২৫ বছর ধরে ভোগান্তি

সেতু আছে সড়ক নেই, এমন দৃশ্য এ দেশে নতুন কিছু নয়। কয়েক যুগ পার হয়েও মেলে না সড়ক, অবশেষে অকেজো হয়ে পড়ে সেতু, একসময় ভেঙেও পড়ে। ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার শেরপুর ইউনিয়নের চিমনি খালে নির্মিত সেতুটিরও একই অবস্থা। ২৫ বছর আগে সেটি নির্মিত হয় কিন্তু দুই পাশে নেই কোনো সংযোগ সড়ক। কাঠের তক্তা দিয়ে লোকজন প্রায় ৬ ফুট উঁচু সেতুতে ওঠানামা করে। এত দিনে সেতুর অবস্থাও নাজুক হয়ে পড়েছে। দুই পাশের রেলিং কয়েক স্থানে ভেঙে পড়েছে। খসে পড়েছে পার্শ্বদেয়াল। চার গ্রামের ছয় হাজার মানুষের দুঃখ হয়ে আছে সেতুটি।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, সেতুটি দিয়ে লোকজন হেঁটে নান্দাইল সদরে যাতায়াত করে। সেতু দিয়ে পারাপার না হলে স্থানীয় লোকজনের প্রায় তিন কিলোমিটার পথ ঘুরে পৌর সদরে যেতে হয়। এ জন্য সেতুর দুই পাশে খাড়াভাবে কাঠের পাটাতন ফেলা হয়েছে। আর উঠতে গিয়ে কেউ যাতে পড়ে না যায়, সে জন্য আড়াআড়িভাবে বাঁশ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতু দিয়ে কখনো কোনো যানবাহন চলেনি। এখন সেতুটি পুরোনো হয়ে যাওয়ায় অনেক স্থানে ভেঙে গেছে। আর কয়েক দিন পর হয়তো হেঁটেও চলাচল করা যাবে না।

নান্দাইল সদরের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য ১৯৯৭ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উদ্যোগে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। সেতুর ওপারে নান্দাইল পৌরসভার কান্দাপাড়া মহল্লা। ওই মহল্লা থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে পৌর সদর। কিন্তু এ সেতুর সুবিধা কখনো ভোগ করতে পারেননি সেখানকার বাসিন্দারা। সেতুর উত্তর পাশে অনেকের ফসলি জমি রয়েছে। আবার কান্দাপাড়া মহল্লার অনেক বাসিন্দার জমিজমা রয়েছে মেরাকোনা গ্রামে। উভয় পাড়ের লোকজনকে প্রতিটি মৌসুমে উৎপাদিত ফসল আনা-নেওয়া করতে তিন কিলোমিটার পথ ঘুরতে হয়। সংযোগ সড়কসহ সেতু নির্মাণ করলে এ ঝামেলা আর হতো না।

এলাকাবাসীর দাবি, এখানে সড়কসহ নতুন একটি সেতু নির্মাণ করা হলে খুব সহজে নান্দাইল পৌরসভা ও ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কে যাতায়াত করা যাবে। উপজেলার এলজিইডি প্রকৌশলী বলছেন, তিনি সেতুটি পরিদর্শন করে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবেন। কিন্তু এত বছরেও কেন সংযোগ সড়কটি হলো না এর জবাব কে দেবে? মানুষের দুর্ভোগ দূর করতে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিরাই–বা কী করছেন? আমরা দেখতে চাই এলজিইডি সেখানে কী ব্যবস্থা নেয়।