শুরু হয়ে গেল বিশ্বকাপ ফুটবল। বরাবরের মতোই ফুটবল নিয়ে উত্তেজনায় মেতে উঠেছে গোটা দেশ। কিছুদিন আগে ফুটবলে বড় সাফল্য পেল আমাদের মেয়েরা। এ নিয়ে কত মাতামাতি হলো। কিন্তু খেলাধুলার যথেষ্ট সুযোগ পাচ্ছে কি আমাদের শিশু-কিশোরেরা? এখনো আমাদের দেখতে হয় অনেক স্কুলে খেলার মাঠ নেই। আবার কোথাও মাঠ থাকলেও সেটি কাজে লাগানো যায় না। যেমনটি আমরা দেখতে পাচ্ছি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার খেলার মাঠের ক্ষেত্রে। মাঠটির চারদিকে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কিন্তু সারা বছর জলাবদ্ধতার কারণে মাঠটিতে খেলতে পারে না শিক্ষার্থীরা। খেলা ছাড়াও অন্যান্য সামাজিক ও সাংস্কৃতিক আয়োজনও বন্ধ সেখানে। দীর্ঘদিন ধরে মাঠটি সংস্কারের দাবি জানাতে জানাতে স্থানীয় মানুষেরা হতাশ।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, দুর্গাপুর এলাকায় অবস্থিত এ মাঠকে ঘিরে রয়েছে দুর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কুমারখালী আদর্শ মহিলা বিদ্যালয় ও আবুল হোসেন তরুণ মিলনায়তন। প্রায় ১০ বছর আগেও মাঠটিতে সকাল-বিকাল চলত ফুটবল, ক্রিকেট, ভলিবলসহ বিভিন্ন খেলা। এ ছাড়া সরকারি-বেসরকারি, স্থানীয় ছোট-বড় সভা, সেমিনার, সাংস্কৃতিকসহ সব অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হতো। এ মাঠেই অনুষ্ঠিত হতো উপজেলার সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত। এ মাঠেই নানান বয়সী মানুষ শরীরচর্চা করত। মফস্সল এলাকার একটি মাঠে নানা আয়োজন ঘিরে স্থানীয় ব্যক্তিদের মধ্যে যে উৎসাহ-উদ্দীপনা ছিল, সবই এখন হারিয়ে গেছে। মাঠে পানিনিষ্কাশনের নালার ব্যবস্থা না থাকায় প্রায় সারা বছরই জমে থাকে বৃষ্টির পানি। কচুরিপানায় ভরে গেছে সেই মাঠ। বিচরণ করে গবাদিপশু, এমনকি ঈদের জামাতের জন্য নির্মিত মিনারটিও পানিতে নিমজ্জিত।
খেলাধুলার সুযোগ না থাকায় ছেলেরা মোড়ে মোড়ে বসে মুঠোফোনে গেম খেলে। অনেকেই মাদকাসক্তি ও অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ছে। স্থানীয় সুধীমহলের বক্তব্য, একটি সরকারি মাঠ এভাবে দীর্ঘদিন পানিতে নিমজ্জিত থাকে, এটা অত্যন্ত লজ্জা ও দুঃখজনক ব্যাপার। প্রতিবছরই শোনা যায়, বরাদ্দ আসছে, মাঠ ঠিক করা হবে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না। আসলে সংস্কারের ব্যাপারে সরকারি লোকজন, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতা কারও কোনো নজর নেই।
ইউএনও বিতান কুমার মণ্ডল বলেন, অর্থসংকটসহ নানা কারণে এত দিনেও মাঠ সংস্কার হয়নি। এবার খুব দ্রুত সংস্কার করা হবে। আমরা তাঁর কথায় আস্থা রাখতে চাই। দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ নিয়ে মাঠটি সংস্কার করা হোক।