দ্রুত নির্মাণ করে ভোগান্তি দূর করুন 

বিশ্বের বড় শহরগুলোতে পদচারী-সেতুর ধারণাটি এখন সেকেলে হয়ে গেছে। সড়ক ব্যবস্থাপনা আধুনিক ও উন্নত হওয়ার কারণে সেখানে রাস্তা পারাপারের জন্য এমন সেতুর প্রয়োজনীয়তাও ফুরিয়েছে বলা যায়। আবার যেসব জায়গায় আছে, সেখানে অসুস্থ, বয়স্ক, প্রতিবন্ধী সব ধরনের মানুষ যাতে সেটি ব্যবহার করতে পারে, সে সুযোগ রাখা হয়েছে। সে তুলনায় অনেক পিছিয়েই আছে বলা যায় রাজধানী ঢাকা। এখানে সড়কে অনেক বড় বড় প্রকল্প হলেও পদচারী-সেতু অপরিহার্য হয়ে আছে, তা-ও সব ধরনের মানুষের পারাপারের সুযোগ এখানে নেই। মিরপুর সড়কে শ্যামলী মোড়ের দৃশ্যপট বিবেচনা করলেই সেটি আরও বাস্তবিক হয়ে ওঠে। দুঃখজনক হচ্ছে, সেখানে একটি পদচারী-সেতু ছিল, কিন্তু পুরোনো ও ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সেটি ভেঙে ফেলা হয়।

নতুন সেতু নির্মাণে ভিত্তি স্থাপন করার পরও থমকে আছে সেটির কাজ। এতে মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে। চরম ঝুঁকি নিয়ে সড়ক পার হতে হচ্ছে তাঁদের।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, আট মাস আগে শ্যামলী মোড়ের এ পদচারী-সেতুটি ভেঙে ফেলা হয়। এর মধ্যে নতুন সেতু নির্মাণকাজের মেয়াদকালও শেষ হয়ে গেলে আরও দুই মাস সময় বাড়ানো হয়েছে। রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ততম সড়কটির এ মোড়ের দুই পাশে আছে আবাসিক এলাকা, হাসপাতাল ও বিপুলসংখ্যক বাণিজ্যিক ভবন। সড়কটি চলাচলকারী সব গণপরিবহনই এ মোড়ে দুই পাশে এসে থামে এবং মোহাম্মদপুর-আদাবর থেকে রিংরোড হয়ে গণপরিবহনগুলো শ্যামলী মোড়ে আসে।

প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী এখানে যানবাহনে ওঠানামা করে। ফলে রাস্তা পারাপারের জন্য পদচারী-সেতুটি এখানে অপরিহার্য হয়ে গেছে।

সেতুটি না থাকায় মানুষ ঝুঁকি নিয়ে সরাসরি সড়ক পার হচ্ছেন। সেখানেও বেধেছে বিপত্তি। গত সপ্তাহে সড়ক বিভাজকের মাঝখানে কংক্রিটের ঢালাই দেওয়া হয়। রাস্তা পার হতে গিয়ে নির্মাণাধীন সড়ক বিভাজকের রডে আঘাত পেয়ে অনেকে আহত হন। এরপরও সড়ক বিভাজক টপকে রাস্তা পার হওয়া ছাড়া উপায় নেই লোকজনের।

একপর্যায়ে সড়ক বিভাজকের মাঝখানে কংক্রিটের ঢালাই ভেঙে ফেলতে হয়। কথা হচ্ছে বছর পার হয়ে গেলেও একটি পদচারী-সেতু নির্মাণ করা গেল না? 

ট্রাফিক পুলিশ কর্তৃপক্ষ বলছে, উত্তর সিটি করপোরেশনকে (ডিএনসিসি) দুই দফা চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এত দিনেও সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। অন্যদিকে ডিএনসিসি বলছে, পরিষেবা লাইন সরানোর জন্য কাজে দেরি হচ্ছে। তবে দ্রুত কাজ শেষ করা হবে। আগামী জুলাইয়ের মাঝামাঝি সময়ে পথচারীরা সেতুটি ব্যবহার করতে পারবেন। 

আমরা ডিএনসিসির প্রতি আস্থা রাখতে চাই। আর বর্ধিত মেয়াদের মধ্যেই সেতুটির নির্মাণকাজ শেষ হবে এবং সব ধরনের মানুষের পারাপারের সুযোগ সেখানে রাখা হবে।