২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

বরগুনায় খাল উদ্ধার করুন, বাঁচান কৃষি

কৃষির অবশ্যম্ভাবী অংশ সেচ কার্যক্রম। নদী, খাল-বিলের আধিক্যের কারণে একসময় সেচ কার্যক্রম নিয়ে কৃষকদের ভাবতে হতো না। এখন নদী, খাল-বিল—সবই দখল, দূষণ ও ভরাট হয়ে যাচ্ছে। সেচ নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ছে কৃষকের। খাল ভরাটের কারণে কৃষি উৎপাদন নিয়ে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বরগুনায়। সেখানে অপরিকল্পিত জলকপাটের কারণে ভুগতে হচ্ছে কৃষকদের। সেচের পানির অভাবে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। বিষয়টি ওই অঞ্চলের কৃষির জন্য অবশ্যই গুরুতর।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন বলছে, ঝড়-জলোচ্ছ্বাস ও জোয়ার-ভাটার পানি থেকে উপকূলের এলাকা রক্ষায় বরগুনা জেলার শাখা খালগুলোর সংযোগদ্বারে বিভিন্ন সময় বরগুনায় ৭৫০টি জলকপাট নির্মাণ করা হয়। প্রধানত এর উদ্দেশ্য ছিল অস্বাভাবিক পানিপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণ। এখন দেখা যাচ্ছে, জলকপাট দিয়ে জোয়ারের সময় যে পরিমাণ পানি প্রবেশ করে, ভাটার সময় সে পানি নামে না। এ কারণে পলি জমে খালগুলো ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এদিকে চাষাবাদের জন্য সময়মতো পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি না পাওয়ায় কৃষিকাজ হুমকির মুখে পড়ছে।

জলকপাটগুলো নির্মাণ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। অপরিকল্পিতভাবে নির্মিত জলকপাটগুলো এখন কৃষকদের গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। জানা যাচ্ছে, আরও ২৮টি নতুন জলকপাট নির্মাণের কার্যক্রম চালু আছে। জলকপাটগুলো কী ভয়াবহ সমস্যা তৈরি করেছে, তা স্পষ্টই বোঝা যায় বরগুনা সদর উপজেলার বদরখালী ও গৌরীচন্না ইউনিয়নের দুটি খালের দিকে তাকালে। খাল দুটির দুই প্রান্তে আছে দুটি করে জলকপাট। এখন খাল দুটি পলি জমে ভরাট হয়ে যাওয়ার কারণে অস্তিত্ব হারাচ্ছে। অথচ একসময় খালগুলো দিয়ে ট্রলারে মানুষ যাতায়াত করতেন। জেলাজুড়ে জলকপাটগুলো নিয়ে এমন পরিস্থিতিই তৈরি হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তার ভাষ্য, জলকপাট কার্যকর না থাকলে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে কৃষিতে। লোনাপানি আর জলাবদ্ধতা—দুই দিক থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হন কৃষক। অন্যদিকে এলাকায় অপরিকল্পিত জলকপাটের কারণে পলি জমে খাল ভরাটের কারণে চাষাবাদের সময় পর্যাপ্ত পানি পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণে কৃষিকাজ ব্যাহত হচ্ছে। বরগুনা পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব বলেন, যেসব খাল ভরাট হয়ে গেছে, তা খননের জন্য মন্ত্রণালয়ে প্রকল্প পাঠানো হবে।

শুধু খাল খনন নয়, অনেক জায়গায় জলকপাট কেটে দিয়ে খাল উদ্ধারের দাবিও তুলছেন স্থানীয় মানুষেরা। আমরা মনে করি, বিষয়টি নিয়ে পাউবোর একটি সিদ্ধান্তে আসা উচিত। কৃষি ও কৃষককে বাঁচাতে পাউবোকে এখানে আন্তরিক ভূমিকা রাখতে হবে। আশা করি, তারা আমাদের হতাশ করবে না।