অপরাধ নিয়ন্ত্রণে পুলিশি নিরাপত্তা বাড়ান

সম্পাদকীয়

দেশের মহাসড়কগুলোর নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত না হওয়ার কিছু নেই। সড়ক দুর্ঘটনা ছাড়াও ধর্ষণ, ডাকাতি, ছিনতাইয়ের মতো অপরাধ এখানে সংঘটিত হয়ে থাকে। কিন্তু সে অর্থে ভুক্তভোগীরা খুব একটা প্রতিকার পান না। মহাসড়কের দুই পাশে বন থাকলে নির্জনতার কারণে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হওয়াটা অবশ্যম্ভাবীই বলতে হয়। দিনাজপুর জেলার বিরামপুরের মহাসড়কে এমন পরিস্থিতিই আমরা দেখতে পাই। সেখানে একটি পুলিশ বক্স থাকলেও সেটি এখন পরিত্যক্ত। ফলে মহাসড়কটি দিয়ে চলাচলকারী যানবাহন ও মানুষেরা আতঙ্কে থাকেন।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, বিরামপুর মহাসড়কের দুই পাশে বন বিভাগের বিস্তীর্ণ সামাজিক বন। বিকেলের পর থেকে সড়কটি দুই পাশে অন্ধকারে ঢেকে যায়। আশপাশের পরিবেশও তখন নির্জন হয়ে পড়ে। আর সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত নামলে পথচারীদের কানে আসে শিয়ালের ডাক। মহাসড়ক ধরে চলাচল করা তখন গা-ছমছমে ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। অপরাধীরা তো এমন পরিবেশই চায় তাদের অপরাধকর্ম সংঘটিত করতে। ফলে সেই সড়কে ছিনতাইসহ অন্যান্য অপরাধের ঘটনা বেড়ে গেছে।

যানবাহন ও সাধারণ মানুষের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য দুই দশক আগে মহাসড়কে একটি পুলিশ বক্স বসানো হয়েছিল। দুর্গাপুর এলাকায় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) উদ্যোগে এডিপির (বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি) মাধ্যমে ইটের দেয়াল ও টিনের ছাউনি দিয়ে এ পুলিশ বক্স তৈরি করা হয়। সেই পুলিশ বক্সের দশা দেখেই বোঝা যায়, যানবাহন ও মানুষের নিরাপত্তা কতটা নিশ্চিত হচ্ছে সেখানে। কারণ, পুলিশ বক্সটিতে পুলিশেরই দেখা নেই পাঁচ বছর ধরে। দিনের পর দিন সড়কের পাশে অযত্নে পড়ে থাকা সেই পুলিশ বক্সের জানালাও খুলে নিয়ে গেছে চোররা।

উপজেলার পলিপ্রয়াগপুর ইউপি চেয়ারম্যান রহমত আলীর বক্তব্য, ১২ বছরের বেশি সময় পুলিশ বক্সটিতে পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেন। ওই সময়ে ছিনতাই ও চুরি-ডাকাতি বন্ধ হয়েছিল। কিন্তু পাঁচ বছর ধরে সেখানে পুলিশ না থাকায় আবারও চুরি ও ছিনতাই শুরু হয়েছে।

বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুব্রত কুমার সরকার বলেন, মহাসড়কে চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা রোধে নিয়মিত টহলসহ পুলিশ প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে থাকবে। তবে থানা-পুলিশের পক্ষ থেকে পুলিশ বক্সটি এ মুহূর্তে সংস্কারের সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

আমরা মনে করি, জেলা-উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নিলে পুলিশ বক্সটির সংস্কার সম্ভব। এ ব্যাপারে তারা কি আন্তরিক হবে?