রোয়াংছড়িতে মানুষের দুর্ভোগ দূর করুন 

সম্পাদকীয়

পার্বত্য জেলাগুলোতে অনেক সড়ক উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু সে তুলনায় নাগরিকদের স্বাস্থ্য ও শিক্ষাসুবিধা বাড়েনি বললেই চলে। তা ছাড়া সড়ক যোগাযোগের এ উন্নয়নে তাঁরা কতটা সুফল পাচ্ছেন, তা নিয়েও আছে আলোচনা। প্রত্যন্ত পাহাড়ি এলাকাগুলোতে যোগাযোগব্যবস্থা খুবই সঙিন। প্রত্যন্ত অঞ্চলে, বিশেষ করে পাহাড়ি অঞ্চলে সড়ক যোগাযোগের জন্য একটি সেতু কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা খুব ভালোভাবে বোঝা যায় বান্দরবানের রোয়াংছড়ি উপজেলার একটি সেতুর দশার দিকে তাকালে। সেতুটির এক পাশ ধসে পড়েছে খালে।

উপজেলার মুরুক্ষ্যংমুখপাড়া-সোনাইসেপ্রুপাড়া সড়কের নোয়াপতং খালের ওপর নির্মিত সেতুটি ধসে পড়ে চার বছর আগে। এরপর নতুন সেতু নির্মিত না হওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে ধসে পড়া সেতু দিয়েই স্থানীয় বাসিন্দাদের চলাচল করতে হচ্ছে। ঝুঁকি নিয়ে স্কুলের শিশুদের সেই সেতু পার হতে হচ্ছে।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, ২০১২-১৩ অর্থবছরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সেতুটি নির্মাণ করে। ২০২০ সালে পাহাড়ি ঢলে সেতুটির এক পাশ ধসে পড়ে। পাঁচটি পাহাড়ি পাড়ার কয়েক হাজার মানুষ সেতুটি দিয়ে চলাচল করে। এসব পাড়া হলো গুংক্ষ্যংপাড়া, সোনাপাড়া, সোনাইসেপ্রুপাড়া, সাফোসেপাড়া ও ভুটাংপাড়া।

এখন সেতু ধসে পড়ায় সবচেয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সোনাইসেপ্রুপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। বর্ষাকালে বিভিন্ন সময় পাহাড়ি ঢল ধসে পড়া সেতুর ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এ সময় সেতুর দুই পাশে রশি বেঁধে শিশুদের পার করতে হয়। দেশের একটি উপজেলায় একটি সরকারি বিদ্যালয়ে শিশুরা এভাবে ক্লাস করতে যায়, তা কোনোভাবেই ভাবা যায় না। বৃষ্টি হলেই শিশুদের পারাপার কীভাবে করবেন, তা নিয়ে অভিভাবকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে।

ধসে পড়া সেতুটি অসংখ্যবার সরকারি কর্মকর্তারা পরিদর্শন করে গেছেন। কিন্তু নতুন সেতু চার বছরেও নির্মাণ করা হয়নি। নোয়াপতং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান চ নু মং মারমা বলছেন, মুরুক্ষ্যংমুখপাড়া সেতু জরুরি ভিত্তিতে নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। সেতুটি নির্মাণের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরকে (এলজিইডি) সুপারিশ করেছেন তিনি।

এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী জিয়াউল ইসলাম মজুমদার বলেন, মুরুক্ষ্যংমুখপাড়া সেতু নির্মাণের জন্য প্রকল্পের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পের অনুমোদন হলেই কাজ শুরু করা হবে।

আমরা আশা করব, সেতুটি নির্মাণের জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। পাহাড়ি পাঁচটি পাড়ার শিশুরা নিরাপদে স্কুলে যাক, সেটিই কাম্য।