয়ে সীমাবদ্ধ থাকবে, তা ধরে নেওয়ার কারণ নেই। সুতরাং অবিলম্বে তদন্ত করে অসদাচরণ বা শৃঙ্খলার ব্যত্যয় যে ঘটেছে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে তা নথিবদ্ধ করতে হবে। একে অভ্যন্তরীণ বলে পাশ কাটানো কোনো সদাচরণ হওয়ার নয়।

ওই ঘটনার কিছুদিন আগেই ডাকসুর নির্বাচনসংক্রান্ত এক কর্মসূচির পার্শ্ব ঘটনা হিসেবে শিক্ষক ও ছাত্রদের মধ্যে মারামারি হয়েছে। তবে প্রবীণ শিক্ষকেরা দাবি করেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে শিক্ষকেরা নিজেরা প্রকাশ্যে মারামারি করেছেন, সহিংসতার জন্ম দিয়েছেন, সেটা এই প্রথম। অন্যদিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ইয়াবা ‘সেবন ও সরবরাহকারী’ হিসেবে ১৭ জন ছাত্রের পাশাপাশি ৬ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই প্রতিবেদনটিকে সত্য বলে মানব না, বরং একে ভুয়া ও কাল্পনিক বলে উড়িয়ে দিতে পারলেই খুশি হতাম। কিন্তু তা আমরা পারছি কই!

ওই রিপোর্ট খুঁটিয়ে দেখলাম, সেখানে ছাত্রদলের চারজন ও ছাত্রলীগের চারজনের নাম রয়েছে। দেখলাম, বিশ্ববিদ্যালয়ের হলসহ ক্যাম্পাসে গড়ে ওঠা ইয়াবা চক্রের সদস্যদের নামের তালিকায় ১৪ জনের মধ্যে তিন সহযোগী ও তিন সহকারী অধ্যাপকের নাম। দু-একজনের নাম ভুলভাবে এসেছে, তার প্রমাণ হলো ওই রকম নামে কোনো শিক্ষক না থাকা। সন্দেহ নেই, এ রকম অভিযোগের সত্যতা এখনো প্রমাণসাপেক্ষ, তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা কেউ বিস্ময়ে স্তম্ভিত হননি। প্রথম আলোয় কয়েক বছর আগে যখন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কারও কারও মাদক সেবনে জড়িয়ে পড়ার খবর ছাপা হয়েছিল, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ প্রতিবাদী হননি। তদন্তও করেননি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই রিপোর্টে লেখা আছে, ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে শিক্ষকদের মাদক সেবন জাতির জন্য অশনিসংকেত।

আমরা ফোনে কথা বলি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নানের সঙ্গে। তিনি নিশ্চিত করেন যে ঢাকা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো অনিয়মের বিষয়ে মঞ্জুরি কমিশন তদন্ত করেনি। এবং তদন্ত করার মতো কোনো বিষয় বিবেচনাধীনও নেই। তিনি শুধু স্মরণ করতে পারেন যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে জঙ্গিবিষয়ক একটি তদন্ত হয়েছে। অথচ এ দুটি বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে আমরা অনেক মিডিয়া রিপোর্ট দেখে চলছি, যার কোনো কোনোটি তদন্তের দাবি রাখে। অনেক মেধাবী শিক্ষক দলবাজির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পেরে নীরবে বিদেশে চলে গেছেন। এমন একজন শিক্ষকের সঙ্গে গতকাল রোববা‌রই কথা হলো। তিনি পিএইচডি করে দেশে ফিরে নির্দয় পদোন্নতি-বঞ্চনার কিছুকাল পরে সিঙ্গাপুরে একটি মর্যাদাসম্পন্ন নয় মাস মেয়াদি বৃত্তি পেলেন। তবে গ্রীষ্মের অবকাশে অনধিক চার মাস ছুটি মঞ্জুরি হলো এই শর্তে যে তাঁকে তাঁর ওই পিএইচডিকালীন চার বছরের ছুটিকালে নেওয়া বেতন-ভাতার দুই বছরের সমপরিমাণ ফেরত দিতে হবে। তরুণ প্রভাষক সেদিন তাই করেছিলেন, তবে ফিরে এসে তিনি চাকরিতে ইস্তফা দেন। এখন যদিও তিনি বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরা অধ্যাপক, কিন্তু দেশের মাটিতেই শিক্ষকতার স্বপ্ন টুটে যাওয়ার রক্তক্ষরণ তাঁর আজও থামেনি! এর ১৪ বছর পর ২০০৭ সালে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের সূত্রে আমরা জানি যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০২ জন শিক্ষক পৌনে দুই কোটি টাকা ঋণ নিয়ে বছরের পর বছর ‘স্টাডি লিভ’ নিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্যের আমলে ঠিক কতজন শিক্ষকের কী প্রক্রিয়ায় নিয়োগ হয়েছে, সে বিষয়ে আমরা সত্যি একটি পূর্ণাঙ্গ বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করি। বিভাগওয়ারি শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত প্রার্থীর তালিকা, যাতে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রত্যেকের যোগ্যতার বিবরণ ও প্রাপ্ত নম্বরের উল্লেখ থাকবে, তেমন নথিপত্র প্রকাশ করা হোক। আমরা কখনো ধারণা পাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গত উপাচার্যের আমলের সাড়ে নয় শ শিক্ষকের মধ্যে অন্তত এক শ শিক্ষক নিয়োগের কোনো দরকার ছিল না।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক আমাদের বলেছেন, তিনি ২৬ বছর আগে যখন প্রথম চাকরি নেন, তখন থেকে তিনি তিনটি বিষয় পড়াতেন, এখন একটি বিষয় পড়ান। তাঁর বিভাগের অধিকাংশ শিক্ষক একটি বিষয়ের বেশি পড়ানোর সুযোগ পান না। সপ্তাহে মাত্র আড়াই ঘণ্টা হলো তাঁদের কর্মঘণ্টা। ওই শিক্ষকের দাবি, অন্য কিছু বিভাগের অবস্থা তাঁদের থেকে আরও শোচনীয়।      

