সরাইলে জনবলসংকট মেটান

সম্পাদকীয়

দেশে মহাসড়কে শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব হাইওয়ে পুলিশের। পুলিশের এ বিভাগের সদিচ্ছায় কমে যেতে পারে সড়ক দুর্ঘটনা। যদিও সড়ক দুর্ঘটনার জন্য যেসব কারণকে দায়ী করা হয়, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সড়কে পুলিশের চাঁদাবাজি। এই অভিযোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি হাইওয়ে থানার দুজন কর্মকর্তাকে সেখান থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এমন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা অবশ্যই কাম্য। কিন্তু এর পর থেকে শূন্য হওয়া পদ দুটি খালি হয়ে আছে। এ ছাড়া থানাটিতে আরও জনবলসংকট রয়েছে। ফলে থানাটির কার্যক্রম চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। এতে সেখানকার মহাসড়কেও নিরাপত্তার ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, ঢাকা-সিলেট ও কুমিল্লা-সিলেট দুই মহাসড়কের দীর্ঘ ৭৬ কিলোমিটার পথ গেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ওপর দিয়ে। এর মধ্যে আশুগঞ্জ টোল প্লাজা থেকে বিজয়নগর-মাধবপুর সেতু পর্যন্ত ৩৪ কিলোমিটার ঢাকা-সিলেট আর সরাইল বিশ্বরোড মোড় থেকে কুমিল্লার কালামোড়া সেতু পর্যন্ত ৪২ কিলোমিটার কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের অংশ। এই দীর্ঘ মহাসড়কের নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে আছে সরাইল খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানা-পুলিশ। থানাটি হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত।

হাইওয়ে পুলিশের দায়িত্ব হলো, মহাসড়কে সড়ক আইনের প্রয়োগ, যানবাহন নিয়ন্ত্রণ, অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, যাত্রীদের জানমালের নিরাপত্তা প্রদান ইত্যাদি। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের (ভিআইপি) প্রতি বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করাও হাইওয়ে পুলিশের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। এখন এর জন্য যত লোকবল থাকা দরকার, তার যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে সরাইল খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানায়। 

গত ৭ মার্চ পণ্যবাহী যানবাহন থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (পরিদর্শক) ও সহকারী উপপরিদর্শককে প্রত্যাহার করা হয়েছে। এ ছাড়া দীর্ঘদিন ধরে একজন সার্জেন্ট, তিনজন এএসআই ও নয়জন কনস্টেবলের পদ শূন্য রয়েছে। লোক নেই কম্পিউটার অপারেটর ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদেও। রয়েছেন প্রয়োজনীয় মোটরযান-সংকট। এভাবে একটি থানার কার্যক্রম কীভাবে চালানো সম্ভব? 

থানাটিতে কর্মরতরা বলছেন, জনবলসংকটের কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তবে সংকটের মধ্যেও তাঁরা সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তবে জনবল ও মোটরযান সংকটের কারণে মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করা যাচ্ছে না। আর তিন চাকার যান মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনার জন্য উল্লেখযোগ্য একটা কারণ, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

হাইওয়ে পুলিশের কুমিল্লা অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) বলেন, দেশের অনেক থানাতেই যানবাহনের সংকট আছে। এগুলো পর্যায়ক্রমে পূরণ করা হবে। এ ছাড়া কয়েক দিনের মধ্যে এখানে একজন ওসিকে পদায়ন করা হবে।

হাইওয়ে থানাটিতে জনবলের ঘাটতিও দ্রুত পূরণ করা হোক। মহাসড়কের যান ও যাত্রীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এ থানাকে সবল করা হবে—এটিই কাম্য।