মানুষের ভোগান্তি দ্রুত নিরসন করুন

দেশে একের পর এক সড়কের কাজ চলে। মানুষের জন্যই এ সড়ক উন্নয়ন, আবার প্রকল্প বাস্তবায়নকালে মানুষকে কম ভোগান্তির মধ্যেও পড়তে হয় না। প্রতিটি প্রকল্প বাস্তবায়নের নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকে। এর মধ্যে কাজ শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েই ঠিকাদারেরা প্রকল্পগুলো পান। কিন্তু কাজ পাওয়ার পর প্রকল্প নিয়ে শুরু হয় নানা টালবাহানা। সব ক্ষেত্রে এমনটি না হলেও ঠিকাদারদের এমন আচরণ অনেকটা প্রতিষ্ঠিত বলা যায়। নানা অজুহাতে তঁারা প্রকল্প শেষ করতে চান না। এর ফলে প্রকল্পের ব্যয় ও মেয়াদ দুই–ই বেড়ে যায়। মানুষের ভোগান্তিও শেষ হয় না।

এবার একটি প্রকল্পের উদাহরণ দেওয়া যাক। ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে দেবীগঞ্জ বাজার থেকে দেবীগঞ্জ-ভাউলাগঞ্জ সড়কের ১ দশমিক ৩৮৫ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ১ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ের এ কাজটি পায় মেসার্স রূপালী এন্টারপ্রাইজ। এক বছরের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হয়নি। এখন এ সড়ক হয়ে গেছে স্থানীয় লোকজনের যন্ত্রণার অপর নাম। 

কথা ছিল সড়কটির মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে যোগাযোগব্যবস্থার আরও উন্নতি হবে। মানুষের জীবনযাত্রা আরও সচল ও স্বাচ্ছন্দ্যময় হবে। কিন্তু সেখানে দেখা যাচ্ছে উল্টো চিত্র। সড়কটিতে কাজ করার নামে কয়েক মাস ধরে ইটের খোয়া ফেলে রাখা হয়েছে। খোয়াগুলোও নিম্নমানের হওয়ায় তা গুঁড়া হয়ে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। এতে পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের বারোটা বেজে যাচ্ছে। অনবরত উড়ছে লাল ধুলা। সড়কের দুই পাশের গাছের পাতাগুলোর রং লালচে হয়ে গেছে। বাড়িঘরের ছাদ, টিনের চালা, সীমানাপ্রাচীর আর টিনের বেড়াগুলোতেও বসেছে লালচে ধুলার স্তর। প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বের হতে দেওয়া হয় না শিশুদের। সামনে দিয়ে একটি গাড়ি ছুটে গেলেই লালচে ধুলা থেকে বাঁচতে নাক-মুখ চেপে ধরতে হয় পথচারীদের। সড়কের পাশে থাকা কিছু দোকানের অর্ধেক শাটার খুলে চালানো হচ্ছে দোকান। ঘরের ভেতরে ধুলা যাতে যেতে না পারে, সে জন্য জানালা বন্ধ করে রেখেছেন স্থানীয় লোকজন।

ঠিকাদারের বক্তব্য, অসুস্থতা ও ব্যক্তিগত সমস্যার কারণে সড়কের কাজ শেষ হতে দেরি হচ্ছে। দেবীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী শাহরিয়ার ইসলাম শাকিল প্রথম আলোকে বলেন, সড়কটির কাজ প্রায় ৮০ শতাংশ শেষ হয়েছে। সড়কের বর্তমান পরিস্থিতির জন্য ঠিকাদারকে কারণ দর্শানোর তলব করে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তাঁর চুক্তি বাতিল করার জন্য বারবার নোটিশও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ঠিকাদার ফোন ধরেন না।

ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রশ্ন, সড়কটির কাজ কখন শেষ হবে এবং মানুষের দুর্ভোগ কখন নিরসন হবে?