এই স্টেডিয়াম লইয়া খেলোয়াড়েরা কী করিবে

মাগুরার শেখ কামাল ইনডোর স্টেডিয়ামটি তৈরি হয়েছিল ২০১৭ সালে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের অর্থায়নে তৈরি এই স্টেডিয়ামের উদ্দেশ্য ছিল মাগুরার ইনডোর গেমের মান উন্নয়ন ও খেলোয়াড়দের শারীরিক সক্ষমতা বৃদ্ধি। প্রথম আলোর খবর বলছে, এই স্টেডিয়ামে খেলোয়াড়েরা ঢুকতে পারেন না। গত সাত বছরে এখানে একটি টেনিস ও দুটি দাবা টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়েছে। মূলত স্টেডিয়ামটি রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ ও সামাজিক অনুষ্ঠানের ভেন্যু হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। 

প্রথম আলোর কাছে এক বাস্কেটবল খেলোয়াড় দুঃখ করে বলেছেন, পাশের জেলা খুলনায় একটি টুর্নামেন্টের আগে খেলোয়াড়েরা স্টেডিয়ামে অনুশীলনের আবেদন করেছিলেন। অনুমতি পাননি। একজন ক্রীড়া সংগঠক বলেছেন, ফুটবল-ক্রিকেটের পর তাঁদের জেলায় ব্যাডমিন্টন সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা। অথচ তাঁরা স্টেডিয়ামে ঢুকতেই পারেন না। তবে এর মধ্যে কর্তৃপক্ষ একটি লন টেনিস মাঠ তৈরি করেছে। আলো না থাকায় সেই খেলাও বন্ধ। 

এই প্রতিবেদন প্রকাশের দিন দুয়েক আগে এশিয়ান গেমস শেষ হলো। এতে আমাদের দেশ থেকে ২৪০ জনের একটি দল অংশ নেয়, যে দলে আবার ৫৫ জন কর্মকর্তা। প্রাপ্তি পুরুষ ও নারী ক্রিকেটে দুটি ব্রোঞ্জ। এমনকি নেপালও পদক তালিকায় আমাদের চেয়ে এগিয়ে ছিল। খেলার এমন আসরে ৫০ বছর ধরে আমরা কেবল গোহারা হেরেই গেলাম। কখনো আমরা বিপর্যয় দেখে খেলোয়াড়দের নিন্দামন্দ করি, কখনো হতাশ হই। কিন্তু প্রশ্ন হলো, আসলেই কি আমরা খেলাধুলায় ভালো করতে চাই? নাকি আমাদের সব মনোযোগ কেবল অবকাঠামো নির্মাণে? যে অবকাঠামোয় আবার খেলোয়াড়দের প্রবেশাধিকার নেই? 

বেশি দূরে নয়, আমরা ভারতের দিকে তাকাই। যদি কর্তৃপক্ষের লজ্জা থাকত, তাহলে খেলাধুলায় উন্নয়নের ফিরিস্তি শুনতে হতো না, তারা কাজ করে দেখাত। এই এশিয়ান গেমসে ভারত ১০৭টি পদক জয় করেছে। গতবারের তুলনায় তারা ৩০টি পদক বেশি পেয়েছে। সে দেশের সরকার খেলোয়াড়দের পেছনে বিনিয়োগ করেছে। তাদের লক্ষ্য এখন অলিম্পিক। সে উদ্দেশ্যে অলিম্পিক পোডিয়াম স্কিম নামের একটি কর্মসূচি চলছে। ওখানে খেলোয়াড়দের আর্থিক অসচ্ছলতা নেই, প্রশিক্ষকদের মান ভালো, ক্রীড়াবিজ্ঞানীদের সম্পৃক্ততা আছে জোরালো। 

আমরা অবশ্য নিজেদের কোনো দোষ কখনো খুঁজে পাই না, শিখতেও চাই না। অভিযোগ উঠলে তার সুরাহা না করে অস্বীকার করি। মাগুরার এই স্টেডিয়াম কেন খেলাধুলার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে না, সে ব্যাপারে প্রথম আলো জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলেছিল। তিনি যথারীতি অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। বলেছেন, স্টেডিয়ামে টেনিস খেলা হয়, দাবা টুর্নামেন্ট হয়। আরও কীভাবে কার্যকর করা যায়, তা নিয়ে তিনি ক্রীড়া সংস্থার সঙ্গে কথা বলবেন। 

গত সাত বছরেও কেন জেলা প্রশাসন ক্রীড়া সংস্থার সঙ্গে কথা বলে উঠতে পারল না, এর জবাব আছে?