দুর্ঘটনা ঘটার আগেই ব্যবস্থা নিন

সম্পাদকীয়

কোনো সন্দেহ নেই, দেশের সড়ক যোগাযোগব্যবস্থায় যথেষ্ট উন্নয়ন করেছে সরকার। আবার কিলোমিটারপ্রতি সড়ক নির্মাণের ব্যয় নিয়েও সমালোচনা আছে। প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানোর চক্র থেকে আমরা কি কখনো বের হতে পারব না? এসব কারণে অনেক সময় যাচ্ছেতাইভাবে প্রকল্প শেষ হয়। যেমনটি আমরা দেখতে পাচ্ছি গাইবান্ধা শহরের একটি সড়ক প্রকল্পের ক্ষেত্রে। সেখানে মেয়াদ বাড়িয়েও কিছু কাজ অসমাপ্ত রেখেই নির্মাণকাজ শেষ করা হয়েছে। সড়ক সম্প্রসারণ করা হলেও কয়েক বছরেও সরানো হয়নি বিদ্যুতের খুঁটিও। ফলে সড়কটিতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি থেকে গেছে।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, গাইবান্ধা শহরের পূর্ব দিকে বড় মসজিদ থেকে পশ্চিমে পুলিশ সুপার কার্যালয় পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার পর্যন্ত সড়কটি চার লেন করা হয়। ২০১৮ সালের নভেম্বরে ১১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে এ সড়কের নির্মাণকাজ শুরু হয়। ঢাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমএম বিল্ডার্স ২০২১ সালের জুনে নির্মাণকাজ শেষ করার কথা থাকলেও এক বছর বাড়তি সময় লাগায়। তা-ও কিছু কাজ অসমাপ্ত রেখে যায় তারা। যদিও সড়ক ও জনপথ (সওজ) ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

এখন সড়ক প্রশস্ত করার কারণে দুই পাশের বিদ্যুতের খুঁটি সরানোর প্রয়োজন হয়। ১৫-২০টি খুঁটি সরানোর জন্য বিদ্যুৎ বিভাগকে ৮৩ লাখ টাকা পরিশোধ করে সওজ। কাজ শেষ হওয়ার দুই বছর পেরিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সড়ক থেকে এখনো ১৫-২০টি খুঁটি সরানো হয়নি। সওজ কর্তৃপক্ষ বলছে, সড়ক থেকে বৈদ্যুতিক খুঁটি সরানোর জন্য বিদ্যুৎ বিভাগকে বারবার তাগাদা দেওয়া হচ্ছে, কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না। অন্যদিকে বিদ্যুৎ বিভাগের যুক্তি হচ্ছে সড়কে অনেক স্থাপনা থেকে গেছে, সেগুলোর অপসারণ না করার কারণে নতুন করে খুঁটি বসানো যাচ্ছে না।

শহরের রেলগেট থেকে পশ্চিম অংশে ফায়ার সার্ভিস, কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল, জেলা ও দায়রা জজ আদালত, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার কার্যালয়ের মতো কার্যালয় রয়েছে। এমন ব্যস্ততম এলাকায় রাস্তা সম্প্রসারণ করে কী লাভ হলো? খুঁটি না সরানোর কারণে চার লেনের সুফল পাওয়া যাচ্ছে না, যানজট লেগেই থাকে। দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে মানুষকে চলাচল করতে হয়। ঝুঁকি নিয়েও গাড়ি চালাতে হয় চালকদের। এখন স্থাপনাগুলো কেন সরানো হচ্ছে না, সেটিই হলো প্রশ্ন। অর্থ পরিশোধ করার পরও কেন এত বছর লাগবে? জেলা প্রশাসন, সওজ ও বিদ্যুৎ বিভাগ মিলে এ সমস্যার দ্রুত সমাধান করা হোক।