দেশের সড়ক যোগাযোগব্যবস্থার প্রভূত উন্নয়ন হয়েছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত নতুন নতুন সড়ক হয়েছে, সংস্কার করা হয়েছে অনেক সড়কও। অনেক সময় এসব সড়কের কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সড়ক নির্মাণের ক্ষেত্রে আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে, কাজে ধীরগতি। কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলায় একটি সড়ক নির্মাণকাজের ক্ষেত্রে তেমনটি দেখা যাচ্ছে। চার বছরের বেশি সময় আগে রাস্তাটির কাজ শুরু করা হলেও এখনো শেষ হয়নি। একটি সড়কের নির্মাণকাজ এত দিনেও শেষ না হওয়াটা খুবই দুঃখজনক।
করিমগঞ্জ-চামড়া আঞ্চলিক মহাসড়কটি কয়েকটি উপজেলার মধ্যে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ, বানিয়াচং, নেত্রকোনার খালিয়াজুরী, সুনামগঞ্জের শাল্লা, দিরাই, শামারচর ও কিশোরগঞ্জের ইটনা, মিঠামইনের মানুষজন এ সড়ক দিয়ে চলাচল করেন। এ ছাড়া হাওরাঞ্চলসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে চামড়া বন্দর হয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিপুল পরিমাণ ধান, কয়লা, পাথর, বালু আনা-নেওয়া হয়। কিন্তু সড়কের নির্মাণকাজ ফেলে রাখায় সেখানে চরম ভোগান্তি তৈরি হয়েছে।
প্রায় চার বছর আগে ২০২০ সালে কিশোরগঞ্জ শহরের একরামপুর থেকে করিমগঞ্জের চামড়া বন্দর পর্যন্ত সাড়ে ১৯ কিলোমিটার সড়কের পুনর্নির্মাণের কাজ শুরু হয়। দীর্ঘদিন ধরে সড়কটির কাজ শুরু হলেও এখনো শেষ হয়নি। এর মধ্যে চামড়া বন্দর এলাকায় প্রায় এক কিলোমিটার সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ। এতে প্রায়ই তীব্র যানজটের পাশাপাশি অনেক সময় ট্রাকসহ বিভিন্ন গাড়ি উল্টে দুর্ঘটনাও ঘটে। বছরখানেক আগে ট্রাক উল্টে গিয়ে এক চালক মারা যান। এ সড়ক দিয়ে রোগী নিয়ে সময়মতো হাসপাতালেও যাওয়া যায় না।
সড়কটির নির্মাণকাজ দ্রুত শেষ করার দাবিতে গত বৃহস্পতিবার মানববন্ধন করেন এলাকাবাসী। সেখানে চামড়া বন্দরের ব্যবসায়ী ও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। সড়কের নির্মাণকাজে বিলম্ব নিয়ে তাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। দ্রুত সড়ক নির্মাণকাজ শেষ করা এবং সড়কের বেহাল অংশের সংস্কারের দাবি জানান তাঁরা।
এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ সড়ক উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. মাইদুল ইসলাম বলেন, সড়কটি সংস্কারের জন্য জমি অধিগ্রহণসহ প্রায় ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। ২০২০ সালের মার্চ মাসে কাজ শুরুর পর কয়েকবার সময় বাড়ানো হয়েছে। তবে জমি অধিগ্রহণের ভূমি এখনো সম্পূর্ণরূপে
বুঝে না পাওয়ায় কাজে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। তবে দ্রুত কাজটি শেষ করার আশ্বাস দেন তিনি।
আমরা আশা করব, সব ধরনের জটিলতা দূর করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আন্তরিক হবে। দ্রুত সড়কের কাজ শেষ করে মানুষকে দুর্ভোগ থেকে রেহাই দিতে তারা সচেষ্ট হবে।