সাতক্ষীরা পৌরসভা করছে কী

সম্পাদকীয়

দেশের জেলা-উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত উন্নত নাগরিক সুবিধা পৌঁছে দিতে একের পর এক গড়ে তোলা হয়েছে পৌরসভা। স্থানীয় সরকারের এই প্রশাসনিক এলাকার সংখ্যা এখন ৩৩০। পৌর এলাকার সড়ক উন্নয়ন, পানি সরবরাহ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ নানা উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত পৌর কর্তৃপক্ষ।

এসব সুযোগ-সুবিধা পেতে পৌরসভার নাগরিকদের থেকে আদায় করা হয় পৌর করও। দুঃখজনক হলেও সত্য যে অনেক পৌরসভায় নাগরিক সুবিধার যথেষ্ট ঘাটতি আছে। যেমনটি আমরা দেখতে পাচ্ছি সাতক্ষীরা পৌরসভার ক্ষেত্রে। সেখানকার সড়কগুলো নিয়ে সংসদ সদস্যসহ স্থানীয় সুধী সমাজ ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, সাতক্ষীরা পৌরসভার গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক হচ্ছে পোস্ট অফিস মোড় থেকে সরকারি কলেজ পর্যন্ত শহীদ রীমু সরণিটি (কলেজ সড়ক)। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, ইজিবাইক, মাহিন্দ্রাসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে।

এ সড়কের দুই পাশে সাতক্ষীরা জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স, জেলা পোস্ট অফিস, জেলা জজের সরকারি বাসভবন, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার জেলা অফিস, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অফিস, জেলা সমবায় অফিস, জেলা টেলিফোন অ্যান্ড টেলিগ্রাম অফিস, উপজেলা সমাজসেবা অফিস ও একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। ফলে দিন-রাত এ সড়ক দিয়ে অসংখ্য মানুষ চলাচল করেন। কিন্তু এ সড়ক এমন বেহাল, সেটি দিয়ে চলাচল করতে গিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আমানউল্লাহ আল হাদী বলেন, সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বর্তমানে ১৭ হাজার। কলেজটি শহীদ রীমু সরণির পাশেই অবস্থিত। প্রতিদিন হাজার হাজার শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ চলাচল করে ঝুঁকি নিয়ে। প্রায় সড়ক দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থীরা আহত হয়। তারপরও এ সড়ক চলাচলের উপযোগী করেনি পৌর কর্তৃপক্ষ।

রাস্তাটি সংস্কারের জন্য বিভিন্ন সময় সাতক্ষীরার নাগরিক সমাজ আন্দোলন-সংগ্রাম করলেও কোনো লাভ হয়নি। সম্প্রতি এ সড়ক নিয়ে জাতীয় সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আশরাফুজ্জামান। গত রোববার সংসদে সড়কটির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, অবস্থা এতটাই খারাপ যে কোনো অন্তঃসত্ত্বা নারী ওই রাস্তায় চলাচল করলে পথেই ‘ডেলিভারি’ (সন্তান প্রসব) হয়ে যাবে।

সাতক্ষীরা পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, সড়ক নির্মাণের জন্য দরপত্রপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী মাসে এ সড়কসহ আরও ১০টি সড়কের দরপত্রের কাজ করা হবে। আমরা তাদের কথায় আশ্বস্ত হতে চাই। একটি জেলা শহরের সরকারি সব গুরুত্বপূর্ণ কার্যালয়ে যাতায়াতের সড়ক দিনের পর দিন এভাবে সংস্কারহীন অবস্থায় পড়ে থাকতে পারে না।