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ধস শুধু তার ক্যাম্পাসে সীমিত থাকবে না। যেটা ভয় সেটা হলো সুউচ্চ প্রতিষ্ঠানগুলোতে যদি ন্যূনতম নীতিনৈতিকতা নেই বলে প্রতীয়মান হয়, তাহলে তা তৃণমূলের প্রতিটি শিক্ষা ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে মারাত্মক ক্ষত তৈরি করতে পারে। দেশের বিদ্যাপীঠগুলোতে এর ভয়াবহ প্রভাব পড়তে বাধ্য। সুতরাং, শিক্ষকদের নৈতিক স্খলন রুখতে এখনই বড় ধরনের পদেক্ষপ নেওয়া দরকার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস কখনো কেউ কল্পনা করেনি। এখন এটা রূঢ় বাস্তবতা। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সান্ধ্য এমবিএর প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। তদন্ত কমিটি হয়েছে বলে ভাবার কারণ নেই যে দোষী চিহ্নিত ও শাস্তি পাবে। উপরন্তু এ ঘটনা নিয়ে একাডেমিক কমিটির সভায় ধস্তাধস্তি হয়েছে। উভয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে রিসার্চ পেপার জালিয়াতির গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১২ সালের পরে অন্তত ছয়টি যৌন হয়রানির ঘটনায় ছয়জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। তবু ভালো যে এর মধ্যে দুজন অভিযুক্ত শিক্ষককে বাধ্যতামূলক অবসর ও চাকরিচ্যুতি নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েও যৌন হয়রানির দায়ে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, এমনকি বহিষ্কারের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু সাদা দলের অনেকের আক্ষেপ, যৌন হয়রানির দায়ে শুধু সাদা দলের অভিযুক্তরাই শাস্তি পেয়েছেন, নীল দলের অভিযুক্তরা ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে গেছেন। আর্থিক দুর্নীতি থেকেও শিক্ষকেরা পিছিয়ে নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিদেশি সাহায্যপুষ্ট প্রকল্পে এবং ঢাকায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গেস্টহাউস নির্মাণে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীকে বলি, স্যার সমাধান কী? তিনি বললেন, সর্বগ্রাসী মুনাফাই বিশ্ববিদ্যালয়সহ সবকিছু তছনছ করে দেওয়ার মূলে। চলতি পুঁজিবাদী মুনাফাসর্বস্ব ব্যবস্থাকে প্রতিস্থাপন করতে হবে সমাজতান্ত্রিক মনুষ্যত্ব দিয়ে। সে জন্য বর্তমান ব্যক্তিমালিকানার ব্যবস্থা হটিয়ে সামাজিক মালিকানা কায়েম করতে হবে। তাঁর চোখে সেই সমাজতান্ত্রিক মডেলই সমাধান।

বললাম, ‘শিক্ষিত লোকদের বস্তি’ আশু উচ্ছেদের দাওয়াই বলুন। ডাকসু ও রাকসু নির্বাচন হলে কি কিছুটা পরিত্রাণ মিলবে না? স্বায়ত্তশাসনের যে আইন, তার বদল চান না? তিনি স্বীকার করেন যে দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা থেকে ক্যাম্পাস আলাদা নয়। কিন্তু তদুপরি শিক্ষকদের বিশেষ ভূমিকায় দেখতে তিনি আগ্রহী। বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনী ব্যবস্থাই তিনি চান। তবে একটু কম চান। যেমন শিক্ষক নিয়োগ করে দলীয় ক্যাডার বা ভোটার বানানোর প্রবণতা রোধে তিনি মনে করেন ডিন নির্বাচনে শুধু অধ্যাপকেরা ভোটার হলে তাতে উপকার মিলবে। তবে এর থেকেও আমরা জরুরি মনে করি, ছাত্র সংসদ নির্বাচনগুলো চালু হোক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৫ ছাত্র ডাকসু নির্বাচনের জন্য ২০১২ সালের এপ্রিলে রিট করেন। চার সপ্তাহের রুল জারি হয়েছিল। ৫ বছর পরে গত মার্চে সুলতান মনসুর আহমেদ আরেকটি রিট করেন। এবারও চার সপ্তাহের রুল জারি হয়। সরকার বা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনো সেই রিটে জারি করা রুলের উত্তর দেয়নি বলেই জানি। স্বাধীন বিচার বিভাগের কাছে আমরা সেই রিটের দ্রুত শুনানি, প্রয়োজনে একতরফা শুনানি আশা করব। জাতীয় সংসদ সরকারি প্রশাসনের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে অকার্যকর। কিন্তু ছাত্রদের সংসদ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জবাবদিহির জন্য বেশ কার্যকর হবে বলেই আমাদের বিশ্বাস।

মিজানুর রহমান খান: সাংবাদিক৷