টঙ্গীবাসীর দুর্ভোগ

ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের আবদুল্লাহপুর থেকে চান্দনা চৌরাস্তা পর্যন্ত অংশের দৈর্ঘ্য ১২ কিলোমিটার। এই অল্প রাস্তাটুকুর মধ্যেই পড়েছে টঙ্গী শিল্প এলাকা, ইজতেমা ময়দান, টঙ্গী বাজার, আছে কয়েক শ তৈরি পোশাকশিল্পের কারখানা। প্রতিদিন এ সড়ক ব্যবহার করে কয়েক লাখ মানুষ। এ সড়ক দিয়েই চলে বৃহত্তর ময়মনসিংহ রুটের অধিকাংশ যানবাহন।

অথচ গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের অবস্থা ওই অর্থে কখনোই ভালো ছিল না। অল্প বৃষ্টিতেই ডুবে যেত, সড়কে এসে পড়া দোকানপাট আর তার মালসামান এবং রাস্তায় বসা হাটবাজারে দখল হয়ে থাকত অর্ধেক সড়ক। কিন্তু তারপরও রাস্তাটার এমন করুণ দশা কখনো ছিল না। কোথাও পিচ-ঢালাই উঠে এবড়োখেবড়ো, খোঁড়াখুঁড়ির কারণে কোথাও ছোট-বড় গর্ত, আবার কোথাও–বা দুই পাশে মাটি, বালু ও নির্মাণসামগ্রী। এসবের সঙ্গে সম্প্রতি যোগ হয়েছে ধুলাবালি। দিন-রাত ২৪ ঘণ্টাই সড়কজুড়ে উড়ছে ধুলা। তার মধ্যেও আবার সবচেয়ে খারাপ অবস্থা আবদুল্লাহপুর থেকে টঙ্গী স্টেশন রোড পর্যন্ত ৬০০ মিটার সড়ক। ধুলার ঝড় এখানে এতই প্রবল যে যানবাহনগুলো পর্যন্ত ধীরে চলে। এমনিতে জীবনে যাঁরা পর্দা ব্যবহার করেননি, ধুলার হাত থেকে বাঁচতে তঁাদের অনেকেই এখন দোকানপাট, ঘরদোরে পর্দা লাগিয়েছেন। এই গরমে সামান্য কাপড় গায়ে রাখাই যেখানে দায়, সেখানে পথচারী বা মোটরসাইকেল আরোহী অনেকেই পরছেন ধুলা প্রতিরোধী জ্যাকেট। ধুলায় কখনো কখনো নিশ্বাস নেওয়াও কষ্টকর হয়ে ওঠে। অতিষ্ঠ হয়ে অনেকে নিজেরাই উদ্যোগী হয়ে পানি দেন। কিন্তু আসলে ধূলিসমুদ্রে শিশিরবিন্দুর সমতুল্য।

আর এ দশার জন্য দায়ী উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ। বছরের পর বছর ধরে চলছে এ উন্নয়নযজ্ঞ। তা–ও আবার একটা নয়, এই ১২ কিলোমিটার রাস্তায় চলছে একাধিক কাজ। চার লেনবিশিষ্ট ঢাকা–ময়মনসিংহ মহাসড়ক, বিআরটি প্রকল্প, পয়োলাইন। কাগজে–কলমে আছে কাজ যত দিন চলবে, নিয়মিত পানি দিতে হবে। যেখানে দিনে একবার–দুবার পানি দিয়ে এ ধুলা ঠেকানো যাবে না, সেখানে এক দিন পানি দেয় তো দুই দিন খবর থাকে না। যেদিন ঠিকমতো পানি দেওয়া হয়, সেদিন ধুলার এ অত্যাচার থাকে না। প্রতিদিন ঘণ্টায় ঘণ্টায় পানি দেওয়া হলে ধুলা নিয়ন্ত্রণে থাকে। আর কিছু না পারুক, দিনে দুবার অন্তত পানিটা তো দিতে পারে তারা।