গলাচিপায় ৩০০ ফুট রাস্তা দ্রুত মেরামত করুন

সম্পাদকীয়

পটুয়াখালীর উপকূলীয় উপজেলা গলাচিপা। আগুন নেভানো ও দুর্যোগ মোকাবিলায় সেখানে ৩ কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের ভবন। স্টেশনটির জন্য প্রয়োজনীয় লোকবল এবং দুটি অগ্নিনির্বাপণ গাড়ির বরাদ্দও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ১৯ মাসেও চালু করা যায়নি সেটি। বরং ওই স্টেশনের লোকবল অন্যত্র প্রেষণে পাঠানো হয়েছে। মাত্র ৩০০ ফুটের একটা ভাঙাচোরা রাস্তা ফায়ার স্টেশন চালুর পথে যেন দুস্তর বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাস্তাটি গলাচিপা পৌরসভার আওতাধীন। কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষ সামান্য ওই রাস্তা মেরামত না করে দেড় কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণের একটা বড় বাজেটের প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। সেটা কবে পাস হবে, কবে রাস্তা মেরামত হবে, তা কেউ জানে না। ফলে সেবাবঞ্চিত হচ্ছে উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, গলাচিপার পুরোনো লঞ্চঘাটের কাছে ৩৩ শতাংশ জমির ওপর গণপূর্ত বিভাগের নির্মিত ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনটি অব্যবহৃত পড়ে আছে। গত ১৯ মাসে আশপাশের এলাকায় আগুন লাগার বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। সেপ্টেম্বরেই গলাচিপা শহরে আগুনে ৯টি দোকান পুড়ে যায়। পাশের দশমিনা ফায়ার স্টেশন থেকে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার আগেই বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি হয়ে যায়। স্থানীয়দের দাবি, গলাচিপা ফায়ার সার্ভিস স্টেশনটি চালু থাকলে এ সম্পদহানি হতো না।

গণপূর্ত বিভাগ পটুয়াখালীর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হারুন অর রশিদ বলেছেন, ‘গলাচিপায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের নির্মাণকাজ শেষ হলেও এখনো বুঝিয়ে দেওয়া যায়নি। গাড়ি যাওয়া-আসার সড়ক না থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সড়কটি পৌরসভার এবং সড়ক নির্মাণে আমাদের বরাদ্দ না থাকায় বিষয়টি পৌরসভাকে জানিয়েছি।’

অন্যদিকে গলাচিপার পৌর মেয়র আহসানুল হক জানান, পৌরসভা থেকে পুরোনো লঞ্চঘাট পর্যন্ত একটি সড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রায় দেড় কিলোমিটার সড়কটি আরসিসি ঢালাই দিয়ে করা হবে। সঙ্গে নালা নির্মাণের পরিকল্পনাও আছে। এ-সংক্রান্ত একটি প্রকল্প তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।

দুর্যোগপ্রবণ গলাচিপার জন্য ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন জনগুরুত্বপূর্ণ একটা প্রকল্প। শুধু আগুন নেভানো নয়, ঘূর্ণিঝড়ের মতো দুর্যোগ মোকাবিলাতেও এ সংস্থার কর্মীদের ভূমিকা অগ্রণী। মাত্র ৩০০ ফুটের রাস্তা মেরামত না করায় ফায়ার স্টেশন চালু না হওয়া হতাশাজনক। পৌর কর্তৃপক্ষকে দ্রুত রাস্তাটুকু মেরামতের উদ্যোগ নিতে হবে। জনস্বার্থকে যেকোনো বিবেচনায় অগ্রাধিকার দিতে হবে।