আলুর ফলন বৃদ্ধি

গত এক যুগে বাংলাদেশে আলুর ফলন বেড়েছে তিন গুণ। আলু উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের মধ্যে সপ্তম স্থানে। শুধু তা-ই নয়, বাংলাদেশের আলু এখন বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে, তিন বছর ধরে রপ্তানি ক্রমাগত বাড়ছে। এসব তথ্য নিঃসন্দেহে উৎসাহব্যঞ্জক।
আলু চাষে এই সফলতার পেছনে রয়েছে বাংলাদেশের কৃষিবিজ্ঞানীদের নতুন নতুন উদ্ভাবন ও আলুচাষিদের পরিশ্রম ও নিরন্তর প্রচেষ্টা। কিন্তু আলুর বাম্পার ফলন হলে আলুচাষিরা বিপদে পড়ে যান, তাঁরা আলুর ন্যায্যমূল্য না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করেন। হাটে আলু বিক্রি করতে গিয়ে অত্যন্ত কম বাজারমূল্য দেখে কোনো কোনো আলুচাষি রাস্তায় আলু ছিটিয়ে দেন। এই সমস্যা সমাধানের উপায় খুঁজে পেতে হবে।
একটা কার্যকর উপায় আলু সংরক্ষণের ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে বাড়ানো। বাজারে যখন আলু সরবরাহ অতিমাত্রায় বেড়ে যায়, তখন তার দাম কমে যাওয়াই স্বাভাবিক। কিছুদিন পরেই দাম বাড়ে, এই সময় আলু সংরক্ষণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকলে খেত থেকে আলু তোলার সঙ্গে সঙ্গে তা বিক্রি করার প্রবণতা কমবে।
আলুর ফলন বেড়েছে তিন গুণইন্টারন্যাশনাল ফুড পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (ইফপ্রি) বাংলাদেশ শাখার প্রধান নির্বাহী আখতার আহমেদ প্রথম আলোকে যথার্থই বলেছেন, স্বল্প ব্যয়ে আলু সংরক্ষণাগার তৈরির ওপর জোর দিতে হবে। কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী জানিয়েছেন, সরকারি উদ্যোগে বিদ্যুৎ ছাড়াই আলু সংরক্ষণাগার নির্মাণ করা হয়েছে। এ ধরনের সংরক্ষণাগারের সংখ্যা আরও অনেক বাড়ানো উচিত এবং বেসরকারি উদ্যোক্তাদের এই কাজে এগিয়ে আসা উচিত।
আলুর বাড়তি উৎপাদনের সঙ্গে সঙ্গে রপ্তানি বাড়ানোর উদ্যোগ আরও জোরদার করতে হবে। সে জন্য রপ্তানি-উপযোগী উন্নত জাতের আলু উৎপাদনের ওপর আরও জোর দেওয়া জরুরি। সরকার এদিকে নজর দিয়েছে—কৃষিমন্ত্রীর দেওয়া এই তথ্য উৎসাহব্যঞ্জক। শুধু দেশের চাহিদা মেটানোর জন্য নয়, বিদেশে রপ্তানিও আলু চাষের লক্ষ্য হওয়া উচিত। এবং এটা করতে হবে সরকারি-বেসরকারি সকল পর্যায়ে।