কাজে গতি আনুন, জবাবদিহি বাড়ান

২০১৫-১৬ অর্থবছরের বাজেট পেশকালে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছিলেন, অর্থ আদায়ের চেয়ে অর্থ খরচ করাটাই বড় সমস্যা। তিন মাস না যেতেই তাঁর এই কথাটির আক্ষরিক প্রমাণ রেখেছে সরকারের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন মতে, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের নয়টি প্রকল্পে বরাদ্দের পরিমাণ ৪০৫ কোটি টাকা, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তিনটি প্রকল্পের বিপরীতে পেয়েছিল ১০০ কোটি টাকা, আর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় দুই প্রকল্পের অনুকূলে পেয়েছে ৬৮টি কোটি টাকা। এই তিন মন্ত্রণালয় গত তিন মাসে এডিপির একটি পয়সাও খরচ করতে পারেনি। তবে ছয়টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগ ১ শতাংশ কিংবা ১ শতাংশের কম ব্যয় করে উল্লিখিত তিন মন্ত্রণালয় থেকে সামান্য এগিয়ে রয়েছে। শূন্য থেকে এক ধাপ এগিয়ে থাকা মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে রয়েছে অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ, খনিজ সম্পদ, পানিসম্পদ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, শিল্প, খাদ্য এবং প্রতিরক্ষা।
এ কথা ঠিক যে বাংলাদেশে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে নানা ঝক্কিঝামেলা পোহাতে হয়। অনেক সময় আইনি বাধাও থাকে। কিন্তু সংশ্লিষ্টরা কী কারণে বরাদ্দ ব্যয় করতে পারেনি, সে বিষয়ে তারা জনগণকে জানানোর প্রয়োজন বোধ করেনি। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, প্রথম প্রান্তিকে সব মিলিয়ে এডিপির মাত্র ৭ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে, যা গত পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। গত বছর একই সময়ে খরচ হয়েছিল ৯ শতাংশ। কেন এমনটি হলো? যে তিন মন্ত্রণালয় কোনো অর্থ ব্যয় করতে পারেনি, কিংবা খুবই কম ব্যয় করেছে, তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা প্রয়োজন। মন্ত্রীরা প্রায় প্রতিদিনই সরকারের সাফল্যের বয়ান দিয়ে থাকেন। কিন্তু পরিসংখ্যান তো ভিন্ন চিত্রই তুলে ধরে।
এখনো অর্থবছরের আট মাস বাকি আছে। এই সময়টায় যাতে সব মন্ত্রণালয়ের প্রকল্প বাস্তবায়নে গতি আসে, সেদিকেই সবাইকে নজর দিতে হবে। কাদের গাফিলতি ও দায়িত্বহীনতার কারণে এডিপি বাস্তবায়ন থমকে আছে, তারও সুষ্ঠু তদন্ত এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হোক।