আর কতকাল তালাবদ্ধ থাকবে

সম্পাদকীয়

কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির কারণে আমাদের এখানে হাটবাজারের ঐতিহ্য দীর্ঘদিনের। একটি বটগাছকে ঘিরে একটি হাট বা বাজারের দৃশ্যও একসময় বহুল পরিচিত দৃশ্য ছিল। এখন নগরায়ণের কারণে বড় শহর ছাড়াও অন্যান্য মফস্‌সল শহরগুলোতেও হাটবাজারগুলো স্থানান্তরিত হচ্ছে বহুতল ভবনে। গাজীপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র জয়দেবপুরে এমন একটি বহুতল কিচেন মার্কেট বা কাঁচাবাজার আমরা দেখতে পাই। কিন্তু নির্মাণের এক যুগ পার হলেও চালু হয়নি মার্কেটটি।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন জানাচ্ছে, ২০১২ সালে আধুনিক এ কিচেন মার্কেটটি নির্মাণ করে তৎকালীন পৌর কর্তৃপক্ষ। এরপর পৌরসভা থেকে গাজীপুর শহর হয়েছে সিটি করপোরেশন। মেয়র হিসেবে নেতৃত্ব দিয়েছেন একাধিক জনপ্রতিনিধিও। ২০১৪ সালে তৎকালীন মেয়র মার্কেটটি উদ্বোধনও করেছিলেন কিন্তু সেটি আর চালু হয়নি। যদিও এরই মধ্যে এক দফা সংস্কার ও আধুনিকায়নের কাজ করছে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু মার্কেটটি নিয়ে হতাশার অবসান হলো না ব্যবসায়ীদের।

মার্কেটে দোকান বরাদ্দ পেতে আড়াই শতাধিক ব্যবসায়ী প্রায় ১১ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছেন। কিন্তু দোকানের দেখা না পেয়ে সড়ক ও ফুটপাত দখল করে ব্যবসা করতে হচ্ছে তাঁদের। জয়দেবপুর মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নিখিল চন্দ্র বলেন, ‘মার্কেট নির্মাণ শুরুর সময় বলা হয়েছিল, ছয় মাস সময় লাগবে। এই সময়টুকু বাইরে বসে ব্যবসা করতে বলা হয়। এখন প্রায় ১২ বছর হয়ে গেলেও আর মার্কেটে উঠতে পারেননি। বর্তমানে সংকুচিত ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে জোড়াতালি দিয়ে ব্যবসা করছেন।’

যেকোনো উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সাধারণ একটি গুরুতর সমস্যা হলো নকশার ত্রুটি। এ মার্কেটটির ক্ষেত্রেও তার ভিন্নতা হয়নি। ফলে শুরুতেই মার্কেটটি চালু করতে গিয়ে ধাক্কা খায়। এরপর নকশায় কিছু পরিবর্তন এনে সিঁড়ি বড় করা হয়েছে। লিফট লাগানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

টাইলস লাগানো হয়েছে। এরপরও কেন মার্কেটটি এভাবে পড়ে থাকবে? সিটি করপোরেশনের উপদেষ্টা ও সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের বক্তব্য, সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী জুনের মধ্যে ব্যবসায়ীদের মার্কেটটি বুঝিয়ে দেওয়া হবে। এখন প্রশ্ন, তাঁর কথামতো সবকিছু কি ঠিক থাকবে?

আমরা আশা করব, সিটি করপোরেশন এ মার্কেটটি দ্রুততম সময়ের মধ্যে চালু করবে এবং যথাযথভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করবে। ব্যবসায়ীদের মার্কেটটি বুঝিয়ে দিয়ে তাঁদের দুশ্চিন্তা দূর করা হোক।