দুর্ঘটনা ঘটার আগেই ব্যবস্থা নিন

আমাদের নদ-নদী ও খালে নিত্যনতুন সেতু হচ্ছে, আছে পুরোনো সেতুও। নদী-খালের প্রস্থের সঙ্গে মিলিয়ে সেতুর দৈর্ঘ্য নিয়ে অনেক সময় সমালোচনা দেখা যায়। সেসব সেতু নদী ও খালকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়। নদী ও খালের সর্বনাশ করা আরেকটি কাজ হচ্ছে অবাধে বালু তোলা। বালু তোলার কারণে সেতুরও ক্ষতি হয়।

তেমন দৃশ্যই দেখা যাচ্ছে চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার একটি সেতুর ক্ষেত্রে। তবে সেখানে আরও বড় আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে, সেতুটির মাঝবরাবর বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। ফলে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা করা হচ্ছে।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, লোহাগাড়া উপজেলার চরম্বা ইউনিয়নের মাঝখান দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে জামছড়ি খাল। খালটির ওপর ২০০১ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) নির্মাণ করে ৩০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৮ ফুট প্রস্থের একটি সেতু। দীর্ঘদিনের রক্ষণাবেক্ষণের অবহেলায় জামছড়ি সেতুর মাঝবরাবর বড় ফাটল দেখা দিয়েছে। দুই পাশের রেলিংয়ের কিছু অংশও ভেঙে গেছে। প্রতিদিন তিন শতাধিক যানবাহন চলাচল করে সেতুটির ওপর দিয়ে। 

ঝুঁকিপূর্ণ এ সেতু দিয়েই উপজেলা সদরে চলাচল করেন চরম্বা ইউনিয়নের আতিয়ারপাড়া, বায়ারপাড়া, পদ্মশিখিলের মানুষ। শুধু তা-ই নয়, বান্দরবানের অন্তত ৩০ হাজার মানুষকেও লোহাগাড়া উপজেলা সদরে যাওয়া-আসা করতে হয় এ সেতু দিয়ে। জামছড়ি সেতু পার হয়ে দুটি উচ্চবিদ্যালয়, দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দুটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করতে হয়। ফলে সেতুটির ফাটল নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন এ অঞ্চলের মানুষ। যেকোনো সময় সেতুটি ভেঙে যানবাহন ৫০ ফুট নিচের খালে পড়ে বড় ধরনের প্রাণহানির আশঙ্কা করছেন তাঁরা। 

জানা যাচ্ছে, দীর্ঘকাল ধরে জামছড়ি খাল থেকে বালু তোলার কারণে খালটির নিচের অংশ গভীর হয়ে গেছে। পানির স্রোতে সেতুর মাঝখানের পিলার থেকে মাটি সরে গিয়ে ভিত্তি দুর্বল হয়ে গেছে। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও প্রতিদিন সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। সেতু ছাড়া সদর উপজেলায় যেতে অন্তত তিন কিলোমিটার ঘুরে যেতে হয়। ফলে একরকম বাধ্য হয়েই ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে চলাচল করছেন এলাকাবাসী। দীর্ঘদিন ধরে সেতুটির সংস্কারে দাবি জানিয়ে আসছেন তাঁরা। 

এ বিষয়ে লোহাগাড়া উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী বলেন, সেতুটি সংস্কার করতে অন্তত তিন কোটি টাকা বরাদ্দের প্রয়োজন। বর্তমানে তঁাদের হাতে প্রকল্প নেই। প্রকল্প পেলেই সেতুটির সংস্কারকাজে হাত দেওয়া হবে।

কোনো দুর্ঘটনার আগে সেতুটি সংস্কারে উদ্যোগ নেওয়া হোক। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।