কার্যক্রম শুরু করতে আর কত দেরি

সম্পাদকীয়

দেশের অর্থনীতির বড় একটা চালিকা শক্তি হলো প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স। তবে প্রবাসী কর্মীদের নিয়ে যে বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা হয়, তা হলো বাংলাদেশের দক্ষ জনশক্তির অভাব। মানে অন্য অনেক দেশ থেকে যেভাবে দক্ষ জনশক্তি যায় বা পাঠানো হয়, সে তুলনায় বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে, এমনকি দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো থেকেও। একদিকে আমরা প্রচুর জনশক্তি বাইরে পাঠাই এটা যেমন আশাব্যঞ্জক, কিন্তু সেই জনশক্তি যথেষ্ট দক্ষ না বলে আবার হতাশাজনকও।

এখন দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে সরকারি সংস্থা আছে, প্রশিক্ষণকেন্দ্রও আছে। নতুন নতুন প্রশিক্ষণকেন্দ্রও হচ্ছে, ভবিষ্যতে আরও হবে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, সে তুলনায় কি আমাদের দক্ষ জনশক্তি বাড়ছে? বাইরে কর্মী পাঠানো ছাড়াও অভ্যন্তরীণ জনশক্তির বাজারেও দক্ষ কর্মীর চাহিদা আছে। কর্মক্ষেত্র বা কর্মসংস্থান তৈরির মধ্য দিয়ে বেকারত্ব দূর করার বিষয়টাও এখানে গুরুত্বপূর্ণ।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, যশোরের কেশবপুরে একটি কারিগরি প্রশিক্ষণকেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীন জনশক্তি ও কর্মসংস্থান প্রশিক্ষণ ব্যুরোর একটি প্রকল্পের আওতায় এখানে তিনটি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২২ সালের ২৮ জুলাই প্রশিক্ষণকেন্দ্রটি ভার্চ্যুয়ালি উদ্বোধন করেন। দুঃখজনক হচ্ছে, উদ্বোধনের ১৬ মাস পার হয়ে গেলেও কেন্দ্রটি এখনো চালু করা হয়নি।

কার্যক্রম শুরু না হলেও এ কেন্দ্রে একজন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও একজন প্রশিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এখানে ইলেকট্রিক্যাল, জেনারেল ইলেকট্রনিকস, সিভিল কনস্ট্রাকশন, রেফ্রিজারেশন অ্যান্ড এয়ারকন্ডিশনিং ও কম্পিউটার ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। কেন্দ্রটি চালু না হওয়ায় এসব বিষয়ে প্রশিক্ষণও শুরু করা যাচ্ছে না।

প্রশিক্ষণকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আজিজুর রহমান খান জানান, এখনো ভবন হস্তান্তর হয়নি। তবে বেশ কিছু কম্পিউটার ও ল্যাপটপ এসেছে। কিন্তু ট্রেডের কোনো যন্ত্রপাতি আসেনি। এখন যন্ত্রপাতি দেওয়া হলে কেন্দ্রটি চালু করা যাবে। অন্যদিকে যশোর গণপূর্ত বিভাগ বলছে, প্রশিক্ষণকেন্দ্রটি চালু করার জন্য প্রকল্প পরিচালককে চিঠি দেওয়া হয়েছে। তিনি কমিটি করে দিলেই কেন্দ্রটি চালুর উদ্যোগ নেওয়া হবে।

এখন কথা হচ্ছে, যেখানে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্রটি উদ্বোধন করেছেন, তা-ও ১৬ মাস আগে, এরপরও এটি চালু করতে এত দেরি হবে কেন? আমরা গণপূর্ত বিভাগসহ মন্ত্রণালয় ও কর্মসংস্থান প্রশিক্ষণ ব্যুরোর কাছে এ ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। এ ব্যাপারে তারা দ্রুত সিদ্ধান্ত নেবে, প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি পাঠিয়ে ও জনবল নিয়োগ করে প্রশিক্ষণকেন্দ্রটি চালু করতে সচেষ্ট হবে, সেই আশাবাদ ব্যক্ত করছি।