স্বাস্থ্যকেন্দ্র ছয় মাস জলাবদ্ধতায়

সম্পাদকীয়

করোনাকালে স্বাস্থ্যব্যবস্থা ভেঙে পড়লেও সাধারণ রোগব্যাধির জন্য মানুষের ভরসা হয়ে ওঠে কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো। শিশু ও অন্তঃসত্ত্বা নারীদের সেবায় এসব স্বাস্থ্যকেন্দ্রের বেশ কিছু সাফল্যও আমরা দেখতে পাই। আগে থেকেই কমিউনিটি ক্লিনিককে গুরুত্ব দিয়ে আসছে সরকার। নানা সুযোগ-সুবিধাও বাড়াচ্ছে। তবে জেলা-উপজেলা বা প্রত্যন্ত অঞ্চলের কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোর কিছু অব্যবস্থাপনা আমাদের নজরে আসে। যার একটি নমুনা হচ্ছে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার খামারপাড়া কমিউনিটি ক্লিনিক। সেখানে বৃষ্টির পানি জমে প্রবেশপথ ও মাঠে ছয় মাস ধরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন রোগীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কিন্তু এ নিয়ে যেন কারও কিছুর করার নেই।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, উপজেলা সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে মারুকা ইউনিয়নের এ কমিউনিটি ক্লিনিকে সেখানকার পাঁচটি গ্রামের লোকজন ছাড়াও চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার তিনটি গ্রামের চার সহস্রাধিক মানুষ নিয়মিত চিকিৎসাসেবা নিতে আসে। কিন্তু টানা ছয় মাস ধরে ক্লিনিকের প্রবেশপথ ও মাঠে পানি জমে রয়েছে। কারণ, ক্লিনিকের দুই পাশে সড়ক ও মাছ চাষের খামার। ফলে বৃষ্টি হলে ক্লিনিকের প্রবেশপথ ও মাঠে পানি জমে যায়। নালা নির্মাণ করলেও পানি সরানো সম্ভব হচ্ছে না। দীর্ঘদিন জমে থাকা পানি থেকে পচা গন্ধ ছড়াচ্ছে। গর্ভবতী ও নবজাতককে নিয়ে আসা মায়েদের বেশি অসুবিধা হচ্ছে। চিকিৎসা নিতে এসে সেই পানিতে পা পড়ায় চুলকানি রোগেও আক্রান্ত হচ্ছেন রোগীরা। স্বাস্থ্যকেন্দ্রটিতে কর্মরত ব্যক্তিরাও ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।

দীর্ঘদিন ধরে এ সমস্যার সমাধান না হওয়ায় কমিউনিটি ক্লিনিকে রোগীর সংখ্যাও কমেছে। আগে দিনে ৫০ জন রোগীর দেখা মিললেও সেটি এখন গড়ে ২০ জনে এসে ঠেকেছে। পরিপূর্ণ অবকাঠামোবিশিষ্ট একটি কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে রোগীরা শুধু জলাবদ্ধতার কারণে। স্থানীয় লোকজন জানাচ্ছেন, সমস্যাটি স্থায়ীভাবে সমাধানের জন্য প্রবেশপথ ও মাঠটি বালু দিয়ে ভরাট করতে হবে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম বলেছেন, সরেজমিনে গিয়ে এ সমস্যার স্থায়ী সমাধান করা হবে। প্রতিবেদন প্রকাশের পর স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি পরিদর্শনও করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তারা। কিন্তু এত দিন কী করলেন তাঁরা। এখন কী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, সেটি আমরা দ্রুত দেখতে চাই। কমিউনিটি ক্লিনিকটির আবারও রোগীবান্ধব পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হোক।