রংপুরে থানা-পুলিশ কী করছে

সড়কে সাধারণ মানুষের যাতায়াতে নিরাপত্তাহীনতার বড় একটি কারণ হচ্ছে ছিনতাই। ছিনতাইকারীদের হাতে হতাহত হওয়ার ঘটনাও নতুন কিছু নয় এ দেশে। তবে রংপুর শহরের একটি সড়কে যেভাবে ধারাবাহিক ছিনতাইয়ের শিকার হচ্ছে মানুষ, তা কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য নয়। একটি এলাকায় বা সড়কে একের পর এক ছিনতাইয়ের ঘটনা যখন ঘটতে থাকে, তখন কিছু প্রশ্ন তৈরি হয়। স্থানীয় থানা-পুলিশ কি সেখানে ব্যর্থ? ছিনতাইকারীরা কি পুলিশের চেয়েও শক্তিশালী? ছিনতাইকারীদের সঙ্গে কি পুলিশের সখ্য আছে? রংপুরের সড়কটি কেন এত নিরাপত্তাহীন, তা আমরা জানতে চাই। 

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, রংপুর শহরের লালবাগ থেকে মডার্ন মোড় এলাকা পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটারের সড়কটি যেন ছিনতাইকারীদের জন্য স্বর্গ হয়ে উঠেছে। এই সড়কে অপহরণ করে ছিনতাই, ছুরিকাঘাত করে আহত ও নিহত করার ঘটনা কোনো কিছুই বাদ থাকছে না। স্থানীয় ব্যক্তিরা বলছেন, ওই এক কিলোমিটারে গত এক মাসে ১৫টি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। হতাশাজনক হচ্ছে, পুলিশের অভিযানে অপরাধীরা গ্রেপ্তার হলেও সড়কটিতে ছিনতাই বন্ধ হয়নি। 

সড়কের কিছু স্থান নির্জন এলাকায় পড়েছে। দুই পাশে খালি জায়গা ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কার্যালয় এবং স্কুল-কলেজ। কিছু এলাকায় অল্প বাসাবাড়ি ও শিক্ষার্থীদের আবাসিক মেস থাকলেও প্রধান সড়ক থেকে কিছুটা দূরে। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও কারমাইকেল কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের এই সড়ক দিয়েই চলাচল করতে হয়। ফলে এ দুই বড় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। কারণ, তাঁরাই বেশি ছিনতাই, ছুরিকাঘাত ও অপহরণের শিকার হচ্ছেন সেখানে। 

তবে স্থানীয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) দাবি, তিনি সেখানে যোগদানের আড়াই মাসে সড়কটিতে মাত্র একটি ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। তার মানে সড়কটিতে ছিনতাইয়ের ঘটনা সম্পর্কে তিনি জানেন না বা জানলেও স্বীকার করছেন না। এটি সত্য যে ভুক্তভোগীরা ঝামেলা এড়াতে থানায় অভিযোগ করেন না। তবে সড়কটিতে ছিনতাইয়ের বিষয়টি স্থানীয়ভাবে বেশ আলোচিত। ফলে অভিযোগ না পেলেও পুলিশের সেখানে করণীয় থাকবে না, তা কোনোভাবে যুক্তিসংগত হতে পারে না।

রংপুর মহানগর পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বক্তব্য, ‘এ মাসের শুরুতে শিক্ষার্থী অপহরণ ও ছিনতাইয়ের একটি ঘটনায় ছিনতাইকারীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এখন আরও গুরুত্বসহকারে ওই সড়কসহ রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও কারমাইকেল কলেজের আশপাশ এলাকায় পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে। আমরা তাঁর বক্তব্যে আস্থা রাখতে চাই। নতুন করে সেখানে ছিনতাইয়ের কোনো ঘটনা ঘটবে না, সেটিই আমরা আশা করছি।’