গলাচিপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

সম্পাদকীয়

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের চিকিৎসার জন্য যেমন চিকিৎসক-নার্স-টেকনিশিয়ান, ওষুধ ও যন্ত্রপাতি প্রয়োজন, তেমনি প্রয়োজন ভবনও। ভবন না থাকলে রোগীরা সেবা নেবেন কোথায়? দেশের আরও অনেক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মতো পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের লোকবল ও অবকাঠামো সমস্যা প্রকট।

প্রথম আলোর পটুয়াখালী প্রতিনিধির খবর থেকে জানা যায়, ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত কমপ্লেক্সটি ২০০৫ সালে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। ওই সময় স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরোনো ভবন লাগোয়া আরেকটি দ্বিতল ভবন নির্মাণ করে। এরপর থেকে পুরোনো দ্বিতল ভবনটি নারী ও শিশুদের ওয়ার্ড এবং নতুন ভবনে পুরুষদের ওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। কিন্তু বছর তিনেক আগেই পুরোনো ভবনটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। পটুয়াখালী স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরে একাধিকবার চিঠি পাঠানোর পর ২০১৮ সালের প্রথম দিকে পুরোনো ভবনটি মেরামত করা হয়। কিন্তু সেই মেরামত টেকসই হয়নি। ছাদ ও বিম থেকে পলেস্তারা খসে পড়ায় নারী ও শিশু রোগীরা নিরাপত্তাহীনতায় আছেন। মাস তিনেক আগে পলেস্তারা খসে পড়ে এক রোগী ও তাঁর পরিচর্যাকারী আহত হন। পরে আবারও ভবনটির ছাদ ও বিম থেকে পলেস্তারা খসে পড়া শুরু করে। এ অবস্থায় সেখানে রোগীদের চিকিৎসাসেবা নেওয়াই কঠিন হয়ে পড়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম বলেছেন, পুরোনো ভবনের ছাদ ও বিমের পলেস্তারা খসে পড়ায় শুধু রোগী ও তাঁদের স্বজনেরাই নয়, চিকিৎসকেরাও ভয়ে আছেন। গত শুক্রবার প্রথম আলোয় গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরাজীর্ণ ভবনের খবর প্রকাশের পর কর্তৃপক্ষের কাছে আরেক দফা চিঠি পাঠানো হয়েছে।

গলাচিপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপজেলার বাসিন্দারা ছাড়াও পাশের রাঙ্গাবালী উপজেলার বহু মানুষ চিকিৎসা নিতে আসেন। ওই উপজেলায় কোনো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নেই। কিন্তু ভবন সংস্কার বা নতুন ভবন নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেই। যেখানে রোগীদের নিরাপত্তা নেই, সেখানে কীভাবে তাঁরা চিকিৎসা নেবেন?

এ ছাড়া গলাচিপা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকের ৩৯টি পদ থাকলেও সেখানে কর্মরত আছেন ২১ জন। নার্সের পদ ২৯টি, কর্মরত আছেন ২৫ জন। তৃতীয় শ্রেণির ১৫৬টি পদ থাকার কথা থাকলেও ৫৫টি পদ শূন্য আছে।

অবিলম্বে গলাচিপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরোনো ভবনটি সংস্কার করা হোক। সেই সঙ্গে চিকিৎসক-নার্স-কর্মচারীদের শূন্য পদগুলো পূরণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে আশা করি।