শূন্য পদে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ দিন

ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলে প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো এখনো সুনাম বজায় রেখেছে। জেলা শহরগুলোতে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এসব প্রতিষ্ঠান অপেক্ষাকৃত শিক্ষার গুণগত মান ধরে রাখছে এবং ধারাবাহিকভাবে ভালো ফল করছে। এর মধ্যে একটি যশোরের কেশবপুরের সরকারি পাইলট উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়। স্থানীয়ভাবে নামকরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মাত্র পাঁচ বছর আগে সরকারীকরণ করা হয়েছে, কিন্তু এরপরও সরকারি সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত থেকে গেছে। ফলে শিক্ষক ও শ্রেণিকক্ষ-সংকটে ভুগতে হচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীদের।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, ১৯৪২ সালে প্রতিষ্ঠার সময় থেকে এই বিদ্যালয়ের পাঠদান ও ভালো ফল নিয়ে এখন পর্যন্ত সুনাম আছে। এসএসসি পরীক্ষায় শতভাগ পাসের সাফল্য আছে এই প্রতিষ্ঠানের। সেই সঙ্গে উপজেলায় সবচেয়ে বেশিসংখ্যক শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেয়ে আসছে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে। কিন্তু দুঃখজনক হচ্ছে, একই সময়ে বা তারও অনেক পরে প্রতিষ্ঠিত অনেক বিদ্যালয় অনেক আগে সরকারীকরণ হলেও কেশবপুর পাইলট বিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে প্রতিষ্ঠানটিকে সরকারীকরণ করা হয়। এখন এই বিদ্যালয় পূর্ণাঙ্গ সরকারি হলেও সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে তেমন কোনো সুবিধা পাচ্ছে না।

শিক্ষার্থী অনুপাতে মাধ্যমিক স্তরে ২৫ জন শিক্ষক থাকা দরকার, সেখানে আছেন ১৪ জন। ১১ জন শিক্ষকের সংকট রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কলেজ শাখার শিক্ষকদের দিয়ে মাধ্যমিকের ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। এতে কলেজ শাখার ২১ জন শিক্ষকের ওপর ক্লাস নেওয়ার বাড়তি চাপ তৈরি হচ্ছে। কোনো কোনো শিক্ষকের প্রতি সপ্তাহে অতিরিক্ত ছয়টি ক্লাস নিতে হয়। পুরোনো ভবনের ছাদের পলেস্তারা ভেঙে পড়ছে। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সেসব শ্রেণিকক্ষে ক্লাস নেওয়া হয় না। ফলে তৈরি হয়েছে শ্রেণিকক্ষ-সংকটও। 

বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ আসাদুজ্জামান বলেন, ২০১৮ সালে সরকারীকরণের পর থেকে আর কোনো শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। শিক্ষক–সংকটের বিষয়ে শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি শ্রেণিকক্ষ-সংকট রয়েছে। পুরোনো ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হবে। ছয়তলা একটি ভবন হলে ভালো হয়। উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তার বক্তব্য, সরকারি স্কুলের শিক্ষক–সংকটের বিষয়টি বিভাগীয় কার্যালয় থেকে দেখা হয়। তারপরও পাইলট উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক–সংকটের বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে তাঁরা চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন। তার মানে বিদ্যালয়টির এই দুরবস্থার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জানা আছে। আমরা আশা করব, এই প্রতিষ্ঠানের সংকটগুলো দূর করতে কর্তৃপক্ষ আন্তরিক হবে।