নিরাপত্তা নিশ্চিত করে টি ওয়ার্কশপ খুলে দিন

সম্পাদকীয়

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টি টেকনোলজি (এফইটি) বিভাগের ‘টি ওয়ার্কশপ’ তৈরির আড়াই বছর পরও তা পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। প্রথম আলোর প্রতিবেদন বলছে, টি ওয়ার্কশপটির অবস্থান একাডেমিক ভবন থেকে বেশ দূরে। নিরাপত্তার অভাব থাকায় ওখানে কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। ওয়ার্কশপটি নির্মাণে প্রায় ৪৪ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।

শাবিপ্রবির ওয়েবসাইট ও বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগটি গুরুত্বপূর্ণ। দেশের কৃষিভিত্তিক শিল্প প্রতিষ্ঠায় এই বিভাগের শিক্ষার্থীরা কাজ করছেন। বিভাগের পাঠ্যসূচি যুগের চাহিদা অনুযায়ী পরিবর্তন করা হচ্ছে। তবে এখানকার এক্সপেরিমেন্টাল টি ফিল্ডটি ছোট। ওয়েবসাইটে থাকা বেশ কিছু ছবিতে গাদাগাদি করে শিক্ষার্থীদের গবেষণাগারে কাজ করতে দেখা যাচ্ছে।

ছাত্রছাত্রীরা জানিয়েছেন, এখন যে টি ওয়ার্কশপে তাঁরা হাতে-কলমে কাজ করছেন, সেটা খুবই অপরিসর। কাজে অসুবিধা হচ্ছিল বলেই নতুন করে টি ওয়ার্কশপ তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু তথৈবচ।

কারণ, ওখানে তাঁরা কাজ শুরু করতে পারেননি। এই ওয়ার্কশপে তাঁদের চা প্রক্রিয়াজাতকরণ শেখার কথা ছিল। প্রথম আলোকে বিভাগীয় প্রধান বলেছেন, সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাঁকে তাই জানিয়েছিল। এখন পর্যন্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়নি। দামি যন্ত্রপাতি চুরির আশঙ্কা আছে। তাই ওয়ার্কশপটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। প্রথম আলো জানাচ্ছে, বাইরে থেকে ওয়ার্কশপের গ্রিল কেটে লোকজন ঢোকে, ওখানে নেশার আড্ডাও বসে।

এখানে প্রশ্ন হলো তিনটি। এক. ছাত্রছাত্রীরা তাহলে হাতে–কলমে কাজ শিখতে গিয়ে আগের মতোই সমস্যায় পড়ছেন এবং তাতে কি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কিছু যায়–আসে? দুই. নিরাপত্তার এত সংকট থাকলে কেন একাডেমিক ভবন থেকে এত দূরের একটি জায়গা বেছে নেওয়া হলো? তিন. এই ওয়ার্কশপের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কি এত কঠিন?

প্রতিবেদনে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের যাঁদের উদ্ধৃতি আছে, তাঁদের জবাব জানি না, দেখব-দেখছির মধ্যে সীমাবদ্ধ। কিন্তু এই যে ছাত্রছাত্রীরা অপরিসর গবেষণাগারে ঠিকভাবে কাজ শিখতে পারছেন না, তার দায় কে নেবে? যাঁরা এই জায়গা বেছে নিয়েছিলেন, তাঁদের হাতে কি আর কোনো বিকল্প ছিল না? প্রযুক্তির এই যুগে অন্য দেশে বসে নিজের বাসায় কী ঘটছে, তা সিসি ক্যামেরা দিয়ে দেখা যায়। শাবিপ্রবির প্রশাসনিক ভবন থেকে কেন ওয়ার্কশপের ওপর নজর রাখা যায় না?

এসব প্রশ্নের জবাব কি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দেবে? নিজেদের ওয়েবসাইটে শাবিপ্রবি দাবি করেছে, খামার থেকে টেবিল পর্যন্ত খাদ্য-পানীয় পৌঁছে দিতে গবেষণা পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে ফুড ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টি টেকনোলজি বিভাগ কাজ করছে।বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বলব, বিভাগটিকে তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণে এগিয়ে যেতে উদ্যোগ নিন।অবিলম্বে ওয়ার্কশপটি চালু করুন।