জনদুর্ভোগের শেষ কবে

দেশের পিছিয়ে পড়া একটি জেলা কুড়িগ্রাম। উন্নয়নবৈষম্যের কারণে দারিদ্র্যের সঙ্গে সর্বদা মোকাবিলা করতে হয় জেলাটির মানুষকে। দেশের অন্যান্য জেলায় বড় বড় প্রকল্প হলেও কুড়িগ্রাম অনেকটা বঞ্চিতই থাকে। এমনকি জেলাটির নাগেশ্বরী উপজেলায় একটি সেতু ভেঙে গেছে সাত বছর আগে, সেটির সংস্কার বা সেখানে নতুন সেতু নির্মাণের কোনো নামগন্ধ নেই। এতে পাঁচ ইউনিয়নের অসংখ্য মানুষ উপজেলা ও জেলা শহরের সঙ্গে যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, নাগেশ্বরীর কালীগঞ্জ ইউনিয়নে পুরোনো দুধকুমার নদের ওপর সেতুটির অবস্থান। ২০১২ সালে সেতু নির্মাণ হলেও মানুষ বেশি দিন এর সুফল পায়নি। ২০১৭ সালের বন্যায় প্রবল স্রোতে সেতুর নিচে মাটি সরে যায় এবং এটি হেলে পড়ে। একই সঙ্গে সেতুর দুই পাশের সংযোগ সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এতে ওই সেতুর ওপর দিয়ে চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সেতুর অর্ধেকটা এখন পানির মধ্য ডুবে আছে। সাত বছর পার হয়ে গেলেও সেতুটি সংস্কার বা নতুন সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এ নিয়ে মানুষের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, বিভিন্ন সময় লোকজন এসে ছবি তোলে আর মাপজোখ করে কিন্তু সেতু নির্মাণ হয় না। শুকনো মৌসুমে ভাঙা রাস্তা ও বালুচর দিয়ে রিকশায় ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করা গেলেও বৃষ্টির মৌসুমে বাড়ে দুর্গতি। শিক্ষার্থী, অসুস্থ ও বয়স্ক মানুষ, কৃষকদের কষ্টের সীমা থাকে না। আবাদি জমির আইল, উঁচু-নিচু ভাঙা রাস্তা দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি চালাতে হয়। একটু এদিক-সেদিক হলেই গাড়ি উল্টে যাওয়ার ভয় থাকে। যাত্রীদের ভাড়াও দ্বিগুণ গুনতে হচ্ছে। 

আগের সেতুটির ব্যাপারে সওজের কুড়িগ্রাম কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলীর বক্তব্য হচ্ছে, সেতু নির্মাণ করার সময় পরিকল্পনায় কিছু ভুল ছিল। ফলে ২০১৭ সালের বন্যায় ওই রাস্তার কয়েকটি জায়গা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং সেতুটির নিচের মাটি সরে গিয়ে দেবে যায়। কথা হচ্ছে, পরিকল্পনার এই ভুলের দায় কার? নির্বাহী প্রকৌশলী জানালেন, দুধকুমার নদে ৭০০ মিটারের একটি সেতুর প্রস্তাব রয়েছে। সেটির অনুমোদন পাওয়া গেলে সংযোগ সড়কের দুটি সেতুর দরপত্র আহ্বান করা হবে। আমরা আশা করব, সেতুর প্রস্তাব দ্রুত অনুমোদন পাবে। এর মধ্য দিয়ে সংযোগ সড়কের দুটি সেতুর কাজও দ্রুত এগিয়ে যাবে। মানুষের দুর্ভোগ অবসানে সওজ এখানে আন্তরিক ভূমিকা রাখবে, সেটিই কাম্য।